আমি ঠকিনি বন্ধু......... (হজরত বিলাল (রা) এর ইসলাম গ্রহনের কাহিনী)

লিখেছেন লিখেছেন দিদারুল হক সাকিব ১০ নভেম্বর, ২০১৪, ০২:৫৭:০৯ দুপুর

মক্কার ধনী উমাইয়া। ধনে-মানে সব দিক দিয়েই কুরাইশদের একজন প্রধান ব্যক্তি সে। প্রাচুর্যের যেমন তার শেষ নেই,ইসলাম বিদ্বেষেও তার জুড়ি নেই। শিশু ইসলামকে ধ্বংসের কোন চেষ্টারই সে ত্রুটি করে না। এই ঘোরতর ইসলাম বৈরি উমাইয়ারই একজন ক্রীতদাস ইসলাম গ্রহণ করেছে।তা জানতে পারল উমাইয়া।জানতে পেরে ক্রোধে ফেটে পড়লো সে।অকথ্য নির্যাতন সে শুরু করল।প্রহারে জর্জরিত সংজ্ঞাহীন-প্রায় ক্রীতদাসকে সে নির্দেশ দেয়," এখনও বলি মুহাম্মদের ধর্ম ত্যাগ কর,নতুবা তোমার রক্ষা নাই।"

কিন্তু তার ক্রিতদাস বিশ্বাসে অটল।শত নির্যাতন করেও তার বিশ্বাসে বিন্দুমাত্র ফাটল ধরানো গেল না।ক্রোধে উন্মাদ হয়ে পড়লো উমাইয়া। শাস্তির আরও কঠিনতম পথ অনুসরণ করলো সে।

একদিনের ঘটনা।আরব মুরুভূমির মধ্যাহ্ন।আগুনের মত রোদ নামছে আকাশ থেকে।মরুভূমির বালু যেন টগবগিয়ে ফুটছে।উমাইয়া তার কৃতদাসকে নির্দয়ভাবে প্রহার করলো। তারপর তাকে সূর্যমুখী করে শুইয়ে দেয়া হল।ভারী পাথর চাপিয়ে দেয়া হল বুকে।কৃতদাসের মুখে কোন অনুনয়-বিনয় নেই।মনে নেই কন শঙ্কা।চোখে অশ্রু নেই,মুখে কোন আর্তনাদও নেই।উর্ধ্বমুখী তাঁর প্রসন্ন মুখ থেকে বেরিয়ে আসছে আল্লাহর প্রশংসা ধ্বনি-'আহাদ','আহাদ'।

ঐ পথ দিয়ে যাচ্ছিলেন হজরত আবু বকর (রা)।'আহাদ','আহাদ' শব্দ তাঁর কানে গেল।অনুসন্ধিৎসু হয়ে শব্দ লক্ষে তিনি মরুভূমির বুকে শায়িত কৃতদাসের সমীপবর্তী হলেন।উমাইয়াকে দেখে তিনি সব ব্যাপারটাই মনে মনে বুঝে নিলেন।বললেন,"উমাইয়া,আপ্নাকে তো ধনী ও বিবেচক লোক বলেই জানতাম।কিন্তু আজ প্রমান পেলাম আমার ধারনা ঠিক নয়।দাসটি যদি এতই না পছন্দ,তাকে বিক্রি করে দিলেই পারেন।এমন নির্দয় আচরণ কি মানুষের কাজ?''

হজরত আবু বকরের কথায় কাজ হল।উমাইয়া বললেন,"এত বাহাদুরি দেখাবেন না।দাস আমার এর উপর সদাচার-কদাচার করবার অধিকার আমারই।তা যদি এতই দয়া লেগে থাকে,তবে একে কিনে নিলেই পারেন।"

হজরত আবু বকর (রা) এই সুযোগের অপেক্ষাই করছিলেন।তিনি চট করেই রাজি হয়ে গেলেন।একজন শ্বেতাঙ্গ কৃতদাস ও দশটি স্বর্ণ মুদ্রা দিয়ে কিনে নিলেন কৃষ্ণাঙ্গ কৃতদাসকে।হজরত আবু বকর (রা) কৃতদাসকে মরুভূমির বুক থেকে টেনে তুলে গা থেকে ধুলো ঝেড়ে দিলেন।উমাইয়া বিদ্রূপের হাসি হেসে বললেন,"কেমন বোকা তুমি বলত?এ অকর্মণ্য ভৃত্যটাকে একটি সুবর্ণ মুদার বিনিময়েই বিক্রি করে দিতে চেয়েছিলাম।এখন আমার লাভ ও তোমার ক্ষতি দেখে হাসি সম্বরন করতে পারছিনা।"

আবু বকরও (রা) হেসে বললেন,"আমি ঠকিনি বন্ধু!এ কৃতদাসকে কেনার জন্য আমার সমস্ত সম্পত্তি দিতে হলেও আমি কুন্ঠিত হতাম না।কিন্তু একে আমি ধারণাতীত সস্তা মূল্যে ক্রয় করে নিয়ে চললাম"

এ দাসটিই ছিলেন বিশ্ব বিশ্রুত বিলাল (রা)। ইসলামের প্রথম মুয়াজ্জিন হজরত বিলাল (রা)।।

-----------আমরা সেই সে জাতি।

বিষয়: বিবিধ

১৭৪২ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

282958
১০ নভেম্বর ২০১৪ দুপুর ০৩:০৩
লজিকাল ভাইছা লিখেছেন : ভালো লাগলো , আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ।
282960
১০ নভেম্বর ২০১৪ দুপুর ০৩:১৬
দিদারুল হক সাকিব লিখেছেন : ধন্যবাদ ^Happy^ ^Happy^ ^Happy^ ^Happy^
282966
১০ নভেম্বর ২০১৪ দুপুর ০৩:৫২
আফরা লিখেছেন : খুব ভাল লাগল । আমাদের মনের ভিতর ও এরকম হয় ১০০ টাকা সাহ্যয্য করতে গেলে মনে ১০০ টাকা দিয়ে দিব । অথচ কত টাকা কত বেহুদা কাজে খরচ করে ফেলি । আসল লাফ ক্ষতি আমরা বুঝতেই পারি না ।

সুন্দর পোষ্টের জন্য জাজাকাল্লাহ খাইরান ।
282969
১০ নভেম্বর ২০১৪ বিকাল ০৪:১৫
প্রবাসী আশরাফ লিখেছেন : দুনিয়ার চোখ দিয়ে দেখলে এই ধরনের খরচগুলো ক্ষতির পাল্লায় কিন্তু দূরদৃষ্টিতে দেখলে দেখা যাবে আখেরাতের পাথেয়...
282999
১০ নভেম্বর ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:৩৭
দিদারুল হক সাকিব লিখেছেন : হুম।@ প্রবাসী

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File