কেউ কেউ অসাধারণ!

লিখেছেন লিখেছেন তরিকুল হাসান ০৬ এপ্রিল, ২০১৪, ০৩:৫১:৩৪ দুপুর



কোপেনহেগেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান পরীক্ষায় নীচের প্রশ্নটা এসেছিল।

“একটি ব্যারোমিটারের সাহায্যে কিভাবে একটি গগণচুম্বী বহুতল

ভবনের উচ্চতা নির্ণয় করা যায় বর্ণনা কর।”

একজন ছাত্র উত্তর দিল- “আমাদেরকে ব্যারোমিটারের মাথায়

একটা দড়ি বাধতে হবে। এরপর ব্যারোমিটারটিকে ভবনের ছাদ

থেকে নীচে নামিয়ে মাটি পর্যন্ত নিতে হবে।তাহলে ব্যারোমিটারের দৈর্ঘ্য আর দড়ির দৈর্ঘ্য যোগ করলেই ভবনের উচ্চতা পাওয়া যাবে।”

এরকম সোজাসাপটা উত্তর পরীক্ষককে এমন রাগিয়ে দিল যে তিনি ততক্ষণাত ছাত্রটিকে ফেল করিয়ে দিলেন। এরপর ছাত্রটি যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে আবেদন করল যে তার উত্তরটি সম্পূর্ণ ঠিক ছিল, তখন বিশ্ববিদ্যালয় একজন নিরপেক্ষ বিচারক নিয়োগ করলেন

ব্যাপারটা মীমাংসা করার জন্য।বিচারক দেখলেন, উত্তরটি সম্পূর্ণ ঠিক, কিন্তু পদার্থবিজ্ঞানের কোন উল্লেখযোগ্য জ্ঞান উত্তরটির মাঝে অনুপস্থিত। তাই তিনি ব্যাপারটির মীমাংসা করার জন্য ঠিক করলেন, ছাত্রটিকে ডাকবেন এবং তাকে ছয় মিনিটসময় দিবেন। এই ছয় মিনিটের মধ্যে ছাত্রটিকে মৌখিকভাবে প্রশ্নটির এমন উত্তর দিতে হবে যার সাথে পদার্থবিজ্ঞানের মৌলিক নীতিগুলির নূন্যতম সম্পর্ক আছে। ছাত্র আসল। এসে চুপচাপ পাচ মিনিট ধরেকপাল

কুচকে বসে বসে চিন্তা করতে লাগল। বিচারক তাকে সতর্ক করে দিলেন যে তার সময় শেষ হয়ে যাচ্ছে। ছাত্রটি বলল, তার কাছে কয়েকটি যথাযোগ্য উত্তর আছে, কিন্তু সে ঠিক করতে পারছে না যে কোনটা সে বলবে। বিচারক তাকে তাড়াতাড়ি করতে বললে ছাত্রটি যে উত্তরগুলি দিলঃ “প্রথমত আপনি ব্যারোমিটারটা নিয়ে ছাদে উঠবেন, এরপর ছাদের সীমানা থেকে ব্যারোমিটারটা ছেড়ে দিবেন

এবং হিসাব করবেন মাটিতে পড়তে ব্যারোমিটারটির কতটুকু সময়

লাগল। এরপর h=(0.5)*g*(t)^2 সূত্রটির সাহায্যে আপনি ভবনের

উচ্চতা মেপে ফেলতে পারবেন। কিন্তু ব্যারোমিটারটার দফারফা হয়ে যাবে।” “অথবা যদি রোদ থাকে তাহলে ব্যারোমিটারটার দৈর্ঘ্য

মাপবেন। এরপর ব্যারোমিটারটাকে দাড়া করিয়ে এর ছায়ার দৈর্ঘ্য মাপবেন। এরপর ভবনের ছায়ার দৈর্ঘ্য মাপবেন। এবং এরপর অনুপাতের ধারণা ব্যাবহার করে কিছুটা হিসাব কষলেই ভবনের উচ্চতা পেয়ে যাবেন।” “কিন্তু আপনি যদি এ ব্যাপারে বাড়াবাড়ি রকমের বিজ্ঞানমুখী হতে চান তাহলে আপনি ব্যারোমিটারের মাথায়

ছোট একটা সুতা বেধে প্রথমে মাটিতে এরপরে ভবনের ছাদে পেন্ডুলামের মত দোলাবেন এবং এইক্ষেত্রে অভিকর্ষ বলের

সংরক্ষণশীলতার কারণে T=2*π*sqrt(l/ g) সূত্র থেকে ভবনের উচ্চতা বের করতে পারবেন।”

“অথবা যদি ভবনটির কোন বহিঃস্থ জরুরী নির্গমন সিড়ি থাকে তাহলে আপনি সেখানে যেয়ে ব্যারোমিটারের দৈর্ঘ্য অনুযায়ী ব্যারোমিটার দিয়ে মেপে মেপে ভবনের উচ্চতা বের করে ফেলতে পারেন।” “আর আপনি যদি একান্তই প্রথাগত এবং বিরক্তিকর পথ অনুসরণ করতে চান তাহলে, প্রথমে ব্যারোমিটারটা দিয়ে ছাদের উপর বায়ুচাপ এবং এরপর মাটিতে বায়ুচাপ মাপবেন। এরপর বায়ুচাপের পার্থক্যকে মিলিবার থেকে ফিটে পরিনত করলেই ভবনের উচ্চতা পেয়ে যাবেন।” “কিন্তু যেহেতু আমাদের সবসময়

চিন্তাশক্তির ব্যাবহার এবং বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি প্রয়োগের উপর জোর দেওয়া হয়, সেহেতু নিঃসন্দেহে সবচেয়ে ভাল পদ্ধতি হবে ভবনের রক্ষণাবেক্ষনের দায়িত্বপালনকারীর কাছে যাওয়া এবং তাকে বলা,

“যদি আপনি নতুন একটি সুন্দর ব্যারোমিটারীর পেতে চান, তাহলে আমি আপনাকে এই ব্যারোমিটারটি দিব, কিন্তু সে জন্য আপনাকে বলতে হবে এই বহুতল ভবনটির উচ্চতা কত!” এই ছাত্রটি ছিল নীলস বোর, পদার্থবিজ্ঞানের নোবেল পুরষ্কারজয়ী প্রথম ডেনিশ বিজ্ঞানী!

বিষয়: বিবিধ

১৪৭৭ বার পঠিত, ১৬ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

203285
০৬ এপ্রিল ২০১৪ বিকাল ০৪:১২
হারিয়ে যাবো তোমার মাঝে লিখেছেন : ভালো লাগলো পড়ে। পদার্থবিজ্ঞান সম্পর্কে ধারণা একদমই নাই।
০৬ এপ্রিল ২০১৪ রাত ১০:৪৫
152865
তরিকুল হাসান লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ ভাই ।
203347
০৬ এপ্রিল ২০১৪ বিকাল ০৫:০৪
সাদাচোখে লিখেছেন : পড়তে ভাল লাগলো। ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।
০৬ এপ্রিল ২০১৪ রাত ১০:৪৬
152866
তরিকুল হাসান লিখেছেন : অসংখ্য ধন্যবাদ ।
203354
০৬ এপ্রিল ২০১৪ বিকাল ০৫:১৯
মেঘ ভাঙা রোদ লিখেছেন : At Wits' End At Wits' End At Wits' End At Wits' End হুম বুঝলাম
০৬ এপ্রিল ২০১৪ রাত ১০:৪৬
152867
তরিকুল হাসান লিখেছেন : হুম ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য ।
203363
০৬ এপ্রিল ২০১৪ বিকাল ০৫:৩৫
মুক্ত কন্ঠ লিখেছেন : ভালো লাগলো পড়ে।
পদার্থবিজ্ঞান
সম্পর্কে ধারণা একদমই নাই।
০৬ এপ্রিল ২০১৪ রাত ১০:৪৭
152868
তরিকুল হাসান লিখেছেন : আমারো ধারনা কম ।
203371
০৬ এপ্রিল ২০১৪ বিকাল ০৫:৫৯
জেদ্দাবাসী লিখেছেন : সাধারনের ভিতরেই অসাধারন লুকিয়ে তাকে ।
বিচারকের রায়টা কি ছিল?

ধন্যবাদ
০৬ এপ্রিল ২০১৪ রাত ১০:৪৭
152869
তরিকুল হাসান লিখেছেন : আমিও কৌতুহলী ।
203391
০৬ এপ্রিল ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:৩৫
গ্যাঞ্জাম খানের খোলা চিঠি লিখেছেন : লোকডা যদি পাচঁ মিনিট ধরে চিন্তা করেই নির্ধরিত সময়ের এক পঞ্চমাংশের খরচ করে ফেলে তাহলে বাকী এক মিনিটের মধ্যে এতো গুলো প্রশ্ন কিভাবে বর্ণনা করলো? আমি তো বাকী লেখাগুলো পড়তে পড়তেই দু'মিনিট খরচ করে ফেলেছি!
বিচারক কি রায় দিলো হেইডাও তো কইলেন না?
ব্যাপারডা কি?
মাথায় তো গ্যাঞ্জাম লাইগ্যা যাওনের অবস্থা!
০৬ এপ্রিল ২০১৪ রাত ১০:৪৯
152870
তরিকুল হাসান লিখেছেন : এই গ্যাঞ্জাম খোলা মোর কম্ম নয় ।
203407
০৬ এপ্রিল ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:০৩
দৃপ্ত কন্ঠ লিখেছেন : বিচারকের রায় অনুপস্থিত...শেষ হইয়াও হইলোনা শেষ অবস্থা...
০৬ এপ্রিল ২০১৪ রাত ১০:৫০
152871
তরিকুল হাসান লিখেছেন : অন্তরে অতৃপ্তি রবে. .
সাংগ করি মনে হবে . .
203500
০৬ এপ্রিল ২০১৪ রাত ০৯:০৪
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : সুন্দর ঘটনাটি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
০৬ এপ্রিল ২০১৪ রাত ১০:৫১
152872
তরিকুল হাসান লিখেছেন : আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File