নববর্ষের নতুন পাঠ
লিখেছেন লিখেছেন ঠোঁটকাটা কাকাতুয়া ১৭ এপ্রিল, ২০১৩, ১২:৪২:৫১ দুপুর
সকাল থেকেই চারপাশ
থেকে মাইকে বাদ্যযন্ত্রের আওয়াজ
শোনা যাচ্ছে। একদিকের মাইক
থেকে গানও ভেসে আসছে।
তবে দু:খজনক ভাবে হিন্দী গান।
উত্সবের আমেজ।
আমাদের ডর্মে প্রচুর উপজাতি মেয়ে।
এরা সবাই পার্বত্য
জেলা থেকে এসেছে ধাত্রীবিদ্যায়
প্রশিক্ষণের জন্য। উপজাতিরা খুব
অমায়িক স্বভাবের। এতদিন
এখানে আছি,
কখনো হৈ হুল্লোড়ে দেখিনি ওদের।
সবসময় একটা শৃঙ্খলাভাব থাকে ওদের
মধ্যে। যেখানে যায় একসাথে। কিন্তু
বাঙালি মেয়েদের মত উচ্ছ্বাস
থাকেনা।দলবদ্ধ হয়েও আশ্চর্যরকম
শান্ত থাকে ওরা।
কিন্তু আজ সকাল থেকেই মনে হচ্ছে ভুল
কোথাও এসে পড়েছি। আটতলা ডর্মের
চারতলাটা ডাক্তারদের জন্য।
বাদবাকি ফ্লোর ট্রেইনিদের। সকাল
থেকেই তিনতলায় চেঁচামেচি হচ্ছে।
কী হচ্ছে ঠিক বুঝছিনা কিন্তু রাখাইন
মেয়েগুলো একাট্টা হয়ে কিছু
একটা করছে। আজ তো নববর্ষ।
ওরা কি বৈসাবি করছে?
বোঝা যাচ্ছেনা কিছু, তবে একটু পরপর
বিকট শব্দে হাততালি আর হোওওওওও
চিত্কার। এভাবে চলল অনেকক্ষন।
তারপর হঠাৎ দেখি সবাই চুপ। একটু পর
শোনা গেল গান। আর ওই গান
শুনে তাজ্জব বনে গেলাম আমি।
বাংলা গান!
কয়েকটা মেয়ে মিলে স্বাদের লাউ
গাইছে। বেশ জোরে আর অনেক
উচ্ছ্বাস
নিয়ে। গানের
তালেতালে হাততালি পড়ছে।
স্বাদের
লাউ শেষ হল।
আমি করিডোরে দাঁড়িয়ে শুনছি (দেখা
যাচ্ছেনা)। এরপর
আবারো বাংলা গান! একক
সঙ্গীত, দুটি মন আর নেই দুজনার।
আমাকে অবাক করে এরপর একে একে যত
গান তারা গাইলো সবই বাংলা।
মাঝখানে খুব
ফুর্তি করে একসাথে একটা বোরকা পরা
মেয়ে পাগল করেছে গানটা গাইল।
আমি ভাবছি, আজ বাংলা নববর্ষের
দিনে আমরা বাঙালিরা হিন্দি গান
বাজাই, আর ওরা অবাঙালি হয়ে…
অনেক শেখার, অনেক দেখার
বাকি এখনও।
বিষয়: বিবিধ
১১৭৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন