▒▒▒▒ দারসুল কুরআনঃ সুরা আল-আনফাল (আয়াতঃ ২-৪) ▒▒▒▒

লিখেছেন লিখেছেন তরিকুল হাসান ০৭ জুলাই, ২০১৪, ০১:৪৮:১৪ দুপুর



ﺑِﺴْﻢِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺍﻟﺮَّﺣْﻤَﻦِ ﺍﻟﺮَّﺣِﻴﻢ

ﺇِﻧَّﻤَﺎ ﺍﻟْﻤُﺆْﻣِﻨُﻮﻥَ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺇِﺫَﺍ ﺫُﻛِﺮَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻭَﺟِﻠَﺖْ ﻗُﻠُﻮﺑُﻬُﻢْ ﻭَﺇِﺫَﺍ

ﺗُﻠِﻴَﺖْ ﻋَﻠَﻴْﻬِﻢْ ﺁﻳَﺎﺗُﻪُ ﺯَﺍﺩَﺗْﻬُﻢْ ﺇِﻳﻤَﺎﻧًﺎ ﻭَﻋَﻠَﻰ ﺭَﺑِّﻬِﻢْ ﻳَﺘَﻮَﻛَّﻠُﻮﻥَ

(আয়াত-২)

▒▒

সাচ্চা ঈমানদার তো তারাই, আল্লাহকে স্মরণ করা হলে যাদের হৃদয় কেঁপে ওঠে। আর আল্লাহর আয়াত যখন তাদের সামনে পড়া হয়, তাদের ঈমান বেড়ে যায় এবং তারা নিজেদের রবের ওপর ভরসা করে।



▒▒They only are the (true) believers whose hearts feel fear when Allah is mentioned, and when His revelations are recited unto them they increase their faith, and who trust in their Lord;

ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻳُﻘِﻴﻤُﻮﻥَ ﺍﻟﺼَّﻠَﺎﺓَ ﻭَﻣِﻤَّﺎ ﺭَﺯَﻗْﻨَﺎﻫُﻢْ ﻳُﻨْﻔِﻘُﻮﻥَ

(আয়াত-৩)

▒▒
তারা নামায কায়েম করে এবং যা কিছু আমি তাদেরকে দিয়েছি তা থেকে (আমার পথে) খরচ করে।


▒▒Who establish worship and spend of that We have bestowed on them.

ﺃُﻭﻟَﺌِﻚَ ﻫُﻢُ ﺍﻟْﻤُﺆْﻣِﻨُﻮﻥَ ﺣَﻘًّﺎ ﻟَﻬُﻢْ ﺩَﺭَﺟَﺎﺕٌ ﻋِﻨْﺪَ ﺭَﺑِّﻬِﻢْ ﻭَﻣَﻐْﻔِﺮَﺓٌ

ﻭَﺭِﺯْﻕٌ ﻛَﺮِﻳﻢ

(আয়াত-৪)

▒▒
এ ধরনের লোকেরাই প্রকৃত মুমিন। তাদের জন্য তাদের রবের কাছে রয়েছে বিরাট মর্যাদা, ভুলত্রুটির ক্ষমা ও উত্তম রিযিক।


▒▒Those are they who are in truth believers. For them are grades (of honour) with their Lord, and pardon, and a bountiful provision.

▓█▓ সুরা আনফালের নামকরন▓█▓

সাধারনত সুরার নামকরন দুই ভাবে হয়ে থাকে-

১. বহুল আলোচিত শব্দ (শব্দ ভিত্তিক)

যেমন- নাস, ফালাক ইত্যাদি।

২. বিষয়ভিত্তিক

যেমন-সুরা ফাতেহা,ইখলাস ইত্যাদি।

এ সুরায় আনফাল সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।আনফাল শব্দটি নফল শব্দের বহুবচন। এর অর্থ অনুগ্রহ, দান, উপঢৌকন ও অতিরিক্ত।

কুরআন ও হাদিসের দৃষ্টিতে নফল হচ্ছে-

(১) হজরত ইবনে আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন, যুদ্ধলদ্ধ সম্পদকে আনফাল বলা হয়।

(২) কারো মতে বন্টনের পর যোদ্ধাদেরকে যে অতিরিক্ত সম্পদ দেয়া হয় তাকে আনফাল বলা হয়।

(৩) কারো কারো মতে বিনা যুদ্ধে প্রাপ্ত মুশরিকদের ধন-সম্পদ ও দাস-দাসীই আনফাল।

(৪) কারো কারো মতে সাধারণ বন্টনের পূর্বে সৈনিকদের উৎসাহ প্রদানের নিমিত্তে ইমাম কর্তৃক প্রদেয় সম্পদকে আনফাল বলা হয়।

মোট কথা আনফাল আল্লাহর পক্ষ থেকে এক বৈধ অতিরিক্ত দান। এটা সৈনিকদের পাওনা বা পারিশ্রমিক নয়। তাদের পাওনা হবে পরকালে। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাদের জন্য পরকালে বিরাট নিয়ামত রেখে দিয়েছেন।

সূরায়ে আনফাল নাজিলের প্রেক্ষাপট

তখন দ্বিতীয় হিজরি। সময় তখনো বেশি গড়ায়নি। তাই বেশ কিছু বিষয়ের প্রতি মুসলিমদের যেমন দৃষ্টি আকর্ষণ ছিল অত্যাবশ্যকীয়, তেমনি প্রয়োজন ছিল প্রশিক্ষণ ও সাবধান হওয়ার। তাই মৌলিক কিছু বিষয় সূরাটিতে সন্নিবেশিত হয়েছে।

▓█▓ বিস্তারিত ব্যাখ্যা▓█▓

আল্লাহ সুবহানা-তায়ালা সুরা আল-আনফাল এর ২য় আয়াতে জানাচ্ছেন-

সাচ্চা ঈমানদার তো তারাই, আল্লাহকে স্মরণ করা হলে যাদের হৃদয় কেঁপে ওঠে। আর আল্লাহর আয়াত যখন তাদের সামনে পড়া হয়, তাদের ঈমান বেড়ে যায় এবং তারা নিজেদের রবের ওপর ভরসা করে।



এখান থেকে পাঁচটি বিষয় ভালভাবে বুঝে নেয়া প্রয়োজন।

১) যিকর ( আল্লাহর স্মরন)

২) হৃদয় কেঁপে উঠা

৩) তিলাওয়াত

৪) ঈমানের বাড়া কমা

৫) তাওয়াক্কুল ( রবের উপর ভরসা করা)

▓▓ যিকর অর্থ ▓▓

যিকির অর্থ স্মরণ করা। ইবাদাতের মাধ্যমে আল্লাহকে স্মরণ করা, তাঁর আদেশ মেনে নেয়া এবং তাঁরই আনুগত্য করাকে যিকর বলা হয়। ব্যাপক অর্থে মানবজীবনের সকল কথা, সকল কাজ ও সকল ইবাদাতে আল্লাহকে মেনে নেয়াই যিকর।

কুরআন তিলাওয়াত, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ,সুবহানাল্লাহ, আল-হামদু লিল্লাহ, আল্লাহু আকবার যেমন যিকর তেমনি সকল ইবাদাত হচ্ছে যিকর।

শরীয়াতে যেই যিকরের অস্তিত্ব নেই সেই ধরনের যিকর করা বিদআত। যেমন শুধু ইল্লাল্লাহ, হু-হু ইত্যাদি। যিকরের মৌলিক বিধান হচ্ছে: যাতে চাওয়া-পাওয়া,পবিত্রতা ঘোষণা, একত্ববাদের ঘোষণা, প্রশংসা ইত্যাদি থাকবে সেটাই যিকর।

▓▓হৃদয় কেঁপে ওঠার অর্থ▓▓

আয়াতে “যখন আল্লাহ শব্দটি উচ্চারিত হয় তখন অন্তর কেঁপে ওঠে” উল্লেখ করা হয়েছে। যেহেতু ‘আল্লাহ’ শব্দটি উচ্চারিত হলে অন্তর কেঁপে ওঠে সেহেতু এটার পরিধি শুধু শাব্দিক উচ্চারণ নয়, বরং এর ভেতরকার রহস্য উন্মোচন জরুরি। আল্লাহ বলার সাথে সাথে বান্দার সামনে তাঁর ৪টি অত্যাবশ্যকীয় গুণ ভেসে ওঠে-

*তিনিই একমাত্র খালেক বা সৃষ্টিকর্তা। তাঁর সাথে আরেকজন সৃষ্টিকর্তা নেই।অস্তিত্বহীন থেকে তিনিই আমাদের অস্তিত্বে এনেছেন।

*তিনিই একমাত্র রাযযাক বা রিযিকদাতা। স্থলভাগের সকল প্রাণী তথা মানুষ জন্তু-জানোয়ার, কীট-পতঙ্গ, পানিতে বসবাসকারী সকল প্রাণীকে তিনিই রিযিক দিয়ে থাকেন। তাঁর দেয়া রিযিকের সাথে কারো রিযিকের তুলনা হয় না।

*তিনিই একমাত্র মালিক। যেহেতু তিনিই সৃষ্টি করেছেন এবং তিনিই রিযিক দিয়ে লালন পালন করে যাচ্ছেন, সেহেতু তিনিই হবেন এসবের মালিক। মানুষ মিছে মিছে বা ক্ষণস্থায়ী মালিকানার দাবি করছ্ল

*আর তিনিই একমাত্র হাকিম বা হুকুমদাতা। যেহেতু তিনি খালেক, তিনি রাযযাক এবং তিনিই মালিক সেহেতু তিনিই হবেন হাকিম। হুকুমাত ও রাজত্ব চলবে তাঁর।

▓▓তিলাওয়াত▓▓

কুরআনুল কারীমে তিলওয়াতের পাশাপাশি আরো ৩টি শব্দ পাওয়া যায়।

৪টি শব্দ যদিও আলাদা অর্থবোধক, কিন্ত কুরআনে পারস্পরিক সম্পূরক অর্থ হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।

(১) কিরআত শব্দটির অর্থ হচ্ছে পড়া। পঠিত অংশটির অর্থ বুঝা বা না বুঝার কোন শর্ত এখানে নেই। যেমন- কেউ কুরআনের অর্থ বোঝে না, সেও এই কুরআন পড়লে ছাওয়াব পাবে। আবার অর্থ বুঝে পাঠ করলেও ছাওয়াব পাবে। কুরআনে বলা হয়েছে:

ﻭَﺇِﺫَﺍ ﻗُﺮِﺉَ ﺍﻟْﻘُﺮْﺁﻥُ ﻓَﺎﺳْﺘَﻤِﻌُﻮﺍ ﻟَﻪُ ﻭَﺃَﻧﺼِﺘُﻮﺍ ﻟَﻌَﻠَّﻜُﻢْ ﺗُﺮْﺣَﻤُﻮﻥ

'আর যখন কোরান পড়া হয় তখন তোমরা মন দিয়ে তা শুনবে ও চুপক’রে থাকবে যাতে তোমাদের ওপর দয়া করা হয়।'(সুরা আ'রাফ-২০৪)


একারণে আলিম, বিজ্ঞ, অনভিজ্ঞ, কৃষক,শ্রমিক,ধনী,গরীব তথা সর্বস্তরের মানুষ তাদের ইবাদাতে কুরআন থেকে পাঠ করে। এ শ্রেণীর লোকেরা কুরআনের প্রতি অক্ষরে ১০ নেকি করে পাবে।

(২) তিলাওয়াত এর অর্থ মেলানো। অর্থাৎ মুখে যা পড়বে তা মনের সাথে মেলাবে। মনের সাথে মেলাতে হলে তাকে এর অর্থ বুঝতে হবে। মহান আল্লাহ পাক ইরশাদ করছেন-

ﻭَﺇِﺫَﺍ

ﺗُﻠِﻴَﺖْ ﻋَﻠَﻴْﻬِﻢْ ﺁﻳَﺎﺗُﻪُ ﺯَﺍﺩَﺗْﻬُﻢْ ﺇِﻳﻤَﺎﻧًﺎ

“আর আল্লাহর আয়াতসমূহ তাদের সামনে তিলাওয়াত করলে তাদের ঈমান বেড়ে যায়।”


এর দ্বারা বুঝা যায় যে,তিলাওয়াত করলে ঈমান বৃদ্ধি পায়। অর্থ না জানলে বৃদ্ধির প্রশ্নই আসে না। এক্ষেত্রে তিলওয়াতকারীরা ১০ নেকি পাওয়ার সাথে সাথে ঈমান বৃদ্ধির যাবতীয় দিকগুলোও পাচ্ছে।

(৩) তাদাব্বুর শব্দের অর্থ পেছনে লাগা। যাকে পরিভাষায় গবেষণা বলা হয়। কুরআনুল কারীমের আয়াতগুলোর ভেতরে কি আছে, তা বের করার জন্য পেছনে লেগে থাকার নাম তাদাব্বুর। কুরআনুল কারীমে বলা হয়েছে,

ﺃَﻓَﻠَﺎ ﻳَﺘَﺪَﺑَّﺮُﻭﻥَ ﺍﻟْﻘُﺮْﺁﻥَ ﺃَﻡْ ﻋَﻠَﻰٰ ﻗُﻠُﻮﺏٍ ﺃَﻗْﻔَﺎﻟُﻬَﺎ

'তারা কি কুরআনুল কারীমের পেছনে লেগে থাকে না (গবেষণা করে না), নাকি তাদের অন্তরে তালা ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে?'(সুরা মুহাম্মাদ, আয়াত ২৪)


গবেষণা করলে ১০ নেকি, ঈমান বৃদ্ধির যাবতীয় দিক এবং গবেষণার সকল পূণ্য ও পুঁজি পেয়ে যাচ্ছে।

(৪) দারস শব্দটির অর্থ পাঠ কিরআত, তিলাওয়াত ও তাদাব্বুরের

মাধ্যমে নির্গত বিষয়সমূহকে জনসাধারণে সামনে তুলে ধরার নামই দারস। সাধারণের বোধগম্য বা আমলযোগ্য করে পরিপাটি করে পেশকরার নামই দারস।এক্ষেত্রে ১০ নেকি, ঈমান বৃদ্ধির যাবতীয় দিক, গবেষণার সকল পূণ্য ও পুঁজি পাওয়ার সাথে সাথে বয়স, মেধা ও শ্রেণীভিত্তিক সকল মানুষের সামনে দীনকে তুলে ধরার সুযোগ হচ্ছে।উপরের আলোচনা দ্বারা একথা স্পষ্টহয়ে গেল যে, উল্লেখিত ৪টি শব্দ পরস্পর পরস্পরের সহায়ক এবং প্রত্যেকটির মধ্যে পাঠের দিক রয়েছে।

▓▓ঈমান বৃদ্ধির অর্থ▓▓

ঈমান বৃদ্ধির ক্ষেত্রে নিন্মোক্ত বিষয় লক্ষনীয়-

(১) বাস্তবেই ঈমান বাড়ে ও কমে। হজরত বিলালের (রা) ঈমান আর বর্তমান সমাজের যেকোন মুমিনের ঈমান এক রকম নয়। শক্তির দিক থেকে যেমন অনেক পার্থক্য আছে, পরিধির দিক থেকেও পার্থক্য আছে। যেই ঈমান প্রচন্ড আঘাত সহ্য করে তপ্ত-বালুর ওপর চিৎ হয়ে শুয়ে আহাদ আহাদ বলে, আঘাতের পর আঘাতকে ভ্রুক্ষেপ না করে ঈমানের বাণীতে পরিতৃপ্তি লাভ করে, তার ঈমান কত বড়, আর কত শক্তিশালী তা কোন যন্ত্র দ্বারা পরিমাপযোগ্য নয়। শুধু চিন্তার ব্যাপার, উপলদ্ধি করার বিষয়।

(২) ঈমানের কারণে, দুনিয়ার সকল বিষয় মুমিনের কাছে তুচ্ছ হয়ে যায়। বড় হয়ে দাড়ায় আল্লাহ ও রাসূল। আনুগত্যের চরম পরাকাষ্ঠা দেখিয়ে ঈমান তার নিজস্ব আলোতে উজ্জ্বল হয়ে ধরা দেয়। দুনিয়ার কোন শক্তির সামনে সে মাথা নত করতে শেখায় না। মানুষকে এক লা-শরিক আল্লাহর ইবাদতের নমুনা বানিয়ে দেয়।এতে তার জীবন হয়ে ওঠে ভারসাম্যপূর্ণ

এবং নরম ও ভদ্রোচিত।

▓▓তাওয়াক্কুল▓▓

তাওয়াক্কুল শব্দটির অর্থ নির্ভর করা। শব্দটি সাধারণত আল্লাহর ওপর নির্ভর

অর্থেই ব্যবহৃত হয়ে থাকে। নিজের সম্ভাব্য যোগ্যতা, মেধা ও উপকরণ ব্যবহার করে তারপর আল্লাহর ওপর ভরসা করতে হয়। এ ধরনের ভরসা করা ফরজ এবং ঈমানের অপরিহার্য দিক।যেমন কৃষক তার জমিন হাল বা অন্য মাধ্যমে আগাছা মুক্ত করবে। তারপর বীজ বপন করে সকল প্রকার নিয়ম অনুসরণ করবে। পরিশেষে ফসলের জন্য আল্লাহর ওপর ভরসা করবে, এটাই হচ্ছে তাওয়াক্কুল। আর ঘরে বসে এ কথা বলা যে, আমাকে যে আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন সে আল্লাহ আমাকে দেখছেন, কোন চেষ্টা আমি করব না, আমার রিযিকের ব্যবস্থা তিনিই করবেন, আমি তাঁর ওপর ভরসা করলাম। এটাকে তাওয়াক্কুল বলা হয় না।

▒▒সুরা আল-আনফালের ৩য় আয়াতে আল্লাহ জানাচ্ছেন-

তারা নামায কায়েম করে এবং যা কিছু আমি তাদেরকে দিয়েছি তা থেকে (আমার পথে) খরচ করে।


এখান থেকে দুটি বিষয় বুঝে নিতে হবে।

১) নামাজ কায়েম।

২) আল্লাহর পথে খরচ।

▓▓নামাজ কায়েম▓▓

‘কায়েম করা’ কথাটির অর্থ হচ্ছে প্রতিষ্ঠা করা।



নামাজ কায়েম বিশদ আলোচনার দাবী রাখে। তাই এই বিষয়ে বক্ষমান আলোচনায় বিস্তারিত উল্লেখ না করে কিছু আয়াত ও হাদিস উল্লেখ করছি-

আল্লাহ তাআলা বলেন:

وَأَقِيمُواْ الصَّلاَةَ وَآتُواْ الزَّكَاةَ وَارْكَعُواْ مَعَ الرَّاكِعِينَ

“তোমরা নামায সুপ্রতিষ্ঠিত কর এবং রুকুকারীদের সাথে রুকু কর।” (সূরা আল বাকারা, আয়াত: ৪৩)


আল্লাহ্‌ তাআলা বলেন,

اتْلُ مَا أُوحِيَ إِلَيْكَ مِنَ الْكِتَابِ وَأَقِمِ الصَّلَاةَ إِنَّ الصَّلَاةَ تَنْهَى عَنِ الْفَحْشَاء وَالْمُنكَرِ وَلَذِكْرُ اللَّهِ أَكْبَرُ وَاللَّهُ يَعْلَمُ مَا تَصْنَعُونَ

আপনি আপনার প্রতি প্রত্যাদিষ্ট কিতাব পাঠ করুন এবং নামায কায়েম করুন। নিশ্চয় নামায অশ্লীল ও গর্হিত কার্য থেকে বিরত রাখে। আল্লাহর স্মরণ সর্বশ্রেষ্ঠ। আল্লাহ জানেন তোমরা যা কর। [সুরা আনকাবুত: ৪৫]


আল্লাহ্‌ তাআলা বলেন,

إِنَّ الصَّلاَةَ كَانَتْ عَلَى المُؤْمِنِيْنَ كِتَابًا مَوْقُوْ تَا۔

নিশ্চয় নামায মুসলমানদের উপর ফরয নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে। সূরা নিসা, আয়াত,১০৩



নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়াসাল্লাম বলেন,

صَلَاةُ الْجَمَاعَةِ أَفْضَلُ مِنْ صَلَاةِ الْفَذِّ بِسَبْعٍ وَعِشْرِينَ دَرَجَةً۔

জামাআতের নামায একা নামাযের চেয়ে সাতাশ গুণ উত্তম। (সহীহ্‌ মুসলিম, ৬৫০)


হযরত আমর বিন শুয়াইব (রাHappy তাহার পিতার মাধ্যমে তার দাদা হতে বর্ণনা করেন যে, তিনি বললেন, রাসূল (সHappy বলেছেন,

তোমাদের সন্তানদেরকে নামাযের আদেশ দাও যখন তারা সাত বছরে পৌঁছবে আর যখন তারা দশ বছর বয়সে পৌঁছবে তখন তাদের নামাজের জন্য প্রহার করবে এবং তাদের শোয়ার জায়গা বা স্থান পৃথক করে দেবে। (আবু দাউদ)


▓▓আল্লাহর পথে খরচ▓▓



مَّثَلُ الَّذِينَ يُنفِقُونَ أَمْوَالَهُمْ فِي سَبِيلِ اللّهِ كَمَثَلِ حَبَّةٍ أَنبَتَتْ سَبْعَ سَنَابِلَ فِي كُلِّ سُنبُلَةٍ مِّئَةُ حَبَّةٍ وَاللّهُ يُضَاعِفُ لِمَن يَشَاء وَاللّهُ وَاسِعٌ عَلِيمٌ

যারা আল্লাহর রাস্তায় স্বীয় ধন সম্পদ ব্যয় করে, তাদের উদাহরণ একটি বীজের মত, যা থেকে সাতটি শীষ জন্মায়। প্রত্যেকটি শীষে একশ করে দানা থাকে। আল্লাহ অতি দানশীল, সর্বজ্ঞ।(সূরা-বাকারা-২৬১ আয়াত)


وَأَنفِقُواْ فِي سَبِيلِ اللّهِ وَلاَ تُلْقُواْ بِأَيْدِيكُمْ إِلَى التَّهْلُكَةِ وَأَحْسِنُوَاْ إِنَّ اللّهَ يُحِبُّ الْمُحْسِنِينَ

আর ব্যয় কর আল্লাহর পথে, তবে নিজের জীবনকে ধ্বংসের সম্মুখীন করো না। আর মানুষের প্রতি অনুগ্রহ কর। আল্লাহ অনুগ্রহকারীদেরকে ভালবাসেন।(সূরা-বাকারা-১৯৫ আয়াত)


الَّذِينَ يُنفِقُونَ أَمْوَالَهُم بِاللَّيْلِ وَالنَّهَارِ سِرًّا وَعَلاَنِيَةً فَلَهُمْ أَجْرُهُمْ عِندَ رَبِّهِمْ وَلاَ خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلاَ هُمْ يَحْزَنُونَ

যারা স্বীয় ধন-সম্পদ ব্যয় করে, রাত্রে ও দিনে, গোপনে ও প্রকাশ্যে। তাদের জন্যে তাদের সওয়াব রয়েছে তাদের পালনকর্তার কাছে। তাদের কোন আশঙ্কা নেই এবং তারা চিন্তিত ও হবে না। (সূরা-বাকারা-২৭৪ আয়াত)।


مَّن ذَا الَّذِي يُقْرِضُ اللّهَ قَرْضًا حَسَنًا فَيُضَاعِفَهُ لَهُ أَضْعَافًا كَثِيرَةً وَاللّهُ يَقْبِضُ وَيَبْسُطُ وَإِلَيْهِ تُرْجَعُونَ

এমন কে আছে যে, আল্লাহকে ঋন দেবে, উত্তম ঋন; অতঃপর আল্লাহ তাকে দ্বিগুণ-বহুগুণ বৃদ্ধি করে দিবেন। আল্লাহই সংকোচিত করেন এবং তিনিই প্রশস্ততা দান করেন এবং তাঁরই নিকট তোমরা সবাই ফিরে যাবে। (সূরা-বাকারা-২৪৫ আয়াত)।



وَمَا لَكُمْ أَلَّا تُنفِقُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَلِلَّهِ مِيرَاثُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ لَا يَسْتَوِي مِنكُم مَّنْ أَنفَقَ مِن قَبْلِ الْفَتْحِ وَقَاتَلَ أُوْلَئِكَ أَعْظَمُ دَرَجَةً مِّنَ الَّذِينَ أَنفَقُوا مِن بَعْدُ وَقَاتَلُوا وَكُلًّا وَعَدَ اللَّهُ الْحُسْنَى وَاللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ خَبِيرٌ

তোমাদেরকে আল্লাহর পথে ব্যয় করতে কিসে বাধা দেয়, যখন আল্লাহই নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের উত্তরাধিকারী? তোমাদের মধ্যে যে মক্কা বিজয়ের পূর্বে ব্যয় করেছে ও জেহাদ করেছে, সে সমান নয়। এরূপ লোকদের মর্যদা বড় তাদের অপেক্ষা, যার পরে ব্যয় করেছে ও জেহাদ করেছে। তবে আল্লাহ উভয়কে কল্যাণের ওয়াদা দিয়েছেন। তোমরা যা কর, আল্লাহ সে সম্পর্কে সম্যক জ্ঞাত।(সূরা-হাদিদ-১০ আয়াত)


وَأَنفِقُوا مِن مَّا رَزَقْنَاكُم مِّن قَبْلِ أَن يَأْتِيَ أَحَدَكُمُ الْمَوْتُ فَيَقُولَ رَبِّ لَوْلَا أَخَّرْتَنِي إِلَى أَجَلٍ قَرِيبٍ فَأَصَّدَّقَ وَأَكُن مِّنَ الصَّالِحِينَ

আমি তোমাদেরকে যা দিয়েছি, তা থেকে মৃত্যু আসার আগেই ব্যয় কর। অন্যথায় সে বলবেঃ হে আমার পালনকর্তা, আমাকে আরও কিছুকাল অবকাশ দিলে না কেন? তাহলে আমি সদকা করতাম এবং সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত হতাম। (সূরা-মুনাফিকুন১০)


عَنْ اَبِيْ هُرَيْرَةَ (رض) قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهَ (صلعم) مَامِن يَّوْمٍ يُّصْبِحُ الْعِبَادُ اِلاَّ مَكَانَ يَنْزْلاَنِ فِيْقُوْلُ اَحَدَكُمْ اَللَّهُمَّ اَعْطِيْ مُنْفِقًا خَلفًا وَّيَقُوْلُ الاَخِرُ اَعْطِ مُمْسِكًا تَلَقًا ـ

হযরত আবু হুরায়রা (রা) বলেন, রাসূল (সা) বলেছেন, যখনই আল্লাহর বান্দারা প্রত্যুষে শয্যা ত্যাগ করে তখনই দুজন ফিরিশতা অবতীর্ণ হয়। তার মধ্যে একজন বলতে থাকে হে আল্লাহ, তুমি দানকারীকে প্রতিদান দাও। আর অন্যজন বলতে থাকে হে আল্লাহ! কৃপণ ব্যক্তিকে ধ্বংস কর। (বুখারী,মুসলিম)


عَنْ اَبِيْ يَحْيَي خَرِيْمِ اِبْنِ فَاتِكٍ (رض) قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ (صلعم) مَنْ اَنْفَقَ نَفَقَةً فِيْ سَبِيْلِ اللهِ كُتِبَ لَهُ سَبْعَ مِائَةًَّ ضُعْفِ ـ

আবু ইয়াহইয়া খারীম ইবনে ফাতিক (রা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন রাসূল (সা) বলেছেন, যে আল্লাহর পথে একটি জিনিস দান করলো, তার জন্য সাতশত গুণ সওয়াব লিখা হবে। (তিরমিযী)


عِنْ اِبْى هُرَيْرَةَ (رض) قَالَ قَالَ رَسُوْلَ اللهِ (صلعم) قَالَ اللهُ تَعَالِي اَنْفِق يَا اِبْنَ ادَمَ اُنْفِقُ عَلَيْكَ ـ

হযরত আবু হুরায়রা (রা) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন আল্লাহ বলেন, হে আদম সন্তান! তুমি দান করতে থাক আমিও তোমাকে দান করব। (বুখারী, মুসলিম)


▒▒মহান আল্লাহ পাক সুরা আন-ফালের ৪র্থ আয়াতে জানাচ্ছেন-

এ ধরনের লোকেরাই প্রকৃত মুমিন। তাদের জন্য তাদের রবের কাছে রয়েছে বিরাট মর্যাদা, ভুলত্রুটির ক্ষমা ও উত্তম রিযিক।


সত্যিই প্রকৃত মুমিনের মর্যাদা অনেক। মহান আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন-

سَابِقُوا إِلَى مَغْفِرَةٍ مِّن رَّبِّكُمْ وَجَنَّةٍ عَرْضُهَا كَعَرْضِ السَّمَاء وَالْأَرْضِ أُعِدَّتْ لِلَّذِينَ آمَنُوا بِاللَّهِ وَرُسُلِهِ ذَلِكَ فَضْلُ اللَّهِ يُؤْتِيهِ مَن يَشَاء وَاللَّهُ ذُو الْفَضْلِ الْعَظِيمِ

তোমরা অগ্রে ধাবিত হও তোমাদের পালনকর্তার ক্ষমা ও সেই জান্নাতের দিকে, যা আকাশ ও পৃথিবীর মত প্রশস্ত। এটা প্রস্তুত করা হয়েছে আল্লাহ ও তাঁর রসূলগণের প্রতি বিশ্বাসস্থাপনকারীদের জন্যে। এটা আল্লাহর কৃপা, তিনি যাকে ইচ্ছা, এটা দান করেন। আল্লাহ মহান কৃপার অধিকারী। [সুরা হাদীদ: ২১]


‘সুরা নিসা’র ১৭ নং আয়াতে এমন মানুষের তওবা কবুল করার অঙ্গীকার আল্লাহ স্বয়ং করেছেন।

أُوْلَـئِكَ جَزَآؤُهُم مَّغْفِرَةٌ مِّن رَّبِّهِمْ وَجَنَّاتٌ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الأَنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا وَنِعْمَ أَجْرُ الْعَامِلِينَ

অর্থাৎ;-
তাদের জন্য প্রতিদান হল তাদের পালন কর্তার ক্ষমা ও জান্নাত, যার পাদদেশে প্রবাহিত প্রস্রবন, যেখানে তারা থাকবে অনন্ত কাল। কর্মশীলদের জন্য কতইনা চমৎকার প্রতিদান।


মহান আল্লাহ আমাদের প্রকৃত মুমীন হওয়ার তৌফিক দিন। আমীন।

তথ্যসুত্র-

১।বাংলা তাফহীমুল কুরআন

২।উইকিপিডিয়া

৩।তাফসীর ইবন কাছীর।

৪।তাফসীর মাআরেফুল কোরআন।

৫।নামাজ কেন আজ ব্যর্থ হচ্ছে।

৬। মাসিক ছাত্র-সংবাদ।

বিষয়: বিবিধ

৫৭২৩ বার পঠিত, ১৮ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

242541
০৭ জুলাই ২০১৪ দুপুর ০২:০২
সন্ধাতারা লিখেছেন : Very beautiful post alhamdulillah. Jajakalla khairan.
০৭ জুলাই ২০১৪ বিকাল ০৫:০৪
188368
তরিকুল হাসান লিখেছেন : ধন্যবাদ।
242545
০৭ জুলাই ২০১৪ দুপুর ০৩:২০
প্রেসিডেন্ট লিখেছেন : জাযাকাল্লাহ।
আল্লাহ আমাদের প্রকৃত ঈমানদার হওয়ার তাওফীক দিন। সিরাতুল মুস্তাকিম এর পথে পরিচালিত করুন।
إِنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا وَصَدُّوا عَن سَبِيلِ اللَّهِ وَشَاقُّوا الرَّسُولَ مِن بَعْدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُمُ الْهُدَىٰ لَن يَضُرُّوا اللَّهَ شَيْئًا وَسَيُحْبِطُ أَعْمَالَهُمْ [٤٧:٣٢]

-যারা কুফরী করে এবং আল্লাহর পথে আসা হতে বিরত রাখে এবং তাদের কাছে হেদায়াত এর পথ পরিষ্কার হয়ে যাওয়ার পরও যারা আল্লাহর রাসূলের বিরোধিতা করে, তারা কখনো আল্লাহ তায়ালার কোনো ক্ষতি সাধন সক্ষম হবেনা; অচিরেই আল্লাহ তায়ালা তাদের যাবতীয় কর্ম নিষ্ফল করে দিবেন।
০৭ জুলাই ২০১৪ বিকাল ০৫:০৫
188369
তরিকুল হাসান লিখেছেন : আল্লাহ আমাদের প্রকৃত
ঈমানদার হওয়ার তাওফীক
দিন। সিরাতুল মুস্তাকিম
এর পথে পরিচালিত করুন। আমীন। ধন্যবাদ।
242550
০৭ জুলাই ২০১৪ দুপুর ০৩:৪৯
আমি মুসাফির লিখেছেন :


অনেক উপকৃত হলাম এবং সুন্দর পোষ্ট
০৭ জুলাই ২০১৪ বিকাল ০৫:০৫
188370
তরিকুল হাসান লিখেছেন : আলহামদুলিল্লাহ।
242594
০৭ জুলাই ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:০১
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : শিক্ষিনিয় পোষ্টটির জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আল্লাহ কে স্মরন করতে আমরা ভুলে গেছি। সেটাই পতনের কারন।
০৭ জুলাই ২০১৪ রাত ০৯:২৫
188419
তরিকুল হাসান লিখেছেন : আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।
242615
০৭ জুলাই ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:১৭
আফরা লিখেছেন : জাযাকাল্লাহ।
আল্লাহ আমাদের প্রকৃত ঈমানদার হওয়ার তাওফীক দিন।আমীন ।
০৭ জুলাই ২০১৪ রাত ০৯:২৫
188420
তরিকুল হাসান লিখেছেন : আমীন।
242639
০৭ জুলাই ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:০১
শেখের পোলা লিখেছেন : উপকারী পোষ্ট৷ আরও লিখুন৷ ধন্যবাদ৷
০৭ জুলাই ২০১৪ রাত ০৯:২৬
188421
তরিকুল হাসান লিখেছেন : লিখব ইনশাআল্লাহ।
242741
০৮ জুলাই ২০১৪ রাত ০৪:৪৮
মাটিরলাঠি লিখেছেন :
"সাচ্চা ঈমানদার তো তারাই, আল্লাহকে স্মরণ করা হলে যাদের হৃদয় কেঁপে ওঠে। আর আল্লাহর আয়াত যখন তাদের সামনে পড়া হয়, তাদের ঈমান বেড়ে যায় এবং তারা নিজেদের রবের ওপর ভরসা করে।" -এই আয়াত দিশেহারা মুমীনের জন্য বিশাল এক নিয়ামত ও দিক নির্দেশনা। অবশ্য আল্লাহ'র প্রত্যেক আয়াতই নিয়ামত। জাজাকাল্লাহু খাইরান। Good Luck Good Luck

০৮ জুলাই ২০১৪ সকাল ০৫:৩২
188510
তরিকুল হাসান লিখেছেন : সহমত। অনেক ধন্যবাদ।
242965
০৮ জুলাই ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:০৭
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : যাযাকুমুল্লাহ।
০৮ জুলাই ২০১৪ রাত ০৮:০৭
188682
তরিকুল হাসান লিখেছেন : আলহামদুলিল্লাহ।
243942
১২ জুলাই ২০১৪ রাত ০২:০০
জোনাকি লিখেছেন : জাযাকাল্লাহু খাইরান।
১২ জুলাই ২০১৪ রাত ০৪:৪৩
189507
তরিকুল হাসান লিখেছেন : ধন্যবাদ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File