কষ্টে কাটে নষ্টপ্রহর, পর্ব- ২: বাংলাদেশ- আমাদের উত্তরাধিকার ও ঐতিহ্য
লিখেছেন লিখেছেন মাহরুফ চৌধুরী ০২ মে, ২০১৩, ০৭:০৬:৫৫ সকাল
দুই: বাংলাদেশ: আমাদের উত্তরাধিকার ও ঐতিহ্য
অনেক হম্বিতম্বি করে লেখাটা শুরু করলেও দ্বিতীয়পর্ব লিখতে এসে কিছুটা হোঁচট খেলাম। বুঝতে পারছি না কোথা থেকে শুরু করব, আর কি ভাবে পর্যায়ক্রমে আলোচনার গভীরে প্রবেশ করব। সে যাই হোক, ভাবছি প্রশ্নটির মাঝে যে দু’টো শব্দ চাবিকাঠি হিসেবে এসেছে তা নিয়ে আগে আলাপ করা দরকার। সে হিসেবে প্রথমেই আসে বাংলাদেশের প্রসঙ্গ। আমরা যে বাংলাদেশের কথা এখানে বলছি, সেদেশেই আমাদেরকে আমাদের উত্তরাধিকার ও ঐতিহ্যকে ধারণ করতে হবে এবং সেই উত্তরাধিকার ও ঐতিহ্য আবহনের মধ্যে দিয়েই আমাদের আত্মপরিচয়ের পর্বে আমাদেরকে যেতে হবে।
বাংলাদেশ নামক ভূখন্ডটিতে বসবাস করে একটি সংকর জাতি। তাই আমাদের বহুবর্ণিল উত্তরাধিকার ও ঐতিহ্যকে স্বীকার করে নিয়েই আমাদেরকে সমৃদ্ধির পথে এগুতে হবে। এদেশের ভূমিপুত্র যেমন আমরা, তেমনি আমাদের রক্তে প্রবহমান আছে বিভিন্ন জাতির রক্তধারা। এ ঐতিহাসিক সত্যকে অস্বীকার করার জো আমাদের নেই। কিন্তু দু:খজনকভাবে সত্য হলো এদেশটি স্বাধিনতা-র্পূব কালে একটি ব্যতিক্রম ছাড়া সব সময়ই শাসিত হয়েছে বহিরাগতদের দ্বারা যারা এদেশকে তাদের দেশ হিসেবে গ্রহণ করেছে, কিংবা বিদেশীদের দ্বারা যারা এদেশকে তাদের উপনিবেশ ভেবেছে। তাই স্ব-শাসনের উত্তরাধিকার আমাদের অতি অল্পকালের।
ঐতিহাসিকভাবে হিন্দু, বৌদ্ধ ও মুসলিম শাসন এবং সংস্কৃতির উত্তরাধিকার নিয়েই বাংলাদেশে গড়ে উঠেছে একটি অসম্প্রদায়িক জাতি। তাইতো দেশের আনাচে কানাচে সব ধর্মের লোকজন পাশাপাশি বসবাস করেছে একই গ্রামে, একে অন্যের ধর্মীয় ও সামাজিক আচার-অনুষ্ঠানে ছিল সহযোগী। আজও নস্টালজিক আমেজে মানুষের মনপ্রাণ উতালা হয়ে ওঠে যখন ‘আগে কী সুন্দর দিন কাটাইতাম’ গানটি শুনে। উল্লেখ্য যে, একজন সৃজনশীল প্রতিভা হিসেবে কবি কাজী নজরুল ইসলাম এই তিন উত্তরাধিকার ও ঐতিহ্যকে সম্মিলিত করতে সক্ষম হয়েছিলেন তাঁর সহিত্যের মধ্যে। আমাদের ভুললে চলবে না যে, এদেশ আমার, আপনার এবং সবার।
সাম্প্রতিক বিশ্বময় একটি উদ্বেগজনক বিষয় লক্ষণীয় যে, ‘সংস্কৃতি-ভিত্তিক’ (Culture-based) আত্মপরিচয়ের রাজনীতির কারণে বৃহত্তর সমাজ-কাঠামো ভেঙ্গে পড়ছে, এবং ভাবাদর্শ (Ideology) তার অবস্থান হারায়, লোকজন ফিরে যায় তাদের অধিকতর আদিম আত্মপরিচয়ে (Primal Identity) [Moynihan, 1993:V]। ‘আদিম আত্মপরিচয়’-এর ধারণটি আরেকটু পরিস্কার হয়ে উঠবে যদি আমরা নিচের উদ্ধৃতিটি মনোযোগের সাথে লক্ষ্য করি:
‘True identity is the balanced combination of both primal identity and domestic identity. While these two forms of identity may seem incompatible, they are in fact quite symbiotic. The one cannot succeed without the successful application of the other. Primal identity without domestic identity is like a soul without a body, and domestic identity without primal identity is like the body without soul. While the one gives life to the others, the other gives form to the otherwise formless life. The trick is in realizing that domestic identity is the opportunities to express the primal personality. Whilst it defines you from the outside-in, it can also be seen as a projection of that which lies within.
Perhaps the best way to explain it is in terms of clothing. When a person sees you one of the first things they see are the clothes you wear. This gives them an impression of who you are. It identifies you from the outside-in. Too often what we wear is decided for us. Dress codes, uniforms and the like serve to identify us in terms that we do not always choose. This is the consequence of being too defined by domestic identity. On the other extreme we could wear nothing at all. This would be the same as being solely defined by primal identity, with no reference to domestic identity. Our pure essence would be all that we would present. But somewhere in the middle there is a balance – the solution of true identity.
This balance is when we choose our clothes to suit our mood. When we decide to go out, and we take a moment to decide how we feel and what message we want to send, then we choose the clothes to suit that mood, to send that message. Then, when someone sees us, and they see the clothes that we are wearing, then they not only see us from the outside, but they see a projection of what lies beneath- our mindset, our feelings, our mood. Now, not only do our clothes define us from the outside-in, but they themselves are defined from the inside-out.
This is true identity- when we look as we feel- when the outside represents the inside. This should be our goal in life- to use domestic identity to express our primal identity. When we take the time to discover our primal personality, then we can shape our domestic identity around that. Rather than living a life with no form, or a form with no life, we can actually create our true identity by using our life to shape our form. When that which is within defines how we appear on the outside, then we ride ourselves of the identity crisis that so many face. We eliminate the endless anxieties and stresses of trying to juggle two different lives at the same time. We can eliminate the need for masks and fronts, choosing instead to live a more truthful, thorough life. When our outer truth is the manifestation of our inner truth, then we have found that balance. The we have discovered our true identity’ [Owens, 2011:85-86].
প্রিয় পাঠক, উপরে উদ্ধৃতিটি অনেক দীর্ঘ হলেও অন্য পর্বের আলোচনার গতি-প্রকৃতি এবং তাৎপর্য অনুধাবনে এটি বেশ সহায়ক হবে বলে মনে করছি। এপর্বটি অপূর্ণাঙ্গ মনে হলেও পরিধির কারণ আজকের মতো ইতি টানছি। তবে আগামী পর্বে আলোচনায় যোগসূত্র রচনা করে একে পূর্ণতা দেয়া চেষ্টা করব। সে যাই হোক, আধুনিকতার দুর্নাম রয়েছে কর্তৃত্বের দীর্ঘমেয়াদী নানা ব্যবস্থার। জনসাধারণের প্রয়োজন আত্মপরিচয়ের নতুন নতুন উৎসের, সুসংহত সম্প্রদায়ের নিত্য নতুন রূপ। বর্তমান প্রেক্ষাপটেই আমাদেরকে খুঁজে নিতে হবে আমাদের আত্মপরিচয় এবং সে পরিচয়ে যেন মেলবদ্ধ হয় সমাজের সকল শ্রেণী, পেশা, গোত্র ও সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠীর।
তথ্যসূত্র:
Moynihan, D. P.(1993). Pandaemonium: Ethnicity in international politics. Oxford: Oxford University Press.
Owens, J. T. (2011). What is life and who am i?: Fundamental principles of the primordian philosophy. AuthorHouse.
বিষয়: বিবিধ
৯৬৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন