দেশ কোন পরিণতির পথে
লিখেছেন লিখেছেন আবু হাইছাম ২২ এপ্রিল, ২০১৩, ১১:৫৬:৫৮ সকাল
কিছুদিন থেকেই মনটা বলছিল দেশে ভয়াবহ কিছু একটা ঘটবে । গত এক বছর যাবত বন্ধুবান্ধবদের আড্ডায় প্রায়ই বলি যে, আওয়ামীলীগ যে অপরাধ করছে, ওদের অবস্থা ইহুদিদের মতোই হবে । পাথরের পেছনে লুকালে, পাথরও বলবে আমার পেছনে একটা আছে। অর্থাৎ বাঁচার কোন পথই খোলা থাকবেনা । কয়েকদিন আগে পত্রিকা খুলেই ফটিকছড়ির ভুজপুরের ঘটনা পড়ে আক্কেল গুড়ুম । আমি যে আশংকা সবসময় করি, তারই যেন কিছু নমুনা বাস্তব হয়ে দেখা দিল । কিন্তু পত্রপত্রিকায় সরকারীদলের নেতাদের হাঁকডাক, বিবৃতি দেখে মনে হয়না; তাদের কোনো বোধোদয় ঘটেছে । যত দোষ নন্দ ঘোষ – জামাত শিবির, হেফাজতে ইসলাম । অথচ ফেসবুকের কিছু ভিডিও ক্লিপ দেখে আমার এ নিশ্চিত অনুভুতি হয়েছে যে, এ ঘটনা কোন ইসলামী দল বা তাদের সমর্থকদের দিয়ে হয়নি বরং তা ছিল গ্রামবাসীদের সম্মিলিত প্রতিরোধ । কেননা ঘটনার সময় যাদের দেখা যাচ্ছিল তাদের কারো দাঁড়ি বা টুপি দেখিনি ।
দেশে যেভাবে প্রতিনিয়ত গুম, খুন, ধর্ষন; বিরোধীদলের ওপর দলন নিপীড়ন; বিনা কারণে সাধারণ মানুষকে পথেঘাটে–বাসা–অফিস থেকে ধরে নিয়ে মিথ্যা মামলা, রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন, জেল-জরিমানা চলছে – এসব দেখে মাঝে মাঝে মনে হয় – ফেরাউনের শাসন তো এর চেয়ে ঢের ভালো ছিল । আমরা যে যুগকে আইয়ামে জাহেলিয়াত বলে অভিহিত করি, তারা যদি আজকের বাংলাদেশের অবস্থা দেখতো, তারা অবশ্যই বলতো – আমরা ইসলামের বিরোধীতা কিই বা করেছি, আওয়ামীলীগ তো আমাদের ওস্তাদেরও ওস্তাদ ।
আওয়ামীলীগ যাদের দুষ্ট বুদ্ধিতে ক্ষমতাকে চিরন্তন করার জন্য অপরাধের মাত্রা দিনদিন বাড়িয়ে চলছে, তারা মূল ব্যাক্তিকে ভালোভাবেই বুঝাতে সক্ষম হয়েছে যে – তাদের সামনে জুলুম-নির্যাতন ছাড়া দ্বিতীয় কোন ভালো পথ খোলা নেই; সুতরাং ক্ষমতার লিপ্সায় ভালোমন্দের সাধারণ বোধশক্তিটুকুও তারা হারিয়ে ফেলেছে । কিন্তু বর্তমান পৃথিবীর ইতিহাস বলে, সামান্য ভালো কাজ করেও বহুদল জনগণের ভোটে বারবার ক্ষমতায় এসেছে । আওয়ামীলীগে কি একটা ভালো লোকও নেই; যে তার নেত্রীকে ভালো পরামর্শ দিবে ?
যুগে যুগে ইতিহাসের ঘটনা তো বটেই, অতি সাম্প্রতিক ঘটে যাওয়া লিবিয়া, মিশর, তিউনিশিয়া ও তুরস্কসহ বিভিন্ন দেশের ঘটনাবলী পরিষ্কার সাক্ষ্য দিচ্ছে যে স্বৈরাচার ও ইসলামের বিরোধীরা যত শক্তিশালীই হোক না কেন, তাদের উপায়-উপকরণ যত বেশীই হোক না কেন, দুনিয়ার ক্ষমতাধর শক্তিগুলো যত সাহায্য-সহযোগিতাই করুক না কেন; সাধারণ জনতার জাগরণ কেউই বেশী সময় ঠেকিয়ে রাখতে পারেনি । এমন পতন হয়েছে যে, তাদের নাম নেয়ার পর্যন্ত কেউ নেই । তাদের সুবিধা ভোগীরাও নিজেদের এমনভাবে লুকিয়ে ফেলেছে; মনে হয়না যে তাদের পক্ষে কখনো কেউ ছিল । কোথায় আজ গাদ্দাফী ? কোথায় আজ হোছনী মোবারক ? সেদিন আর বেশী দেরী নেই যখন বলা হবে - কোথায় আজ শেখ হাছিনা ?
এতকিছুর পরও আওয়ামীলীগররা কি জনগণের পালস বুঝতে পারছে না ? নাকি অতীতের স্বৈরাচারীদের মতই মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে নিজেদের অপরাধগুলোকে সময়ের প্রয়োজন হিসেবে জরুরত মনে করছে ? যাই মনে করুক না কেন, চোখ বন্ধ করলেই তো আর প্রলয় বন্ধ হবে না । আমার তো মনে হয়, এভাবে চলতে থাকলে, আওয়ামীলীগ যদি নিজেদের ভুল না বুঝে, তাহলে হয়তো অচিরেই পুরো বাংলাদেশটাই ফটিকছড়ি হয়ে যাবে । আওয়ামীলীগের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাবে । পরবর্তী বংশধররা ইতিহাসের পাতায় পড়বে, আওয়ামীলীগ নামে এদেশে এক স্বৈরতন্ত্রী ডাইনোসরের উদ্ভব হয়েছিল, যাদের অনন্ত ক্ষুধা সর্ব্ব্যপী ধ্বংস ডেকে এনেছিল, এক ভয়াবহ জনতার ঝড়ে বিপর্যস্ত হয়ে বিলুপ্ত হয়েছিল ।
বিষয়: রাজনীতি
৯৯৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন