তারেক কা একভি বাল ছু নেহি সাকতে হো
লিখেছেন লিখেছেন সাদিয়া পারভীন হাবিবা ২৮ মে, ২০১৩, ০৩:৫০:৫৮ দুপুর
গোলাম মাওলা রনি :সম্পাদকের দপ্তর থেকেভদ্রলোকের কথা শুনে আমি তো থ। তিনি বললেন- তোমলোক তারেক কা একভি বাল ছ নেহি সাকতে হো- তোমরা তারেক রহমানের একটি পশমও স্পর্শ করতে পারবে না। পাশ ফিরে এক পাকিস্তানীকে জিজ্ঞাসা করলাম- তোমার কি মন্তব্য। তিনি বললেন- তুম লোক কাভি নেহি তারেককে এক বাল ভি উতার নেহি সাকতে। একটি ঘরোয়া আড্ডায় এক ভারতীয় কুটনৈতিক যা বললেন তা প্রায় হুবহু উর্দূতে বললেন- আরেক পাকিস্তানী কুটনৈতিক।
সাম্প্রতিককালে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে জারি হওয়া গ্রেফতার আদেশ কার্যকর করার জন্য ইন্টারপোলের সাহায্য চাওয়ার ব্যাপারে দেশ বিদেশের সর্বত্রই চলছে তর্ক বিতর্ক। রাস্তা ঘাট, হোটেল, রেস্তোরা, কুটনৈতিক পাড়া সহ সর্বত্রই তারেক রহমানের প্রসঙ্গ। গত ৫ বছরে এত বড় সৌভাগ্যের কবলে পড়েননি জনাব তারেক রহমান। যেনো রাতারাতি দূর্নীতির বরপুত্রের অবস্থান থেকে ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে যাচ্ছেন।
অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে- তারেক রহমানের বিরুদ্ধে জারী হওয়া গ্রেফতার আদেশ যদি কার্যকর করা যায় তবে বিএনপির রাজনীতি মারাত্মক ভাবে ধাক্কা খাবে। সে ক্ষেত্রে এ কথা শতভাগ নিশ্চিত করে বলা যায় যে বিএনপি আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লিগের শর্ত মেনে অর্থাৎ দলীয় সরকারের অধীনেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে- অন্তত জিয়া পরিবারকে রক্ষা করার জন্য। ফলে আগামী মেয়াদে আওয়ামী লীগ নিশ্চিতে সরকার গঠন করতে পারবে। সরকার দলীয় যেসব কর্তা এই গ্রেফতার অনুষ্ঠানের আয়োজক তারা এই ধরনের কথা বলে আত্মতৃপ্তির ঢেকুর তুলছেন।
অন্যদিকে, বিএনপি এবং তারেক রহমান স্বয়ং দেশে ফেরার ব্যাপারে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। আগামী সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে তার দেশে ফেরার সকল আয়োজন মহা ধুমধামে নিষ্পন্ন করার জন্য শত কোটি টাকার বাজেট সামনে নিয়ে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছে বিএনপির দেশ বিদেশের লবিস্টগণ। এক্ষেত্রে তারা বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর দেশে ফেরার ইতিহাস থেকে প্রেরণা পেয়েছেন বলে জানা গেছে। ১৯৮১ সালের ১৭ই মে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যেভাবে তৎকালীন সরকারের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে দেশে এসেছিলেন এবং পরবর্তীতে ১/১১ এর সময় লন্ডন থেকে তার দেশে ফেরার ইতিবৃত্তে সকল রাজনৈতিক হিসাব নিকাশ তছনছ হয়ে গিয়েছিলো। যেভাবে তারেক রহমান তার স্ত্রী এবং কন্যাকে নিয়ে ঢাকা বিমান বন্দরে উপস্থিত হলে রাজনৈতিক হিসাব পাল্টে যাবে বলে বিএনপির সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছেন।
তারেক রহমানকে নায়কের বেশে দেশে ফেরার সুযোগ না দেবার জন্যই সাম্প্রতিক কালে তার বিরুদ্ধে জারী হওয়া গ্রেফতারী পরোয়ানার ব্যাপারে ইন্টারপোলের সাহায্য চাওয়া হয়েছে। আর এখানেই হয়তো একটি মারাত্মক ভুল হয়ে গেছে। আওয়ামী লিগের বুদ্ধিজীবীরাই শংকা প্রকাশ করেছেন যে- ইন্টারপোল তারেকের বিরুদ্ধে কিছুই করতে পারবে না। কারন এই প্রতিষ্ঠানটি কেবল তথ্য দিয়ে সাহায্য করে। কোন গ্রেফতার অভিযানে অংশ গ্রহন করে না। তারা তাদের রেড এ্যালার্টটি ইংল্যান্ডের পুলিশ সদর দপ্তর অর্থাৎ স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড পৌঁছে দিয়ে দায়িত্ব সম্পন্ন করবে। এখন প্রশ্ন- স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড কি করবে? তারা আসলে কিছুই করবে না। বাংলাদেশের আইনে যাই থাকুন না কেনো তাতে বৃটেনের পুলিশের কিছুই আসে যায় না। তারা প্রথমে দেখবে দেশীয় আইন। তার পর আর্ন্তজাতিক আইন। উভয় আইনেই তারেক রহমানের বৃটেনে অবস্থান সম্পূর্ণ বৈধ এবং একই সঙ্গে নিরাপদ। তিনি সেখানে রাজনৈতিক আশ্রয়প্রাপ্ত ব্যক্তি। এই ধরনের মর্যাদা প্রাপ্ত সেই দেশীয় আইন এবং ১৯৫১ সালের জাতিসংঘ কনভেশন অনুযায়ী কোন অবস্থাতেই বৃটেনের বাইরে ফেরত পাঠানো যাবে না। বাংলাদেশেতো নয়ই।
এখন প্রশ্ন হলো সরকারের আইনজ্ঞগণ কি এসব জানতেন না? আমার মনে হয় জানতেন। তারপরও কেনো করলেন- এই প্রশ্নটি হয়তো মিলিয়ন ডলারের এবং উত্তরটি আরো দামী। আমার মতো সস্তামানের লোকদের এসব প্রশ্নের উত্তর খোঁজার দরকার নেই। বরং এর চেয়ে পাবলিক যে বলছে- তোমলোক তারেক কা একভি বাল ছু নেহি সাকতে হো- এসব ব্যঙ্গক্তি সহ্য করার ক্ষমতা অর্জন করাই ভালো!
বিষয়: বিবিধ
২১২০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন