মুসলিম নিধনের পুরস্কার পেল মিয়ানমার সরকার!

লিখেছেন লিখেছেন মুহসিন বান্দাহ ২৪ এপ্রিল, ২০১৩, ০৫:৩০:৩৮ বিকাল

মিয়ানমার থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন

মিয়ানমারের রাজনৈতিক সংস্কার কর্মসূচিতে আস্থার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন সোমবার দেশটির ওপর থেকে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা ছাড়া অর্থনীতি, বাণিজ্য খাতের নিষেধাজ্ঞাসহ অন্যসব ধরনের নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে। বিবিসি।

গত বছর ইইউ সাময়িকভাবে মিয়ানমারের ওপর থেকে কিছু নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছিল। কিন্তু এবার মিয়ানমারের অগ্রযাত্রায় আস্থা প্রকাশ করে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইলিয়াম হেগ নিষেধাজ্ঞা স্থায়ীভাবে উঠিয়ে নেয়ার পক্ষে মত দেন বলে জানিয়েছে। তবে দেশটির ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকছে বলেই জানানো হয়েছে ইইউ পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠক থেকে।

লুক্সেমবার্গে ইইউ পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে কোনো ভোট ছাড়াই অনুমোদিত এবং ইস্যুকৃত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “মিয়ানমারে যে পরিবর্তন এসেছে আর এ ধারা অব্যাহত থাকার যে আশা জেগে উঠেছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে পরিষদ (মন্ত্রীদের) অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা ছাড়া অন্য সব নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”

২০১০ সালের নভেম্বরে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় আসা মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট থিয়েন সেইন যে রাজনৈতিক সংস্কার বাস্তবায়ন করেছেন তার পরিপ্রেক্ষিতেই ইইউ এর এ উদ্যোগ। সংস্কার কর্মসূচির আওতায় থিয়েন সেইন প্রশাসন দেশের বহু রাজবন্দিকে মুক্তি দেয়াসহ সেন্সরশীপ শিথিল করেছে।

মিয়ানমারে সামরিক শাসকদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞাকে সমর্থন জানিয়ে আসা বিরোধীদলীয় নেত্রী অং সান সুচিও এখন নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার এ পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানিয়ে বলেছেন, “গণতান্ত্রিক আন্দোলন চিরদিন নিষেধাজ্ঞার ওপর নির্ভর করে চলতে পারে না।” তবে ইইউ বৈঠকে সংখ্যালঘু মুসলিমদের বিষয়টি এখনো মিয়ানমারের জন্য চ্যালেঞ্জ এবং দেশটিকে তা মোকাবেলা করতে হবে বলে সতর্ক করা হয়েছে। মিয়ানমারের মুসলিম অধ্যুষিত রাখাইন প্রদেশে সাম্প্রতিক জাতিগত দাঙ্গার সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য দেশটির সরকারকে দায়ী করে মার্কিন মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস্ ওয়াচের (এইচআরডব্লিউ) সমালোচনার পর ইইউ এর এ পদক্ষেপ এল।

সংস্থাটি বলেছে, গতবছর ঐ দাঙ্গায় একটি সম্প্রদায়কে নির্মূল করার যে প্রয়াস ছিল, তাতে সরকারেরও ভূমিকা ছিল। দাঙ্গায় মিয়ানমার সরকারের এ সমালোচনার পাশাপাশি দেশটি থেকে ইইউ নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেয়ারও সমালোচনা করেছে এইচআরডব্লিউ।

সংস্থাটি বলছে, অস্ত্র বিক্রি ছাড়া সব ধরনের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার এ উদ্যোগ অপরিপক্ক সিদ্ধান্ত। এসব নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হলে শেষ পর্যন্ত মিয়ানমার সরকারকে বাধ্য করার ক্ষেত্রে ইউরোপীয় ইউনিয়নের হাতে আর কিছু থাকবে না। বিশেষ করে মিয়ানমারে মুসলিমদের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক সহিংসতা সরকার সামাল দিতে সক্ষম না হওয়া পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা তোলা উচিত ছিল না বলেই মনে করছে মানবাধিকার সংস্থাগুলো।

http://www.dailysangram.com/news_details.php?news_id=114617

বিষয়: বিবিধ

১৫১৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File