ইন্দোনেশিয়ার পূর্ব তিমুরের মত অবস্থা তৈরী হতে যাচ্ছে বাংলাদেশের পার্বত্য এলাকায় !

লিখেছেন লিখেছেন ডক্টর আ ফ ম খালিদ হোসেন ১০ আগস্ট, ২০১৪, ০৯:২৭:০১ রাত



খ্রিষ্টান মিশনারীদের তৎপরতা ও বাংলাদেশের সমাজ ব্যবস্থায় তার প্রভাব’ শীর্ষক সেমিনার

বিগত ১০ আগষ্ট চট্টগ্রাম দারুল মাআরিফ মিলনায়তনে রিয়াদস্থ আল ইমাম মুহাম্মদ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে ও মক্কাস্থ রাবেতায়ে আলমে ইসলামীর ব্যবস্থাপনায় আয়োজিত ৩ দিন ব্যাপী সেমিনারে উপস্থিত থাকার সুযোগ হয়েছে। সেমিনারের উদ্ধোধন করেন আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ উপাচার্য ড. আবু বকর রফিক। ‘খ্রিষ্টান মিশনারীদের তৎপরতা ও বাংলাদেশের সমাজ ব্যবস্থায় তার প্রভাব’ শীর্ষক বিষয়ে আমি বক্তব্য উপস্থাপন করি।আমি নিম্নোক্ত বিষয়ের উপর সবিশেষ গুরুত্বারোপ করি:

“বাংলাদেশের পার্বত্য এলাকাকে ঘিরে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র সৃষ্টির উদ্দেশ্যে আন্তর্জাতিক খ্রিষ্টান লবি সুদীর্ঘ কালব্যাপী নানা মুখী প্রয়াস চালিয়ে আসছে। মুঘল আমলেই এদেশের প্রতি খ্রিষ্টান মিশনারীদের শ্যেন দৃষ্টি পতিত হয়। ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর শাসনামলে মিশনারীদের ধর্মান্তরের যে প্রক্রিয়া আনুষ্ঠানিক ভাবে চালু হয়, পর্যায়ক্রমে পাকিস্তান ও বাংলাদেশ আমলে তার ক্রমবিকাশ সাফল্যের সাথে অব্যাহত থাকে। স্কুল প্রতিষ্ঠা, শিক্ষা উপকরণ বিতরণ, হাসপাতাল স্থাপন, ঋণ প্রদান, ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ, দারিদ্র্য বিমোচন,কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট ও নারীর ক্ষমতায়ন প্রভৃতি মুখরোচক কর্মসূচীর আড়ালে রয়েছে এ দেশে খ্রিষ্টান ধর্ম প্রচার করার নীল নকশার বাস্তবায়ন। উল্লেখ্য যে,বাংলাদেশের পার্বত্য এলাকায় প্রায় ৪৫টি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র নৃতাত্বিক জাতিগোষ্ঠীর অধিবাস। দীর্ঘ দিন ধরে এই দুর্গম পার্বত্য এলাকায় খ্রিষ্টান মিশনারীরা অনেক কৌশল ও টাকা ব্যয়ের মাধ্যমে উপজাতীয়দের ধর্মান্তরিত করে চলেছে। ইতোমধ্যে পাংখু উপজাতি পুরোপুরি খ্রিষ্টান হয়ে গেছে; বদলে গেছে তাদের ভাষা; এমন কি তাদের ভাষার হরফও ইংরাজী বর্ণমালায় রূপান্তর করা হয়েছে। এন. জি. ও নাম ধারন করে কয়েকটি খ্রিষ্টান মিশনারী এই দুর্গম এলাকায় হাসপাতাল, বিনোদন কেন্দ্র, চার্চ ইত্যাদি গড়ে তুলেছে। নিজস্ব উপজাতীয় আদি ভাষা এরা হারিয়ে ফেলেছে। খুব অল্প সময়ের মধ্যে ইন্দোনেশিয়ার পূর্ব তিমুরের মত অবস্থা তৈরী হবে পার্বত্য এলাকায়।

পরিস্থিতি এই ভাবে অব্যাহত থাকলে গোটা পার্বত্য অঞ্চলে অর্থনৈতিক দিয়ে সচ্ছল এবং রাজনৈতিক দিয়ে বিপজ্জনক খ্রিষ্টান জনগোষ্ঠী গড়ে উঠবে। এই পাড়ের পাহাড়ীয় খ্রিষ্টানগণ সীমান্তবর্তী ওই পাড়ের পার্বত্যাঞ্চলে বসবাসরত নব দীক্ষিত খ্রিষ্টানদের সাথে মিলে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন পরিচালনা করতে পারে। এই আশংকা অমূলক নয়। NGO তথা বেসরকারী সংস্থাগুলো কোন দেশের কোন সরকারের বন্ধুনয়। এনজিও’রা তাদের খ্রিষ্টান দাতাগোষ্ঠীর গোপন পরিকল্পনাই বাস্তবায়ন করে থাকে মাত্র। বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী ভারতের ৬টি রাজ্যের পাহাড়ী এলাকায় বহুদিন যাবত এনজিও এবং খ্রিষ্টান মিশনারীরা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের ধর্মান্তরের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে সুকৌশলে। সম্প্রতি ওইসব সংস্থার সঙ্গে এতদঞ্চলের উগ্রপন্থী সংগঠনের সর্ম্পক থাকার খবর পাবার পর সিবিআই ও অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থা তদন্ত শুরু করে । এই পরিপ্রেক্ষিতে ৮২০ টি এনজিও সংস্থাকে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কালো তালিকাভুক্ত করে ওই সব রাজ্যসমূহের জেলা প্রশাসকদের সর্তক থাকার নির্দেশ দিয়েছে। ভারতের উত্তর-র্পূবাঞ্চলের ছয়টি রাষ্ট্রের কালো তালিকাভুক্ত এনজিওদের মধ্যে রয়েছে ত্রিপুরায় ৬৯, মনিপূরের ১৯৭, আসামের ১৫১, নাগাল্যান্ডের ৭৮, সিকিমের ২, মেঘালয়ের ৩২৩ টি।

সুতরাং ভয়াবহ পরিস্থিতির এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের মুসলমানদের দাওয়াতী ও সেবার ইতিবাচক মানসিকতা নিয়ে বাস্তব কর্মসূচী হাতে নিতে হবে যাতে খ্রিষ্টান মিশনারীদের কবল থেকে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা যায়। রাজনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবি, আলিম সহ সর্বস্তরের মুসলমানদের এই বিষয়ে সুচিন্তিত কর্মপন্থা নির্ধারণ করতে হবে। ভারতীয় উপমহাদেশে ইংরেজ রাজত্বে খ্রিষ্টান মিশনারীদের অপতৎপরতার বিরুদ্ধে মাওলানা রহমতুল্লাহ কিরানবী (রহ.).হাজী ইমদাদুল্লাহ মুহাজিরে মক্কী (রহ.),আল্লামা কাছেম নানুতুভী (রহ.), মাওলানা শারফুল হক সিদ্দিকী (রহ.), মাওলানা মুহাম্মদ আলী মুংগেরী (রহ.),মুন্সী মেহেরুল্লাহ (রহ.) ও পন্ডিত রিয়াজুদ্দীন মাশহাদী (রহ.) যেভাবে বক্তৃতা, লেখনী ও কর্মকৌশলের মাধ্যমে প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে তুলে ছিলেন তা এখনো আমাদের জন্য প্রেরণার উৎস।”

বিষয়: বিবিধ

১৬৩৯ বার পঠিত, ৯ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

252990
১০ আগস্ট ২০১৪ রাত ০৯:৩২
দুষ্টু পোলা লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ
১২ আগস্ট ২০১৪ রাত ০২:৪৭
197466
ডক্টর আ ফ ম খালিদ হোসেন লিখেছেন : আপনাকেও ধন্যবাদ জানা্ই।
252994
১০ আগস্ট ২০১৪ রাত ০৯:৪০
হতভাগা লিখেছেন : http://w2.amardeshonline.com/pages/details/2014/08/10/252382#.U-eREFLlrKU

ওদের স্ট্র‍্যাটেজি দেখুন এবং কারা কারা ওদের সাথে আছে তাও দেখুন ।
১২ আগস্ট ২০১৪ রাত ০২:৪৭
197467
ডক্টর আ ফ ম খালিদ হোসেন লিখেছেন : ধন্যবাদ।
253032
১০ আগস্ট ২০১৪ রাত ১১:৪৭
বুড়া মিয়া লিখেছেন : আপনি সুন্দর বক্তব্য রেখেছেন এবং আপনার বক্তব্য আমাদের কাছে পেশ করায় আনন্দিত হলাম।

ধন্যবাদ আপনাকে।
১২ আগস্ট ২০১৪ রাত ০২:৪৮
197468
ডক্টর আ ফ ম খালিদ হোসেন লিখেছেন : মন্তব্যের জন্য শোকরিয়া জানাই।
253440
১২ আগস্ট ২০১৪ রাত ০১:৪১
খন্দকার মুহাম্মদ হাবিবুল্লাহ লিখেছেন : দেশপ্রেমের দাবীদার ক্ষমতাশালীরা এইসব দেখেও না দেখার ভান করে। জনগণকেই এগিয়ে আসতে হবে। অনেক ধন্যবাদ। জাযাকাল্লাহু খায়রান।
১২ আগস্ট ২০১৪ রাত ০২:৪৮
197469
ডক্টর আ ফ ম খালিদ হোসেন লিখেছেন : আন্তরিক মুবারকবাদ রইল।
263780
১০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ০৮:৩৪
বঙ্গ মিত্র লিখেছেন : ভালো লাগলো ধন্যবাদ পিলাচ অনেক ধন্যবাদ স্বাগতম

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File