সুপারী নারকেলের দেশে ..
লিখেছেন লিখেছেন তরিকুল হাসান ২২ জানুয়ারি, ২০১৬, ০৯:১২:০৯ রাত
লক্ষীপুর জেলাটা বেশ সুন্দর। এখানে পাকা সড়কের পাশে গ্রাম্য কোন বাড়ীতে হঠাৎ ঢুকে পড়লে দেখবেন, বাড়ীর সামনে একটা বড় গেট। হয়ত তাতে লেখা মৃধা বাড়ী বা চৌধুরী বাড়ী বা অন্য কোন নাম। বুঝতেই পারছেন, বনেদি বংশের কারো বাড়ীতে ঢুকে পড়েছেন আপনি। সুপারীর ঘন একটা বাগানের মাঝ দিয়ে একটা সরু মেঠো পথ ধরে আপনাকে মূল বাড়ীর দিকে এগুতে হবে। সুপারী বাগানের পাশেই পুরনো কবরস্থান। একটা হাটুর সমান দেয়াল দিয়ে পুরো কবরস্থানটা ঘিরে রাখা আছে। একটা ক্ষেরের পারা (পুঞ্জী) আর কয়েকটা নারকেল, আম ও কলা গাছ পাবেন পাশেই। একপাশে একটা মজা পুকুর। এখানেই সুপারী জাগ (পচানো) দেয়া হচ্ছে। বাড়ীর খুব কাছেই আরেকটা পুকুর। পানি ঘন সবুজ আর ঘোলা। একটা পাকা বাধানো পুকুর ঘাট আছে এক কোনায়। ঘাটের চারপাশে সুপারী, নারকেল, কলা বা পুরনো কাপড় দিয়ে মা-ঝিদের জন্য পর্দার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখানকার মানুষগুলো খুব ধর্মভীরু। শীতকালে পাড়ায় পাড়ায় ওয়াজ মাহফিল হয়। নিজের ঘরের টিন বদলানোর আগে মসজিদের টিন বদলে নেয় তারা। তবে কখনো কখনো কিছু স্বার্থান্বেষী লোক তাদের দুর্বলতা পুজি করে খানকাহ ব্যবসা জমিয়ে নেয়। রাস্তার ধারে মাঝে মাঝে এদের রাজপ্রাসাদ (?) চোখে পড়লে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। এবার চলুন বাড়ীটাতে ঢুকে পড়ি। বাড়ীটার মুল কাঠামো টিনের তৈরি। রং-বেরং এর নকশা করা টিনের ঘরের পাশে নতুন পাকা ঘর তোলা হচ্ছে । উঠানে মাদুর বিছানো হয়েছে। ইচ্ছে হলে মাদুরে বসে উষ্ণ চা আর চানাচুর মাখানো মুড়ি দিয়ে একটা চমৎকার বৈকালিক নাস্তা সেরে নিতে পারেন। নাস্তা হয়ে গেলে মূল সড়ক দিয়ে আরো সামনে এগুনো যাক। পাশের গ্রামগুলোর নাম বেশ সুন্দর মীরগঞ্জ, কাজীর দীঘির পাড়, চৌধুরী বাজার,দালাল বাজার, গংগাপুর কিংবা রহমতখালী খালের পাশে মজু চৌধুরীর ঘাট। বাজার গুলোতে পালা করে রাখা হয়েছে নারকেলের খোসা আর শীতকালীন সবজি। এখানকার মানুষজন মুলত কৃষি নির্ভর। তবে ইদানিং ফিসারিজ ব্যবসা আর বিদেশ গমন বেশ বেড়ে গেছে। রাস্তার দু ধারে ধানের কিংবা সরিষার ক্ষেত চোখ জুড়িয়ে দেবে। জমির আলে লাগানো হয়েছে নারকেল গাছ। কখনো পথের ধারে পরিকল্পিত ঝাউবন দেখা যাবে। ভাংগা রাস্তার ঝাকুনিটা সহ্য করতে পারলে সময়টা মন্দ কাটবেনা। দালাল বাজারের পাশেই পাবেন কুয়াশা দীঘি। বিশাল এ দীঘির পাড়ে বসে হাস, পাখি বা মাছের খেলা দেখতে দেখতে কখনযে বেলা গড়িয়ে যাবে টেরই পাবেন না।
ছবিটি কুয়াশা দীঘি থেকে তুলেছেন- ফরহাদ ভাই।
বিষয়: বিবিধ
১৩৬৬ বার পঠিত, ১২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আফসোসের বিষয় হলো দক্ষিন পশ্চিম অঞ্চল মেঘনায় খেয়ে পেলছে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন