‘সোর্স’ উদ্ধারে গ্রামবাসীর হাতে পুলিশ অবরুদ্ধ, সমঝোতা

লিখেছেন লিখেছেন রোহান ১৯ এপ্রিল, ২০১৩, ০১:১৩:২৬ রাত

সদর উপজেলার চণ্ডিদাসগাঁতিতে এক ‘সোর্স’কে উদ্ধার করতে গিয়ে আবারও জামায়াত-শিবির ও গ্রামবাসীর অবরোধের মুখে পড়েছে পুলিশ। পরে সমঝোতা করে সেখান থেকে সরে আসে পুলিশ।

অপর এক ঘটনায় বেলকুচিতে গভীর রাতে আসামি ধরতে গিয়ে প্রতিরোধের মুখে ফিরে আসতে বাধ্য হয় স্থানীয় পুলিশ।

বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার জামায়াত-শিবির অধ্যুষিত চণ্ডিদাসগাঁতি গ্রামে পুলিশকে ঘেরাওয়ের ঘটনাটি ঘটে।

পুলিশ নিজেদের এক ‘সোর্স’ উদ্ধারে ওই এলাকায় গেলে জামায়াত-শিবির ও গ্রামের নারী-পুরুষ ও শিশুরা সিরাজগঞ্জ-নলকা আঞ্চলিক সড়কের চণ্ডিদাসগাঁতি বাজারসহ আশপাশের এলাকায় পুলিশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ও ঝাড়ু মিছিল করে।

অবস্থা বেগতিক দেখে চণ্ডিদাসগাঁতিতে কোনোরূপ সংঘাতে না জড়িয়ে পুলিশ জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে সমঝোতা করে এলাকা ত্যাগ করে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীর রায় ঘোষণার দিন চণ্ডিদাসগাঁতি গ্রামে পুলিশের সঙ্গে জামায়াত-শিবিরের সংঘর্ষে দু’জন নিহত হয়।

ওই ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ওই গ্রামের শতাধিক জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীদের নামে মামলা করে। এতে বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী পুলিশ যেন আসামি ধরতে না পারে সেজন্য একজোট হয়ে দিনে-রাতে পাহারা দেয়।

এদিকে, আজ ডিবি পুলিশকে এজাহারভুক্ত আসামিদের তথ্য দেয়ার অভিযোগে ওই গ্রামের আসাব আলীর ছেলে উজ্জলকে নিয়ে এক সালিশি বৈঠক হয়।

অন্যদিকে, উজ্জলকে আটক করে জামায়াত-শিবিরের লোকজন তার ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে তাকে গুম করেছে মর্মে ওই গ্রামের এক আওয়ামী লীগ নেতা পুলিশকে মোবাইল ফোনে খবর দেয়।

পুলিশ উজ্জলের খোঁজে ঘটনাস্থলে পৌঁছলে জামায়াত-শিবিরের লোকজন তাদেরকে আটক করতে এসেছে ভেবে পুলিশকে লাঠিসোঠা নিয়ে প্রতিরোধ করার চেষ্টা করে।

একপর্যায়ে আশপাশের বহুতী, হামকুড়িয়াম, জগতগাঁতি, কোনাগাঁতি, সড়াইচণ্ডি, রহিমপুর ও চন্ডিদাসগাঁতি গ্রামের হাজারের বেশি জামায়াত-শিবিরের লোকজন ও গ্রামবাসী একজোট হয়ে পুলিশকে চারিদিক থেকে ঘিরে ফেলে।

পরে পুলিশ জেলা জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির জাহিদুল ইসলাম এবং সদর থানার সেক্রেটারি নাজিমুদ্দিনের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করে তাদের মাধ্যমে জামায়াত-শিবিরের লোকজনকে শান্ত করলে তারা ফিরে আসে।

এ বিষয়ে স্থানীয় যুবক উজ্জল জানান, পুলিশকে তথ্য দেয়ার অভিযোগে তাকে কয়েকজন আটক করলেও পরে স্থানীয় মুরুব্বীরা বিষয়টি মীমাংসা করে দেন। তবে পুলিশকে কে বা কারা খবর দিয়েছে তা তিনি জানেন না।

জেলা জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির অ্যাডভোকেট জাহিদুল ইসলাম বলেন, পুলিশকে ঘেরাওয়ের পর পুলিশ জামায়াত-শিবিরের বেশ কয়েকজন নেতার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করেন। পরে তারা গ্রামবাসীকে আশ্বস্ত করলে পুলিশ ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।

তবে সিরাজগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম খান চণ্ডিদাসগাঁতি গ্রামে পুলিশ জামায়াত শিবিরের নেতাকর্মীদের তোপের মুখে পড়া, ঘেরাও এবং জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে যোগাযোগের বিষয়টি অস্বীকার করে। তবে উজ্জলকে উদ্ধার করতে যাওয়ার বিষয়টি তিনি স্বীকার করেছেন।

অপর ঘটনায় বেলকুচির জামায়াত শিবির অধ্যুষিত ধুকুরিয়া বেড়া ইউনিয়নের কল্যাণপুর গ্রামে পুলিশের সাথে জামায়াত-শিবিরের সংঘর্ষে দুজন নিহতের ঘটনায় দায়ের করা মামলার আসামি ধরতে গিয়ে বুধবার রাতে পুলিশ প্রতিরোধের মুখে পড়ে আসামি না ধরেই ফিরে আসে।

তবে বেলকুচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামছুল হক বলেন, জামায়াত-শিবিরের এজাহারভুক্ত আসামিদের বাড়িতে খুঁজে না পেয়ে বাধ্য হয়ে ফিরে আসতে হয়েছে।

বিষয়: রাজনীতি

৯৭৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File