সংগ্রামী জীবন........।।
লিখেছেন লিখেছেন দিদারুল হক সাকিব ০৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫, ০৪:০৭:০১ বিকাল
তিন মাস ধরে বেকার,হাতে কোন টিউশনি নাই। মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান,বাসা থেকে টাকা নেই না প্রায় ৩ বছর। সরকারি স্কলারশিপ,কিছু বেসরকারি ব্যাংকের স্কলারশিপ আর টিউশনির টাকা দিয়ে ভালোই চলতে পারি। টিউশনি না থাকলে চলতে খুব কষ্ট হয়। অনেকটা বাধ্য হয়েই মাকে ফোনে বললাম টাকার কথা। যদিও মা টাকা দিতে পারবে না জানতাম,উলটো বাবা-মাকে আমাকেই দেখতে হয়। তবু মাকে বলার অর্থ হল মা দাদাকে (আমার দাদার ভাই) বলবে,আর দাদা টাকা পাঠাবে। যদিও মাকে বললে দাদা রাগ করেন,সরাসরি উনাকে বলতে বলেন। তবু বলা হয় না। মনের মধ্যে একটা সংকীর্ণতা কাজ করে।
সেই ইন্টার থেকে আমার পড়াশুনার দায়িত্ব দাদাই নিয়ে নেন। দাদার বাসায় থেকেই নটরডেমে পড়েছি। এখন মেডিকেলে আছি,সব ধরনের বড় খরচ দাদাই বহন করে। আমার দাদী প্রচণ্ড ভালো মানুষ,খুব পরহেজগার মহিলা। নটরডেমে থাকার সময় ফজরের নামাজের পর দাদী আমার জন্য সকালের নাস্তা এবং দুপুরের জন্য টিফিন রেডি করে দিত। ইট-কাঠ-পাথরের এই ঢাকা শহরে যে কাজটা অনেক মা তাদের সন্তানের জন্য করত না দাদী আমার জন্য তাই করত।
দাদা-দাদী আমাকে এতো ভালবাসত,এত যত্ন নিতো যে ২ বছরের কলেজ লাইফে কখনও পরিবারের জন্য মন খারাপ হয় নি। তাদের আদর-ভালবাসা খুব বেশি অনুভব করি এই হোস্টেল জীবনে এসে। এখন তো আর ফজরের পর নাস্তা করা হয় না,বিকালে এক সাথে হাঁটতে যাওয়া হয় না,একসাথে খাবার খাওয়া কিংবা খবর দেখা হয় না।
সাঝ সকালে কবে যে নাস্তা করছি ভুলেই গেছি, প্রায়ই সকালের নাস্তা করি ১১টার পর,অনেক সময় তাও করা হয় না। বিকেলে হাঁটাহাঁটি বাদ দিয়ে এখন স্টুডেন্টের বাসায়-বাসায় দৌড়াদৌড়ি করতে হয়।।
জীবনটা অনেক সংগ্রামমুখর হয়ে গেসে। সংগ্রাম করেই বাঁচতে হচ্ছে।
বিষয়: বিবিধ
১৭১২ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
জিবনের কোন পর্যায়ই নাই যেখানে সংগ্রাম করতে হয়না।
মন্তব্য করতে লগইন করুন