জামায়াতের নেতৃত্ব ও বাস্তবতা
লিখেছেন লিখেছেন আনসারী ২২ নভেম্বর, ২০১৯, ০৭:০৩:৪২ সন্ধ্যা
জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্ব মূলত যৌথ। অন্যদলের মতো নয় এর নেতৃত্ব। এখানে আমির-সেক্রেটারি থেকে কর্মী মিলে একটা সমষ্টিগত লিডারশিপ ফাংশন করে।
সবচেয়ে বড় বিষয় হলো বিভিন্ন রাজনৈতিক দলে নেতা বলতে যা বোঝায় জামায়াতের বেলায় লিডারশিপ ব্যাপারটা সম্পূর্ণ আলাদা।
কিছু লিখিত ম্যানুয়াল সামনে রেখে এক সারিতে চলা একদল লোকের সামনে পেছনে থাকার মধ্যে কে প্রথম আর কে দ্বিতীয় ব্যাপাররা অতটা গুরুত্ব বহন করা।
জামায়াত চলে পরামর্শের ভিত্তিতে, এক্ষেত্রে আমির সম্মিলিত সিদ্ধান্তকে ঘোষণা করেন।
জামায়াতের নেতাদের কিছু নির্বাহী এখতিয়ার আছে, যার অনেক কিছুই রাজনৈতিক কার্যাবলী কেন্দ্রিক, এসব কাজ দেখে মনে করার কারণ নাই যে জামায়াতের নেতারা খালেদা জিয়া বা শেখ হাসিনার মতো একক ক্ষমতাবান।
জামায়াত কুরআন ও সুন্নাহর মতো অপরিবর্তনীয় গাইডলাইন অনুসরণ করে, সেখানে লিডারশিপ মাত্রই নবীজীকে (সা.) মাপকাঠি মেনে তার অনুসরণের চেষ্টারত, এতে ব্যক্তিভেদে উনিশ-বিশ হওয়া তেমন গুরুত্বপূর্ণ না।
জামায়াতের যে সংগঠন ও রাজনীতি আছে, তাতে সাংগঠনিকভাবে মানসম্পন্ন যে কাউকে বসালে তিনি নেতৃত্ব দিতে পারেন, কারো যোগ্যতা যাই হোক না কেন পদে বসানোর পর সবার সহযোগিতায় নেতা যোগ্য ও দক্ষ হয়ে ওঠেন।
মূলত এদলে নেতা হিসেবে সফল হতে দুইটা বিষয় মেইনটেন করতে হয়-তাকওয়া ও আমল। যারা দায়িত্ব পেয়ে এ দুই বিষয়ে অধিকতর নিষ্ঠাবান হন তারাই বেশি সফল হন।
আমার পর্যবেক্ষণ মতে, জামায়াত ব্যক্তি নির্ভর নয়, বরং সংগঠন নির্ভর দল। ফলে জামায়াতের প্রতিটি পদই গুরুত্বপূর্ণ।
অনেকে মনে করতে পারে যে জামায়াতের নেতৃত্ব অন্য দলের মতো সভাপতি-সেক্রেটারি কেন্দ্রিক। বরং জামায়াতের নেতৃত্ব সবাইকে নিয়েই তৈরি হয়।
জামায়াতের আমীর ও সেক্রেটারির মতো নায়েবে আমীর, সহকারী সেক্রেটারিরাও গুরুত্বপূর্ণ৷ নির্বাহী পরিষদ ও শুরার মেম্বারদের বেলাতেও একই কথা।
দেশের প্রচলিত মিডিয়া জামায়াত নেতাদেরকে একটা স্তরবিন্যাসের মধ্যে ফেলতে চাইছে, এটি ভুল ধারনা ছড়ানো ছাড়া আর কিছুই নয়।
জামায়াত যদি লিডার বেইজড দল হতো তাহলে শীর্ষ নেতাদের ফাঁসি হওয়ার পর এ দল হারিয়ে যেত।
কিন্তু খেয়াল করে দেখুন নতুনরা দায়িত্ব নেওয়ার পরও জামায়াত একই রকম আছে, সেই আগের মতো।
মূলতঃ বাংলাদেশের সামগ্রিক রাজনৈতিক সঙ্কট ঘিরে যে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে, তার কারণে জামায়াতের ট্রানজিশনাল পিরিয়ড নিয়ে লোকজন ভুল অনুমান করছে।
আমার ধারণা জামায়াতের যৌথ লিডারশিপ আগামী দিনে আরও মজবুত হবে ইনশাআল্লাহ।
এবং এ যৌথ লিডারশিপের সবাই জনগণের কাছে সম্মানিত ও মর্যাদাবান হবেন, এই বিষয়টি জামায়াতের সংশ্লিষ্ট নেতারাও অনুধাবন করেন।
বাংলাদেশকে নতুন করে গড়ে তুলতে প্রচুর সামাজিক-রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক লিডারশিপ তৈরি হবে আগামী দিনে, এটি অনেক বড় কাজ, জামায়াত এই ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণকে ধারণ করতে এগিয়ে যাবে, ফলে জামায়াতের লিডারশিপ নিয়ে লোকজনের আলাপ ভুল প্রমাণিত হবে ইনশাআল্লাহ।
সংগৃহীত
বিষয়: রাজনীতি
৭৪০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন