সোহেল রানা ও ৫ বছরের মেয়ের ভাবনা

লিখেছেন লিখেছেন জীবিত যাযাবর ০৪ মে, ২০১৩, ০৪:১০:৩১ বিকাল

সোহেল রানা।

যে বিদ্যালয় মাঠে আজ শত শত লাশ নিয়ে রাখা হচ্ছে সেই বিদ্যালয়ের গর্বিত ছাত্র সোহেল রানা। গর্বিত এজন্য যে তার বিদ্যালয় আজ মানুষের সেবায় নিজের আঙ্গিনা ছেড়ে দিয়েছে।

আবার বিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও আজ গর্বিত, সোহেল রানা এই বিদ্যালয়ের নাম দেশের সীমানা পেরিয়ে আজ বিদেশে পৌঁছে দিয়েছে। সেটা যেভাবেই হোক।

সেই বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেনী পর্যন্ত লেখাপড়া করেছে সোহেল রানা। ছোট বেলা থেকে বেপরোয়া সোহেল রানা খুব দ্রুত ছাত্রলীগ (ছাত্রত্ব না থাকলেও) ও যুবলীগের শীর্ষস্থান দখল করে নেয়। সেই সাথে দখল করে নেয় এমপি মুরাদ জং এর মন। যেভাবে চুমুর পোস্টার দেখা যায় তাতে কারও বুঝতে বাকী থাকেনা তাদের সম্পর্ক কতটুকু গভীর।

একজন প্রান্তীক মানুষ আমাকে একবার বললেন, নেতার পায়ের নীচে নিজের ছবি ছাপিয়ে পোস্টার লাগিয়ে তাকে সাইন বোর্ড হিসাবে ব্যবহার করে পতিতা আর মদের ধান্ধা করার সুযোগ তৈরী করাই এদের কাজ।

তার কথা আজ বুঝলাম।

তবে এখানে ধান্ধা আরও বড়।

আর ছবি পায়ের নীচে নয়, বুকে। তাই ধান্ধা আরও বড় হওয়াই স্বাভাবিক।

আজ এতবড় ঘটনার পর প্রধানমন্ত্রী চিনেননা এমপি মুরাদ জং কে আর জং চিনেনা তার আদরের সোহেল রানাকে। অথচ নির্বাচনের সময় শুধু মুরাদ জং নয় প্রধানমন্ত্রীরও সোহেল রানাদের দরকার হয়। ফেনীতে হাজারী কি করেছে তা বাংলার মানুষ জানে, তার পরও ফেনীতে হাজারীর প্রয়োজনের কথা হাজার মানুষের সমাবেশে ঘোষনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতাদের বর্তমান অবস্থা হল ‌‌‌‌'কাজের সময় কাজী, কাজ পুরালে পাজি'।

নেতাদের দুঃসময়ে পাতি নেতারা থাকলেও, পাতিদের দুঃসময়ে নেতাদের আর পাওয়া যায়না।

৫ বছরের মেয়ের ভাবনা-

গত কয়েকদিন আগে পত্রিকায় সোহেল রানার আদালতে হাজির করার একটা ছবি ছাপা হয়। তাতে সোহেল রানার মুখে কিছুটা ব্যথা পাওয়ার ছাপ দেখা যায়। আর তার গায়ে ছিল পুলিশের একটি বুলেটপ্রুপ জেকেট।

তা দেখে আমার ৫ বছরের ছোট ভাগ্নি আমাকে যা বলল--

ভাগ্নিঃ মামু, এই পুলিশটা কি ব্যথা পাইছে?

আমিঃ এটা পুলিশ না, চোর।

ভাগ্নিঃ ও কি এখন পুলিশ হয়ে গেছে?

আমিঃ না, আম্মু।

ভাগ্নিঃ তাহলে পুলিশের পোশাক পরে আছে যে?

আমিঃ (পুরো ব্যখ্যা করলাম) টিভির মধ্যে একটা বিল্ডিং ভেঙ্গে অনেক লোক মারা গেছে তুমি দেখছোনা? এই লোক হল সেই বিল্ডিং এর মালিক, সে সেদিন লোকদেরকে জোর করে সেই বিল্ডিং এ ঢুকিয়ে তাদেরকে মেরে ফেলে। আর তাকে যাতে কেউ গুলি করে মারতে না পারে এজন্য পুলিশ তাকে এ জেকেট পরিয়েছে।

ভাগ্নিঃ ওকে তো মেরে ফেলা দরকার, পুলিশ ওকে মারছেনা কেন? ও এত মানুষ মেরেছে তাকে আবার পুলিশের পোশাক দেয়া হল কেন? তাকে মানুষরা মেরে ফেললনা কেন?

আমার কাছে এসকল প্রশ্নের কোন জবাব ছিলনা, দিতে পারিনি। কি জবাব দিব বলেন?

বিষয়: বিবিধ

১৫০৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File