নিরোর বাঁশি ঢাকায়, কিন্তু বাজাচ্ছে কে? :গোলাম মাওলা রনি

লিখেছেন লিখেছেন ইব্রাহীম খলিল ২৭ এপ্রিল, ২০১৩, ০৬:০২:৫৬ সন্ধ্যা

নিরো মানে সেই নিরো-রোম যখন পুড়ছিলো, নিরো তখন বাঁশি বাজাচ্ছিলেন। জুলিও-ক্লদিয়ান রাজতন্ত্রের সর্বশেষ রোমান সম্রাট ছিলেন তিনি। তাকে জুলিও-ক্লদিয়ান রাজতন্ত্রের শেষ প্রতিভিউও বলা হয়ে থাকে। মাত্র ১৭ বছর বয়সে তিনি সম্রাট হলেন ৫৪ খ্রিষ্টাব্দে। আত্মহত্যা করে মারা যান ৬৮ খিষ্ট্রাব্দে।

বহুলভাবে প্রচলিত উপকথা-আগুন লেগে রোম যখন পুড়ছিলো, তিনি না কী তখন বাসায় বসে বাঁশি বাজাচ্ছিলেন! অসম্ভব অত্যাচারি আর পাগলাটে স্বভাবের মানুষ ছিলেন। সম্রাট হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণের পরপরই আপন মাকে হত্যা করে কুখ্যাতি অর্জণ করলেন। পৃথিবীর খারাপ রাজার নাম বললেই তার নাম আসে। অন্যদিকে নির্মমতা নিয়ে চরম উপহাস বুঝাতেই নিরোর বাঁশির উদাহরণ টানা হয়ে আসছে যুগ থেকে যুগান্তরে।

তো সেই নিরোর বাঁশি নাকি হারিয়ে গিয়েছিলো এবং তা পাওয়া গেছে ঢাকায়-আমার সাথে মশকরা করে বললেন প্রবাসী এক পন্ডিত ব্যাক্তি। যুক্তরাষ্ট্রের একটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশী অধ্যাপক।

প্রশ্ন করলাম-বাঁশিটি কার কাছে এবং সেটা বাজায় কে?

তিনি বললেন-বাঁশি ঢাকা চট্টগ্রাম ঘোরা ফেরা করছে। কারো হাতে এখনও ধরা দেয় নাই। কিন্তু অনেকেই তা বাজাতে চাচ্ছে এবং বাজাবার জন্য রীতি মতো টানাটানি শুরু করছে।

সেটা আবার কেমন?-আমার পাল্টা প্রশ্ন।

ভদ্র লোক মনে প্রাণে বঙ্গবন্ধুর অনুগত এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর একনিষ্ঠ সমর্থক। আমার সন্দেহ দূর করার জন্য নেত্রীর সঙ্গে ঘনিষ্ট কতগুলো ছবিও আমাকে দেখালেন।

তিনি মনে করেন-সরকারের বাম ঘরনার নেতারা সর্বনাশের বাঁশিটি নিয়ে টানাটানি করছেন। পুরো জাতির জন্য সেটা নিরোর বাঁশি আর আওয়ামী লীগের জন্য সেটা হ্যামেলিয়নের বাঁশি। হ্যামেলিয়নের বাঁশিওয়ালার মতো সুর তুলে তারা দল ও সরকারকে এক মহা ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। সেই ধ্বংসের থেকে আর কেউ ফিরবে না, বিশেষ করে বঙ্গবন্ধুর সৈনিকেরা। যেভাবে ফেরেনি হ্যামেলিয়নের শিশুরা। ৭৫ সালকে যদি অসমাপ্ত বিপ্লব বলা হয়, তবে এবার সে বিপ্লবের সমাপ্তি ঘটাবে তারা।

অন্যদিকে বিএনপিও সর্বনাশের বাঁশিতে সুর তুলে পুরো জাতিকে ডুবায়ে মারার এবং পুড়িয়ে মারার প্রতিযোগিতায় নেমেছে। জামাত ও হেফাজতে ইসলাম ঢোল-ডগর, কাশি, ডুনডুনি এবং তানপুরা বাজিয়ে বাঁশিওয়ালাদের ধ্বংস কর্মে প্রেরণা যোগাচ্ছে। আর অন্যদিকে চেষ্টা চলছে বাদ্য বাজনার শব্দলোকের তাণ্ডবের মধ্যে কোনোভাবে বাঁশিটি ছিনিয়ে নেওয়া যায় কী না?

এদিকে আবার নতুন মুক্তিযুদ্ধের বীর সেনানি উপাধিপ্রাপ্ত গণজাগরণ মঞ্চের কুশিলবরা বাঁশিওয়ালাদের হাত-পায়ে তেল মালিশ করে বাঁশি দখলের চেষ্টা করছে আর মুরগি চোরেরা সুন্দর করে চুলকিয়ে ধ্বংস ধণি আরো সূতীব্র করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বক্তার বক্তব্য শুণলাম কিন্তু মন্তব্য করলাম না। অনেক কষ্ট করে আমাকে দাওয়াত করে এনেছেন। বহু পদের রন্ধন করে আমাকে আপ্যায়ন করলেন। বিনিময়ে একটু কথা শুনলাম। কাজেই চুপ করে থাকলাম এবং ভাবলাম-চুপচাপ থেকে চোখ বন্ধ করে রাখলেই কি প্রলয় বন্ধ হয়?

বিষয়: বিবিধ

১২৬৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File