শবে মেরাজের ১৪ দফা

লিখেছেন লিখেছেন তরিকুল হাসান ০৪ মে, ২০১৬, ১১:৪৯:২৫ সকাল

بِسْمِ اللّهِ الرَّحْمـَنِ الرَّحِيمِ

'পরম পবিত্র ও মহিমাময় সত্তা তিনি, যিনি স্বীয় বান্দাকে রাত্রি বেলায় ভ্রমণ করিয়েছিলেন মসজিদে হারাম থেকে মসজিদে আকসা পর্যন্ত-যার চার দিকে আমি পর্যাপ্ত বরকত দান করেছি যাতে আমি তাঁকে কুদরতের কিছু নিদর্শন দেখিয়ে দেই। নিশ্চয়ই তিনি পরম শ্রবণকারী ও দর্শনশীল।'- সুরা বনী ইসরাইলঃ ১

------------------

ছোট বেলা থেকে বহুবার শবে মেরাজের আলোচনা শুনেছি। মেডিকেলে পড়ার সময় এমনি এক আলোচনায় অংশ নিলাম। আলোচক একটি মাদ্রাসার অধ্যক্ষ। জীবনে বহুবার শোনা আলোচনা থেকে এই আলোচনা একটু ভিন্ন। তিনি আমাদেরকে বললেন, 'আপনারা ৬ দফা শুনেছেন, ২১ দফা শুনেছেন। কেউ কি আল্লাহ প্রদত্ত ১৪ দফার কথা শুনেছেন ?' আমরা মাথা নাড়লাম। তিনি বললেন, 'পবিত্র কুরআনে যে সুরায় মেরাজের বর্ননা এসেছে সে সুরায় আল্লাহ তায়ালা ১৪ দফা ঘোষনা করেছেন, যা একজন ব্যক্তি মানলে সে সুখী হবে; পরিবার মানলে তারা সুখী হবে; সমাজ মানলে সে সমাজ সুখী হবে; রাষ্ট্র মানলে তাদের সুখ-সমৃদ্ধি আসবে।'

নিজেকে মনে মনে ধিক্কার দিলাম। জীবনের বেশিরভাগ সময় পার করে ফেললাম, এই ১৪ দফা সম্পর্কে ভালভাবে না জেনেই। নিজে পড়ার জন্যই আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম-

১.

আল্লাহর সাথে কাউকে শরিক কোরো না, তাহলে তুমি নিন্দিত ও অসহায় হয়ে পড়বে। আর তোমরা কেবল আল্লাহরই বন্দেগি করো (সূরা বনি ইসরাইল-২২)।

২.

বাবা-মার সাথে ভালো ব্যবহার করো। তাদের একজন বা উভয়ে বৃদ্ধ অবস্থায় যদি তোমাদের সামনে উপনীত হয় তাহলে তাদের সাথে উহ্ শব্দটি পর্যন্ত কোরো না। তাদের ধমকের সুরে জবাব দিয়ো না; বরং তাদের সাথে মর্যাদা সহকারে কথা বলো। আর তাদের সামনে বিনয়ী থেকো আর দোয়া করতে থাকো- ‘হে আমার প্রতিপালক, তাদেরকে তেমনিভাবে লালন-পালন করো, যেমনি তারা শৈশবে আমাদের লালন-পালন করেছেন’ (সূরা বনি ইসরাইল ২৩-২৪)।

৩.

তোমাদের কৃতকর্মের জন্য আল্লাহর কাছে তওবা কর, তাহলে আল্লাহ তোমাদের অপরাধ ক্ষমা করে দেবেন। নিশ্চই আল্লাহ তোমাদের মনের খবর জানেন (সূরা বনি ইসরাইল-২৫)।

৪.

আত্মীয়স্বজনকে তাদের অধিকার দাও আর মুসাফিরদের হক আদায় কর (সূরা বনি ইসরাইল-২৬)।

৫.

অপব্যয় কোরো না, নিশ্চয়ই অপব্যয়কারী শয়তানের ভাই, আর শয়তান স্বীয় প্রতিপালকের প্রতি অকৃতজ্ঞ (সূরা বনি ইসরাইল-২৭)।

৬.

হকদারদের হক আদায়ে তুমি যদি অপারগ (অসমর্থ) হও তাহলে তাদের সাথে অত্যন্ত নম্রভাবে কথা বলো (সূরা বনি ইসরাইল-২৮)।

৭.

ব্যয়ের ক্ষেত্রে বেহিসাবি হয়ো না, আবার কৃপণতাও প্রদর্শন কর না। আল্লাহ যাকে চান রিজিক বাড়িয়ে দেন, যাকে চান কমিয়ে দেন (সূরা বনি ইসরাইল : ২৯-৩০)।

৮.

দারিদ্র্যের ভয়ে সন্তান হত্যা কোরো না। নিশ্চয়ই এটি মহাপাপ (সূরা বনি ইসরাইল : ৩১)।

৯.

জেনা-ব্যভিচারের কাছেও যেয়ো না। নিশ্চই এটি নিকৃষ্ট ও গর্হিত কাজ (সূরা বনি ইসরাইল : ৩২)।

১০.

কোনো জীবনকে অন্যায়ভাবে হত্যা কোরো না। কাউকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা হলে তার উত্তরাধিকারীকে আমি এই অধিকার দিয়েছি (চাইলে রক্তের বিনিময় চাইতে পারে), তবে প্রতিশোধের ব্যাপারে সে যেন বাড়াবাড়ি না করে (সূরা বনি ইসরাইল : ৩৩)।

১১.

এতিমের সম্পদের ধারেকাছেও যেও না। সম্পদের ব্যাপারে তার বয়োপ্রাপ্তি পর্যন্ত অপেক্ষা করো আর প্রতিশ্রুতি সম্পর্কে সচেতন থাক। নিশ্চয়ই প্রতিশ্রুতি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে (সূরা বনি ইসরাইল : ৩৪)।

১২.

ওজনে কখনো কম দিয়ো না। দাঁড়িপাল্লা সোজা করে ধরবে- এটিই উত্তম পন্থা (সূরা বনি ইসরাইল : ৩৫)।

১৩.

যে বিষয়ে তোমার জ্ঞান নেই সেগুলোর পেছনে লেগো না। নিশ্চয়ই চোখ, কান, অন্তর সব কিছুই জিজ্ঞাসিত হবে (সূরা বনি ইসরাইল : ৩৬)।

১৪.

জমিনে দম্ভসহকারে চলো না। এগুলো সবই মন্দ ও ঘৃণিত কাজ (সূরা বনি ইসরাইল : ৩৭-৩৮)।

বিষয়: বিবিধ

১৯১৯ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

367962
০৪ মে ২০১৬ দুপুর ০২:৫৯
পললব লিখেছেন : ভালো লাগল। ধন্যবাদ।
০৫ মে ২০১৬ রাত ১২:২৮
305392
তরিকুল হাসান লিখেছেন : আপনাকেও ধন্যবাদ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File