পাহাড়ের বাকে বাকে - ১ম পর্ব ।
লিখেছেন লিখেছেন তরিকুল হাসান ২১ মার্চ, ২০১৪, ১০:০৮:৪১ সকাল
অনেকদিন থেকেই বান্দরবান যাওয়ার পরিকল্পনা করছিলাম, কিন্তু সময় করে উঠতে পারছিলাম না ।এছাড়া সংগীও পাওয়া যাচ্ছিল না অবশেষে খুব ক্লোজ বন্ধু রিয়াদ সহ বেরিয়ে পড়লাম ।
রংপুর থেকে সরাসরি বান্দরবানের বাসে সিট পাওয়া গেল একেবারে শেষের সারিতে তাই হানিফ পরিবহনের বাসে করে প্রথমে রংপুর থেকে ঢাকায় গেলাম । ঢাকায় সিনিয়র ভাইয়াদের সংগে কিছুক্ষন সময় কাটিয়ে গেলাম সায়েদাবাদ । সেখানে বান্দরবানের বাসের সিট সুবিধাজনক না হওয়ায় কক্সবাজারের বাসে কেরানীর হাট গিয়ে সিএনজিতে সোজা বান্দরবান ।
বান্দরবান একটি ছোট গোছালো শহর। হোটেলগুলোর বেশিরভাগেই কোন রুম ফাকা পেলাম না । অবশেষে হোটেল গ্রীন হিলে উঠলাম । মাঝারী মানের একটি হোটেল । তবে রিসেপশনের লোকজন অল্পক্ষনের মধ্যেই আমাদের আপন করে নিল । এছাড়াও বান্দরবানের অন্যান্য হোটেলের মধ্যে রয়েছে হোটেল গ্রীন ল্যান্ড ,হোটেল প্লাজা বান্দরবান, হোটেল থ্রী স্টার ইত্যাদি । পরিবার সহ গেলে আগে থেকে বুকিং দিয়ে যাওয়া ভাল । অফসিজনে গেলে নামমাত্র টাকায় ভাল হোটেল পাবেন । রুমে গোসল করে ফ্রেশ হয়ে নিলাম । এরপর সিএনজিতে করে স্বর্নমন্দির, রামজাদি , মেঘলা ও নীলাচলের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পরলাম । ভাড়া নেয় ১২০০ টাকা তবে আমরা ৮০০তে ম্যানেজ করতে পারলাম ।
স্বর্নমন্দির নির্দিষ্ট সময়ে খোলা থাকে তাই অবশ্যই হোটেল রিসেপশন থেকে জেনে তারপর বের হবেন । জাদিটির মূল অংশ অর্থাৎ যেখানে বুদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা উপাসনা করে, সেখানে বুদ্ধ মূর্তি স্থাপন করা হয়েছে এবং সেই মূলঅংশটি স্বর্ণাবরণে তৈরি বলে এটি স্বর্ণ জাদি বা স্বর্ণ মন্দির হিসেবে বেশি পরিচিত।মিয়ানমার ও চীনের বৌদ্ধ তীর্থস্থান বা প্যাগোডার আদলে ২০০০ সালে প্রায় ৪শ' ফুট উঁচু পাহাড়ের
চূড়ায় বিহারাধ্যক্ষ উপঞা জোতথেরো (প্রকাশ উচহ্লা ভান্তে) এই বৌদ্ধ বিহারটি নির্মাণে প্রধান ভূমিকা পালন করেন। জানা গেছে, মিয়ানমারের শোয়েডাগং প্যাগোডা, সুলে প্যাগোডা,শোয়েডং নিয়াত প্যাগোডাসহ ৫টি প্যাগোডার অনুকরণে জাদিটি নির্মাণ করা হয়েছে। প্রতিবছর
সেপ্টেম্বর মাসে এ জাদি প্রাঙ্গণে বসে ৩
দিনব্যাপী ধর্মীয় মেলা। এতে অংশ নেয় হাজারহাজার পুণ্যার্থী ও দেশ- বিদেশের পর্যটক।বুদ্ধ জাদিটির মূল অংশে আরোহণ
করতে কিছুটা বেগ পেতে হয়। দীর্ঘ পাহাড়ি পথ ও ১৭০ ধাপ সিঁড়ি বেয়ে যেতে হয় সেখানে। উঠতে উঠতে চারিদিকের
মোহনীয় দৃশ্য পাহাড়ে ওঠার ক্লান্তি দুর
করে দেবে।
এর মূল প্রবেশপথ দিয়ে ঢুকেই
প্রথমে চোখে পড়বে বৌদ্ধ মিউজিয়াম।
মিউজিয়ামে থরে থরে সাজানো রয়েছে গৌতম বুদ্ধের সময়ের বিভিন্ন ঘটনাপঞ্জির বাহারি মূর্তি। মিউজিয়াম পেরুলেই জাদির মূল অংশ, যেখানে বৌদ্ধ নারী-পুরুষ প্রার্থনা করে। জাদির শীর্ষে আরোহণ করলে চোখে পড়বে শহরের নয়নাভিরাম সৌন্দর্য।
এর চূড়ায় রয়েছে একটি বড় ঘন্টি। এ চূড়া থেকেই চোখে পড়বে জাদির পাশেই গড়ে উঠা দেবনাগ রাজপুকুর (দেবতা পুকুর)সহ জাদির অন্যান্য স্থাপত্যকলা। এই দেবতা পুকুরটি সাড়ে ৩শ' ফুটউঁচুতে হলেও সব মওসুমেই সেখানে পানি থাকে।
বিষয়: বিবিধ
১৫৪৮ বার পঠিত, ১২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
এরপর সায়দাবাদ হতে কক্সবাজার যাবার যে বাসে উঠলেন সে বাসের ছবি এবং কেরানির হাটে নেমে যে সিএনজিতে চড়ে বান্দরবান গেলেন সেটার ছবি থাকলে দিবেন ।
বান্দরবানের কিছু বাস মনে হয় কমলাপুর থেকেও ছাড়ে । কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে বের হয়ে বড় (১৫/১৬ তলা) বিল্ডিংটার সাথে S.ALAM পরিবহনের কিছু বাস দেখতে পাওয়া যায় । আসা যাওয়ার পথে সেই বাসের আশে পাশে ব্যাগ ব্যাগেজসহ কিছু চাকমা চুকমা দেখেছি ।
হোটেলগুলোর সুবিধাদি কেমন ? মানে ইলেক্ট্রিসিটি , পানির সাপ্লাই ,খাবারের মান ?
ভাল পোস্ট , চালিয়ে যান । ছবি দেবেন বেশী বেশী করে , বর্ণনাসহ ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন