ইসলামের প্রথম জমানা থেকেই হাদিস বিরোধীতার শুরু

লিখেছেন লিখেছেন ফারুক হোসেন ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, ০৯:২১:৩৫ রাত

সম্প্রতি কিছু লোক আছে যারা হাদিস মানে না , তাফসির মানে না , তার পরে আবার নিজেদের মন মত কোরানের বানীর অর্থ করে। ভাবখানা আল্লাহ নতুন করে তাদের কাছে কোরান নাজিল করছে। সেটা না করে অবশ্য উপায়ও নেই , প্রচলিত কোরান , হাদিস , তাফসির গ্রহন করলে ইসলামের যে চেহারা দাড়ায় তা তাদেরকে লজ্জায় ফেলে দেয়।

যেমন একদল আছে যারা কোরানের নাসিক - মানসুক ( আয়াত রহিত/রদকরন ) মানে না। কারন এসব মানলে ইসলামের এমন চেহারা দাড়ায় যা সভ্য সমাজে গ্রহনযোগ্য হয় না। মুস্কিল হলো সাধারন মানুষ যারা কোরান হাদিস পড়ে না তারা কিন্তু এটা জানে না। আর মোল্লারা যারা এটা জানে , তারা বিষয়টি বেমালুম চেপে গিয়ে সাধারন মানুষের সামনে নাগাড়ে মিথ্যাচার করে যায়। বিষয়টা একটু ব্যখ্যা করা যাক---------


সম্প্রতি নয় , ইসলামের শুরু থেকেই হাদিস ও তাফসির না মানা মুসলমান বিদ্যমান ছিল। এদের হাতেই ছিল ইসলামের নবীর মৃত্যু পরবর্তি শাসন ক্ষমতা। ইতিহাস থেকে জানা যায়- নবী জীবিত থাকা কালিন নবীর নির্দেশে আবুবকর ওমর সহ সকল সাহাবি তাদের কাছে রক্ষিত স্বলিখিত সকল হাদিস পুড়িয়ে ফেলেন। ওমর তার শাসনামলে সকল ধরনের হাদিস বর্ণনা ও প্রচার নিষিদ্ধ করেছিলেন। এর কারন হিসাবে তিনি বলেছিলেন মুসলমানদের জন্য আল্লাহর বই 'কোরান' যথেষ্ঠ এবং তিনি চান না মুসলমানরা পূর্বের জাতিগুলোর ন্যায় রসূলের হাদিসকে গুরুত্ব দিয়ে আল্লাহর বাণীকে গুরুত্বহীন করে ফেলুক। একারনে আমরা দেখতে পাই আবু হুরায়রা নিজেই স্বীকার করেছেন যে বেতের ভয়ে ওমরের শাসনামলে তিনি কোন হাদিস বর্ণনা করেন নি। (উল্লেখ্য আব্বাসীয় আমলে বিব্লিওক্লাজম বা সকল বই ও গ্রন্থাগার পুড়িয়ে দেয়ার কারনে ইসলামের শুরু থেকে পরবর্তী ১৫০-২০০ বছরের যে ইতিহাস আমরা জানি তার সাথে সত্যের মিল সামান্যই বলে মনে হয়)

অন্ধ বিশ্বাসের পরিবর্তে যুক্তি ও বাস্তবতার ভিত্তিতে বিচার বিশ্লেষনের মাধ্যমে ইসলামের উপর প্রতিষ্ঠিত দলটি ইতিহাসে মুতাজিলা নামে পরিচিত। বলা হয়ে থাকে ইব্রাহিম নাজ্জাম নামে এক বিখ্যাত মুতাজিলা নেতা ছিলেন , যিনি কোরানই ইসলামের একমাত্র উৎস বলে প্রচার করতেন এবং প্রচন্ডভাবে হাদিস ও সুন্নাহ বিরোধী ছিলেন। বিখ্যাত ও গুরুত্বপূর্ণ সকল মুতাজিলাই কোরান অনলি মুসলমান ছিলেন।

সুন্নি ও শিয়া সুত্রানুসারে - মুতাজিলারা 'আহলে আদল ওয়া তাওহিদ' বা 'ন্যায় বিচার ও একেশ্বরবাদী' দল নামে পরিচিত। খলিফা আল মামুনের সময় মুতাজিলা মতবাদ রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা পায় ও বিস্তার লাভ করে। কাজি আব্দুল জব্বারের মৃত্যুর সাথে মুতাজিলাদের রাজনৈতিক প্রভাবের অবসান ঘটে।

হাদিস বিরোধীতার সবচেয়ে পুরানো যে দলিল পাওয়া যায় , সেটা হলো ৭৬হিঃ/৬৯৫খৃঃ খলিফা আব্দুল মালেককে লেখা আব্দুল্লা ইবনে ইবাদের লেখা একটা চিঠি। উক্ত চিঠিতে কুফাবাসীদেরকে ভর্ৎসনা করা হয়েছে কোরানকে পরিত্যাগ করে হাদিসকে ধর্মের ভিত্তি হিসাবে গ্রহন করার জন্য।"তারা এমন একটি বইতে বিস্বাস করে যা আল্লাহর থেকে নয় , মানুষের হাত দ্বারা রচিত এবং এটাকে রসূলের বাণী বলে দাবী করে।"(Michael Cook, Muslim Dogma, Cambridge University Press, Cambridge, 1981)

আব্বাসীয় আমলে ও পরবর্তিতে সেলজুক খলিফাদের শাসনামলে হাদিস বিরোধীদের সকল বই ও গ্রন্থাগার পুড়িয়ে দেয়ার কারনে হাদিস বিরোধী লেখা পাওয়া যায় না। তবে এদের উপস্থিতী ও যুক্তি সম্পর্কে জানা যায় শরিয়া আইনের জনক ও প্রবর্তক ইমাম শাফেয়ীর বই 'জিমা আল ইলম' ও ইবনে কুতাইবার লেখা থেকে। তাদের লেখা থেকে জানা যায় তাদের সময়ে হাদীস বিরোধীতা ছিল সর্বব্যাপি এবং তাদের লেখায় তারা হাদিস বিরোধীদের যুক্তিকে খন্ডন করার চেষ্টা করেছেন।

চতুর্দশ শতাব্দির দুই স্কলার আব্দুর রহমান বিন আবু বকর সুয়ুতি (লেখক 'তাদরিব আর রাওয়ি' ১৩৭৯সাল) ও ইবনে হাজার ( লেখক 'হায়দাল-সারি' ১৩৮৩সাল) এবং বিংশ শতাব্দির পাক ভারত উপমহাদেশের সাইয়িদ আহমদ খান (১৮১৭-১৮৯৮) ও মিশরের মুহাম্মদ তৌফিক সিদকির ("al-Islam huwa ul-Qur'an Wahdahu" "Islam is the Qur'an Alone"১৯২০) লেখা পাওয়া যায়। এরা সকলেই হাদিস বিরোধী ও সমালোচক ছিলেন।

বর্তমানে পাকভারতের গুলাম মুহাম্মদ পারভেজ , ডাঃ শাব্বির , মিশরের রাশাদ খালিফা , আহম্মদ মনসুর , তুরষ্কের এডিপ ইয়ুকসেল হাদিস বিরোধী লেখা ও সমালোচনার জন্য অবদান রেখেছেন।

বিষয়: বিবিধ

২৪৩৮ বার পঠিত, ২৭ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

182162
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ০৯:২৮
বাংলার দামাল সন্তান লিখেছেন : Rose Roseধন্যবাদ Rose Rose
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ০৯:৪৮
134659
ফারুক হোসেন লিখেছেন : পড়া ও মন্টব্যের জন্য আপনাকেও ধন্যবাদ? Good Luck
182175
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ১০:১৭
চক্রবাক লিখেছেন : তথ্যমূলক পোস্ট কিন্তু, আপনার উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানার দরকার ছিল। আপনি কি এর বিরধিতা করছেন, নাকি পক্ষে বলছেন।
182181
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ১০:৩৭
শেখের পোলা লিখেছেন : কোন প্রক্ষাপটে হজরত ওমর হাদীশ পুড়িয়ে ফেলতে বলেছিলেন সেটা খতিয়ে দেখা দরকার৷ কারন এটা হজরত ওমরের হাদীশ হিসাবে, হাদীশ অমান্য কারীরা দলীল পেশ করছে৷ অথচ নবীর আনুগত্য কোন কালের মাঝে আল্লাহ সীমা বদ্ধ করেননি৷ অর্থাৎ তা কেয়ামত পর্যন্ত চলবে৷ নবীর অবর্তমানে তার আনুগত্য মানেই তার আদেশ নিষেধ, আচরণ মেনে চলা৷ তার আদেশ নিষেধই তো হাদীশ৷ তাকে বাদ দিয়ে কি আনুগত্য সম্ভব? তবে জাল হাদীশ অবশ্যই পরিত্যাজ্য৷ আর তা নিরুপনে কোরআনের দারস্থ হতে হবে বলেই মনে করি৷ ধন্যবাদ৷ আমারও আপনার পক্ষনিয়ে সন্দেহ রইল৷
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ১২:৩৮
134715
ফারুক হোসেন লিখেছেন : আমি কোরানের পক্ষের লোক। Only Quran , nothing but Quran.

১৬:৮৯. ......আমি আপনার প্রতি গ্রন্থ নাযিল করেছি যেটি এমন যে তা প্রত্যেক বস্তুর সুস্পষ্ট বর্ণনা, হেদায়েত, রহমত এবং মুসলমানদের জন্যে সুসংবাদ।
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ০৮:৩০
135113
শেখের পোলা লিখেছেন : ফারুক সাহেব, রসুলকে আনগত্য করতে হবে এমন বহু আয়াত ঐ কোরআনেই রয়েছে যা আপনি সদালাপে দেখেছেন৷ এখানে আর ঐ প্যচাল শুরু করতে চাইনা৷ শুধু বলি, আমাদের ভাষা বাংলা, সেই বাংলা বিশ্ব বিদ্যালয়েও শেখানো হয়৷ একটা আয়াত দিয়েই কোরআন বোঝা আহাম্মকি নয়কি৷ এর জন্য জীবন্ত কোরআন হলেন রসুল, তার দারস্থ হতেই হয়৷ ধন্যবাদ৷ আমি সর্বদা তর্ক এড়িয়ে চলি৷ তাই এখানেই শেষ করলাম৷
182199
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ১০:৫৯
সজল আহমেদ লিখেছেন : "শেখের পোলা" ভাইয়ের সাথে একমত পোষন করছি।
182227
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ১১:৪৮
সায়িদ মাহমুদ লিখেছেন : "ওমর তার শাসনামলে সকল ধরনের হাদিস বর্ণনা ও প্রচার নিষিদ্ধ করেছিলেন। এর কারন হিসাবে তিনি বলেছিলেন মুসলমানদের জন্য আল্লাহর বই 'কোরান' যথেষ্ঠ এবং তিনি চান না মুসলমানরা পূর্বের জাতিগুলোর ন্যায় রসূলের হাদিসকে গুরুত্ব দিয়ে আল্লাহর বাণীকে গুরুত্বহীন করে ফেলুক" ভাই আপনার এই লিখাটি হয়েছে বোমা ফাটানোর মতো। হুজুররা দেখলে আপনার আস্ত রাখবেন-না। তরপরও শুকরিয়া এতো রেয়ার একটি আইডিয়া দেওয়ার জন্য।
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ০১:৪৪
134771
ফারুক হোসেন লিখেছেন : আইডিয়াটা রেয়ার নয়। রসূলের জীবদ্দশায় তারি নির্দেশে সকল হাদিস নষ্ট করে ফেলা হয়। এমনকি শোনা যায় , সত্য মিথ্যা জানি না , রসূলের মৃত্যুশজ্জায় যখন তার কথা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল , উনি কাগজ কলম চেয়েছিলেন তার উম্মতের জন্য কিছু উপদেশ নির্দেশ লেখার জন্য। কোরানই যথেষ্ঠ এই কথা বলে উমর রসূলকে কাগজ কলম দিতে দেন নি।

কয়েকটি তথাকথিত সহিহ হাদিস -

১) ইবনে সাঈদ আল খুদরি ইরশাদ করেছেন যে আল্লাহর নবী বলেছেন : তোমরা কোরান ছাড়া আমার কোন কথা লিপিবদ্ধ করবে না। যদি কেউ কোরান ছাড়া অন্যকিছু লিখে থাকে , তবে তা মুছে ফেলবে।

২)যায়িদ ইবনে থাবিত (রসুলের মৃত্যুর ৩০ বষর পরে) মুয়াবিয়ার দরবারে রসূলের সম্পর্কে একটি গল্প বলেছিলেন। মুয়াবিয়ার গল্পটি ভালো লাগে এবং এটি লিখে রাখার আদেশ দেন। কিন্তু যায়িদ বল্লেন : রসূল আমাদেরকে আদেশ করেছেন তার কোন হাদীস কখনো না লিখতে। (ইবনে হাম্বল থেকে) এই গল্প থেকে বুঝা যায় হাদীস লেখার উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা রসূল মৃত্যুর আগে তুলে নেন নি।

৩)ইবনে সালাহ'র উলুম আল হাদীস বই তে উল্লেখ আছে - আবু হুরায়রা বলেছেন: আমরা একদিন যখন হাদীস লিখছিলাম তখন আল্লাহর রসূল এসে বল্লেন , তোমরা কি লিখছ? হাদীস , যা আমরা আপনার কাছ থেকে শুনি। তিনি বল্লেন: আল্লাহর বই ছাড়া অন্য আরেকটা বই? আবু হুরায়রা বল্লেন: আমরা যত হাদীস লিখেছিলাম , তা একত্র করে আগুনে পুড়িয়ে দিলাম।

৪) তাকঈদ আল ইলম বইতে উল্লেখ আছে- আবু সাঈদ আল খুদরি বলেছেন: আমি আল্লাহর রসূলের কাছে হাদীস লেখার জন্য অনুমতি চেয়েছিলাম কিন্তু তিনি অনুমতি দিতে অস্বীকার করেন।
182232
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ১২:০৮
মুমতাহিনা তাজরি লিখেছেন : ধন্যবাদ
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ০১:৪৬
134775
ফারুক হোসেন লিখেছেন : আপনাকেও ধন্যবাদ।
182247
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ১২:১৫
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ০১:৪৮
134777
ফারুক হোসেন লিখেছেন : ভাবুন। না ভাবলে সত্য জানবেন কিভাবে?
182278
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ১২:৫১
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ০১:৫১
134779
ফারুক হোসেন লিখেছেন : ঝিম ধইরেন না আবার...
182319
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ০২:৪০
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ০৩:০৫
134806
ফারুক হোসেন লিখেছেন : মুসলিম কারা , সেটা জানেন কী? কোরান পড়ুন। লোকের কথায় বিভ্রান্ত না হয়ে নিজের স্বীদ্ধান্ত নিজে নিন।

১০
182322
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ০২:৫৪
সঠিক ইসলাম লিখেছেন : ইবনে হাজার ( লেখক 'হায়দাল-সারি' ১৩৮৩সাল) এবং বিংশ শতাব্দির পাক ভারত উপমহাদেশের সাইয়িদ আহমদ খান (১৮১৭-১৮৯৮)হাদীস বিরোধী ছিলেন না।
১১
182323
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ০২:৫৯
সঠিক ইসলাম লিখেছেন : বর্তমানের আহলে কুরআন নামক বিভ্রান্ত দলটি মূলত দাড়িয়ে আছে শিব্বীর আহমদের মিথ্যাচারের উপর। আর রাশাদ খলিফা নিজেকে নবী দাবী করেছে। আর আপনার গুরু মজবাসারও নিজেকে নবী দাবী করেছে আবার তার মতে নবী বলতে দার্শনিকগণকেও বুঝানো হয়। তার মতে আবার আল্লাহ বলতে কোন সত্ত্বা নেই। সুতরাং আপনাদের আবলামী স্পষ্ট। আর মজবাসার আর আহমদ মনসুর যে ইসলাম বিরোধী আন্তর্জাতিক লবিং এর সাথে প্রকাশ্যে জড়িত সে প্রমাণ বহুবারই সদালাপে দেয়া হয়েছে।
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ০৩:১২
134809
ফারুক হোসেন লিখেছেন : আমি সহ কে কি বল্লো তাতে কান না দিয়ে কোরান পড়ুন। পরকালে আপনার কাজের জবাব আপনাকেই দিতে হবে। একের বোঝা অন্যে বহন করবে না।

ইব্রাহিম, লুৎ এবং অন্যান্য রসুলদের অনুসারিদেরকে কোরানে মুসলমান নামেই অভিহিত করা হয়েছে। আজকের মুসলমানদের আমরা খুব বেশি হলে মুহাম্মদের হাদিস অনুসারি (সুন্নী),আলি রাঃ এর অনুসারি (শিয়া), তথাকথিত পির, অলি বা মাযহাবের অনুসারি হিসাবে দেখিতে পাই। আমার ভয় হয় এদের বেশিরভাগই আল্লাহর সহিত শিরক এ নিয়োযিত। তাদের আশা এইসকল পির, অলি বা পয়গম্বরদের মাধ্যমে (শাফায়াৎ) তারা আল্লাহর্ নৈকট্ট লাভ করিবে , বা ক্ষমাপ্রাপ্ত হইবে বা সকল জাগতিক আশা পুর্ণ হইবে।

সুঃ আল-যুমার 39:3] জেনে রাখুন, নিষ্ঠাপূর্ণ এবাদত আল্লাহরই নিমিত্ত। যারা আল্লাহ ব্যতীত অপরকে উপাস্যরূপে গ্রহণ করে রেখেছে এবং বলে যে, আমরা তাদের এবাদত এ জন্যেই করি, যেন তারা আমাদেরকে আল্লাহর নিকটবর্তী করে দেয়। নিশ্চয় আল্লাহ তাদের মধ্যে তাদের পারস্পরিক বিরোধপূর্ণ বিষয়ের ফয়সালা করে দেবেন। আল্লাহ মিথ্যাবাদী কাফেরকে সৎপথে পরিচালিত করেন না।
১২
182329
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ০৩:১৭
সঠিক ইসলাম লিখেছেন : আহলে কুরআন বা কুরানিস্ট গ্রুপ অর্থাৎ যারা হাদীস অস্বীকার করে, তারা তাদের দাবীর
স্বপক্ষে দুটি আয়াত পেশ করে থাকে-

১. "আমি প্রত্যেক বিষয়ে স্পষ্ট বর্ণণাসহ কিতাব তোমার উপর অবতীর্ণ করলাম।"
[সূরা আন নাহল : ৮৯]

২. "কিতাবে আমি কোন কিছুই বাদ দেই নি।"
[সূরা আনআম : ৩৮]

অর্থাৎ তারা বলতে চায় কুরআনেই তো সব কিছু আছে। তাহলে আর হাদীস
মানার দরকার কি?? আসলে এইসব ভ্রান্ত কথাবার্তা বহুত আগেই পঁচে গেছে। কিন্তু কতিপয়
উজবুক অনলাইনের কল্যাণে এইসব পঁচা-বাসী দুর্গন্ধযুক্ত খাবারের ফেরী করে বেড়াচ্ছে।

প্রথম আয়াতটি নিয়ে আগে বলি। আচ্ছা, কুরআনে কি সালফিউরিক এসিড তৈরীর ফর্মুলা আছে, কিডনী প্রতিস্থাপনের নিয়ম কানুন
আছে?? উত্তর হবে নেই।
এ বিষয়ের সহজ সমাধান দিয়েছেন ইমাম রাযী (রহঃ) তাঁর 'আত-তাফসীরুল কাবীর' গ্রন্থে।
তিনি বলেন ইলম হচ্ছে দুইপ্রকার- 1. দ্বীন সংক্রান্ত ইলম 2. দ্বীন বহির্ভূত ইলম। দ্বীন সংক্রান্ত ইলম আবার দুই প্রকার- মৌলিক এবং শাখা প্রশাখা। কুরআনে দ্বীন বহির্ভূত ইলম নেই এবং দ্বীন সংক্রান্ত ইলমেরও শুধু মৌলিক অংশ আছে। আর কুরআন যেহেতু যাবতীয় দ্বীনি ইলমের মৌলিক নীতিমালা ধারণ করেছে তাই বলা হয়েছে কুরআনে সবই আছে। এই কুরআন সুন্নাহ অনুসরণের
মূলনীতি বর্ণিত আছে, ইজমা, কিয়াস, ইজতিহাদ
এবং ফিক্বহের ইঙ্গিত দেওয়া আছে। আর এ সবের সমন্বয়েই আমাদের
পুরো দ্বীনি ইলম গঠিত। এদিক থেকে কুরআনে সব বিষয়েরই বর্ণণা আছে।

আরো সহজে বুঝার জন্য
আমি একটা উদাহরণ দেই, ধরুন আপনার কাছে দুইটা মানচিত্র আছে ১টা পৃথিবীর, ১টা বাংলাদেশের। এখন বাংলাদেশের মানচিত্র
দিয়ে আপনি এদেশের আনুষঙ্গিক বিষয়গুলো যতটা অনুধাবন করবেন,
পৃথিবীর মানচিত্র দিয়ে কি ততটা অনুধাবন করবেন??
অবশ্যই পারবেন না। কারন বাংলাদেশের মানচিত্রে বাংলাদেশের যতটা ডিটেইলস থাকবে, পৃথিবীর মানচিত্রে ততটা থাকবে না। এখন কেউ
যদি পৃথিবীর মানচিত্র
নিয়ে বলে আমার মানচিত্রে সব দেশই আছে তাহলে কথাটি অবশ্যই সত্য। কেননা সবদেশের মৌলিক অবস্থান ও
সীমারেখা সেখানে আছে। কিন্তু তাই বলে এই অজুহাতে আবার কেউ যদি বাংলাদেশের মানচিত্র দেখতে অস্বীকৃতি জানায় তাহলেই সেই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

আর আল কুরআনেই
আছে-

"এবং আমি তোমার প্রতি কুরআন অবতীর্ণ করেছি, মানুষকে যা তাদের প্রতি অবতীর্ণ করা হয়েছে, তা সুস্পষ্টভাবে বুঝিয়ে দেয়ার জন্য, যাতে তারা চিন্তা করে।"
[আন নাহল : ৪৪]

এই আয়াতে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে যে রাসূল (সঃ) অন্যতম দায়িত্ব হল কুরআন ব্যাখ্যা করা। আর তাই হল হাদীস।

এবার আসা যাক দ্বিতীয় আয়াতের ব্যাপারে। এই আয়াতে কিতাব বলতে কুরআনকে বুঝানো হয় নি, বরং লাওহে মাহফুজকে বুঝানো হয়েছে। আরো উল্লেখ্য যে আয়াতটি হিজরতের
পূর্বে মক্কাতেই অবতীর্ণ হয়। আর অধিকাংশ বিধিবিধান সংক্রান্ত নাযিল
হয় মদীনাতে। যদি ঐ আয়াতের অর্থ ধরা আল কুরআন ধরা হয়, তাহলে তো মদীনায় অবতীর্ণ অংশটুকুও অপ্রয়োজনীয় মনে হবে। সেজন্য অধিকাংশ তাফসীরকারকগণ ঐ আয়াতে কিতাব
বলতে লাওহে মাহফুজকেই বুঝেছেন।

মজার ব্যাপার হল এইসব ছাল-বাকল কুরানিস্টদের সম্পর্কে রাসূল সঃ অনেক
আগেই ভবিষ্যত বাণী করে গেছেনঃ

"সাবধান! আমাকে কুরআন এবং অনুরূপ
কিছু দেওয়া হয়েছে। নিকটতম সময়েই কোন পরিতৃপ্ত ব্যক্তি আরাম
কেদারায় হেলান দিয়ে বসবে আর বলবে শুধু এ কুরআন পরিপালনই
যথেষ্ট। এর মধ্যে যা হালাল পাও, শুধু তাকেই হালাল গণ্য কর; আর যা হারাম পাও, শুধু তাকে হারাম গণ্য কর। সাবধান!
তারা যেন তোমাদের জন্য গৃহপালিত গাধা, প্রতিটি নখরবিশিষ্ট হিংস্র
প্রাণী ... ... তোমাদের জন্য হালাল না করে।"
[আবূ দাউদ]

হাদীস অস্বিকার কারী আহলে কুরআনগণ নি:সন্দেহে অমুসলিম
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ০৩:৫২
134814
ফারুক হোসেন লিখেছেন : ২:২ এ সেই কিতাব যাতে কোনই সন্দেহ নেই। পথ প্রদর্শনকারী পরহেযগারদের জন্য,

কোরান কাদের জন্য ও কিসের জন্য? পরকালে মুক্তির জন্য আল্লাহভীরুদের গাইড লাইন। পরকালে মুক্তির জন্য যা যা করা দরকার , তার সবি কোরানে আছে।

পরকালে মুক্তির জন্য সালফিউরিক এসিড তৈরীর ফর্মুলা বা কিডনী প্রতিস্থাপনের নিয়ম কানুন জানার প্রয়োজন আছে কী? অবশ্যই না। তাহলে আপনি যদি কোরানে সালফিউরিক এসিড তৈরীর ফর্মুলা বা কিডনী প্রতিস্থাপনের নিয়ম কানুন খোজ করেন , তাহলে আপনার জন্য আমি করুনাই করতে পারি।

৬:১৯ আপনি জিজ্ঞেস করুনঃ সর্ববৃহৎ সাক্ষ্যদাতা কে ? বলে দিনঃ আল্লাহ আমার ও তোমাদের মধ্যে সাক্ষী। আমার প্রতি এ কোরআন অবর্তীর্ণ হয়েছে-যাতে আমি তোমাদেরকে এবং যাদের কাছে এ কোরআন পৌঁছে সবাইকে এটা (কোরান) দিয়ে ভীতি প্রদর্শন করি। তোমরা কি সাক্ষ্য দাও যে, আল্লাহর সাথে অন্যান্য উপাস্যও রয়েছে ? আপনি বলে দিনঃ আমি এরূপ সাক্ষ্য দেব না। বলে দিনঃ তিনিই একমাত্র উপাস্য; আমি অবশ্যই তোমাদের শিরক থেকে মুক্ত।

রসূল ভবিষ্যত জানতেন না। যে কারনে আপনার দেয়া হাদিসদুটও কোরান পরিপন্থী এবং অবশ্যই মিথ্যা।

৫:১০৯ যেদিন আল্লাহ সব পয়গম্বরকে একত্রিত করবেন, অতঃপর বলবেন তোমরা কি উত্তর পেয়েছিলে? তাঁরা বলবেনঃ আমরা অবগত নই, আপনিই অদৃশ্য বিষয়ে মহাজ্ঞানী।

৬:৫০ আপনি বলুনঃ আমি তোমাদেরকে বলি না যে, আমার কাছে আল্লাহর ভান্ডার রয়েছে। তাছাড়া আমি অদৃশ্য বিষয় অবগতও নই। আমি এমন বলি না যে, আমি ফেরেশতা। আমি তো শুধু ঐ ওহীর অনুসরণ করি, যা আমার কাছে আসে। আপনি বলে দিনঃ অন্ধ ও চক্ষুমান কি সমান হতে পারে? তোমরা কি চিন্তা কর না ?

৭:১৮৮ আপনি বলে দিন, আমি আমার নিজের কল্যাণ সাধনের এবং অকল্যাণ সাধনের মালিক নই, কিন্তু যা আল্লাহ চান। আর আমি যদি গায়বের কথা জেনে নিতে পারতাম, তাহলে বহু মঙ্গল অর্জন করে নিতে পারতাম, ফলে আমার কোন অমঙ্গল কখনও হতে পারত না। আমি তো শুধুমাত্র একজন ভীতি প্রদর্শক ও সুসংবাদদাতা ঈমানদারদের জন্য।

১০:২০ বস্তুতঃ তারা বলে, তাঁর কাছে তাঁর পরওয়ারদেগারের পক্ষ থেকে কোন নির্দেশ এল না কেন? বলে দাও গায়েবের কথা আল্লাহই জানেন। আমি ও তোমাদের সাথে অপেক্ষায় রইলাম।

১১:৩১ আর আমি তোমাদেরকে বলি না যে, আমার কাছে আল্লাহর ভান্ডার রয়েছে এবং একথাও বলি না যে, আমি গায়বী খবরও জানি; একথাও বলি না যে, আমি একজন ফেরেশতা; আর তোমাদের দৃষ্টিতে যারা লাঞ্ছিত আল্লাহ তাদের কোন কল্যাণ দান করবেন না। তাদের মনের কথা আল্লাহ ভাল করেই জানেন। সুতরাং এমন কথা বললে আমি অন্যায় কারী হব।

২৭:৬৫ বলুন, আল্লাহ ব্যতীত নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলে কেউ গায়বের খবর জানে না এবং তারা জানে না যে, তারা কখন পুনরুজ্জীবিত হবে।

৪৬:৯ বলুন, আমি তো কোন নতুন রসূল নই। আমি জানি না, আমার ও তোমাদের সাথে কি ব্যবহার করা হবে। আমি কেবল তারই অনুসরণ করি, যা আমার প্রতি ওহী করা হয়। আমি স্পষ্ট সতর্ক কারী বৈ নই।

ভবিষ্যত ও ভবিষ্যতের জ্ঞান কেবল আল্লাহই জানেন এবং আমরা ততটুকুই অবগত যতটুকু আল্লাহ আয়াত/রেভেলেশনের মাধ্যমে জানিয়েছেন। (3:44, 3:179, 11:49, 12:102, 30:2, 72:26-28)

১৩
182330
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ০৩:১৭
সঠিক ইসলাম লিখেছেন : "সাবধান! আমাকে কুরআন এবং অনুরূপ
কিছু দেওয়া হয়েছে। নিকটতম সময়েই কোন পরিতৃপ্ত ব্যক্তি আরাম
কেদারায় হেলান দিয়ে বসবে আর বলবে শুধু এ কুরআন পরিপালনই
যথেষ্ট। এর মধ্যে যা হালাল পাও, শুধু তাকেই হালাল গণ্য কর; আর যা হারাম পাও, শুধু তাকে হারাম গণ্য কর। সাবধান!
তারা যেন তোমাদের জন্য গৃহপালিত গাধা, প্রতিটি নখরবিশিষ্ট হিংস্র
প্রাণী ... ... তোমাদের জন্য হালাল না করে।"
[আবূ দাউদ]
১৫
182418
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ সকাল ১০:৩৫
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ০৮:৩৪
135114
শেখের পোলা লিখেছেন : আপনি এনাকে চেনেন, মজ বাশারকেও চেনেন৷ সদালাপে কি এখনও আছেন? ওটা একপেশে হয়ে গেছে তাই যেতে মন চায়না৷ ভাল থাকেন৷ এ বিভ্রান্তি এড়িয়ে চলুন, সকলকে চলতে বলুন৷ধন্যবাদ৷
২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ সকাল ০৮:৩২
135325
সঠিক ইসলাম লিখেছেন : সদালাপে লিখার অনুমতি পাবার জন্য প্রথমে সম্পাদক বরাবর একটি লিখা মেইল করতে হয়, লিখাটি সম্পাদকের মনপুত হলেই ব্লগারকে ব্লগিং করার অনুমতি দেয়া হয়, আমি আমার যে লিখাটি সম্পাদককে মেইল করেছিলাম সেটি নিচে দিলাম, এ লিখাটি শুধুমাত্র কুরআন বিষয়ক তারপরেও এখানে একটি শব্দ (১০ম অধ্যায় - রাষ্ট্রব্যবস্থা) এর কারনে সম্পাদক আমাকে সদালাপে লিখার অনুমতি দেয়নি।
http://www.bdtomorrow.org/blog/blogdetail/detail/4803/TrueIslam/15610#.UtgYGPvdAy5

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File