জিএসপি বাতিল এবং তদসংস্লিষ্ট একটি পরযালোচনা

লিখেছেন লিখেছেন শামিল ২৮ জুন, ২০১৩, ০২:১৯:০৪ দুপুর

বাংলাদেশকে দেয়া জিএসপি সুবিধা বাতিল করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র!!!

প্রথম কথা, বাংলাদেশের গার্মেন্ট এক্সপোর্ট সেক্টরের সবচেয়ে বড প্রতিদ্বন্দী কারা, এটা জানা আছে আপনার?

না জেনে থাকলে জেনে নেন, ভারতের তৈরি পোষাক শিল্প বাংলাদেশের সবচেয়ে বড প্রতিপক্ষ আন্তর্জাতিক গার্মেন্ট মার্কেটে।

অর্থনীতির কচকচানি অনেকেরই ভালো লাগেনা। তাই এসব তাত্বিক কথা ব্যাতিরেকে সোজা করে বলি, যুক্তরাষ্ট্রে মাত্র ১% জিএসপির সুবিধা পাওয়া বাংলাদেশের গত ২০১২ সালের রপ্তানীকৃত ৪.৯ বিলিয়ন ডলারের মাঝে ১% মোতাবেক ৩৫ মিলিয়ন ডলার রপ্তানীর শুল্ক কর সুবিধার আওতায় ২ মিলিয়ন ডলার রেহাই পাইছে। আপাদদৃষ্টিতে জিএসপি বাতিল হবার পর দৃশ্যত এতে বাংলাদেশের বাণিজ্যে তেমন কোন ক্ষতিকর প্রভাব না পডলেও দীর্ঘমেয়াদে অনেক সমস্যায় পডা লাগবে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই ডিসিশানের প্রভাব যদি যুক্তরাজ্যের পোশাক বাজার বা ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারে পডে, তাইলেই হইছে কাম!!!

তৈরি পোষাক বাণিজ্য একেবারে মুখ থুবডে পডবে। দেশের ৮০% রপ্তানী হয় যে সেক্টর, সেটার রপ্তানী বাজার বন্ধ হয়ে গেলে দেশের অর্থনীতির অবস্থাটা কি দাডাবে? কত লাখ শ্রমিক বেকার হবে? সামাজিক জীবনে এর কতটা দূর্বিসহ প্রভাব পডবে? সেটা কল্পনা করা যায়?

গ্রামাঞ্চলে একটা প্রবাদ প্রচলিত আছেঃ

"জিদের ভাত কুত্তারে দিয়ে খাওয়ানো"

প্রবাদটিকে মাথায় রেখে খেয়াল করেন কতিপয় সফিসটিকেটেড টার্মসঃ

¤ ৭২ থেকে ৭৫ এর মাঝে বাংলাদেশের পাটের গুদামগুলিতে একের পর এক আগুন লাগিয়ে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছিলো তৎকালীন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড ইকোনমিক এক্সপোর্ট সেক্টর, যে বিজনেসেসের প্রধান প্রতিদ্বন্দী ছিলো ভারত। সেটা কেন করানো হয়েছিলো? ভারতের পকেট ভরে দিতে?

¤ গত কিছুদিন আগেও বাংলাদেশের আরেক বিরাট ইকোনমিক খাত বৈদেশিক শ্রমিক রপ্তানীতে ধস নেমেছিলো মিডলইষ্ট ও আরব কান্ট্রিগুলিতে, যখন এই জোনের দেশগুলি লাখ লাখ জনশক্তি নিয়োগ দিয়েছে।

বাংলাদেশের সাথে মিডলইষ্ট ও আরব দেশগুলির সম্পর্ক সবচেয়ে ভালো থাকার পরেও কোটি কোটি ডলার রেমিটেনস আনার সুযোগ কেন নিতে পারেনাই বাংলাদেশ?

এই সুবিধা কারা নিয়েছে?

জ্বনাব, এই শ্রমিক রপ্তানীর ৬০% থেকে ৬৫% সুবিধা গেছে ভারতের পকেটে, বাকি ৩৫% থেকে ৪০% সুবিধা ভাগাভাগি করে ফিলিপাইন, পাকিস্তান, মালদ্বীপ, শ্রীলংকা, আর ইন্দোনেশিয়া নিয়েছে।

সৌদিতে ২/৩ সপ্তাহ যাবৎ আবার আকামা রিনিউ করার ব্যাবস্থা হলেও বাকি সব আরব ও মিডলইষ্ট কান্ট্রিগুলিতে এই সুবিধা + নূতন রিক্রুটমেন্ট এখনো বন্ধ।

¤ গত কিছুদিন আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাশিয়াতে গিয়ে পারমাণবিক বিদ্যুৎ চুক্তি ও সেনাবাহিনীর জন্য আর্মস কেনার যে চুক্তি করে এসেছেন, এটার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের নেগেটিভ ইমপ্যাক্টের কথা খেয়াল করেছেন কেউ?

মোষ্ট ইম্পরট্যান্ট একটি বিষয় হলো, বাংলাদেশের সেই প্রতিনিধিদলের একজন খুব সম্ভবত এমন একটা কথা বলেছিলেন সেখানে গিয়েঃ "বাংলাদেশ যদি পোষাক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এই অঞ্চলের ১% বাজারও দখল করতে পারে, তবে সেটা যুক্তরাষ্ট্রের বাজারের চেয়েও অনেক বড ইকোনমিক মার্কেট হবে" !!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!

ছাগল আর কারে কইছে। বিশ্বের সবচেয়ে বড পোষাক প্রস্তুতকারক দেশ চায়না কি সোভিয়ত রাশিয়ার ঐ অঞ্চলে আঙুল চোষে নাকি, যে ইকোনমিক জোন তাদের হাতের তালুতে অবস্থিত?

বর্তমান বিশ্ব পুরাটা দুই ভাগে ভাগ হয়ে চলে। প্রো আমেরিকান গ্লোব সার্কেল আর এন্টি আমেরিকান বা প্রো রাশিয়ান গ্লোব সার্কেল।

সেখানে গিয়ে যে চুক্তিটা করেছে, এতে যুক্তরাষ্ট্র ও তার নিকটতম অর্থনৈতিক+সামরিক অংশীদারেরা সন্তুষ্ট হয়েছে?

অবশ্যই না।

বাংলাদেশ কি পার্সোনাল ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট বা ফরেইন পলিসিতে এত সক্ষমতা অর্জন করেছে যে, এই বিভিন্নমুখী ফরেইন+ইকোনমিক+স্ট্রাটেজিক্যাল রিলেশান বিল্ডিংয়ের শেক মোকাবেলা করার সামর্থ রাখে?

অবশ্যই না।

তাহলে যুক্তরাষ্ট্রীয় গ্লোব সার্কেলে থেকে এরকম একটি সামরিক+এনার্জি রিলেটেড ট্রিয়েটিতে কেন গেল বাংলাদেশের বর্তমান গভমেন্ট? বাংলাদেশ যদি যুক্তরাষ্ট্রের ইকোনমিক সাপোর্ট হারায়, তবে সবগুলা ইকোনমিক পাইপলাইন বন্ধ হতে থাকায় কার উপর নির্ভর্শীল হয়ে যেতে হবে? ইন ফ্যাক্ট, এগুলি করাচ্ছে কারা?

ভারত।

কাকে দিয়ে করাচ্ছে?

সেটার এনসার কি বলা লাগবে?

এরকম আরো অনেক এক্সাম্পল দেয়া যাবে। কথা হইলো, এরকম আরো এক্সাম্পল আপনার দর্কার কিনা?

বিষয়: বিবিধ

১৯১৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File