কষ্টে কাটে নষ্টপ্রহর, পর্ব- ১০: স্বাধীনচেতা বাংলাদেশী ও আমাদের স্বকীয়তা
লিখেছেন লিখেছেন মাহরুফ চৌধুরী ১৩ মে, ২০১৩, ০৭:১০:৩২ সকাল
দশ: স্বাধীনচেতা বাংলাদেশী ও আমাদের স্বকীয়তা
বাংলাদেশের আপামর জনতা স্বাধীনচেতা আর স্বকীয় বৈশিষ্ট্যে অনন্য। জীবন আর স্বাধীনতা যাদের কাছে সমার্থবোধক, নিস্তরঙ্গ সাদামাটা জীবনযাত্রা যাদের আরাধ্য, তাদের এই সবলীল জীবনবোধ এক অনিন্দ্য সুন্দর কাব্যরূপ লাভ করেছে বিপ্লবী কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের কবিতায়-
সাবাস বাংলাদেশ! পৃথিবী অবাক তাকিয়ে রয়,
জ্বলে পুড়ে মরে ছারখার তবু মাথা নোয়াবার নয়।
বাংলাদেশের মানুষ কখনোই পরাধীনতাকে স্বাভাবিকভাবে মেনে নেয়নি, বশ্যতা স্বীকার করেনি বহিরাগত শক্তি কিংবা বহির্শক্তির সেবাদাস দেশীয় শোষক শ্রেণীর কাছে। তাই মুঘল শাসনামলে আমরা দেখতে পাই বাংলাদেশে বার ভুঁইয়াদের উত্থান। ইংরেজ শাসন আমলে তিতুমীর, মজনু শাহ, সূর্য সেনের মতো প্রতিবাদী পুরুষদেরকে। দীর্ঘদিন উপমহাদেশ শাসন করলেও প্রতিবাদ আর প্রতিরোধ প্রতিনিয়তই প্রবলভাবে আন্দোলিত-আলোড়িত করেছে ইংরেজ ঔপনিবেশিক শাসক ও তাদের সেবাদাস দেশীয় শোষক গোষ্ঠীকে। তাই ইংরেজদেরকে আমাদের দেশ ছাড়তে হয়েছিল। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের পর বেশ নাজুক পরিস্থিতিতে ১৯৪৭ সালে উপমহাদেশে ব্রিটিশ শাসনের অবসান হলেও দুর্ভাগ্যজনকভাবে বাংলাদেশী জনগণ তাদের স্বাধীনতা ও স্বার্বভৌমত্ব তথা জাতি হিসেবে স্বাধীন সত্তা লাভ না করে দ্বিজাতি তত্তের ভিত্তিতে পাকিস্তানের অংশে পরিণত হয়। তারপর পাকিস্তানী শাসকদের বৈষম্যমূলক আচরণ ও স্বেচ্ছাচারিতর বিরুদ্ধে বাংলাদেশের সংগ্রামী জনতা আবার রুখে দাঁড়িয়েছে, তীব্র গণ-আন্দোলন, প্রতিরোধ আর আত্মদানের মধ্যে দিয়েই তারা ছিনিয়ে এনেছে আমাদের স্বাধীনতার রক্তিম সূর্য। অবশেষে লাখো শহীদের আত্মদানে বাংলার স্বাধীনতার রক্তিম সূর্য পুণরুদিত হয়েছে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ঢাকার রেইসকোর্স ময়দানে যা বর্তমানে সরওয়ার্দী উদ্যান নামে পরিচিত। পৃথিবীর মানচিত্রে স্থান পায় বাংলাদেশ- একটি স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে। কিন্তু সেই স্বাধীনতা আর সার্বভৌমত্ব জাতি হিসেবে আমাদের কতটুকু আছে তা আজ ব্যাপক আলোচনা-পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিষয়: বিবিধ
১২৫৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন