সিটি কর্পারেশন নির্বাচন আর হেফাজত
লিখেছেন লিখেছেন হুতোম পেঁচা ১৭ জুন, ২০১৩, ০৪:২০:৫৮ বিকাল
দেশের চারটি বড় সিটি কর্পারেশন নির্বাচনে সরকার দলের প্রার্থীদের শোচনীয় পরাজয়ে অনেকটা ঘুরে গেছে দেশের রাজনীতির মোড়,চলছে নানা ধরনের বিশ্লেষন। জাতীয় নির্বাচনের আগে সাম্প্রতিক রাজনীতির ইস্যু গুলোতে লোকাল গর্ভমেণ্ট ইলেকশন ছিল দুটি দলের এসিড টেস্ট। বিএনপি শক্ত কাঠামোর উপর না থাকলেও সুবাধাবাদী রাজনীতির চাল গুলো ভালোই ছিল। আওয়ামী জুলুম,হলর্মাক আর্থিক কেলেংকারী রাম্পাল বিদ্যুত কেন্দ্র,পদ্মা সেতু না হওয়া সব গুলোর কার্যত কোনো প্রতিবাদ না করেও সিটি কর্পারেশন নির্বাচনে বিপুল বিজ়য়ে তাদের জনপ্রিয় দলে পরিনত করেছে। এর পেছনে কাজ করেছে অতি চালাক আওয়ামী লীগের বিরোধী শক্তিকে দমন,জুলুম আর নিপীড়নের রাজনীতি এবং অতিবামদের হাতে পড়ে রাম রাম সিদ্ধান্তগুলো।
চারটি সিটিতেই সরকার দলীয় প্রার্থীরা ব্যপক উন্নয়ন করেছেন তাদের প্রতিদন্দ্বীরাও তা বলেছে বিশেষ করে খুলনা,বরিশাল,রাজশাহীতে উন্নয়ন কাজ করার পরেও দল হিসেবে আওয়ামী লীগের ব্যর্থতার বলি হতে হয়েছে তাদের । ব্যক্তি হিসেবে লীগের মেয়ররা তাদের উন্নয়ন কাজ গুলোকে এড্রেস করতে পারলেও বিরোধীদল জাতীয় ইস্যু কে সামনে নিয়ে নির্বাচন করেছে। যেমন বরিশালকে আধুনিক নগর হিসেবে সাজাতে সাবেক মেয়র হিরনের দৃশ্যমান কাজ় প্রচুর কিন্তু বিরোধীদের আকস্মিক ঐক্য আর হেফাজতের উপর চালানো গনহত্যাসহ জাতীয় ব্যর্থতা গুলোর বলির পাঠা হতে হয়েছে তাকে। বিএনপি্র সেক্যুলারের ভেক ধরা জাতীয়তাবাদী ইসলামী জগাখিচুরী আদর্শের রাজনীতি মুলত আওয়ামী লীগ বিরোধী ভোট কাজ়ে লাগানো। তাদের রাজনীতি আপাতত সে লক্ষেই। আপাত ভাবে সিটি নির্বাচনে তুলনামুলক নতুন বোতলে পুরানো মদ ভরে দিয়ে নিজ়েদের ব্যপক জনপ্রিয় দল হিসেবে প্রচার করলেও কার্যত অতি চালাক বামদের খপ্পরে পড়া আওয়ামী লীগকে গণজ়াগরন আর শাপলা চত্বরের ফাদে ফেলে হেফাজ়তের অরাজনতিক ভোট স্থায়ী হয়েছে কোনো কিছূর বিনিময় ছাড়া।
গত ০৪ মে খালেদা জিয়ার ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম ছিল সরকারের জন্য ফাঁদ,অতি প্রগতিশীল চেতনার চালাক ব্যবসায়ীরা সে ফাঁদে পা দিয়েছে ভালোভাবেই।যদি হেফাজত অবস্থান করে টিকে যেত তাহলে ৪৮ ঘন্টা মধ্যে সে তার জোট নিয়ে কেয়ারটেকার প্রতিস্তার আন্দোলন নিয়ে হাজির হতো,প্রাথমিক ড্যামেজ় হেফাজ়তের উপর চালিয়ে সরকারের পতন স্বপ্ন দেখা আর কি আর যদি টিকে না যায় তাহলে সরকারকে কঠিন দমননীতি চালাতে হবে।তাই সে রাতে হেফাজতকে সাহায্যের আহবান (বাস্তবে ছিল না কেউ) জানিয়ে সরকারকে দমন নীতির ব্যপারে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করেছিল।যেটার ফলাফল ছিল ০৫ মে শাপলা চত্বরের গনহত্যা এবং যার লংটার্ম ফলাফল হচ্ছে কওমী মাদ্রাসা ভিত্তিক হেফাজত ইসলামীর ভোট আওয়ামী লীগের চিরতরে হারানো। তারই একটি ড্রেস রিহার্সেল ছিল সিটি কর্পারেশন নির্বাচনে সরকার দলের প্রার্থীদের শোচনীয় পরাজয়।
রাজাকার কার্ড আর মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ব্যবসার অপর নাম যে জুলুম,নির্যাতন আর জনবিচ্ছিন্নতা তা প্রমান হয়ে গিয়েছে কিন্তু রাষ্ট্রযন্ত্রকে
যে হুমকির মুখে ফেলা হচ্ছে তা থেকে যত তাড়াতাড়ি বের হওয়ার উপায় ততোই দেশ ও জাতির মংগল,আরো বেশি মংগল আওয়ামী লীগের জন্য।অতি চালাকের গলায় দড়ি আর দড়ি বাধতে জনগন কখনোই ভুল করে না।
বিষয়: বিবিধ
১২৮২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন