শিশুদের যৌন নির্যাতন প্রতিরোধ করুন। বাচ্চাদের নিয়ে সচেতন হোন।।
লিখেছেন লিখেছেন দিদারুল হক সাকিব ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ১১:৫৭:৫৫ রাত
এ বিষয়টি নিয়ে এভাবে লিখতে হবে কখনো ভাবি নি।
ছবির বাচ্চা মেয়েটাকে দেখে কি মনে হয় আপনাদের? পরিচিত কারো কথা কি কল্পনায় ভেসে উঠে?
(বাচ্চা মেয়েটার এডিট করা ছবি দিয়েছিলাম যদিও, তাও আপলোডের কয়েক মিনিটের মধ্যে ডিলেট করা হয়েছে সামাজিক নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে )
সকালে মর্নিং রাউন্ডে মলিন,বিমর্ষ চেহারার বাচ্চা মেয়েটিকে দেখে মনে করেছিলাম হয়তো বা কমন কোন সমস্যা নিয়ে ভর্তি হয়েছে। মাকে সমস্যার কথা জিজ্ঞাস করতেই বেশ অপ্রস্তুত বলে মনে হল। আমিও একটু ফ্রি হয়ে সমস্যার কথা জানতে চাইলাম আবার। তাতেও মা সবটুকু সমস্যা খুলে বলছে না । পরে ফাইল হাতে নিয়ে দেখলাম এক জায়গায় লিখা ছিল Genital tract injury. এটা দেখে নার্সকে ভালো মতো এক্সামিন করতে বলে মাকে ডেকে নিয়ে গেলাম রুমে।
মাকে অভয় দিলাম। মেয়েটা রাতে ভর্তি হয়েছিল প্রচুর ব্লিডিং নিয়ে। ঘটনার সারসংক্ষেপ হলো ৪ বছরের বাচ্চা মেয়ে ১৮ বছরের ছেলে দ্বারা যৌন হয়রানির স্বীকার হয়েছে। শুধুমাত্র যৌন হয়রানি বললে অন্যায় হবে রীতিমত ধর্ষণ! নার্স এসে বললো রীতিমত Vaginal Tear হয়ে গেছে!
এধরনের কেইস মেডিকেলে মাঝেমধ্যে আসতো.. নতুন বিবাহিতরা সাধারণত আসতো বেশি। তাই বলে ৪ বছরের বাচ্চা মেয়ে এধরনের সমস্যা নিয়ে আসবে কখনো কল্পনাও করিনি।
মাকে সাইকোলজিক্যাল সাপোর্ট দিলাম। রোগীকে টার্শিয়ারি হাসপাতালের ও সিসি ওয়ার্ডে রেফার্ডও করলাম। তাও রোগীর পরিবার যেতে রাজি না! ঘটনা নাকি আপোষ হয়ে গেছে! ধর্ষকের পরিবার চিকিৎসা খরচ বহন করবে বিনিময়ে ধর্ষিতা পরিবার লোক লজ্জার ভয়ে আদালতে মামলাও করবে না! অনেক বুঝালাম.. খুব একটা কাজ হলো বলে মনে হল না।
শিশুদের ব্যাপারে আমাদের সচেতন হওয়া জরুরি।
√যতক্ষণ সম্ভব বাচ্চার সাথে থাকার চেষ্টা করুন।
√সারা দিনে কী কী করল তা জানতে চেষ্টা করুন।
√বাচ্চার সাথে বন্ধুত্বসুলভ আচরণ করুন। আপনার আর সন্তানের মধ্যে যেন দূরত্ব তৈরি না হয়।
√চাকরি বা অন্য কোন কারণে কোথাও যেতে হলেও কিছুক্ষণ পর পর বাচ্চার খোঁজ নিন।
√নিজে শিশু নির্যাতন এবং যৌন হয়রানি সম্বন্ধে জানুন। নিজে সচেতন হোন, অন্যকে সচেতন করুন।
√আপনার সন্তানের যৌন হয়রানির শিকার হওয়ার সম্ভাবনা কতখানি তা বোঝার চেষ্টা করুন। আবেগের বশবর্তী না হয়ে যৌক্তিকতার সাথে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করুন।
কথা বলুন।
√শিশুদের ভাল-খারাপ সম্বন্ধে যথাযথ শিক্ষা দিন।
√বাসার কাজের লোক, স্কুলের বা প্রাইভেট শিক্ষক, দুঃসম্পর্কের আত্মীয় ইত্যাদি লোকের সাথে যেন বেশিক্ষণ একা না থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখুন।
√আপনার ড্রাইভারের কাছে নিশ্চিন্তে বাচ্চাকে দিয়ে রাখবেন না। ওদের দিকে নজর রাখুন।
√আপনার কাছের বন্ধু কেন একান্তে আপনার শিশুর সাথে সময় কাটাতে চায় সে বিষয়ে খোঁজ নিন।
দয়া করে কেউ পোশাক Vs মেন্টালিটির ত্যানা প্যাঁচাইতে আসবেন না।
ধন্যবাদ।
বিষয়: বিবিধ
৯৯৩ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
০ কাছের লোক দ্বারাই এই ঘৃন্য ও জঘন্য কাজ টি হয়েছে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন