বিপাকে ট্রেন মন্ত্রণালয়
লিখেছেন লিখেছেন রোহান ১৯ মে, ২০১৩, ০৭:৫৭:০৭ সকাল
৬৬২ কোটি টাকা ব্যয়ে কেনা হাসিনার স্বপ্নের ডেমু ট্রেন, এখন বেকার!
আপনাদের মনে আছে গত ২৪ এপ্রিল রানাপ্লাজার দুর্ঘটনার দিন মা-কালী হাসিনা ট্রেন উদ্বোধন করে দাঁত কেলিয়ে হেসেছিলেন। সেই ট্রেন এখন বেকার।
ডিজেল ইলেকট্রিক মাল্টিপল ইউনিট- ডিইএমইউ (ডেমু) ট্রেন নিয়ে এখন চরম বিপাকে রেল কর্তৃপক্ষ। অতি উচ্চমূল্যে কেনা নিম্নমানের ডেমু ট্রেন এখন রেলের জন্য বোঝা হয়ে পড়েছে। জানা গেছে, রেলওয়ের অপারেশন বিভাগের আপত্তি সত্ত্বেও ৬৬২ কোটি টাকা ব্যয়ে কেনা হয় নিম্নমানের ডেমু ট্রেন। এ প্রকল্পে যে অর্থ ব্যয় হয়েছে, তা দিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে নতুন ১০-১২টি ট্রেন চালু করা যেত। যাত্রীদের সুবিধার জন্য এ কমিউটার ট্রেন নামানো হলেও এখন তা বিরক্তির কারণ হয়ে দাড়িয়েছে। বেশি যাত্রীর ভারও বহন করতে পারে না ট্রেনটি। তাই ৬০০ আসন থাকলেও ৩০০র বেশী যাত্রী নিতে পারে না। এছাড়া নিচু প্লাটফরম থেকে কমিউটার ট্রেনের উঁচু কম্পার্টমেন্টে উঠতে গিয়েও দুর্ঘটনার আশঙ্কা করেছেন অনেকেই। ট্রেনে ওঠার সিঁড়িগুলোও (পাদানি) ভেতরের দিকে ঢুকানো, হাতলগুলোরও একই অবস্থা। হাইড্রলিক দরজাগুলো বন্ধ ও খুলতে গেলেও যে কোনো মুহূর্তে ঘটে যেতে পারে দুর্ঘটনা। পুরোনো ট্রেনগুলো মজবুত ও জানালাগুলো সম্পূর্ণ খোলা গেলেও এ ট্রেনের জানালাগুলো অর্ধেক খোলা যায়। ফলে পর্যাপ্ত বাতাস আসে না।এ ট্রেনে চলাচল করছেন তাদের অনেকেই পর্যাপ্ত বাতাসের অভাব ও গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। গরমের কারণে জানালা খুলে রাখলেও নিস্তার নেই! বৃষ্টি হলেই যাত্রীরা ভিজে একাকার। ইলেকট্রিক এ ট্রেনে যাত্রীরা এখন না পারছেন জানালা বন্ধ রাখতে, না পারছেন খোলা রাখতে! ভেতরে নেই টয়লেটও!
গত ২৪ এপ্রিল কমলাপুর রেলস্টেশনে বেশ জাকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডেমু ট্রেন উদ্বোধন করলেও পরদিনই যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে এটি বন্ধ হয়ে যায়। ওয়ার্কশপ থেকে আনার পর আগের সময়সূচি অনুযায়ী দু’দিন পর ডেমু ট্রেন চালু হলেও পর্যাপ্ত বাতাসের অভাব ও গরমে যাত্রীরা অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর ভাংচুরের ঘটনাও ঘটে। ট্রেনের এ বেগতিক অবস্থা দেখে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটের ক্ষুব্ধ যাত্রীরা ভাংচুরও চালিয়েছেন ডেমুর ওপর। ফলে রেল কর্তৃপক্ষ এ ট্রেন উদ্বোধনের পরই বন্ধ করে দেয়।
ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে আরও দুই সেট, ঢাকা-জয়দেবপুর রুটে দুই সেট ও চট্টগ্রামের সার্কুলার রুটে দুই সেট ডেমু ট্রেন চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রেলওয়ে। কিন্তু ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে প্রথম দুই সেটের তিক্ত অভিজ্ঞতার কারণে এখনও তা কার্যকর করা হয়নি। ফলে পরীক্ষামূলক পরিচালনা শেষে ট্রেনগুলো বসিয়ে রাখা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটের মাত্র ১৬ কিলোমিটার দূরত্বেই যাত্রীরা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।
সেখানে ৪৫-৫০ কিলোমিটার দূরত্বের রুটে চলাচল অবস্থা কি হবে? সে কারণে ট্রেন নামানোর সাহস পাচ্ছে না রেলওয়ে।
বিষয়: রাজনীতি
১৩২৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন