হানাফী মাযহাব অনুসৃত পারিবারিক শিক্ষা নিয়ে যখন কিছু প্রশ্নের মুখোমুখি
লিখেছেন লিখেছেন মুিজব িবন আদম ১৩ মার্চ, ২০১৪, ০৭:১৭:৪৪ সন্ধ্যা
হানাফী মতাদর্শ ও মাসয়ালা অনুসরন করেই চলছিল পরিবারটি। সব সদস্যই একতালের, একমতের। আত্মীয় স্বজনও। সবার সথে বড়ই মিলমিশ।
এর মধ্যে এক খটকা বাঁধে শুধু একজন যখন কিছু প্রশ্ন তোলেন। সেই প্রশ্নগুলোই আজ সবার সাথে শেয়ার করছি।
১। ইমাম আবু হানিফা (র হাদীস, তাফসীর বা ফিকাহ এর কোন কিতাব লিখে যাননি। তিনি ছাত্রদেরকে মৌখিকভাবে শিখাতেন। তাছাড়া কথিত আছে যে তিনি বলেছিলেন: আমি একজন মানুষ, আজ একটি মত প্রকাশ করি, আবার পরের দিন বিবেচনা করে তা ঠিক মনে হয়না, তাই পরিবর্তন করি; তাই আমার মতামত কেউ লিখে রাখবেন না। এ অবস্থায় ইমাম কি বলেছেন ও কি বলেন নাই তা জানার উপায় কোথায়?
২। হানাফী মাযহাবের বহুল আলোচিত কিতাব হচ্ছে "আল মুখতাসারুল কুদূরী", যাতে রয়েছে ১২০০০ মাসয়ালা। কিন্তু কিতাবখানী লিখা হয়েছিল ইমাম আবু হানিফা (র এর মৃত্যুর আড়াই শত বছরেরও বেশী পরে, হিজরী চতুর্থ শতাব্দীতে। এত দীর্ঘ সময় পরে কিভাবে লেখকের কাছে তথ্য এল তার কোন লিংক নাই। অথচ এ কিতাব সংকলিত হবার অনেক আগেই মুয়াত্বা মালিক, বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, তিরমীজী শরীফ, আবু দাউদ শরীফ, নাসাঈ শরীফ ও ইবনে মাজা শরীফ সংকলিত হয়েছে। তাহলে নির্ভরযোগ্যতার মানদন্ডে "আল মুখতাসারুল কুদূরী" এর অবস্থান কি?
৩। হানাফী মতাদর্শের অন্যান্য কিতাব আরও পরের সময়কার। তাই সেগুলোর সাথে ইমাম আবু হানিফা (র এর চিন্তা-চেতনার আদৌ কোন সঠিক মিল আছে কিনা তা নিশ্চিত হবার উপায় কি? কোন দলিল ছাড়া এখন যে কেউ ইমাম আবু হানিফা (র এর নাম নিয়ে কোন কিছু বললেই কি তা হানাফী আদর্শ হয়ে যাবে?
বিষয়: বিবিধ
৩৫৫৯ বার পঠিত, ১১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মুসলিম দের বুঝতে হবে আল্লাহ কোরআন মজীদকে এমন ভাবে পাঠিয়েছেন যে, তা একাধারে নিরক্ষর লোক হতে শুরু করে মহাজ্ঞানীর জানার ক্ষুধা যেমন মেটাতে সক্ষম ঠিক তেমনি হেদায়াত করতে ও সক্ষম এবং পরকালে নাজাত দিতে ও সক্ষম।
আর তারপর যদি কোন কারনে কোন মুসলমান - তাকওয়াতে কমপিট করতে চায় - তবে বাকি হেদায়াত ও নাজাত এর জন্য হাদীস শরীফের মাঝে ডুবতে পারে।
আর তারপরো যদি ক্ষুধা না মেটে আর নিজেকে আরো উপরের স্তরে উঠাতে চায় - আল্লাহর দেয়া নেয়ামতকে আরো বেশী হৃদয়ংগম করতে চায় তবে সে পৃথিবীর অন্য যে কোন বই এর মত ইমাম দের বই, শায়খ দের বই হতে শুরু করে যে কোন আলেম এর বই পড়তে পারে। কিন্তু কোন বই পড়ে - সে লেখকের অনুসারী হওয়া লিটারেলী মোহাম্মদ এর অনুসারী হতে অনীহার প্রকাশ এবং তা সময়ের পরিক্রমায় হীরা ফেলে কাঁচ হাতে নেবার মত বিষয়ে পরিনত হবে।
আল্লাহ আমাদের কে যথাযথ সেন্স দিক - এই কামনা করি এবং আমাদের সকলকে মুসলিম হিসাবে যেন মৃত্যুর মুখোমুখী করেন - এই প্রার্থনা করি।
ধন্যবাদ।
প্রথমেই ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর ইলমী মাকাম সম্পর্কে কিঞ্চিত ধারণা থাকলে এ উদ্ভট প্রশ্নটির উত্তরটি সহজ হয়ে যাবে।
১-
قال شيخ الإسلام يزيد بن هارون-كان ابو حنيفة نقيا تقيا زاهدا عابدا عالما صدوق اللسان احفظ اهل زمانه، (مناقب ابى حنيفة لمحمد ضميرى)
শাইখুল ইসলাম ইয়াযিদ বিন হারুন বলেন-ইমাম আবু হানীফা রহঃ অত্যন্ত মুত্তাকী, পবিত্র সাধক, ইবাদত গুজার, আলিম, সত্যভাষী, এবং সমসাময়িক সকলের চেয়ে হাদীসের বড় হাফেজ ছিলেন। {মানাকেবে ইমাম আবু হানীফা রহঃ মুহাম্মদ জমিরী রচিত}
২-
قال الحفظ ابو نغيم الإسفحانى عن يحيى بن يصر بن حجر- دخلت على ابى حنيفة رح فى بيت مملوكتها، فقلت- ما هذه؟ قال هذه احاديث كلها، وما حدثت به الا اليسير الذى منتفغ به- (الخيرات الحسان-211 بحوالة مناقب ابى حنيفة للمرقف المكى-85)
হাফেজ আবু নুয়াইম ইসফাহানী রহঃ ইয়াহইয়া বিন নাসর বিন হাজার এর সূত্রে বর্ণনা করেন-আমি কিতাবে ভরপুর একটি গৃহে ইমাম আবু হানীফা রহ এর নিকট প্রবেশ করলাম। তাঁকে জিজ্ঞাসা করলাম এ কিতাবগুলো কিসের? উত্তরে তিনি বললেন-এ সবই হাদীসের কিতাব। এর সামান্য কিছুই আমি বর্ণনা করেছি। যার থেকে যথেষ্ট পরিমাণে উপকৃত হওয়া যায়। {আল খাইরাতুল হিসান-২১১}
৩-
قال يحيى بن نصر سمعت ابا حنيفة رح يقول- عندى صناديق من الحديث ما اخرجت منها الا اليسير الذى ينتقع به- (عقود الجواهر المنيفة-1/23، مناقب ابى حنيفة للمرفق المكى-85)
ইয়াহইয়া বিন নাসর রহৎ বলেন-আমি ইমাম আবু হানীফা রহঃ কে বলতে শুনেছি যে, তিনি বলেন- আমার নিকট হাদীসের সিন্দুক আছে। আমি তা থেকে উপকারজনক অল্প কিছুই প্রকাশ করেছি। {উকুদুল জাওয়াহিরুল মুনীফাহ-১/২৩}
মুহাদ্দিসীনে কিরামের এরকম অসংখ্য বর্ণনা প্রমাণ করে ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর কাছে হাদীসের এক বিশাল ভান্ডার ছিল। তিনি সেসব হাদীসের আলোকেই ফাতওয়া প্রদান করতেন। আর তার ছাত্ররা তা লিপিবদ্ধ করতো। তারপর তাকে পরে দেখিয়ে ভুলত্রুটি শুধরে নিতেন।
হাদীসের ভান্ডার থাকা ব্যক্তিত্ব কোন কিতাব সংকলন করেন নি। পৃথিবী বিখ্যাত এমন ফক্বীহের কোন লিখিত কিতাব নেই এমন দাবী করাটা আহমকী ছাড়া কিছু নয়।
মৌলিকভাবে তার রচিত কিতাবকে দুইভাবে ভাগ করা যায়। তথা-
১- তার সহস্তে সংকলিত কিতাব।
২-ছাত্রদের দ্বারা লিখিত কিতাব। অর্থাৎ তিনি বলতেন আর তার ছাত্ররা তা লিপিবদ্ধ করতেন। যেহেতু তার কথাই ছাত্ররা লিখতেন, তাই সেসব কিতাবও তার লিপিবদ্ধ করাই বলা যায় নির্ধিদ্ধায়।
স্বহস্তে লিখা কিতাব
১-কিতাবুল আসার
قال الحسن بن زياد قد انتخب ابو حنيفة “كتاب الأثار” من اربعين ألف حديث، (الخيرات الحسان-211 بحوالة مناقب ابى حنيفة للمرقى-84)
হাসান বিন যিয়াদ রহঃ বলেন-ইমাম আবু হানীফা রহঃ চল্লিশ হাজার হাদীস থেকে বাছাই করে “কিতাবুল আসার” নামক গ্রন্থটি সংকলন করেন। {আল খাইরাতুল হিসান-২১১}
قال الشيخ ابو الوفا اول كتاب ألف فى الحديث النبوى واثاره مرتبا على الأبواب كتاب الأثار للامام الأعظم- (علم المسلمين-5/291)
শায়েখ আবুল ওয়াফা রহঃ বলেন-রাসূল সাঃ এর হাদীস ও আসারে সাহাবাকে বিভিন্ন অধ্যায়ে সুবিন্যস্ত করে সর্ব প্রথম কিতাব হল ইমাম আযম রহঃ রচিত “কিতাবুল আসার”। {ইলমুল মুসলিমীন-৫/২৯১}
২-মুসনাদে ইমাম আবু হানীফা রহঃ।
এ কিতাবটি বর্তমানে পৃথিবী বিখ্যাত হাদীস বিশারদ আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী রহঃ এর তাহকীক সহ বর্তমানে পাওয়া যায়।
৩-আল ফিক্বহুল আকবার
এ গ্রন্থটিও মোল্লা আলী ক্বারী রহঃ এর ব্যাখ্যাসহ মার্কেটে পাওয়া যায়।
এছাড়াও তার রচিত গ্রন্থাবলী হল-
৪-রিসালাতু আল-আলিম ওয়াল মুতাআল্লিম।
৫-রিসালাতু ইলা উসমান আল বাত্তী।
৬-কিতাবু আর রাদ্দু আলাল ক্বাদরিয়া
৭-আল ইলমু শারকান ও গারবান ওয়া বাদান ওয়া কারবান।
এছাড়াও আরো অনেক গ্রন্থের নাম ওলামাদের বক্তব্যে এসেছে। এছাড়াও ইমাম আযম রহঃ এর লিখা আরো গ্রন্থ ছিল ফিক্বহের উপর। কিন্তু মূলত তাতারী বর্বরতা “বায়তুল হিকমাহ” রাজকীয় গ্রন্থাগার ও বাগদাদ নগরী ধ্বংসের সময় এ অমূল্য কিতাবসমূহরে পান্ডুলিপি দুর্লভ ও বিরল হয়ে পড়ে।
ছাত্রদের দ্বারা লিখিত কিতাব
ইমাম বুখারী যেমন তার সংকলিত বুখারী শরীফের পান্ডুলিপি লিখিয়েছেন তার ছাত্র মুহাম্মদ বিন ইউসুফ ফারাবরী রহঃ এর দ্বারা। তারপর থেকে বর্তমানে পাওয়া বুখারী শরীফ মূলত মুহাম্মদ বিন ইউসুফ ফারাবরী রহঃ এর লিখিত বুখারী শরীফের নাম। অথচ কিতাব বলা হয় ইমাম বুখারী রহঃ এরই। কারণ এর মূল সংগ্রাহক হলেন ইমাম বুখারী রহঃ। যদিও লিখেছেন তার ছাত্র ফারবরী। তারপরও তা ইমাম বুখারী রহঃ এর নামেই পরিচিতি পেয়েছে। অধিকাংশ মানুষ লিপিবদ্ধকারী ফারাবরী রহঃ এর নামই জানে না।
তেমনি ইমাম আবু হানীফা রঃ এর বলা ও উদ্ভাবন করা মাসআলাই তার ছাত্র ইমাম আবু ইউসুফ রহঃ, ইমাম মুহাম্মদ রহঃ, ইমাম হাসান বিন যিয়াদ রহঃ, ইমাম কারখী রহঃ, তাদের কিতাবে সংকলিত করেছেন। তাই তাদের রচিত কিতাব মূলত ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর লিখিত কিতাবই।
এ অভিযোগের কি জবাব হতে পারে? জানালে উপকৃত হতাম।
প্রশ্নকর্তা- আহমাদ আলী, ঢাকা বাংলাদেশ।
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم
তাদেরকে জিজ্ঞাসা করুন-
কুরআনে কারীমের প্রতিটি আয়াতের কি সনদ আছে রাসূল সাঃ পর্যন্ত?
গায়রে মুকাল্লিদ নিশ্চয় তখন বলবেঃ- নেই।
আবার প্রশ্ন করুন- তাহলে কি নাউজুবিল্লাহ কুরআন রাসূল সাঃ এর উপর নাজিলকৃত কুরআন নয়?
গায়রে মুকাল্লিদ নিশ্চয় বলবেঃ- অবশ্যই রাসূল সাঃ এর উপর নাজিলকৃত কুরআন।
পাল্টা প্রশ্ন করুনঃ- তাহলে সনদ কোথায়? সনদ ছাড়া কথা কি করে মানা যায় যে এটি রাসূল সাঃ এর উপরই নাজিল হয়েছিল?
গায়রে মুকাল্লিদটি মাথায় যদি ঘিলু থাকে আর ইলমের সামান্য হলেও ছোঁয়া থাকে তাহলে বলবেঃ- আসলে বর্তমানে বিদ্যমান কুরআন যে রাসূল সাঃ এর উপর নাজিলকৃত কুরআনই তা মুতাওয়াতিসূত্রে বর্ণিত। তথা উম্মতের নিরবচ্ছিন্ন মতৈক্যে এটি প্রমাণিত। এ ব্যাপারে কেউ কোন দিন প্রশ্ন উত্থাপন করেনি। কিছু বিভ্রান্ত শিয়া এবং নাস্তিক ইসলাম বিদ্বেষী ছাড়া। যে বিষয় মুতাওয়াতির সূত্রে বর্ণিত হয়, সে বিষয়ের সনদের দিকে তাকানোর কোন প্রয়োজন নেই। সনদ ছাড়াই উক্ত বিষয়টি গ্রহণযোগ্য হয়ে থাকে। যেমন পবিত্র কুরআন যে রাসূল সাঃ এর উপর নাজিলকৃত কুরআন। তা মুতাওয়াতির সূত্রে প্রমানিত। তাই এ ব্যাপারে প্রশ্ন উত্থাপিত করা বা এর সনদ চাওয়া আহমকী ছাড়া কিছু নয়।
আপনি তখন তার কথার সাথে আরেকটু সংযোজন করে দিনঃ- আচ্ছা তাই নাকি? তাহলে আমি আরেকটু সংযোজন করি। বিখ্যাত হাদীস বিশারদ হযরত ইবনে হাজার আসকালানী রহঃ তার সুবিখ্যাত উসূলে হাদীসের হাদীসের কিতাব “শরহু নুখবাতিল ফিকার” এ উল্লেখ করেছেনঃ-
والمتواتر لا يبحث عن رجاله، بل يجب العمل به من غير بحث
মুতাওয়াতির এর রিজাল তথা রাবী নিয়ে আলোচনা হয় না। বরং আলোচনা ও সমালোচনা ছাড়াই এর উপর আমল করা আবশ্যক। {শরহু নুখবাতিল ফিকার}
সুতরাং কুরআন যেহেতু মুতাওয়াতির। তাই এর সনদ খোঁজা সত্যিই আহমকী। বরং সনদ তালাশ করা ছাড়াই এটি রাসূল সাঃ এর উপর নাজিলকৃত ঐশী কুরআন বিশ্বাস করা আবশ্যক।
ঠিক তেমনি হেদায়া, কুদরী, শরহে বেকায়া, কানযুদ দাকায়েক, তুহফাতুল ফুক্বাহা, আদদরুরুল মুখতার, বিদায়াতুল মুজতাহিদ, আলকাফীসহ যেসব গ্রন্থ ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর দিকে নিসবত করা গ্রন্থাদী যা মুতাওয়াতির হিসেবে চলে আসছে। সেগুলোরও ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর পর্যন্ত সনদ তালাশ করা আহমকী বৈ কিছু নয়। কারণ মুতাওয়াতির বিষয়ের সনদ তালাশ করার প্রয়োজন নেই। বরং তা মুতাওয়াতির হওয়াই এটির নিসবত সঠিক হওয়ার দলীল।
উপরোক্ত কিতাবাদী যে, ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর ফিক্বহের আলোকে লেখা তা সর্বজন বিদিত। হাজার বছর ধরে ফক্বীহ, মুহাদ্দিস, মুসলিম উম্মাহের কাছে স্বীকৃত উলামা-মাশায়েখ, আইয়িম্মায়ে দ্বীন, ও বিদগ্ধ পন্ডিতগণ নিঃসংকোচে স্বীকার করে আসছেন। শুধু তাই নয়, হাজার বছর ধরে অধিকাংশ উম্মতে মুসলিমা ফিক্বহে হানাফী বিশ্বাস করেই এসব কিতাবের উপর নিরবচ্ছিন্ন আমল জারি রেখেছেন। সেখানে অধুনা কিছু অর্বাচিন ব্যক্তিদের সন্দেহ প্রকাশ এ মুতাওয়াতির বিষয়ের ক্ষেত্রে সনদ তালাশ করার মানসিকতা ফিতনা সৃষ্টি বৈ কিছু নয়। সেই সাথে মুতাওয়াতিরের হুকুমের ক্ষেত্রে অজ্ঞতা ছাড়া আর কিছু নয়।
আল্লাহ তাআলা এ ফিতনাবাজ গোষ্টি থেকে মুসলিম জাতিকে হিফাযত করুন।
http://jamiatulasad.com/?p=2701
আপনি কিভাবে বললেন:
"কুরআনে কারীমের প্রতিটি আয়াতের কি সনদ আছে রাসূল সাঃ পর্যন্ত?"
পবিত্র কুরআনের জন্য সনদের চিন্তা মুমিনের মাথায় আসে না, আসার কথাও না। কুরআনকে আমি বিনা সনদে মানি আল্লাহর কালাম হিসেবে। বাকী সব কিতাব নিরীক্ষার জন্য সনদ চাই, চাচ্ছি, চাইতেই থাকবো। তাতে আপনি রাগ করলেও।
মাজহাব মূলত আইনতত্ত্ব(Jurisprudence) , ফিকাহ (Islamic Jurisprudence). মুসলিম স্কলাররা যা গড়ে তুলেছেন তা হল Jurisprudence, কোন ধর্ম নয় । আইন তত্ত্বের ব্যবহার আমরা সাহাবীদের মধ্যেও দেখতে পাই, যেমন – আলী (রাঃ) – সম্পত্তি বন্টনে আউল নীতি’র ব্যবহার। ওমর (রাঃ) বিজয়ী অঞ্চল সৈনিকদের মধ্যে বন্টন স্থগিত, দুর্ভিক্ষ অঞ্চলে হদের (হাত কাটা) শাস্তি স্থগিত। ইসলামের প্রাথমিক যুগে অগ্র ক্রয় জায়েজ ছিল না, ওয়াকফ ছিল না ইত্যাদি সম্ভব হয়েছে আইন তত্ত্বের জন্য।
মাজহাব গুলির মধ্যে অন্যতম বেসিক পার্থক্য হল – উসুল সমূহ, কোন কিছু ব্যাখ্যার নীতিমালা, হাদিস গ্রহণের পদ্ধতি, তাফসীর ইত্যাদি । কালক্রমে আইনতত্ত্ব সমূহ স্ব স্ব গোষ্ঠীর বড় স্কলারদের নামে পরিচিতি লাভ করে এবং স্কলাররা ইমাম হিসাবে অভিহিত হন । যেমনঃ হানাফী মাজহাব আবু হানিফার নামে চালু হলেও – মূলত এই মাজহাবের মুল প্রতিষ্ঠাতা আবু হানিফা ও তার দুই শিষ্য ইমাম ইঊসুফ ও ইমাম মুহাম্মাদ । এই তিন জনই পৃথক তিনটি মাজহাবের প্রতিষ্ঠাতা – যা একত্রিত হয়ে বর্তমান হানাফী স্কুল ।
“যারা মনোনিবেশ সহকারে কথা শুনে, অতঃপর যা উত্তম, তার অনুসরণ করে। তাদেরকেই আল্লাহ সৎপথ প্রদর্শন করেন এবং তারাই বুদ্ধিমান।“ -সূরা আল-যুমার (৭৫), আয়াত-১৮)
মন্তব্য করতে লগইন করুন