ইসলামী মতে শীত গ্রীষ্ম ও জ্বরের তাপের কারন
লিখেছেন লিখেছেন ভিক্টোরিয়া ২১ মে, ২০১৩, ১২:১১:২২ দুপুর
আমরা অনেকেই জানি না দুনিয়াতে শীত বা গ্রীষ্ম কাল কেন হয়। কেনই বা জ্বর হলে মানুষের শরীরে তাপ সৃষ্টি হয়। এসবের কারন হিসাবে বিজ্ঞানীরা নানা রকম আজগুবি কথা বার্তা বলে। কিন্তু তাদের কথার যেহেতু কোন স্থিরতা নেই , তাই আমরা উক্ত ঘটনার কারন সমূহ জানতে আল্লাহর মনোনীত একমাত্র সত্য ধর্ম ইসলাম ও আমাদের প্রিয় নবির স্মরণাপন্ন হতে পারি। কারন তার কথাই চির সত্য যা আমাদের বিনা প্রশ্নে বিশ্বাস করা উচিত।
যাহোক এবার শীত গ্রীষ্ম কেন হয় সেটা জানতে পড়তে হবে নিচের হাদিস:
"আবু হোরায়রা হইতে বর্ণিত, তিনি বলেন, হুযুর বলিয়াছেন, দোজখ তাহার প্রভুর কাছে অভিযোগ করে এবং বলে, হে মাবুদ! আমার এক অংশ অপর অংশকে খাইয়া ফেলিয়াছে। তখন আল্লাহতালা তাহাকে দুইটি নি:শ্বাস ছাড়িবার অনুমতি দেন। একটি নি:শ্বাস ছাড়িবার অনুমতি দেন শীতকালে ও অপরটি গ্রীষ্মকালে। সুতরাং তোমরা যে শীতের তীব্রতা ও গ্রীষ্মের প্রচন্ডতা অনুভব করা তাহা ঐ নি:শ্বাসের ফল" ---সহি বুখারী, বই-৫৪, হাদিস-৪৮২
আমরা জানি আল্লাহ পাপীদের জন্য দোজখ তৈরী করে রেখেছে। দোজখে আছে আগুন আর তার উত্তাপ মারাত্মক। এক হাদিসে আছে দুনিয়ার আগুনের চেয়ে সে উত্তাপ নাকি সত্তর গুন বেশী। সুতরাং বোঝাই যায় কি মারাত্মক উত্তপ্ত সেই দোজখ। যদি দোজখ এভাবে নিয়ম করে শ্বাস প্রশ্বাস না ছাড়ত , তাহলে দুনিয়াতে শীত গ্রীষ্ম থাকত না। যেহেতু শ্বাস ছাড়ার ফলে দুনিয়াতে দোজখ থেকে তাপ এসে দুনিয়াকে উত্তপ্ত করে তাই সহজেই বোঝা যায় নি:শ্বাস নেয়ার সময় দুনিয়াতে শীত কাল হয়। তাই যদি আল্লাহ দোজখকে বর্তমানে এ দায়িত্ব না দিত তাহলে দুনিয়াতে সব সময় মারাত্মক শীতই থাকত। বসবাসের জন্য তখন দুনিয়া নিতান্তই অযোগ্য হয়ে পড়ত। পরম করুনাময় আল্লাহ আমাদের এ হেন দু:খ বুঝতে পেরেই সে দয়া পরবশ হয়ে দোজখের মাধ্যমে দুনিয়াকে উষ্ণ রাখার একটা ব্যবস্থা করেছে, সে জন্যে আমাদের সবাইকে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করা উচিত।
তবে দোজখের এ কাজ ছাড়াও আর একটা কাজ আছে যেমন :
"আবু জামরাহ জুবাই হইতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি মক্কায় ইবনে আব্বাস এর নিকট বসিতাম। একদিন আমি জ্বরে আক্রান্ত হইলাম, তখন ইবনে আব্বাস বলিলেন, তোমার শরীরের জ্বর যমযমের পানি দ্বারা শীতল কর। কেননা হুযুর বলিয়াছেন, জ্বর দোজখের তেজ হইতেই হইয়া থাকে। তাই তাহা পানি দ্বারা কিংবা বলিয়াছেন যমযমের পানি দ্বারা শীতল কর।সহি বুখারী হাদিস"। --সহি বুখারি, বই-৫৪, হাদিস-৪৮৩
"আয়শা হইতে বর্ণিত,জ্বরের তাপ দোজখের তাপ হইতেই আসে, তাই তা পানি দ্বারা ঠান্ডা করতে হয়"। --সহি বুখারি হাদিস, বই-৫৪, হাদিস-৪৮৫
"ইবনে ওমর হইতে বর্ণিত, হুযুর বলিয়াছেন, জ্বরের তাপ আসে দোজখের তাপ হইতে।তাই তা পানি দিয়ে প্রশমন কর"। --সহি বুখারী হাদিস , বই-৫৪, হাদিস-৪৮৬
এটা আসলেই একটা বিস্ময়কর ব্যপার ছিল যে শরীরে জ্বর হলে হঠাৎ কেন শরীর গরম হয়ে যায়। আমরা আগে সেটা জানতাম না। শরীরের মধ্যে তো আগুন জ্বলে ওঠে না, তাহলে কোথা থেকে তাপ আসত। আমাদের নবিজী সেটাও আমাদেরকে জানিয়েছেন যে সেই তাপ আসে দোজখের আগুন থেকে। এর মূল উদ্দেশ্য হলো - আমরা যেন দোজখের আগুনের উত্তাপ কিছুটা হলেও বুঝতে পারি , আগুনে পোড়ার কষ্টটাকে উপলব্ধি করি ও পরকালে যাতে দোজখকে এড়ান যায় তার জন্য ইহ জগতেই সঠিকভাবে ইসলাম পালন ও আমল করতে পারি। আমাদের জন্যে নবির এ হেন দয়ার জন্য আমরা তার জন্যও সব সময় শুকরিয়া আদায় করি। আমিন!!!
বিষয়: বিবিধ
১৭২৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন