একটা দূরবর্তী হিসাব নিকাশ দেখাই
লিখেছেন লিখেছেন শামিল ২১ এপ্রিল, ২০১৩, ০২:৫৫:৫২ রাত
হেফাজতে ইসলামের আন্দোলনের দাবী ১৩টা, সরকারের বিরুদ্ধে আলটিমেটাম, বিএনপির রাজনৈতিক কৌশল, জামাতের আত্বরক্ষার লডাই, নির্বাচনী হিসেব নিকাশের ফাঁকে দিয়ে আওয়ামীলীগের পশ্চাদে যেই বিশাল বাঁশ ঢ়ুকে যাচ্ছে তা অনেকেই খেয়াল করলেও সেন্ট পার্সেন্ট মানুষ খেয়াল করেন নাই বলেই আমার ধারণা।
রাম আর বামের সমন্বয়ে গডে ওঠা বর্তমান আওয়ামী সরকার পলিসিগতভাবে ব্রাক্ষণবাদীদের পক্ষে সার্ভ করছে ২০%, আর বাকিটুকু লুটপাট করছে। লুটপাটের অংশ বেশি থাকায় এই ২০% চোখের আডালেই থেকে গেছে। যেখানে মিডিয়ার আছে অনেক ভূমিকা।
এই এন্টি ইসলামিস্টদের স্লো পয়জনিং যখন মারাত্বক আকার নিতে যাচ্ছিলো, তখন মুসলিম কমিউনিটির স্বার্থে দাডিয়ে গেল হেফাজতে ইসলাম, যারা এই ২০% এন্টি ইসলামিক পলিসি চেন্জ করার দাবী জানালো, যাতে আরো কিছু বাডতি দাবী এড হয়ে গেল।
ইন্ডিয়া থেকে ব্যাক দেয়া এই আওয়ামী সরকারের নীতিনির্ধারকদের এমন পার্সোনাল হেডাম নাই যে, নিজেদের ফিউচার রাজনীতির স্বার্থ রক্ষায় দিল্লীর চোখ রাঙানি উপেক্ষা করে নিজেরাই ডিসিশান নিবে হেফাজতের সাথে নেগোসিয়েশানের মাধ্যমে।
ফলে হার্ডলাইনে যেতে হচ্ছে সরকার কে। হেফাজত তো আগে থেকেই হার্ড লাইনে। কিন্তু এতে ফলাফলটা কি হবে?
৯০% মুসলিম অধ্যুষিত দেশের মানুষ যখন দেখবে, তাদের স্বার্থ রক্ষায় করা হেফাজতের আন্দোলনকে ডিভাইড & রুল সহ বিভিন্ন ওসিলায় ব্যার্থ করে দিতে চাচ্ছে সরকার, বা জামাতী ট্যাগ দিয়ে দিচ্ছে, নির্যাতন করছে নেতাদের ধরে, তখন অটোমেটিক্যালি আওয়ামী সরকারের ইসলাম বিরোধিতার নগ্ন কদর্য রুপ বেরিয়ে যাবে, এবং মানুষ ভাববে যে, এরা আসলে জামাত বিরোধিতার নামে ইসলামের দুশমন, যেটা এখন বর্ণচোরা হয়ে লুকিয়ে রেখেছে।
ফলে যেটা হবে, জামাতেরা তাদের সাময়িক ক্ষতি স্বীকার করে হলেও, আওয়ামীলীগকে তাদের সুবিধাজনক জায়গায় নিয়ে খেলতে শুরু করবে, যার ফলাফল দৃশ্যত ভয়াবহ। এখানে তারা সব এন্টি আওয়ামীলীগাল মেন্টালিটি ধারণকারীদের পাশে পাবে। সুবিধালাভের প্রত্যাশায় অনেকেই হয়তো প্রত্যক্ষভাবেও মাঠে নামবে। ৬ তারিখের লংমার্চে যেটা দেখা গিয়েছে জাতীয় পার্টি, বিকল্পধারা, নেজামে ইসলামী, ইসলামী ঐক্যজোট, এবং সামান্য কিছুটা বিএনপির মাঝেও।
এটা এখন থেকেই শুরু হবে, সেটা বলছিনা, তবে আগামী ১/২/৩ বছর শুধু মাঠ প্রস্তুত করা হতে পারে। এর পর এক টানে গোডাশুদ্ধ তুলে ফেলবে, যখন আওয়ামীলীগের কিছুই করার থাকবেনা।
বাস্তবতা হলো, কোন আদর্শিক অবস্থানের অসারতা প্রমাণ না করে, কিংবা সেই আদর্শকে মানুষের ঘৃণার বস্তুতে পরিণত না করে, শুধুমাত্র দমন পীডন বা খুন করে শেষ করা যায় না। আওয়ামীলীগকে ধীরে ধীরে সেই জায়গাতেই নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, ৯০% মুসলিম কমিউনিটি হওয়াতে ৫০% কাজ হয়েই আছে। এখন শুধু বিপক্ষে দাড করিয়ে দিলেই হয়। যা দেখা যাচ্ছে, তাতে এক সময় মেজরিটি মুসলিম সমাজে আওয়ামীলীগকে পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য করে ফেলা হবে, যেখানে দায়ী হবে তাদের দূরদর্শিতার অভাব।
ধীরে হলেও জামাতের সাথে সঠিক পথেই খেলছিলো আওয়ামীলীগ। মাগার শাহ্বাগের এন্টি ইসলামিষ্ট দাবীতে সমর্থন এবং পেট্রোনাইজ করে, হেফাজতের সাথে সরাসরি দ্বন্দে জডিয়ে, মেজরিটি মুসলিম কমিউনিটির স্বার্থের পক্ষে অবস্থান না থাকায় সেই চেকমেট করে ফেলা সিচুয়েশান এখন ব্যাকফায়ার করে বসেছে ভয়াবহভাবে। আর বাস্তবতা হলো, ডাবল ব্যারেলের শটগান থেকে ব্যাকফায়ার হলে যার গায়ে লাগে, সে দুই টুকরা হয়ে যায়। আর এইখানে তো ব্যারেল তিনটা। বিএনপি, জামাত, মুসলিম মেজরিটির ধর্মীয় সেন্টিমেন্ট।
সতর্ক হওয়া উচিৎ আওয়ামীলীগের। পশ্চাদ্দেশ দিয়ে বাঁশ অলরেডী অর্ধেক ঢ়ুকে গেছে। বাকিটা ৫ তারিখের মাঝেই ঢ়ুকে যাবে। এখনি ব্যাথা হয়তো তেমন লাগবেনা, তবে ভবিষ্যতের পরিণতির কথা ভেবে আমার নিজেরি করুনা হচ্ছে।
আওয়ামীলীগকে এমন এক খেলায় নামিয়ে দেয়া হয়েছে যে, খেলার থেকে পরিত্রানের ও উপায় নাই তাদের, খেলাতে জেতার ও উপায় নাই ক্ষমতায় থাকার জন্য দাদাদের উপর শর্তহীন আনুগত্যের কারণে।
এ থেকে একটা কনক্লুশনে আসাই যায়, সেটা হলো, শেখ সাহেবের প্রয়াণের পর থেকে আওয়ামীলীগ স্রেফ দিল্লীর একটা খেলার গুটি ভিন্ন কিছুই না।
বিষয়: বিবিধ
১৩৩৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন