আমার চোখে মদিনা সনদ ও একটি বাংলাদেশ
লিখেছেন লিখেছেন সূর্য চৌধুরী ২৪ এপ্রিল, ২০১৩, ০৮:৫২:৫১ রাত
বাংলাদেশের সরকারের মদিনা সনদানুযায়ী দেশ পরিচালনার ক্ষেত্রে কতিপয় রহস্য তুলে ধরার জন্য এ বিষয়ে একটু পড়াশোনা করলাম। ফলাফলগুলো আপনাদের সামনে তুলে ধরতে চাই।
আসুন প্রথমেই এক নজরে দেখে নিই মদিনা সনদের ভেতরটা।
৬২২ খ্রিষ্টাব্দের ২৪ শে সেপ্টেম্বর রাসুল সাঃ মদিনায় হিজরতের পর স্থানীয় বিভিন্ন সাম্প্রদায়িক জনগোষ্ঠীর মাঝে অসংগতি লক্ষ করলেন এবং ৪৭ ধারার একটি বিশেষ সংবিধান তৈরী করলেন যা মদিনা সনদ নামে পরিচিত।
এই ৪৭ ধারার সংবিধানের অংশ গুলো:
১-১০ = হিজরতকারী, দাস এবং বন্দিদের ন্যায় বিচারের মাধ্যমে পন্যের বিনিময়ে মুক্তি দেওয়া।
১১-২০ = মুসলমানদের পারষ্পরিক সম্পর্ক বিষয়ক আইন।
২১-২৬ = হত্যার শাস্তি, মতামতের আইন, ধর্মীয় স্বাধীনতা সংক্রান্ত আইন।
২৭-৩৬ = বিভিন্ন গোত্রের পারষ্পরিক সম্পর্ক সংক্রান্ত আইন।
৩৭-৪৭= যুদ্ধনীতি, নাগরিকদের ক্ষতির ক্ষতিপূরণ, নিজ নিজ ব্যয় নির্বাহ, এ সনদে অংশগ্রহণকারীদের বিরুদ্ধে কেউ যুদ্ধে লিপ্ত হলে তার ব্যাপারে ব্যবস্থা, বন্ধুর দুষ্কর্ম, যুদ্ধের ব্যয় নির্বাহ, নাগরিকের অধিকার, আশ্রয়দানকারী ও আশ্রিতের সম্পর্ক, নারীর আশ্রয়, সনদের স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে শান্তি ভঙ্গের আশন্কা দেখা দিলে করণীয়, কুরাইশদের ব্যাপারে ব্যবস্থা ইত্যাদি আইন।
মদিনা সনদে আমরা অনেক কিছুই দেখলাম। কিন্তু আমাদের সরকার এটিকে নিজের স্বার্থে কাজে লাগাতে পারে তারই কিছু সম্ভাব্য দিক তুলে ধরেছি।
১। রাসুল সাঃ মক্কা ছেড়ে মদিনায় হিজরত করেছিলেন কারন মক্কার কাফিরেরা তার প্রতি অত্যাচার করেছিল। আর হিজরতের মুল উদ্দেশ্য শান্তি। তাই মদিনায় নিঃসন্দেহে কোন কাফির বা নাস্তিক ছিলনা। আর তাই তখন মদিনা সনদে নাস্তিকদের ব্যপারে আইন প্রনয়নের প্রয়োজন পড়েনি। সুতরাং বাংলাদেশে মদিনা সনদ প্রতিষ্ঠা হলে নাস্তিকরা সুবিধাভোগ করবে।
২। মদিনা সনদের কোথাও ধর্ম অবমাননার কথা উল্ল্যেখ নাই কারন তত্কালীন মদিনায় কাফির ছিলনা। ফলে বাংলাদেশে মদিনা সনদ আইন পাস হলে ইসলাম অবমাননাকারীদের বিরুদ্ধে আমাদের ব্যবস্থা নেওয়ার পথ থাকবেনা।
৩। রাষ্ট্রদোহীর ব্যাপারে কঠোর আইন থাকলেও সরকারের বিরুদ্ধে জনগনের কোন পদক্ষেপের কথা মদিনা সনদে উল্লেখ নাই তাই বাংলাদেশে মদিনা সনদ প্রতিষ্ঠিত হলে সরকার একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে পারবে।
৪। মদিনা সনদে কোথাও ভারপ্রাপ্ত প্রশাসক বা তত্ববধায়ক সরকারের কথা উল্লেখ নাই তাই মদিনা সনদ পাস হলে বিএনপির তত্বাবধায়কের আশা ত্যাগ করতে হবে। তত্ববধায়কের কথা আরজেল ভাইও বলেছেন।
৫। মদিনা সনদানুযায়ী দেশের পরিচালনার ক্ষমতা ন্যাস্ত ছিল একজনের ওপর তাই বাংলাদেশে মদিনা সনদ প্রতিষ্ঠা হলে নির্বাচনের গুরুত্ব কমে যাবে।
৬। মদিনা সনদ অনুযায়ী দেশের ক্ষতি হয় এমন কাজ যেমন হরতাল ভাঙচুর এরুপ কাজে বাধার কথা রয়েছে তাই বিরোধীদলীয় যেকোন হরতালের বিপরীতে কঠোরব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ আছে।
কিন্তু আমরা কেউ ছাগল নই, দেশটা কেউ চুষে খেলে ছেড়ে দেবনা। আমরাও মদিনা সনদকে কাজে লাগাতে পারি নিম্মরুপে।
১। মদিনা সনদের কোথাও নারী নেতৃত্বের কথা নাই। তাই মদিনা সনদ অনুযায়ী পুরুষ রাজনীতি চাই। খালেদা হোক আর হাসিনা, সবাই চেয়ার ছাড়ো।
২। মদিনা সনদের কোথাও গনতন্ত্রের কথা নাই তাই আমরা খিলাফত চাই। জামায়াতের গনতন্ত্র আমরা সমর্থন করিনা।
৩। মদিনা সনদের কোথাও ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষেধ নাই তাই বাকশাল চলবেনা।
৪। মদিনা সনদের কোথাও মুজাহিদদের ঘৃনার কথা নাই তাই দাঁড়ি টুপি থাকলেই তাকে জঙ্গি বলা চলবেনা।
৫। মদিনা সনদানুযায়ী বাহিরের যেকোন পরাশক্তির আক্রমন থেকে নগরকে বাঁচাতে ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে এক হতে বলা হয়েছে তাই অবশ্যই ভারতীয় সংস্কূতির বিরুদ্ধে সবাইকে এক হয়ে লড়তে হবে।
৬। মদিনা সনদানুযায়ী সকল ধর্মীয় স্বাধীনতা আছে তাই ইসলামকে কটাক্ষ করলে সংখ্যালঘিষ্টতার অজুহাতে হিন্দু বা খ্রিষ্টান ধর্মালম্বীদের ছেড়ে দেওয়া হবেনা।
৭। মদিনাসনদে প্রশাসনিক দায়িত্বে থাকা সবাইকে সত্ ও ধার্মিক হওয়ার কথা বলা আছে তাই দেশের শির্ষপদ ও গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো থেকে নাস্তিক, ধর্মবিদ্বেষী ও মানসিক রোগীদের অবিলম্বে সরিয়ে সেইসব পদে মুসলিম আলেম প্রতিস্থাপন করতে হবে।
৭ দফা চলবে...
আমরন জিহাদ...
পুর্বপ্রকাশিত...
বিষয়: বিবিধ
১৩২৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন