পাহাড়ের বাকে বাকে - ৫ম পর্ব ।
লিখেছেন লিখেছেন তরিকুল হাসান ২৫ মার্চ, ২০১৪, ০৩:৪২:১৪ দুপুর
সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে বগা লেকের উচ্চতা প্রায় ৩,৫০০ ফুট । বগা লেকের উপর উঠতে গিয়ে জান বের হওয়ার দশা । অনভ্যস্ত পা আর সামনে এগুতে চায় না । কয়েকবার বিশ্রাম নিতে হল । চারপাশের পাহাড়ের দৃশ্য বেশ সুন্দর । নিচে গভীর খাদ ।অবশেষে বগা লেকে উঠতে সমর্থ হলাম । বাংলাদেশের ভূতাত্ত্বিকগণেরমতে বগা হ্রদ মৃত আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখ কিংবা মহাশূন্য থেকে উল্কাপিণ্ডের পতনের ফলে সৃষ্টি হয়েছে।অনেকে আবার ভূমিধ্বসের কারণেও এটি সৃষ্টি হতে পারে বলে মত প্রকাশ করেছেন।
আবার স্থানীয় আদিবাসীদের উপকথা অনুযায়ী,অনেক কাল আগে পাহাড়ের গুহায় একটি ড্রাগন বাস করতো। বম ভাষায় ড্রাগনকে "বগা" বলা হয়। ড্রাগন-দেবতাকে তুষ্ট করতে স্থানীয়রা গবাদী পশু উৎসর্গকরতেন। কিন্তু একবার কয়েকজন এই ড্রাগন দেবতাকে হত্যা করলে চূঁড়াটি জলমগ্ন লেকে পরিণত হয় । যদিও এই উপকথার কোনো বাস্তব প্রমাণ নেই, তবুও উপকথার আগুন উদগীরণকারী ড্রাগন
বা বগা এবং হ্রদের জ্বালামুখের মতো গঠন মৃত আগ্নেয়গিরির ধারণাটির সাথে মিলে যায় ।
বগা লেকে রাতটা থাকার সিদ্ধান্ত নিলাম। লারাম বমের টং এ ব্যাগ রেখে গোসল করতে নামলাম লেকে । লেকের পানি বেশ হিমশীতল । টলটলে পানিতে কিছুক্ষন থাকতেই বেশ ঝরঝরে লাগতে শুরু করল ।
এলোমেলো সাঁতার কাটলাম । বাচ্চাদের মত হৈ হৈ করে উঠলাম । চারপাশের কাউকেই চিনি না , অথচ সবাইকেই কেমন আপন মনে হতে লাগল ।
গোসলের পর পাহাড়ী কুমড়ার সবজি আর মোরগের শক্ত মাংস দিয়ে জম্পেশ খাবার চলল একদফা । এরপর এককাপ চা । একটু বিশ্রাম নিয়ে লেকের চারপাশে চক্কর দেয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম । আঁকাবাকা পাহাড়ী রাস্তা । নিচে রহস্যময় বগা লেক ,আর টলটলে পানিতে জলপদ্মের হাতছানি !
দেখতে দেখতে নেমে এলো নিকষ রাত । আকাশে উঠল লক্ষ রুপালী তাঁরা । দুর থেকে অচেনা ভাষার গান আর ঢাকের গুরুগম্ভীর বাদ্য ভেসে এলো । মনটা কেমন কেমন করতে লাগল ।হঠাৎ মনে হল এই বিশাল পাহাড় আর রহস্যময় প্রকৃতি যিনি সৃষ্টি করতে পারেন তিনি কত মহান ?
ﻛُﻞُّ ﻣَﻦ ﻋَﻠَﻴﻬﺎ ﻓﺎﻥٍ
ভূপৃষ্টের সবকিছুই
ধ্বংসশীল।
Whatsoever is on it (the earth) will
perish.
[27] ﻭَﻳَﺒﻘﻰٰ ﻭَﺟﻪُ ﺭَﺑِّﻚَ ﺫُﻭ ﺍﻟﺠَﻠٰﻞِ ﻭَﺍﻹِﻛﺮﺍﻡِ
একমাত্র আপনার মহিমায় ও
মহানুভব পালনকর্তার
সত্তা ছাড়া।
And the Face of your Lord full of
Majesty and Honour will remain forever.
[28] ﻓَﺒِﺄَﻯِّ ﺀﺍﻻﺀِ ﺭَﺑِّﻜُﻤﺎ ﺗُﻜَﺬِّﺑﺎﻥِ
অতএব,
তোমরা উভয়ে তোমাদের
পালনকর্তার কোন কোন
অবদানকে অস্বীকার করবে?
Then which of the Blessings of your Lord
will you both (jinn and men) deny?
(সুরা আর-রাহমান)
তথ্যসুত্র
১) উইকিপিডিয়া
বিষয়: বিবিধ
১২৩৫ বার পঠিত, ১৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
খুব ভালো লাগ্লো...
সুন্দর লেখা...
মন্তব্য করতে লগইন করুন