হেফাজতের আত্মকথা।
লিখেছেন লিখেছেন ভিক্টোরিয়া ২৫ মে, ২০১৩, ০৮:১১:৩৪ সকাল
মৌলবাদীদের চাপের মুখে সরকার বাধ্যহয়ে নাস্তিকতার অভিযোগে ব্লগার আসিফ মহিউদ্দিনসহ অপর তিনজন কে আটক করে। ধুরন্ধর ধাপ্পাবাজ মাহমুদুর রহমানের উস্কানিতে হটাত করে ধর্মান্ধ হেফাজতের উথ্যান ঘটে। এর মধ্যে অবশ্য পানি অনেক গড়িয়েছে। দুইজন ব্লগার জামিনে মুক্তি পেয়েছেন, মাহমুদুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, হেফাজতকে ডান্ডার হেফাজতে নেয়া হয়েছে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে কে এই হেফাজত??
জনসমর্থনের দিক থেকে দেখতে গেলে হেফাজতে ইসলামের কোন জনসমর্থন নেই। আমাদের দেশের মানুষ ধার্মিক কিন্তু তারা ধর্ম পালন করার চেয়ে ধার্মিক পরিচয় দিতে বেশি পছন্দ করে। প্রতিটা গ্রাম থেকে শহরে মসজিদের হুজুরকে দাওয়াত করে ভাল ভাল খাবার দেয় । ঈদে তাদের জামা কাপড় ও দেয়। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে দেশের বেশির ভাগ মানুষ এই হুজুরদের পছন্দ করে না। সমাজে মসজিদ ভিত্তিক তাদের সম্মান করা হলেও কোন প্রভাব খাঁটানোর অবস্থা তাদের নেই। বেশির ভাগ মসজিদের ইমামরাই বেত ভুক্ত কর্মচারী। এবং এই বেতন কাঠামো একজন শ্রমিকের চেয়ে খুব তফাত নেই। সে হয়তো ওয়াজ মাহফিল করে নয়তো এলাকার ধনী কোন ব্যক্তির তাবেদারি করে। এই রকম একটা পরনির্ভরশীল মানুষের পক্ষে আন্দোলন চালিয়ে নেয়া কতটা বাস্তব সম্মত? কোন শ্রেণির মানুষ তার সন্তানদের এই হেফাজতী মাদ্রাসায় পাঠায়? আমাদের দেশটা দরিদ্র হওয়ার কারনে এই দেশের গরিব মানুষ শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়, তাছাড়া লেখা পড়া চালিয়ে যাওয়ার জন্য খরচও আছে।
সেদিক বিবেচনায় কওমি মাদ্রাসার ছাত্রদের জন্য সব কিছুই ফ্রি। থাকা খাওয়া এমন কি লেখা পড়ার সকল সরঞ্জাম সব কিছুই বিনামুল্য। আর দরিদ্র, অশিক্ষিত বাবা/মা তার সন্তানকে নিজের কাঁধ থেকে নামিয়ে হেফাজতী মাদ্রাসায় জমা করে রেহাই পায়। আর ফাঁকতালে তার সন্তান যদি একটা মোল্লা হয়ে বের হয় তাহলে পরের বাড়ি খাওয়ার একটা উপায় তো হবে। এটাও কম কি?
তো সমাজে এই নিম্ন শ্রেণী থেকে গড়ে উঠা আলেমের দল সমাজের উন্নয়নে কোন প্রভাবই রাখতে পারেনা। তাই সমাজেও তার কোন প্রভাব থাকে না। এই দেশের একটা মসজিদের ইমামকে যদি ইউনিয়ন পরিষদের একটা মেম্বার দাঁড় করিয়ে দেয়া হয় সে পাস করতে পারবে না। কারন এই শ্রেনীর উপর মানুষের কোন আস্থা নেই।আর জনগনের ভিক্ষার টাকায় যে চলে সে জনসাধারনের শাসকই কি করে হবে? তার তো শাসক হওয়ার মেরুদণ্ডই নাই। সোয়াবের লোভে হেফাজতীদের দান খয়রাত করলেও আমাদের দেশের মানুষ মোল্লাদের উপর বরাবরই নাখুশ। তারা থাকে তাদের নিজস্ব গণ্ডিতে। সমাজের মানুষের সাথে তাদের সম্পর্কও থাকে খুবই কম। সমাজে ভিক্ষুক থাকতেই পারে কিন্তু ভিক্ষুক তো সমাজের কোন অপরিহার্য এলিমেন্ট হতে পারে না। হেফাজতীদের অবস্থান সমাজের সাধারণ মানুষের চোখে এই রকমই। ভিক্ষুকেরা ও তো সমাজে খেয়ে পরেই বাঁচে। কিন্তু তারা সমাজের ভেতরে থেকেও যেমন সামাজিক না তেমনি হেফাজতীরা সমাজের ভেতর থেকে গড়ে উঠলেও তারা সামাজিক নয়।
এই পর্যন্ত হেফাজতের কোন আন্দোলনে সাধারণ মানুষদের কোন সম্পৃক্ততা দেখা যায় না। সমাজের মানুষ তাদের আন্দোলন দেখে হাসিঠাট্টা করে কিন্তু সম্পৃক্ত হয় না। আর এই জনবিচ্ছিন্ন ভিক্ষুকের দল কি ভাবে সরকার পরিবর্তনের দিবাস্বপ্ন দেখে!!!!!
বিষয়: বিবিধ
১৫৫৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন