মুক্তিকামী দল হামাস।

লিখেছেন লিখেছেন তরিকুল হাসান ১৪ জুলাই, ২০১৪, ০৮:১৭:৫৮ রাত



হামাস হল হারাকাত আল-মুকাওয়ামা আল-ইসলামিয়া এর সংক্ষিপ্ত রুপ। হামাস শব্দটির অর্থ আশা বা উদ্দীপনা। ১৯৮৭ সালে গাজা এবং পশ্চিম তীরে এই ইসলামি আন্দোলন আত্মপ্রকাশ করে। হামাস এর প্রতিষ্ঠাতা হলেন শেখ আহমেদ ইয়াসিন।

ইয়াসিন ছিলেন পঙ্গু কিন্তু তবুও যুবক বয়স থেকেই তিনি ছিলেন গাজার নেতা ও অনন্য মনোবলের অধিকারী।



১৯৭৮ সালে ৪৯ বছর বয়সী তিনি ফিলিস্তিনিদের সাহায্যের জন্য আল মুজাম্মা আল ইসলামি নামে একটি ইসলামি সংগঠন গড়ে তুলতে অধিকৃত ইসরায়েলী কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেন। ইসরায়েল তা অনুমোদন দেয়। ইসরায়েলের লক্ষ্য ছিল গাজায় ফিলিস্তিনি মুক্তি সংস্থা পিএলও এর একক প্রতিনিধিত্বের গুরুত্ব হ্রাস করা। কিন্তু সেই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যায়।

দুই হাজার ছয় সালের জানুয়ারী মাসে প্যালেস্টাইনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে হামাস গোষ্ঠী বিশালভাবে জয়লাভ করে অতি অপ্রত্যাশিতভাবে। শোচনীয়ভাবে পরাজিত করে তার প্রতিদ্বন্দ্বী ফাতাহ গোষ্ঠীকে। প্রথমবারের মত নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করে তাতে জয়লাভ করার দুই মাস পরে মন্ত্রীসভা গঠন করে ইসমাইল হানিয়ার নেতৃত্বে। কিছুদিনের মধ্যেই ফাতাহ এর সঙ্গে উত্তেজনা চরমে উঠে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ইসরায়েলের কূটনৈতিক এবং অর্থনৈতিক বয়কটের কারণে। হামাস এর নেতৃত্বাধীন এই সরকারকে পশ্চিমা বিশ্ব কখনও স্বীকৃতি দেয় নি।

হামাসের প্রতি ফিলিস্তিনিদের ব্যাপক সমর্থন রয়েছে,কারণ হামাসের ন্যায় ভিত্তিক অসংখ্য জনহিতকর কর্মসূচি রয়েছে। হামাস অগ্রসরমান ইসরায়েলী আধিপত্যের বিরোধী।সংগঠন হিসেবে হামাস মূলত তিনটি শাখার সমষ্টি ~ রাজনৈতিক শাখা, সমাজকল্যাণমূলক শাখা এবং সামরিক শাখা। মজলিশে শূরা হামাসের প্রতিনিধিদের মিলনস্থল, যার মাধ্যমে হামাস সমগ্র ফিলিস্তিনে তার কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। তবে হামাসের নীতিনির্ধারণী পরিষদ হলো পনেরো সদস্যের “পলিটিক্যাল ব্যুরো”।হামাসের কার্যক্রমের ৯০% হলো সামাজিক, শিক্ষা বিস্তার, সংস্কৃতি ও জনকল্যাণমূলক কাজ। সামাজিক কাজের মধ্যে দাতব্য চিকিৎসা, মসজিদ স্থাপন, স্কুল ও শিশুশিক্ষা অর্থায়ন, খেলাধূলার জন্য ক্লাব প্রতিষ্ঠা অন্যতম। ইসরাইলী আগ্রাসনে শহীদ হওয়া ফিলিস্তিনীদের পরিবারের ভরণ পোষণের জন্য এককালীন ও নিয়মিত অর্থ সাহায্য দিয়ে থাকে হামাস। এছাড়া ধ্বংস হয়ে যাওয়া বাড়ি ঘর, স্কুল বা মসজিদ পুনঃনির্মাণে সহায়তা দিয়ে থাকে হামাস। স্বাস্থ্যসেবায় হামাস নিজেকে নিয়ে গিয়েছে এক অনন্য অবস্থানে। হামাস পরিচালিত হাসপাতালে কম খরচে বা বিনা খরচে সুচিকিৎসা দেয়া হয়। এছাড়াও শিশুদের জন্য অসংখ্য নার্সারি, কিন্ডারগার্টেন স্কুল বা মক্তব প্রতিষ্ঠা করেছে হামাস ,যার মাধ্যমে তাদের এক বেলা খাবারও সরবরাহ করা হয়। বিভিন্ন দাতব্য সংস্থা বা দাতা দেশ থেকে আসা সাহায্য ও আর্থিক অনুদান ব্যাবস্থাপনার ক্ষেত্রেও যথেষ্ট দক্ষতা ও স্বচ্ছতার পরিচয় দিয়েছে হামাস। আগামী দিনে গাজার নিপীড়িত মুসলীম জনগোষ্ঠির আশা আকাংখ্যার প্রতীক হামাস।



তথ্যসুত্র-

১) উইকিপিডিয়া

২)ডয়চে ভেলে

৩)নিউজনেক্সট বিডি

৪)shyikh mahdi s blog

৫)দৈনিক নয়াদিগন্ত

বিষয়: বিবিধ

১৭১৩ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

244705
১৪ জুলাই ২০১৪ রাত ০৮:৪৬
নুরুজ্জামান লিখেছেন : অসাধারন এক সংগঠন।ইনশাআল্লাহ একদিন হামাসই ফিলিস্তিনিদের পূর্ন নেতৃত্ব দিবে।
১৪ জুলাই ২০১৪ রাত ০৯:৩৩
190098
তরিকুল হাসান লিখেছেন : ইনশাআল্লাহ।
244762
১৫ জুলাই ২০১৪ সকাল ০৬:২৭
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : আল্লাহ তাদেরকে সাহায্য করুন।
১৫ জুলাই ২০১৪ সকাল ০৯:২০
190149
তরিকুল হাসান লিখেছেন : আমীন।
244796
১৫ জুলাই ২০১৪ সকাল ০৯:০১
সত্য নির্বাক কেন লিখেছেন : চমৎকার সব তথ্য উপস্থাপন করার জন্য মোবারকবাদ।যাযাকাল্লাহু খায়রান।
১৫ জুলাই ২০১৪ সকাল ০৯:২১
190150
তরিকুল হাসান লিখেছেন : ধৈর্য নিয়ে পড়ার জন্য আপনাকেও ধন্যবাদ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File