জাল ভোট ও কচু গাছের আত্মকাহিনী
লিখেছেন লিখেছেন এহতেরামুল হক ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৩, ১০:৪৪:১৩ রাত
আমার বাড়ির সীমানা আর নির্বাচনী কেন্দ্র গা ঘেঁসে অবস্থিত।
মজুমদার সাহেব ভোট দিতে এসেছিলেন , কিন্তু ভোট গ্রহণকারী কর্মকর্তা তাকে জানালেন তার ভোট দেয়া হয়ে গিয়েছে ।
মজুমদার সাহেবতো রেগে মেগে আগুন, অই মিয়া আমার ভোট কে দিছে? এর পর শুরু করে দিলেন মধুর মধুর বাক্য প্রয়োগ (বাঙ্গালিরা অতিরিক্ত রেগে গেলে যা করে)।
আমাদের বাড়ির পেছনের দিকটায় অনেক কছুগাছ জন্মায় প্রাকৃতিক ভাবে।
নির্বাচনের দিন দেখলাম একদল বীরপুরুষ কিছুক্ষণ পর পর এসে কছুগাছের ডগা কেটে নখে ঘষছে , এইদিক দিয়ে আরেকদল বলাবলি করছে দেখছেন ভাই কেমনে কাস্টিং করতাছে ।
উল্লেখ্য অমোচনীয় কালি কচু গাছের কষ দিয়ে ঘষলে উঠে যায় ।
বয়স আমার ১০ কি ১১ , এইটা যে ঘৃণিত কাজ তখন বুঝতে পেরেছিলাম।
একজনের ভোট আরেকজন কাস্টিং করাকে মাটিচাপা দিলো বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ( সেনাবাহিনীর ভূমিকা ছিল অসামান্য)
এখন আসি মজুমদার সাহেবের প্রসঙ্গে ,
ছবি যুক্ত ভোটার আইডি আসার পূর্বেই মজুমদার সাহেব পটল তুলেছেন। বেঁচে থাকলে হয়তো পছন্দের মানুষকে ভোট দিতেন।
জীবনের শেষ ভোট দেওয়া হল না তার।
এখন আসি আমার কথায়, কিছুদিন আগে ভাবতাম নির্বাচনের দিন সাদা পাঞ্জাবী পড়ে ভোট দিতে যাবো।
মন্দের মাঝে যিনি ভালো তাকেই ভোট দিবো। এখন আমি পটল না তোললেও আমার স্বপ্ন মজুমদার সাহেবের ন্যায় পটল তুলেছে ।
কারন আমার এলাকায় নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন একজন ।
যারা জনগনের ভোট ছাড়া নির্বাচিত হয়েছেন তাঁরা জন প্রতিনিধি নন, তাঁরা নির্বাচিত প্রতিনিধি।
আমার মনে হয় "গর্ভধারন না করেই যদি বাচ্চা পাওয়া যেতো তাহলে মা এবং সন্তানের সম্পর্ক হতো পৃথিবীর সবচেয়ে শত্রুতাপূর্ণ " ।
বিশ্বাস করেন , আল্লাহর কসম ইনশাআল্লাহ আমারা কেউ ভোট দেই নাই।
ভোট আমাদের গনতান্ত্রিক অধিকার ,আমি আমার অধিকার চাই , একটা ভোট দিতে চাই।
কথা দিলাম কচু গাছের কষ দিয়া কালি উঠাইয়া জাল ভোট দিবো না । শুধু আমার ভোট-টাই দিবো । জীবনের প্রথম ভোটটা দিবো।
পাদটীকাঃ আল্লাহর হক আল্লাহ মাফ করবেন , কিন্তু বান্দার হক বান্দা মাফ না করলে আল্লাহও মাফ করবেন না ।
বিষয়: রাজনীতি
২৪৪৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন