একটি আহবান, একটি অনুরোধ

লিখেছেন লিখেছেন নওয়াজিস ০২ আগস্ট, ২০১৩, ১২:২৭:৩৭ রাত

পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে

আমার লেখালেখির তেমন অভ্যাস নেই। তারপরও লিখতে বসা আমার কিছু প্রিয় মানুষের জন্য। যাদেরকে আমি পছন্দ করি এবং আমি তাদের মঙ্গল কামনা করি।

আমরা কম বেশি সবাই পাপী। আমরা পূর্বে পাপ করেছি, এখনো করছি এবং ভবিষ্যতেও করব যদি আমরা হেদায়েত প্রাপ্ত না হই। আমরা যে যেই পাপ ই করি না কেন এমন নয় যে আমরা আর আলোর পথে তথা ইসলামের পথে ফিরে আসতে পারব না। ফিরে আসার জন্য প্রয়োজন শুধু আন্তরিক ভাবে তওবা করে আল্লাহর কাছে ফিরে আসা আর তাঁর সাহায্য এবং করুণা অনুগ্রহ প্রার্থনা করা। আল্লাহ বলেনঃ

হে আমার বান্দাগণ যারা নিজেদের উপর যুলুম করেছ তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয় আল্লাহ সমস্ত গোনাহ মাফ করেন। তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।(আয যুমারঃ ৫৩ )

আর যারা মন্দ কাজ করে, তারপরে তওবা করে নেয় এবং ঈমান নিয়ে আসে, তবে নিশ্চয়ই তোমার পরওয়ারদেগার তওবার পর অবশ্য ক্ষমাকারী, করুণাময়।(আরাফঃ১৫৩)

তবে এই তওবার কিছু শর্ত আছে। তওবা করার পর আমাদের দৃঢ় প্রত্যয়ী হতে হবে যে আমরা আর আগের অন্ধকার জীবনে ফিরে যাব না। প্রথমে এটা কঠিন মনে হতে পারে তবে আমাদের চিন্তার কিছু নেই। কারণ

আনাস রাঃ হতে বর্নিত আছে তিনি বলেন,রাসুল (সঃ) থেকে তিনি বর্ননা করেন যে,মহান আল্লাহ তাআলা বলেনঃআমার দিকে বান্দাহ আধ হাত এগিয়ে এলে,তার দিকে আমি একহাত এগিয়ে যাই,আর আমার দিকে যখন সে একহাত এগিয়ে আসে,তার দিকে আমি দুইহাত এগিয়ে যাই।আর সে আমার দিকে যখন হেঁটে আসে,তাঁর দিকে আমি দৌঁড়িয়ে যাই।বুখারী-৭৫৩৬,মুসলিম-২৬৭৫,রিয়াদুস সালেহীন-৯৭

পবিত্র রমাদান প্রায় শেষের পথে, এই শেষ কয়েকটা দিন লাইলাতুল ক্বদর অনুসন্ধানের সময়।আমিও সেই চেষ্টাই করছি। আসুন এই রমাদানেই আমরা আন্তরিক ভাবে তওবা করে আল্লাহর কাছে ফিরে আসি।

আমাদের মনে হতে পারে যে একবারেই কি আমরা সব পাপ থেকে মুক্ত হতে পারব?? বা আমাদের ঈমান কি এতটাই মজবুত যে একবার তওবার পর সেই তওবার উপর অটল অবিচল থাকতে পারব?? আমি যে গান শুনি মুভি দেখি মেয়েদের সাথে চ্যাট করি ইত্যাদি.........। আমি কি আসলেই পারব আলোর পথে ফিরে আসতে??? এই চিন্তা গুলো অভিশপ্ত শয়তানের ওয়াসওয়াসা ছাড়া আর কিচ্ছু না। বিশ্বাস করেন আপনাদের চেয়ে আরও বড় বড় পাপীরা আল্লাহর সাহায্য পেয়ে আলোর পথে ফিরে এসেছে।

তাই আসেন আমরা এই রমাদানেই নিয়্যত করি যে আমরা এই রমাদান বৃথা যেতে দিব না। এই রমাদানেই আমরা আন্তরিক ভাবে তওবা করে আল্লাহর কাছে ফিরে আসব। আমাদের যে আল্লাহর কাছে ফিরে আসতেই হবে না হলে আমরা পরকালে মুক্তি পাব না।

প্রিয় ভাই বোনেরা একবার ভেবে দেখুন যে আমরা এই দুনিয়ার ম্যাচের কাঠির ছ্যাকা সহ্য করতে পারি না, দরজার কোণায় আঙুলে একটু চাপা খেলে ছটফট করি সেই আমরা কি জাহান্নামের আগুনের উত্তাপ সহ্য করতে পারব যা আমাদের দুনিয়ার আগুনের চেয়ে ৭০ গুণ। সেই জাহান্নামে এক মুহুর্তও কি টিকে থাকতে পারব যার মুখ থেকে একটি পাথর ফেললে জাহান্নামের তলদেশে পৌছাতে ৭০ বছর পর্যন্ত সময় লেগে যায়। সেই জাহান্নামে আমরা কীভাবে থাকব যাকে ৭০ হাজার শিকল দ্বারা টেনে আনা হবে যার প্রত্যেক শিকল ৭০ হাজার ফেরেশতা বহন করবেন।

আল্লাহর কাছে ফিরে আসতে গেলে আমাদের ভিতরটা নরম হওয়া বড় বেশি প্রয়োজন। আজ আমাদের অন্তর বড্ড কঠিন হয়ে গেছে। আমরা অন্যের জানাজা পড়ে আসি অথচ আমাদের জীবন যাত্রার কোনো পরিবর্তন হয় না। অন্তর কোমল করার একটি কার্যকরী উপায় হল আখিরাতের কথা জান্নাত জাহান্নামের কথা বেশি বেশি স্মরণ করা। আয়েশা (রা) বলেনঃ যদি শুরুতে হালাল হারামের কথা বলা হত তাহলে মানুষ সেগুলো কখনোই মানতে চাইত না। তাইপ্রথমে জান্নাত জাহান্নামের কথা বলা হয়েছে যাতে করে তাদের অন্তর আল্লাহর দিকে ঝুঁকে পড়ে। এরপর হালাল হারামের বিধান দেওয়া হয়েছে।

আমি পরকালের পথে যাত্রা সিরিজের সবগুলো পর্ব শুনেছি আলহামদুলিল্লাহ্‌। সর্বশেষ ১৭ তম পর্ব প্রকাশ করা হয়েছে, এই পর্ব থেকেই জাহান্নাম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছি। এই পর্ব শোনার ফলেই আমার এই নোট লেখা। আমি জানার পর অন্যদের জানানো আমার কর্তব্য।

আমরা কত আবোল তাবোল জিনিস ই তো শুনে থাকি। আমার অনুরোধ থাকবে একটি বার হলেও সবগুলো পর্ব শুনে দেখুন। আর কিছু না হোক অন্তত ১,২,৩,১৪ পর্ব গুলো শুনে দেখুন। যদি আন্তরিক ভাবে শুনে থাকেন তো আপনার জীবনে পরিবর্তন আসবে ইনশাআল্লাহ।

সবশেষে আমি মহান আল্লাহর কাছে আমার ও অন্য সকল মানব সন্তানের হেদায়েত প্রার্থনা করছি।

পেজঃ https://www.facebook.com/Hereafter.Bangla?ref=hl

সবগুলো অডিওঃ http://archive.org/details/TheHereafter

জাহান্নামের বর্ণনাঃ http://ia700307.us.archive.org/2/items/TheHereafter/17BnTheHereafterHellfireAndItsLife.mp3

বিষয়: বিবিধ

১২২১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File