কামারুজ্জামানরা একদিনে তৈরী হননি

লিখেছেন লিখেছেন রায়ান মাসরুর ০৬ নভেম্বর, ২০১৪, ১২:৫২:৩৫ রাত



খুব জানতে ইচ্ছে করে কতদিন কত সময়

ব্যয় করে সংগঠন একজন কামারুজ্জামান বা একজন কাদের মোল্লার মতো নেতা তৈরী করেছে।

ছাত্রশিবিরের সাথে ভালো সম্পর্ক আমার স্কুল জীবন থেকে। স্কুল দায়িত্ব নিয়ে মাঝে মাঝে টিফিনে ছাত্রদের হাদীসের পাঠ, পাঠক ফোরামের সভায় ভালো মানুষ হবার শপথ করতাম।

সংগঠনের দায়িত্বশীলরা বলতেন তুমি যখন কাউকে আল্লাহর দ্বীনের দাওয়াত দেয়ার কথা ভাবো তখন আল্লাহর কাছে প্রার্থণা কর। তিনি সহজ করে দেবেন।

রাসূল (সাঃ) হযরত উমর ও আবু জেহেলের মাঝ থেকে কোন একজনকে ইসলামের দাওয়াত কবুল করার জন্য আল্লাহর সাহায্য চেয়েছেন। রাসুলের (সাঃ) দোয়া কবুল হল। সেসময়ের সবচেয়ে প্রভাবশালী হযরত উমর (রাঃ)কে আল্লাহ তার দ্বীনের জন্য কবুল করলেন।

ইসলামী আন্দোলনের নেতৃবৃন্দকে হত্যার ষড়যন্ত্রটা শুধু বাংলাদেশেই নয়। মিশরের কারাগারে ফাঁসির দন্ড নিয়ে অপেক্ষা করছেন ইসলামপন্থী দল মুসলিম ব্রাদারহুডের প্রধান ডঃ বদীই, ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট মুরসীসহ সহস্রাধিক নেতাকর্মী। সেখানে এমনও মা রয়েছেন যার ৫ সন্তানের বিরুদ্ধে মৃত্যুদন্ডাদেশ হয়ে আছে।

কারা খুন হচ্ছেন, চোখ বন্ধ করে ভাবতেই বুকটা কেঁপে উঠে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রনেতা যিনি সমাজতান্ত্রিক ছাত্র আন্দোলনের কর্মী ছিলেন, পরে জামায়াতে যোগ দেয়া তুখোর ছাত্রনেতা আবদুল কাদের মোল্লাকে হত্যা করা হয়। মৃত্যু পরোয়ানা নিয়ে ফাঁসির মঞ্চে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিয়ে আছেন জামায়াতের সবচেয়ে ঠান্ডা মাথার মেধাবী বলে যার সুনাম রয়েছে- দলের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল কামারুজ্জামান। বুদ্ধিজীবি, চিন্তাবিদ যেভাবেই বিশেষায়িত করা হোক না কেন তাতে ভুল হবেনা।

পরের তালিকায় আসছেন একজন সফল উদ্দোক্তা- একজন স্বপ্নবাজ- সাংস্কৃতিক কান্ডারী মীর কাশেম আলী, অকোতুভয় সংগ্রামী আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ, এটিএম আজহারুল ইসলাম, গণমানুষের রায়ে যিনি বারবার জনপ্রতিনিধি হয়ে বৃদ্ধবয়সে কারাপ্রকোষ্টে নিপিড়িত মাওলানা আবদুস সোবহান আর আমাদের সবার ভালোবাসার ওড়নাজালে জড়িয়ে যাকে নিয়ে আমরা গল্পবুনি, যার সততার কথা মন্ত্রীপরিষদেও মুখরিত ছিল মজলুম আমীরে জামায়াত মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী।

কারা নির্যাতনে ইতিমধ্যেই আমাদের মাঝ থেকে বিদায় নিয়েছেন সাবেক আমীরে জামায়াত অধ্যাপক গোলাম আযম, বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন সিনিয়র নায়েবে আমীর আবুল কালাম মুহাম্মদ ইউসুফ। যাকে আমৃত্যু কারাগারের সাজা দিয়ে কোরআনের মাঠ থেকে অগণিত শ্রোতাদের বঞ্চিত করা হয়েছে সেই বিশ্বনন্দিত মুফাসসির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী।

এক থেকে ১০ পর্যন্ত উচ্চ পর্যায়ের এতোগুলো নেতাকে হত্যা করাটা অবশ্যই ছোট কোন পরিকল্পনা থেকে নয়। গোটা জাতিকে তা ভাবতে হবে। স্পর্শকাতর একটি ইস্যুতে পৃথিবীর দেশে দেশে যারা সমাদৃত তাদেরকে মিথ্যে অভিযোগে সাজা দিচ্ছে ফ্যাসিবাদী এক দুঃশাসক। রক্তই যার নেশা। কলংকতিলক মুছে দিতেই তারা নাকি এসব করছে। আর কত নেতাকে হত্যা করলে তোমাদের কলংক মুছে যাবে খুব জানতে ইচ্ছে করে।

ঘুমন্ত জাতি কি জাগবেনা তবু্ও।


সংগঠনের আজকের যে অবস্থান, তাতে এই শীর্ষনেতাদের অবদান অবশ্যই স্বর্ণোজ্বল। তাই বলেছিলাম কত সময় লাগলে এমন একজন নেতা পাওয়া যায়। টাকা খরচ করলে মিথ্যে স্বাক্ষী পাওয়া যায়, কিন্তু টাকা খরচ করে কেউ সত্য কিনতে পারেনা। সত্য থাকে আদর্শের সাথে যা কখনো আপোষ করেনা মৃত্যুর সাথে।

কামারুজ্জামানরা একদিনে তৈরী হয়নি, অগনিত রাত, অসংখ্য প্রশিক্ষণ, কর্মশালা, ধৈয্যের পরাকাষ্ঠা দেখিয়ে তিলে তিলে এগিয়ে যাওয়া কর্মীদের মাঝ থেকেই খুঁজে বের করা হয়েছে এমন কামারুজ্জামান, কাদের মোল্লাদের। একজন মেজর বা সচিব যেমন হুট করে হয়ে যেতে পারেননা, রাষ্ট্র তাকে গড়ে তোলে তিলে তিলে। ঠিক তেমনি ইসলামী আন্দোলন কোন রেডিমেট নেতাকে চেয়ারে বসায় না। আদর্শবাদী দল ভাবে তার আগামী ১০০ বছর আর ভৌগলিক রাজনীতি নিয়ে আর তোমরা ভাবো ক্ষমতার ৫বছর কিভাবে ভিশন টুয়েন্টি ওয়ানে গিয়ে গড়ায়।

আল্লাহ ইয়াজিদকে পৃথিবীতে সম্মানিত হতে দেননি। তার শাসনও ছিল কঠোর, জুলুমবাজী আর প্রতারণার। কারবালায় রাসুলের (সাঃ) দৌহিত্র ইমাম হোসেনের রক্ত আমাদের ঈমানকে বাড়িয়ে দিয়েছে অনেক বেশি। ইমাম হোসেনের রক্ত ফিনকি দিয়ে গড়িয়ে পড়েছিল মরুধুলোয়। কিন্তু সে লাল রক্ত চকচকে বালিতে মিশে যায়নি। তার শান আজও সুরভিত করে মুক্তিকামী তরুনদের। জালিমের বিদায় আল্লাহ প্রায়ই অত্যন্ত স্মরণীয় করে রেখেছেন।

রহম কর হে প্রভূ। আমরা যে তোমার সাহায্য ছাড়া পথ চলার সাহস রাখিনা। সীমালংঘণকারীদের হাত থেকে তুমি আমাদের রক্ষ্যা কর। জানি হয়তো এসময়ে নফল ইবাদতে মশগুল রয়েছেন মৃত্যুর পরোয়ানা পাওয়া আমাদের ভালোবাসার আরেক নাম কামারুজ্জামান।

ওগো রব যদি এটাই তোমার চূড়ান্ত ফায়সালা হয় তার জন্য সবকিছুই সহজ করে দিও হে পরওয়ারদিগার।



বিষয়: বিবিধ

১৪৪৫ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

281609
০৬ নভেম্বর ২০১৪ রাত ০১:১১
সন্ধাতারা লিখেছেন : It is very touchy n painful. When Muslim gets up to protest against this sorts of crime. Jajakallahu khair for your valuable writing.
০৬ নভেম্বর ২০১৪ রাত ০২:০৬
225178
রায়ান মাসরুর লিখেছেন : ধন্যবাদ
281612
০৬ নভেম্বর ২০১৪ রাত ০১:২৭
স্বপন২ লিখেছেন : লেখা হৃদ্বয় ছুঁয়ে যায়।
০৬ নভেম্বর ২০১৪ রাত ০২:০৬
225177
রায়ান মাসরুর লিখেছেন : ধন্যবাদ
281641
০৬ নভেম্বর ২০১৪ রাত ০৪:৪১
কাহাফ লিখেছেন :
বর্তমান কঠিন এই পরিস্হিতি দেখে মন্তব্যের ভাষাও হারিয়ে যায়!
আল্লাহ তুমি জুলুমের অবসান ঘটাও!!!
281671
০৬ নভেম্বর ২০১৪ সকাল ০৮:২৮
মামুন লিখেছেন : আল্লাহপাক সব দেখছেন। তিনি সব কিছুই সহজ করে দিবেন।
ধন্যবাদ আপনাকে। Rose Rose
281889
০৭ নভেম্বর ২০১৪ রাত ০১:৫৭
নিশা৩ লিখেছেন : রিদয় নিংরানো এই লেখাটি যেন আমাদের ঘুমন্ত বিবেককে জাগ্রত করে।
281896
০৭ নভেম্বর ২০১৪ রাত ০৩:১৮
লজিকাল ভাইছা লিখেছেন : সাড়ে ১৮ বছর বয়সী কামারুজ্জামান তো দেখতাছি মাচ্যাকার কইরা পালাইছে !! পারল ক্যামতে, গানিতিক হিসাব ফেল, বিজ্ঞানীক ব্যাখ্যা ফেল, মেডিকেল সায়েন্স ও ফেল। বেটা এত সব করল ক্যামতে তাও মাত্র ৯ মাসে। তার আগেও আর কিছু করে নাই , পরে ও করে নাই। ১৭০/২৭০ টি ধর্ষণ। সোহাগ পুর কখনও না গিয়ে ও , সোহাগ পুরে ধর্ষণ। বেটা যাদু জানে নাকি??
অথচ দেখেন আমাদের বিড্ডানি ষাঁড় জ্রাফ্রিকবাল কে , সমবয়সী হয়ে ও উনি সে সময় ভয়ে সশিনার পীরের খাটের নিচে লুকিয়ে লুকিয়ে দুধ কলা খাইতে ছিলেন এবং যুদ্ধে যাওয়ার কথা ভাবতে ভাবতে শালার যুদ্ধই শেষ হয়েগেল।যুদ্ধটা ৯ মাস না হয় যদি ৯ বছর হত, তাহলে অবশ্য তিনি যুদ্ধে অংশ গ্রহন করতেন, তিনি এতটা ডরপোক না।
অপরদিকে মহা শিয়াল পণ্ডিত ইতিরহাসবিদ মুন্তাসির মালু ২০-২১ বছর বয়সী থাকার পর ও সাহসের সীমার কারনে মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহন করতে পারেননি। পরে অবশ্যই কারো কৃপায় একটা সার্টিফিকেট যোগাড় করেছেন। এবং তিনিই এখন দেশের একখান জীবন্ত মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস( আসলে শালা একটা পাতিহাঁস)।
আর একজন হলেন বিশিষ্ট মুরগি চোর , মুরগি কবির । কেউ যদি কখন শয়তান না দেখে থাকেন তবে, তাকে দেখলে চলবে।২৪-২৫ বছর বয়সী পাঁঠা হয়ে ও যুদ্ধে যাওয়ার পরিবর্তে পাক বাহিনী কে মুরগী সাপ্লাই দিয়েছিল।
অথচ এই ডরপোক গুলোই আজ আমাদের চেতনার কর্ণধার। দুই পায়ের এই বিশিষ্ট জানোয়ার গুলোই আজ দেশ , দেশের মুক্তিযুদ্ধকে নিয়ে ভয়াভহ এক ব্যাবসায় নেমেছে।
পরিশেষে বলতে ইচ্ছে হচ্ছে “ এই রকম জানোয়ার না থেকে, যদি আজ আমাদের ১০ জন কামারুজ্জামান থাকত । তবে আজ আমাদেরকে ভারতের তাঁবেদারি করা লাগতো না।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File