"আমি কখনো কোন মুসলমানকে সাগর যাত্রার অনুমতি দিব না"

লিখেছেন লিখেছেন ভিনদেশী ২৫ জানুয়ারি, ২০১৪, ০২:৪১:১৫ দুপুর

হযরত ওমর ইবনুল খাত্তাব, রাদিয়াল্লাহু তা'য়ালা আনহু, এর শাসনামলে শামের (বর্তমান সিরিয়া, লেবানন, ফিলিস্তন এবং জর্ডান) গর্বনর ছিলেন হযরত মুয়াবিয়া ইবনু আবি সুফিয়ান, রাদিয়াল্লাহু তা'য়ালা আনহুমা। তিনি ইচ্ছা করলেন, ভূমধ্যসাগরীয় দ্বীপগুলোতে বিজয়াভিযান চালাতে নৌবাহিনী তৈরি করার। অনুমতি চেয়ে তিনি হযরত ওমরের কাছে চিঠি পাঠালেন। হযরত ওমর ইবনুল খাত্তাব সাগর সম্পর্কে বিস্তারিত তত্ত্ব জানাতে মিশরের গর্বনর হযরত আমর ইবনুল আ'স -এর কাছে চিঠি লিখলেন। উত্তরে হযরত আমর ইবনুল আ'স লিখেছেন-



يا أمير المؤمنين! إني رأيت البحر خلقا كبيرا يركبه خلق صغير، ليس إلا السماء والماء، إن ركد أحزن القلوب، وإن ثار أزاغ العقول، يزداد فيه اليقين قلة، والشك كثرة، هم فيه كدود على عود، إن مال غرق، وإن نجا برق"

(الحضارة العربية الإسلامية للتليسي والذويب، ص172)


'' হে আমীরুল মুমিনীন! আমি দেখেছি সাগর আল্লাহ তা'য়ালা বিশাল এক সৃষ্টি। যাতে মানুষ নামক এক ছোট্ট সৃষ্টি (জীব) যাত্রা করে। যার উপরে নীলাকাশ আর নিচে নীল পানি ছাড়া আর কিছুই নেই। পানীর ঢেউ যদি থেমে যায় যাত্রীর অন্তরাত্মা (সমূহ বিপদের সম্ভাবনায়) চিন্তিত হয়ে উঠে। আর যদি ঢেউয়ের ঝড় উঠে যাত্রী আত্মজ্ঞানহীন হয়ে পড়ে। জীবনের নিরাপত্তা সেখানে ক্ষীণ হয়ে উঠে। এবং মৃত্যুর ব্যাপারটা নিশ্চিত হয়ে উঠে। তার পিঠে জীবন্ত মানুষগুলো যেন কাঠের পিঠে পোকা! যদি একটি হেলে যায় তবে নিশ্চিত ডুবে মরতে হবে। আর যদি বেচেও যায় তার পরোও সে শঙ্কামুক্ত নয়''

হযরত আমর উবনুল আ'সের চিঠি পেয়ে হযরত ওমর, রাদিয়াল্লাহু তা'য়ালা আনহু, হযরত মুয়াবিয়ার কাছে লিখলেন-

"لا، والذي بعث محمدا بالحق، لا أحمل فيه مسلما أبدا"


"কখনো নয়! যিনি মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে সত্য দ্বীন দিয়ে পাঠিয়েছেন, সেই আল্লাহর কসম! আমি কখনো কোন মুসলিমকে (যুদ্ধের উদ্দেশ্যে) সাগর যাত্রার অনুমতি দিব না"

অনুমতি না পেয়ে হযরত মুয়াবিয়া কিছুদিনের জন্য বিরত রইলেন। পরবর্তী সময়ে হযরত ওসমান, রাদিয়াল্লাহু তা'য়ালা আনহুর, শাসনামলে তিনি হযরত ওসমানের অনুমতি ক্রমে নৌবহর তৈরি করেছিলেন।

এ বিষয়টা পড়ে মনে হল, আমি যেন হযরত ওমরকে দেখতে পাচ্ছি তিনি হযরত আমর ইবনুল আ'সের চিঠি পড়ে (জনগনের ক্ষতির কথা চিন্তা করে) কঠিন শব্দে হযরত মুয়াবিয়াকে না করে দিচ্ছেন। সত্যিকারের শাসকরা তাদের প্রজাদের ব্যাপারে এমনি হয়ে থাকেন। আল্লাহ তা'য়ালা হযরত ওমর ইবনুল খাত্তাবসহ নবীজীর সকল সাহাবীকে রহম করুন।

(হাস্যোদ্দীপক) আমার মনে হয়, যদি আমাদের বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর কাছে এ মূহুর্তে এমন একটি অনুরুধ আসে। তাহলে তিনি (আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংঘঠনগুলোর লোক ছাড়া) বাকি সকল জনগনকে এ জনহীতকর কাজের জন্য পাঠিয়ে দিতেন!

যেন তৃতীয় মুক্তিযুদ্ধে বাংলার দামাল জনতা ....!!!

বিষয়: বিবিধ

১১১২ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

167265
২৫ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০২:৪৩
প্রিন্সিপাল লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ
২৫ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০২:৪৭
121235
ভিনদেশী লিখেছেন : উৎসাহ পেলুম। পড়ার ও মন্তব্যের জন্য শুকরিয়া।
167269
২৫ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০২:৪৬
এনামুল মামুন১৩০৫ লিখেছেন : চরম যুক্তি-
২৫ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০২:৪৯
121236
ভিনদেশী লিখেছেন : তবে সমস্যা হলো, কে শুনে কার যুক্তি! শুকরিয়া।
167287
২৫ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০৩:২২
সালাহ লিখেছেন : হাসু বিবির জ্বালায় আমার স্বাদের সংসার পুইরা ছারখা...
২৫ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০৩:৪৬
121266
ভিনদেশী লিখেছেন : মহান আল্লাহ তা'য়ালার কাছে সকলের নিরাপত্তা কামনা। এ দুনিয়ার হাতেগুণা ক'টা দিন মাত্র। তারপর সকলকে আল্লাহ তা'য়ালার কাছে হাজির হয়ে হিসেব দিতে হবে। জুলুমের দিনগুলো শেষ হয়ে যাবে কিন্তু এর হিসেব যে কঠিন। কবে বুঝবে জালিমরা এসব!
174775
০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ১০:৫৬
ইসতিয়াক লিখেছেন : ভালো লাগলো। ধন্যবাদ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File