বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্প চলে যাচ্ছে ভারতের দখলে!!
লিখেছেন লিখেছেন সাদিয়া পারভীন হাবিবা ০২ জুলাই, ২০১৩, ০৬:৩১:৩০ সন্ধ্যা
বাংলাদেশের গার্মেন্টস্ শিল্পের পুর্ণ দখল নিচ্ছে ভারত:-
~~~১) ভারতের অর্থে পরিচালিতে এনজিও এবং সন্ত্রাসীরাই পোশাক কারখানাগুলোতে ভাংচুর এবং আগুন দিচ্ছে এবং মালিকদের পথের ফকির করে সেগুলো বিক্রি করতে বাধ্য করছে। বিশাল অর্থের বিনিময়ে এই কাজে তাদের সাহায্য করছে স্থানীয় প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতারা। এরপর কৌশলে সেই কারখানাগুলো কিনে নিচ্ছে ভারত।
~~~২) ভাংচুরের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট কারখানার জেনারেল ম্যানেজার, প্রোডাকশন ম্যানেজার, অ্যাকাউন্টস ম্যানেজার, মার্চেন্ডাইজারের মত পদে কর্মরতদের ৮০ শতাংশই বিদেশী। এদের মধ্যে ৭০ শতাংশ ভারতীয় নাগরিক।
~~~৩ ) বিগত ৫ বছরে বন্ধ হয়ে যাওয়া প্রায় ১৫০০ পোশাক কারখানা প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে কিনে নিয়েছে ভারতীয়রা।
~~~৪ ) ভারতীয় মালিকরা মেশিন আধুনায়িকায়ন করে ৮০-৯০ ভাগ বাংলাদেশী শ্রমিককে ছাটাই করে তার স্থলে ভারতীয় শ্রমিক নিয়োগ দিচ্ছে।
~~~৫) দেশে তালিকাভুক্ত বায়িং হাউসের সংখ্যা ৮৯১।এর শতকরা ৯০ ভাগ ভারতীয়দের দখলে।
~~~৬ ) পোশাক কারখানাগুলোর গুরুত্বপুর্ন পদগুলোতে কর্মরত ভারতীয়দের সংখ্যা প্রায় ১৫০০।এরাই সবকিছু নিয়ন্ত্রন করছে।
রিপোর্টটি বিস্তারিত নীচে লিংকসহ দেওয়া হলঃ
--------------------------------------------------------------
~~~ ভারতের দখলে চলে যাচ্ছে দেশের তৈরি পোশাক শিল্প। ভারতীয় বংশোদ্ভূত বৃটিশ, আমেরিকান ও কানাডিয়ান নাগরিকরা অস্থিরতা সৃষ্টির মাধ্যমে এসব পোশাক কারখানা দখলে নিচ্ছেন। গত এক বছরে অর্ধশতাধিক বৃহৎ তৈরি পোশাক কারখানার মালিকানা বদল হয়েছে। এসব কারখানা থেকে ৮০-৯০ ভাগ বাংলাদেশী শ্রমিক ছাঁটাই হয়েছে। পরিকল্পিতভাবে অস্থিরতার মাধ্যমে বন্ধ থাকা আরো শতাধিক কারখানা ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্যবসায়ীরা কিনে নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
~~~সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বাংলাদেশের গার্মেন্ট সেক্টর দখলে নিতে রীতিমতো আটঘাট বেঁধে মাঠে নেমেছেন ভারতীয় ব্যবসায়ীরা। নিজস্ব এজেন্টদের মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে শ্রমিক অসন্তোষ ছড়িয়ে দিয়ে তারা একে একে দখল করে নিচ্ছে বড় বড় গ্রুপের পোশাক কারখানাগুলো। সংশ্লিষ্টরা জানায়, কয়েক বছর ধরে সাভার, আশুলিয়া, জয়দেবপুর ও কাঁচপুর এলাকায় গার্মেন্ট কারখানাগুলোয় শ্রমিক অসন্তোষ ও নাশকতা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে গেছে। নিয়মিত বেতন-ভাতা পরিশোধ করে এবং কাজের পরিবেশও বেশ ভালো, এমন সব কারখানা ও ভাংচুরের শিকার হয়েছে।(vp)
~~~অনুসন্ধানে দেখা গেছে, এসব এলাকার স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা, এনজিও কর্মী, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ চক্র এবং ক্ষেত্রবিশেষে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরাও এসব ভাংচুরে ইন্ধন দিয়ে থাকেন। এসব ভাংচুরের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট কারখানার জেনারেল ম্যানেজার, প্রোডাকশন ম্যানেজার, অ্যাকাউন্টস ম্যানেজার, মার্চেন্ডাইজারের মতো গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সংশ্লিষ্টতারও প্রমাণ মিলেছে। মধ্য সারির ম্যানেজমেন্টের এসব পদে কর্মরতদের ৮০ শতাংশই বিদেশী। এদের মধ্যে ৭০ শতাংশ ভারতীয় নাগরিক। এভাবে পরিকল্পিতভাবে অস্থিরতা সৃষ্টি করে ইতোমধ্যে এসকিউ, ক্রিস্টাল, মাস্টার্ড, হলিউড, শান্তা, রোজ, ফরচুনা, ট্রাস্ট, এজাক্স, শাহরিয়ার, স্টারলি ও ইউনিয়নের মতো দেশসেরা সব গার্মেন্ট ক্রয় করে নিয়েছে। বিক্রির কথাবার্তা চলছে আরো শতাধিক কারখানার। বিক্রি উপক্রম এসব কারখানার ক্রেতারাও বিদেশী বলে জানা গেছে।
~~~ সূত্র আরো জানায়, বর্তমানে প্রায় পাঁচ হাজার তৈরি পোশাক কারখানায় ২২ হাজারের মতো বিদেশী কর্মকর্তা গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মরত রয়েছে। এদের মধ্যে দেড় হাজারের বেশি ভারতীয় নাগরিক। যোগাযোগ ও মার্কেটিংয়ে দক্ষ হওয়ায় বাংলাদেশের গার্মেন্ট শিল্প মূলত তাদেরই নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই উদ্যোক্তারা পরিচালিত হন তাদের তৈরি করা ছক অনুযায়ী। এলডিসি বা স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বাংলাদেশ যে ভারতের তুলনায় বাড়তি সুবিধা পাচ্ছে, তার সবই ভারতীয়দের নখদর্পণে। তারাই মূলত ছক আঁকেন বাংলাদেশের সেরা কারখানাগুলোকে কীভাবে ভারতীয়দের দখলে নেয়া হবে। তারাই বিদেশে অবস্থানরত ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্যবসায়িক সম্ভাবনাগুলো জানিয়ে কারখানা কিনে নিতে উৎসাহিত করেন। মালিকানা পরিবর্তন হওয়ার আগে বিভিন্ন অজুহাতে কারখানাগুলো সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়। নতুন মালিক এসে এগুলোর আধুনিকায়ন করেন উন্নত মেশিনারি দিয়ে। এরপর বাংলাদেশী ৮০- ৯০ ভাগ শ্রমিক ছাঁটাই করে ভারতীয় শ্রমিকদের নিয়োগ দেয়া হয় এসব কারখানায়।
~~~ বিজিএমইএ সূত্র জানিয়েছে, বর্তমানে তাদের তালিকাভুক্ত বায়িং হাউজের সংখ্যা ৮৯১টি। এর বাইরে আরো কয়েকশ বায়িং হাউস আছে। বায়িং হাউজগুলোর ৮০ থেকে ৯০ ভাগই নিয়ন্ত্রণ করেন ভারতীয় নাগরিকরা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নগরীর অভিজাত এলাকাগুলোতে বাড়ি ভাড়া নিয়ে বায়িং হাউসের রমরমা ব্যবসা করছেন তারা। বিভিন্ন সময় পর্যটক হিসেবে এরা বাংলাদেশে এলেও আর ফিরে যান না। বিদেশী বায়ারদের হাতে নিয়ে তারা এক রকম জিম্মি করে ফেলেছেন বাংলাদেশের পোশাক খাতকে।
~~~ সূত্র আরো জানায়, দেশের প্রায় ৫ হাজার গার্মেন্ট ফ্যাক্টরির মধ্যে বিশ্বমন্দা, গ্যাস ও বিদ্যুৎ সঙ্কটে দেড় হাজার কারখানা ইতোমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে। এসব কারখানা ভারতীয়রা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ক্রয় করে নিয়েছে। এভাবে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের বাজার চলে যাচ্ছে ভারতের হাতে। বাংলাদেশ ভারতীয় পণ্যের কলোনীতে পরিণত হচ্ছে।
~~~ বিজিএমইএ সূত্র আরো নিশ্চিত করেছে, দেশে এখন পর্যন্ত দক্ষ ফ্যাশন ডিজাইনার ও মার্চেন্ডাইজার তৈরির কোনো সরকারি ইন্সটিটিউট নেই। বিজিএমইএর নিজস্ব^ একটি ইন্সটিটিউট থেকে বছরে আড়াই হাজার প্রশিক্ষিত ফ্যাশন ডিজাইনার ও টেকনিশিয়ান বের হলেও চাহিদা রয়েছে এর দ্বিগুণ। ফলে বাধ্য হয়েই বিদেশী ফ্যাশন ডিজাইনার নিতে হয় গার্মেন্ট মালিকদের। এ ক্ষেত্রে সরকারের উদাসীনতাকে দায়ী করেন গার্মেন্ট মালিকরা। এ প্রসঙ্গে বিজিএমইএ সাবেক সভাপতি সালাম মুর্শেদী বলেন, যোগ্য লোকের অভাবে বেশিরভাগ কারখানার মালিককেই ম্যানেজমেন্ট চালাতে হয় বিদেশীদের দিয়ে। শ্রমিকদের নিয়ন্ত্রণও থাকে তাদের হাতে।
~~~ যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশী পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার (জিএসপি) স্থগিত হওয়ায় দেশের পোশাকশিল্পে এর বড় ধরনের প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আর যুক্তরাষ্ট্র সরকার এই ঘোষণা দেয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তৎপর হয়ে উঠেছেন ভারতীয় পোশাকশিল্পের মালিকরা। ইতোমধ্যে তারা অতিরিক্ত একশ’ কোটি ডলার মূল্যের অর্ডার পেতে যাচ্ছে বলে জানা গেছে। বিশ্ববাজারে বাংলাদেশী পোশাকের শূন্যতা পূরণে এর বাজার ধরার ব্যাপারে এখন আশাবাদী ভারতীয়রা। গত শুক্রবার ভারতের টাইমস অব ইন্ডিয়ায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই ইঙ্গিত দেয়া হয়।
~~~টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়, এদিকে বিশ্ববাজারে বাংলাদেশী পোশাকের শূন্যতা তৈরি হওয়ার ফলে ক্রেতারা এখন নতুন উৎসের সন্ধান করছেন। এরই মধ্যে বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ড ওয়াল্ট ডিজনি বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি বন্ধ করেছে। যা ভারতের সামনে বিশ্বের সবচেয়ে বড় তৈরি পোশাক রফতানিকারক দেশ হিসেবে নিজেদের মেলে ধরবার দারুণ সুযোগ এনে দিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, গত কয়েকবছর ধরে স্বীকৃত আন্তর্জাতিক ক্রেতারা সস্তা শ্রমের জন্য বাংলাদেশে গেছে, যা দেশটিকে এই শিল্পে বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে সাহায্য করেছে। যদিও এখন সুপারমার্কেট চেইনসহ শীর্ষ ব্র্যান্ডগুলোও নিরাপত্তা ও শ্রমমান ইস্যুসহ রাজনৈতিক সহিংসতার কারণে বাংলাদেশকে বর্জন করতে চাইছে। এ ক্ষেত্রে তারা ভারতসহ অন্যান্য দেশগুলোকেই পছন্দ করছে।
~~~ এ বিষয়ে কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রির জেনারেল সেক্রেটারি ডি কে নায়ার বলেন, আমাদের ব্যবসায়িক সফলতার জন্যই এটাই একমাত্র পথ নয়। কিন্তু সাম্প্রতিক ঘটনাচক্রে ভারতের কাছে অর্ডারের পরিমাণ বেড়েছে। এরইমধ্যে কিছু স্থানান্তর হওয়া অর্ডারও আমরা পেয়েছি।
~~~ ভারতের জয়তি অ্যাপারেল নামে একটি পোশাক কারখানার কর্মকর্তা এইচ কে এল মাগু জানান, ভারত সামনে অতিরিক্ত আরো একশ কোটি ডলার মূল্যের অর্ডার পেতে যাচ্ছে। গত বছরের নবেম্বরে আশুলিয়ার তাজরীন ফ্যাশনে আগুনে শতাধিক এবং এপ্রিলে সাভারে রানা প্লাজা ধসে সহ¯্রাধিক শ্রমিক প্রাণ হারান। আর এই দুটি ঘটনার সূত্র ধরেই বাংলাদেশের কারখানাগুলোতে নিরাপদ কর্মপরিবেশ নেই উল্লেখ করে গত বৃহস্পতিবার জিএসপি সুবিধা স্থগিত করে যুক্তরাষ্ট্র। আশঙ্কা করা হচ্ছে যে, একই ধরনের ব্যবস্থা নিতে পারে ইউরোপীয় ইউনিয়নও (ইইউ)।
(রিপোর্টটি লিখেছেন কামাল উদ্দিন সুমন ভাই )
সৌজন্যেঃ দৈনিক সংগ্রাম
………………………………………………………………………………………….
বিষয়: বিবিধ
১৭৩৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন