দেশে এখন নির্দোষ মানুষ অপরাধী
লিখেছেন লিখেছেন রোহান ২০ এপ্রিল, ২০১৩, ১০:৪৮:৫৩ রাত
আইনশৃঙ্খলা সাধারণ মানুষ হাতে তুলে নিচ্ছে
যে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের আগে ওমরাহ করে হিজাব পরে বিমান থেকে নামেন, কী কারণে তিনি ফসল ভালো হওয়ার জন্য ‘মা-দুর্গা’কে ধন্যবাদ দিলেন? ব্লগারদের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষপাতিত্বের এবং প্রতিবাদীদের হত্যার কী প্রয়োজন ছিল? অথচ মূল সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষতার বিধান নিয়ে তো বাংলাদেশের মুসলমান সন্তুষ্ট ছিল, তারা কোনো আপত্তি করেনি। এখন আবার প্রধানমন্ত্রী ‘মদিনা সনদ’ অনুযায়ী দেশ শাসনের কথা বলছেন। আমি যদ্দূর জানি, মদিনা সনদে চূড়ান্ত কর্তৃত্ব ও ক্ষমতা আল্লাহ ও রাসূল সা:-এর ওপর ন্যস্ত বলে উল্লেখ ছিল। প্রধানমন্ত্রী কি সেটা মেনে চলছেন? ইসলাম-ইসলাম করে হানিফের মুখে খই ফুটছে। এসব কি সরকারের ভীতি আর আতঙ্কের পরিচয় দেয় না? লক্ষ করার বিষয়, তার আগের রাতেই হানিফের বাড়িতে নাকি ‘ডামি বোমা’ ছোড়া হয়েছিল। আমার মনে হয়, বোমাবাজেরা অযথা সময় ও সামর্থ্য নষ্ট করছে। শুনেছি হানিফের পরিবার দু-তিন মাস আগেই কানাডার টরেন্টোয় চলে গেছে। মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতাদের কেউ কেউ পরিবার-পরিজনদের দেশের বাইরে পাঠিয়ে দিয়েছেন বলে লোকজন বলাবলি করছে।
বাংলাদেশে এখন আইনশৃঙ্খলা নেই, প্রশাসন নেই। কিছু লোক মন্ত্রিত্বের গদিতে বসে থাকলেও প্রকৃত প্রস্তাবে বাংলাদেশে কার্যকর সরকারও নেই। দেশের মানুষ এখন পুলিশ ও আদালতের ওপরও আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। তারা এখন আওয়ামী লীগের ক্যাডার, ছাত্রলীগ, যুবলীগ আর পুলিশকে একই দলভুক্ত অত্যাচারী আর নির্যাতক মনে করে। চাঁপাইনবাবগঞ্জে, সিরাজগঞ্জে, খুলনায়, যশোরে আমরা দেখেছিÑ কেউ তাদের ওপর অত্যাচার করতে আসছে মনে হলে স্থানীয় জনসাধারণ পুলিশের ওপরও ঝাঁপিয়ে পড়ছে। কে পুলিশ আর কে আওয়ামী লীগ বাছবিচার করছে না। ফটিকছড়ির ঘটনা সম্বন্ধে শাসক দল এবং তাদের দোসররা বহু অপপ্রচার চালাচ্ছে। আসলে এখানেও স্থানীয় জনসাধারণ ক্যাডারদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিল।
মাহমুদুর রহমানের গ্রেফতার আর আমার দেশ পত্রিকা বন্ধ করে দেয়াকেও দেশের মানুষ সরকারের নির্যাতনের আরেকটা দৃষ্টান্ত হিসেবেই দেখছে। দেশের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত পর্যন্ত প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। সাংবাদিকেরা গত সোমবার প্রতীকী অনশন ধর্মঘট করেছেন। প্রতিবাদ করছে রাজনীতি-নিরপেক্ষ মানুষ, বিএনপি-জামায়াতসহ ১৮ দলের সমর্থকেরা এবং হেফাজতে ইসলাম আন্দোলনের সব সমর্থক। অবশিষ্ট থাকছে সরকারের ভোটব্যাঙ্কÑ যারা জনসংখ্যার দশ ভাগের এক ভাগ মাত্র। এদের সমর্থনের জোরেই কি গদি আঁকড়ে থাকতে চায় সরকার?
ছায়াছবি রিও লোবোর সমাপ্তি শুভ হয়েছিল। নায়ক জন ওয়েন অভিনয় করেছিলেন ইউনিয়নিস্ট বাহিনীর একজন সাবেক কর্নেলের ভূমিকায়। তিনি এবং আরো দু’জন সাবেক সৈনিক দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন এবং তাদের সমুচিত শাস্তি দিয়ে অপহৃত সম্পত্তি প্রকৃত মালিকদের ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। প্রমাণ হলো, কিছু মানুষ দৃঢ়সঙ্কল্প নিয়ে রুখে দাঁড়ালে অত্যাচারীর পতন হবেই।
বিষয়: বিবিধ
১৩২৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন