বোঝাতে হবে বুঝতে হবে সকলকে: ধর্মীয় অনুভূতি

লিখেছেন লিখেছেন আনসারী ২১ নভেম্বর, ২০১৯, ০১:১২:৩৩ রাত

একদিক থেকে বাংলাদেশ রাষ্ট্র হিসেবে অনেক প্রাথমিক বিষয়েও বোঝাপড়া ঠিক করতে পারেনি, অথচ উপনিবেশপূর্ব সময়ের সামন্ত ব্যবস্থায় অনেক বিষয়ে আমরা অ্যাডভান্স ছিলাম।

মনে করেন রাষ্ট্র যদি সেক্যুলার হয়ও, তার তো ইসলাম ডিল করার একটা পরিষ্কার ধারণা লাগবে, আপনি যদি বলেন রাষ্ট্রের দিক থেকে ধর্মকে ডিল করার কিছু নাই, তাহলে আপনি একটা গ্রাম্য ছাগল যে শহুরে বলদের মতো হাম্বা হাম্বা করার বাইরে আর কিছু পারে না, কাজেই আপনি বাদ যান, যারা বোঝে তাদের বলছি, এখানকার ৯০ ভাগ পিপল মুসলমান, তাদের জন্ম-মৃত্যু, সেক্সুয়াল রিলেশন, সম্পদের বণ্টন ইসলামের ভিত্তিতে হয়, ফলে পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্টের জন্য হলেও ধর্মকে ডিল করা রাষ্ট্রের জন্য আবশ্যক হয়ে পড়ে।

এখন কথা হলো, ইসলামের মধ্যে অনেক ধরনের কমিউনিটি আছে, এর একেকটার বিশ্বাস ব্যবস্থা একেক রকম, ফলে পাবলিক রিলিজিয়নের বিষয়ে রাষ্ট্রের একটা অবস্থান লাগবে। ধরেন ঈদ জামায়াত, জুমার নামাজ, শবে বরাত, শবে কদর, মীলাদুন্নবীর মতো পাবলিক হলিডে ও এ সংক্রান্ত রিচুয়ালগুলো নিয়ে রাষ্ট্রের একটা পরিষ্কার নীতি থাকতে হবে।

আপনি একদিকে রাষ্ট্রের মধ্যে এসব হলিডে রাখবেন, আবার এসব যেই কমিউনিটি বিশ্বাস ব্যবস্থা থেকে এসেছে তাকে পাবলিক রিলিজিয়ন হিসেবে কবুল করে ধর্মীয় ব্যবস্থা গড়বেন না তা হতে পারে না।

খেয়াল করে দেখেন, বাংলাদেশের সেক্যুলার বলদগুলো রিলিজিয়ন প্রশ্নে কী আকাম করতেছে, এরা একটা গোষ্ঠীকে বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ হানাফী কমিউনিটির বিশ্বাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে ইসলাম বিরোধী বলে প্রচার চালাতে অবাধ সুযোগ করে দিয়েছে। একদিকে শবে বরাতের পাবলিক হলিডে আছে। আরেকদিকে এই দিবসের বিরুদ্ধে পাবলিক ডোমেইম তথা টিভি-পত্রিকা-সামাজিক মাধ্যমে বিষোদগারও চলে।

গত কয়েক বছর বাংলাদেশে ধর্মীয় সেক্টরে ভয়াবহ রকমের জালজালিয়াতি চলছে। কারান হানাফী অধ্যুষিত মসজিদ ও মাদরাসাগুলোতে সালাফী ও আহলে হাদীস কমিউনিটির ধর্মগুরুরা ঢুকে পড়ছে এবং তারা নিজেদের অন্য কমিউনিটি হওয়ার বিষয়টি স্পষ্ট না করেই হানাফীদের মধ্যে নিজেদের কমিউনিটি বিলিফ ও রিচুয়ালকে একমাত্র সঠিক ইসলামী ধারা হিসেবে প্রচারণা চালাচ্ছে।

রিলিজিয়নের মধ্যে সবটা যে পুতঃপবিত্র, সরল, ন্যাযসঙ্গত মনে করার কারণ নাই। রিলিজিয়নকে ঘিরে নানা পক্ষ জোচ্চুরি, প্রতারণা, বিভ্রান্তিতে ব্যস্ত শত শত বছর ধরে। কাজেই রাষ্ট্রকে রিলিজিয়ন ডিল করার বিষয়ে ন্যায়নীতি ও গণতান্ত্রিক অবস্থান গ্রহণ করতে হবেই। এনিয়ে কোনো গড়িমসির সুযোগ নাই।

কিন্তু বাংলাদেশে এসব নিয়ে উদ্যোগ দূরে থাক, ফ্যাসিস্টদের বাইরে থাকা লোকজনের কোনো ভাবনা আছে বলে জানা যায় না।

বিষয়: বিবিধ

৫৮৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File