১১ই মে , কুরআন দিবস

লিখেছেন লিখেছেন তরিকুল হাসান ১১ মে, ২০১৪, ১২:২৩:১৪ দুপুর



আজ ১১ ই মে।

ঐতিহাসিক কুরআন দিবস। ১৯৮৫ সালের

এই দিনে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ঈদগাহ

ময়দানে সংঘটিত হয় এক পৈশাচিক,

নারকীয় হত্যাকান্ড। ১৯৮৫ সালের ১২

এপ্রিল ভারতের দুইজন উগ্র

সাম্প্রদায়িকতাবাদী নাগরিক পদ্মপল

চোপরা ও শীতল সিং কোরআনের সকল

আরবি কপি ও অনুবাদ বাজেয়াপ্ত করার

জন্য কলকাতা হাইকোর্টে একটি রীট

আবেদন করে। রীটে বলা হয়, কুরআনে এমন

কিছু আয়াত আছে যেখানে কাফির ও

মুশরিকদের হত্যা এবং তাদের

বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রেরণা দেয়া হয়েছে,

তাই এই গ্রন্থ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার জন্ম

দিতে পারে। মিসেস পদ্মা খাস্তগীর

এই মামলা গ্রহণ করে এ বিষয়ে ৩

সপ্তাহের মধ্যে এফিডেভিট প্রদানের

জন্য রাজ্য সরকারের প্রতি নির্দেশ

দেয়। এ সংবাদ

ছড়িয়ে পড়লে সারাবিশ্বে প্রতিবাদে

র ঝড় উঠে।

১০ মে জুমার নামাজ শেষে বায়তুল

মোকাররম মসজিদ থেকে হাজার

হাজার ইসলামী ছাত্র-জনতার মিছিল

ও সমাবেশ মিলিত হলে লাঠিচার্জ

করে ছত্রভঙ্গ করে পুলিশ। পরের দিন ১১

মে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ঈদগাহ

ময়দানে আয়োজিত সমাবেশে ১৪৪

ধারা জারি করে পুলিশ।

ইসলামী জনতা শুধুমাত্র দোয়া করার

অনুমতি চাইলে তা না দিয়ে জনতার

উপর গুলী বর্ষণ করে পুলিশ। এতে স্কুল

ছাত্র, কৃষক, রিকশাওয়ালা ও রেল

শ্রমিকসহ গুলিবিদ্ধ হয়ে ৮ জন শাহাদাত

বরণ করেন।

কুরআনকে বাজেয়াপ্ত করার মামলার

খবর ছড়িয়ে পড়ার

সাথে সাথে কলকাতাসহ

সারাবিশ্বে প্রতিবাদের ঝড় উঠে।

সারাদেশের মত চাঁপাইনবাবগঞ্জ

ঈদগাহ ময়দানে আয়োজন করা হয় এক

প্রতিবাদ সমাবেশ। ঘটনার দিন

বেলা ১১ টার সময় সমাবেশের আহবায়ক

মাওলানা হোসাইন

আহমদকে এসপি অফিসে ডেকে সমাবেশ

বন্ধ করার জন্য চাপ দেয়া হয়। কিন্তু

ইসলামী জনতা দলে দলে আসতে থাকে

ঈদগাহ ময়দানের দিকে। উপায়

না দেখে ঈদগাহ ময়দানে ১৪৪

ধারা জারি করে প্রশাসন। শুধুমাত্র

দোয়া করে জনতাকে শান্ত

করে চলে যাবো নেতৃস্থানীয়

ব্যক্তিবর্গের সেই আবেদনও

শুনেনি ম্যাজিষ্ট্রেট

ওয়াহিদুজ্জামান মোল্লা। এসময়

ওয়াহিদুজ্জামান মোল্লা সেই সুযোগ

দেয়া হবে না বলে গালিগালাজ

করতে থাকে, ‘ব্যাটা মৌলবাদীদের

দেখে নেবো' বলেও প্রকাশ্য

হুমকি দেয়। এসময়

ইসলামী জনতা বিক্ষোভে ফেটে পড়লে

ম্যাজিষ্ট্রেট ওয়াহিদুজ্জামান

মোল্লার

নির্দেশে এলোপাথাড়ী গুলী বর্ষণ শুরু

করে পুলিশ। পুলিশের গুলীতে প্রথমেই

মাটিতে লুটিয়ে পড়ে ১০ম শ্রেণীর

ছাত্র শিবির কর্মী আব্দুল মতিন।

হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত

ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করে। এ

ঘটনায় শীষ মোহাম্মদ, রশিদুল হক, ৮ম

শ্রেণীর ছাত্র সেলিম, সাহাবুদ্দীন,

কৃষক আলতাফুর রহমান সবুর, রিকশাচালক

মোক্তার হোসেন ও রেলশ্রমিক নজরুল

ইসলাম শহীদ হন। আহত হয় অর্ধ শতাধিক

মানুষ।

কুরআনের অবমাননাকারীদের

বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা যেখানে সকল

মুসলমানের কর্তব্য

সেখানে ইসলামী জনতার উপর গুলিবর্ষণ

করে ইতিহাসের এক কালো অধ্যায়

রচনা করেছিল বাংলাদেশের কিছু

মুসলমান নামধারী পুলিশ। বর্বরোচিত

হত্যাকান্ডের

নির্দেশদাতা ম্যাজিষ্ট্রেট

ওয়াহিদুজ্জামান মোল্লা এখন

সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা।

বর্বরোচিত এই হত্যাকান্ডের

বিচারতো হয়ইনি,

বরং উল্টো হয়রানি করা হয়েছিল

মুসলিম জনতাকে। ২৯ বছর পার হলেও আজ

এ ঘটনার কোন বিচার হয়নি। শহীদের

রক্তে যারা হলি খেলে আনন্দে আত্মহা

রা হয়েছিল তাদের বিচার যদি এই

দুনিয়ার আদালতে না হয় তাদের

বিচার আখেরাতের আদালতে হবে এই

ভেবে শান্তনা খুঁজে শহীদের

স্বজনেরা।

এ দিনটিকে স্মরণ

করতে ইসলামী ছাত্রশিবির প্রতি বছর

পালন করে ‘কোরআন দিবস' হিসেবে।

বিষয়: বিবিধ

১৮৪০ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

220170
১১ মে ২০১৪ দুপুর ১২:২৭
ব্যতিক্রম বলছি লিখেছেন : 'কুরআন-হাদিস আঁকড়ে ধরি,
সুন্দর আগামী গড়ে তুলি ।
১১ মে ২০১৪ বিকাল ০৫:৫২
167947
তরিকুল হাসান লিখেছেন : স হ ম ত ।
220199
১১ মে ২০১৪ দুপুর ০২:০৯
কইবো কথা বাসর রাতে লিখেছেন : জামাত শিবির মানুষ না সুতরাং তাদের বিচার না হওয়াই ভালো।
১১ মে ২০১৪ বিকাল ০৫:৫৩
167949
তরিকুল হাসান লিখেছেন : বুঝলাম না ।
220394
১১ মে ২০১৪ রাত ১০:৫৫
খেলাঘর বাধঁতে এসেছি লিখেছেন : ইসলাম ধর্মে কোন দিবস নেই, ৩৬৫ দিনই আল্যার দিবস। মা দিবস, বাবা দিবস, বদর দিবস, ভালবাসা দিবস, কোরাণ দিবস..... এগুলো সব কফুরী মতবাদ।
১১ মে ২০১৪ রাত ১১:৫৫
168059
তরিকুল হাসান লিখেছেন : মন্তব্য করার জন্য অনেক ধন্যবাদ ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File