ইতিহাস : পাতিহাস নাকি বিজ্ঞান (৩)
লিখেছেন লিখেছেন ফারুক হোসেন ০২ এপ্রিল, ২০১৪, ০৩:২২:৩৩ দুপুর
আজ লিখব ইতিহাসের সময় কাল নির্ধারনে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির ব্যবহার এবং কতটুকু সঠিকভাবে সময় কাল নির্ধারন হয়ে থাকে সেটা নিয়ে।
তেজষ্ক্রিয় কার্বন (C-14) ডেটিং পদ্ধতির ব্যবহার অতি প্রাচীন পান্ডুলিপি , বস্ত , স্থাপনার বয়স নির্ধারনে ঐতিহাসিক ও প্রত্নতত্ববীদদের মাঝে অত্যন্ত জনপ্রিয়। তেজষ্ক্রিয় কার্বন (C-14) ডেটিং পদ্ধতি কতটুকু বিশ্বাসযোগ্য?
তেজষ্ক্রিয় কার্বন ডেটিং পদ্ধতির উদ্ভাবক এফ লিবি ঐতিহাসিক বা প্রত্নতত্ববীদ ছিলেন না। অতি প্রাচীন পান্ডুলিপি , বস্ত , স্থাপনার বয়স নির্ধারনে তেজষ্ক্রিয় কার্বন (C-14) ডেটিং পদ্ধতির ব্যবহারে তার কোন সন্দেহ না থাকলে ও প্রত্নতত্ববীদ ভ্লাদিমির মিলয়সিস প্রমান করেছেন তেজষ্ক্রিয় কার্বন (C-14) ডেটিং পদ্ধতির মাধ্যমে যে বয়স নির্ধারন করা হয় তা মোটেই সঠিক নয় এবং সাধারনত ভুলের পরিমান ১০০০ থেকে ২০০০ বছর।
ওলেইনিকভের মতে বর্তমানের রাজপথ , কলকারখানা , কাঠ তেল গ্যাস পোড়ানো থেকে নির্গত কার্বনের সাথে কসমিক পার্টিকেলের বিক্রিয়ায় উৎপাদিত তেজষ্ক্রিয় কার্বন অতি প্রাচীন পান্ডুলিপি , বস্ত , স্থাপনার বয়স নির্ধারনে কি ভূমিকা রাখছে তা নিরুপন করা সম্ভব নয়। যেমন ধরুন- আমেরিকান একটি জ্যান্ত শামুকের খোলসের C-14= ১৩.৮ এর অর্থ দাড়ায় শামুকটি জ্যান্ত নয় , বরং ১২০০ বছর আগেই মারা গেছে। উত্তর আফ্রিকার একটি বুনো গোলাপের C-14= ১৪. ৭ , অর্থাৎ ৩৬০ বছর আগেই এটি মারা গেছে। অস্ট্রেলিয়ান ইউক্যলিপ্টাসের C-14= ১৬.৩১ , অর্থাৎ এটার এখনো জন্মই হয় নি , আরো ৬০০ বছর পরে এটা পৃথিবীতে জন্মাবে। একটি ফ্লোরিডার ঝিনুকের তেজষ্ক্রিয়তা মেপে পাওয়া গেছে C-14= ১৭.৪ এর মানে দাড়ায় আরো ১০৮০ বছর পরে এটাকে পৃথিবীতে পাওয়ার কথা।
বর্তমানেও যেমন তেজষ্ক্রিয় কার্বন সমভাবে সব বস্তুতে ছড়ায় না , তেমনি অতীতেও ছড়াত না। ইরানি এক গুহার নিচের স্তরের তেজষ্ক্রিয় কার্বন পদ্ধতিতে বয়স পাওয়া গেছে ৮০৬৮(৪১৫ বছর কম বা বেশি)। আর অপেক্ষাকৃত নুতন এর উপরের স্তরের বয়স ৮৬০৯ বছর (৫০০ বছর কম বা বেশি)।
Shroud of Turin বা যীশুর কাফনের কাপড় যেটাতে যীশুর প্রতিচ্ছবি আকা আছে , খৃষ্টান সম্প্রদায়ের কাছে খুবি পবিত্র। এদের বিশ্বাস Shroud of Turin ১ম শতকের বা ২০০০বছরের পুরনো। বয়স নির্ধারনের জন্য এই কাপড়ের ৩ টি টুকরো দেয়া হয় অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি , আরিজোনা ইউনিভার্সিটি এবং জুরিখ টেকনোলোজি ইনস্টিটিউটকে। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি পরীক্ষা করে রায় দেয় এটার বয়স ১০০০ বছর (১০৫০A.D) , আরিজোনা ইউনিভার্সিটি ১৩০৪ A.D এবং জুরিখ টেকনোলোজি ইনস্টিটিউট ১২৭৪ A.D। একের সাথে অন্যের সময়ের গরমিল মাত্র ৩০০ বছর।
অনেকের মতে আমরা যেটাকে ইতিহাস বলি , সেটাতে এতটাই জোচ্চুরি করা হয়েছে যে এটাকে বিজ্ঞান না বলে পাতিহাস বলাই ভাল। যারা আরো বিস্তারিত জানতে আগ্রহী , তারা রাশিয়ান সর্বোচ্চ বিজ্ঞান একাডেমির সদস্য অঙ্কের প্রফেসর আনাতোলি ফমেনকোর History:Fiction or Science বইটি পড়তে পারেন বা নিচের ভিডিওটি দেখতে পারেন।
বিষয়: বিবিধ
১১৭৮ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
The truth of science and the truth of Religion is not the same. If it PROVES otherwise,the truth of Science will be changed, however, in any way, the religious truth doesn't change! Its better to consider them as separate area!
মন্তব্য করতে লগইন করুন