যেমন দেখেছি যেমন চাই ১লা বৈশাখ
লিখেছেন লিখেছেন নোমান সিলেট ২০ এপ্রিল, ২০১৩, ০৫:৪৮:১৯ বিকাল
চৈত্রের খরতাপ শেষে প্রকৃতিতে বইছে হিমেল হাওয়া। চারিদিকে ঘোর অন্ধকার। গাছ-গাছালি ডাল নুয়ে পড়ছে মাটির সাথে। যেন হেলিয়ে-দুলিয়ে গাছগুলো বোশেখের আগমনী গান গাইছে। আকাশে গুড় গুড় শব্দ, বিকট আওয়াজ, বিদ্যুতের ঝলকানি। হঠাৎ বৃষ্টি শুরু। উত্তাল এই প্রকৃতিকে দেখে বুঝতে বাকি নেই বোশেখ এসে গেছে এরই মধ্যে। বোশেখের ঝড়ো হাওয়ায় বাংলার মানুষ নতুনের কেতন উড়াতে চায়।
রাত তখন ১২টা ছুই ছুই। মোবাইলে মেসেজ টোন। একটার পর একটা মেসেজ আসতে শুরু করেছে। অন্যান্য দিবসের মত Massage Culture বলে একটি সংস্কৃতি তো রয়েই গেছে। ঈদের দিনের মত হরেক কথার হরেক রকমের পংক্তিমালা। যাই হোক বন্ধু-বান্ধব ও সহযোগীদের মেসেজগুলো পড়ছি আর ভাবছি ১লা বৈশাখের কথা। যাই হোক reply তো করতে হয়। ঝটপট মনের অজান্তেই লিখে ফেললাম-‘পান্তা ইলিশ খাবো না, নিজস্ব সংস্কৃতি ছাড়বো না। শুভ নববর্ষ।’ অনেকেই শুভ নববর্ষ আবার Happy new year-ও লিখেছেন। চৈত্রের শেষ দিনে মানুষের কেনাকাটা আর হোটেল রেষ্টুরেন্ট ও অভিজাত বিপনী বিতানগুলোর সাজ-সজ্জা দেখে মনে হচ্ছিল ১লা বৈশাখ বুঝি খুবই জমে উঠবে। রাতের massage আসা আর টিভি চ্যানেলগুলোর ডামাঢোল পিঠানো দেখে ভাবছি, কাল যেন বাংলার আকাশে কালবৈশাখী ঝড় বইবে। রাতের ভাবনা মনের মধ্যে অনেকগুলো প্রশ্নের উদ্রেক করেছে। ১লা বৈশাখ কেন এসেছে? বৈশাখের আগামণী বার্তা কি? কাদের জন্য এই পহেলা বৈশাখ? বাংলা নববর্ষের আদি কথা কি? কে করলেন এই বৈশাখের সূচনা? এই দিনে আমাদের কি-ই বা করা উচিত? আমাদের জাতিসত্তার ইতিহাস কি? বাংলা নববর্ষের চেতনাই-বা কি? এসব ভাবনার বিষয়গুলো ভেবে ভেবে অনেকগুলো উত্তর খুঁজে পাইনি। মনে করলাম কাল ১লা বৈশাখে হয়তো প্রশ্নগুলোর সদুত্তর খুঁজে পাবো।
সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি, সেই লাল টুকটুকে ১লা বোশেখের সূর্য বাংলার আকাশে উঁকি মেরেছে। কবি নজরুলের ভাষায়- “ঐ নতুনের কেতন উড়ে, কাল বোশেখীর ঝড়ে, তোরা সব জয়ধ্বনি কর”। ঘুম থেকে উঠি মনে হল এখন বুঝি মানুষ পান্তা খাচ্ছে। কিন্তু হঠাৎ একদিনের জন্য পান্তা-ইলিশ কেন খাবো? আবার ইলিশের যা দাম তাতে গরীব কৃষক-কৃষাণী অর্থাৎ যাদের জন্য এই বৈশাখ তারা কিভাবে খাবে এই পান্তা-ইলিশ? পান্তা ইলিশ ১লা বৈশাখের অন্যতম জনপ্রিয় খাবার একথা ঠিক। অবস্থা এমন পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে যে, পান্তা-ইলিশের বিরুদ্ধে কথা বললে বুঝি তিরস্কার আর বোকা বানানোর হাসির অভাব হবে না। অথচ এটা আমাদের দেশের নব বাঙ্গালী কৃর্তক ভিনদেশ থেকে আমদানীকৃত এক বোধহীন সংস্কৃতি। অনেক জ্ঞানবোধ সম্পন্ন মানুষও মনের অজান্তেই ‘পান্তা-ইলিশ’ খাচ্ছে। এটা বুঝি বাঙ্গালী হওয়ার উপাদান। পান্তা-ইলিশ ছাড়া নাকি ১লা বৈশাখ সাদামাটা হয়ে যায়। এটা বছরে একবার খাওয়া হয় বিধায় অনেক গিন্নিও এর আয়োজন সম্পর্কে খুব ভাল জ্ঞান রাখেন না। তাই হোটেল রে¯েঁ—ারায় অথবা বটতলায় যেখানেই পাওয়া যায় অভিজাত্যরা (?) তথা পয়লা বৈশাখ প্রেমিকরা (?) এবং তরুণ-তরুণীরা সেথায় গিয়ে ‘পান্তা-ইলিশ’ খায়। অনেকেই জীবনের প্রথম খেয়েছে তাই কিভাবে খেতে হয় বুঝি সেটাও বুঝে উঠতে পারে না। তাই তো হাজার টাকা দামের কিছু পান্তা ভাত, এক টুকরো ইলিশ আর লাল ভাজা মরিচের কিছু অংশ খেয়ে অবশিষ্ট অপচয় করে। এসব ভক্ষণকারীদের সবাইকে ‘পান্তা-ইলিশ’ কেন খান জিজ্ঞেস করলে তাদের একজন বলল, “সবাই খায় তাই আমরাও খাই”। এটা বুঝি নববর্ষের একটা অঙ্গ। আমাদের জাতীয় মাছ ইলিশ আমরা খাবো ঠিকই, কিন্তু একদিনের জন্য শখ করে টাকার অপচয় করে ‘পান্তা-ইলিশ’ খাওয়ার মর্মার্থ বুঝি না। পাঠক সমাজ হয়তো আমার ‘পান্তা-ইলিশ’ বিরোধী লেখা পড়ে ইতিমধ্যেই ক্ষেপে উঠেছেন।
যাই হোক, ১লা বৈশাখ মানুষ কেমন কাটাচ্ছে। সেটা দেখতে শহরে বেরিয়ে পড়লাম। এ যেন উত্তাল এক বৈশাখ, চারদিকে গান বাজনা, আড্ডাবাজি, পটকাবাজি, পান্তা ইলিশ খাওয়ার ধুম, তরুণ-তরুণীদের রং বেরংয়ের বাহারী ডিজাইনের বৈশাখী পোষাকে রাস্তায় হৈ হুল্লোড়, সব মিলিয়ে যেন বোশেখীর ঝড়ো আনন্দে উচ্ছসিত বাংলা নববর্ষ প্রেমিকেরা। রাস্তায় বেরিয়েছিলো বিভিন্ন ধরনের ব্যানার ফেষ্টুন দিয়ে সাজানো যানবাহনগুলোতে বাদ্যযন্ত্র, ঢোল তবলা সহ তরুণ তরুণীদের বাজে আড্ডা গানের সুরতালিতে বিভিন্ন গান বাজনা আর অশ্লীলতায় ভরপুর কনসার্ট। প্রতিবারের মত এবারো বর্ষবরণে সবচেয়ে বেশি দৃষ্টিকটু ও নিন্দনীয় বিষয় হলো রংয়ের ছোঁড়াছুড়ি। বখাটে, টোকাই ও অতি উশৃঙ্খল যুবক (কোথাও যুবতীরা) রাস্তায়, গাড়িতে এবং দন্ডায়মান মানুষের উপর আনন্দের আতিশয্যে রং ছিটিয়েছে। এ অবস্থায় ঐদিনের বেড়াতে যাওয়া অথবা জরুরী প্রয়োজনে কাজে যাওয়া মানুষেরা ছিলেন রং ছিটানোদের কাছে অসহায়। অনেক জায়গায় চলন্ত গাড়িতে রং ছুড়ে মেরেছিল। প্রশাসন কতিপয় যুবককে গ্রেফতার করলেও অনেক জায়গায় প্রশাসন ছিল নিরব দর্শক। ১লা বৈশাখ পালনের নামে এসব উন্মাদদের কর্মকান্ড এতটাই ঘৃণিত ও নিন্দনীয় ছিল যা একজন সুস্থ সংস্কৃতির মানুষকে শুধুমাত্র বিব্রতবোধই করে নি বরং হতবাক করেছে।
এছাড়াও পথে পথে বখাটে যুবকেরা তরুণীদের টিজ করছে। নগরীতে ট্রাকে করে পান্তা ইলিশ বিক্রি হচ্ছে। আবার তরুণ-তরুণী, ছোট মনি শিশুদের গালে, হাতে ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় নববর্ষের আল্পনা, গায়ে বাহারী পোষাক, মাথায় বিভিন্ন ডিজাইনের ক্যাপ লাগিয়ে নগরীতে চষে বেড়ানো, সবই যেন এক নতুন সংস্কৃতির হাতছানি। শহরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আয়োজিত নববর্ষের অনুষ্ঠানগুলোতে বাংলাদেশী সংস্কৃতির বিপরীতে যেন পাশ্চাত্য ও আকাশ সংস্কৃতি ঠায় দাঁিড়য়েছিল। এসব অনুষ্ঠানে ঢোল, তবলা, নকশীর আঁকাবাঁকা, হাতপাখা, গ্রামীণ কৃষিজ উপকরণ, পিঠা-পুলি সবকিছু দৃশ্যমান হলেও মূলত পাশ্চাত্য ও আকাশ সংস্কৃতির প্রভাব ছিল লক্ষনীয়। এসব অনুষ্ঠানে বাংলার সংস্কৃতি তুলে ধরা হলেও দৃশ্যত অন্তরালে ছিলো ভিনদেশী সংস্কৃতির আবহ। বাংলা নববর্ষের মর্মকথা বা ইতিহাস কি তা কারো জানার আগ্রহ ছিল না। সবাইকে দেখে মনে হয়েছিল, কি যেন এক অজানা হাসি আনন্দে মুখরিত সবাই। ধর্ম, বর্ণ, দল মত নির্বিশেষে পয়লা বৈশাখের এমন আনন্দ আমেজ যেন সকল ধর্মীয় উৎসবের আনন্দকেও ছাড়িয়ে দিয়েছে। একটি মাত্র দিনকে বরণ করে নেয়ার জন্য হাজার হাজার টাকা খরচ করে বৈশাখী পোষাক কেনা, পান্তা ইলিশ খাওয়া সবই যেন নিরন্তর, নিস্ফল। পয়লা বৈশাখকে ঘিরে সমাজে বয়ে যাওয়া অশ্লীল আনন্দ, উন্মাদনা আর আধিপত্যবাদী সংস্কৃতির দাপট আমাদের জাতিসত্বার অস্তিত্বকে বিপন্ন করে তুলেছে। বাংলাদেশী সংস্কৃতিতে দিনের পর দিন ক্রমশ ভিনদেশী সংস্কৃতির এহেন আধিপত্য আমাদের জাতীয় সংস্কৃতির জন্য হুমকিস্বরূপ। পয়লা বৈশাখের এমন সব নগ্ন পরিবেশ দেখে সমাজের সুস্থ বিবেকবানরা বাংলা সংস্কৃতি নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। তাদের ধারণা আর ক’বছর গেলেই বুঝি বাংলা নববর্ষ উদযাপনের নামে ‘পাশ্চাত্য কালচার বর্ষ’ পালন করা হবে। নতুন প্রজন্মের কাছে বাংলা নববর্ষ মানেই আনন্দ আর উল্লাস। অথচ বাংলা নববর্ষে নতুনকে জয় করে পুরাতন সব গ্লানি মুছে দিতে ১লা বৈশাখ আসে। কালবৈশাখী ঝড়ের মত পয়লা বৈশাখ আসে সমাজ থেকে ধুয়ে মুছে দিতে সকল গ্লানি ব্যর্থতা আর অশ্লীলতা বেহায়াপনা। মানুষের মনকে পুতঃপবিত্র করে সমাজের একে অপরের সাথে এক সম্প্রীতির সেতুবন্ধন করতে আসে পয়লা বৈশাখ।
পয়লা বৈশাখের দিনের চিত্রগুলো দেখে পূর্ব রাতের প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজছিলাম। কিন্তু কই, সেই উত্তরগুলো? ঐদিন শুধু খুঁজে বেরিয়েছি সেই উত্তরগুলোর সন্ধান। অবশেষে সারাদিনের ক্লান্তি শেষে হতাশাগ্রস্থ বেদনাদায়ক মন নিয়ে খুঁজে ফিরেছি নববর্ষের মর্মার্থ।
আজ থেকে ১৪১৭ বছর পূর্বে ভারতবর্ষের মোঘল সম্রাট আকবর তৎকালীন কৃষক সমাজের দেনা পাওনা পরিশোধ করে নতুন বছর শুরু করার সুবিধার্থে গ্রামীণ কৃষকদের স্বার্থে বাংলা সন চালু করেন। মূলত ১ লা বৈশাখের এই দিনে কৃষকরা তাদের মহাজনদের গত বছরের দেনা শোধ করে নতুন বছরের হিসাব হালনাগাদ করত। কৃষকরা মহাজনদের দেনা পরিশোধ করে নিজ ও পরিবারের সদস্যদের জন্য নতুন জামা কিনত। কৃষাণীরা নতুন ফসলের স্বাদ গ্রহন করতে বাহারী রকমের পিঠা, পুলি, পায়েশ, সন্দেশ সহ বিভিন্ন আইটেম রান্না করে সবাইকে নিয়ে খুব মজা করে খেত। এ সময় কৃষাণীরা নতুন বছরের জন্য গৃহস্থালিতে ব্যবহার্য জিনিসপত্র যেমন হাতপাখা, কুলা, ঝুড়ি, ওড়া, পাত্র ইত্যাদি বিভিন্ন ধরণের জিনিস নিজ হাতে তৈরী ও মেরামত করত। গ্রামের কৃষাণী ও মেয়েরা নিজেদের হাতে তৈরী এসব দ্রবাদি প্রিয়জনকে উপহার দিত। তাদের মাঝে ছিল সম্প্রীতি, ভ্রাতৃত্ববোধ ও ঐক্যের সুদৃঢ় বন্ধন। তারা তখন মনের আনন্দে সুখ দুঃখের গান গাইতো- “গ্রামের নজোয়ান, হিন্দু মুসলমান, মিলিয়া বাউলা গান আর মুর্শিদি গাইতাম, আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম”-যতসব বাওয়ালী, মুর্শিদি, বাউল প্রভৃতি গান গাইতো। গ্রামের বড় গাছতলায় বসতো এসব গানের আসর। বড় বড় বাজারগুলোকে কেন্দ্র করে বৈশাখী মেলা বসত। সব মিলিয়ে বৈশাখের আনন্দে গ্রামীণ কৃষক সমাজ ভুলে যেত তাদের অতীত বছরের লাঞ্চনা-বঞ্চনা আর কষ্ট-গ্লানি। অসম্ভবকে সম্ভব করতে, পরাজয়কে জয় করতে, নতুনকে গ্রহন করতে বৈশাখ কৃষক-কৃষাণীকে অনুপ্রেরণা দিত। এভাবে পূর্ব বছরে সব গ্লানি মুছে দিয়ে নতুন করে নিজেদের সাজাতে ব্যস্ত হয়ে উঠতো কৃষক-কৃষাণীরা।
কিন্তু, কই আজ সেই আনন্দ? গ্রামীণ কৃষককূলের সেই হাসি মাখা মুখ আজ বিষন্ন। প্রাকৃতিক দূর্যোগ, বন্যা, খরা, ঘুর্ণিঝড় সর্বোপরি বৈশ্বিক জলবায়ূ পরিবর্তন আমাদের কৃষক সমাজকে হতাশাগ্রস্থ বেদনাকাতুর করে তুলেছে। তারা অজস্ত্র সংগ্রাম আর কষ্টদায়ক বেদনা নিয়ে কালাতিপাত করছে। নতুন ফসল তারা আজ ঘরে তুলতে রীতিমত হিমশিম খাচ্ছে। তাই তাদের চোখে মুখে শুধু আজ হতাশার চাহনি। গ্রামের হত দরিদ্র কৃষকেরা আজ তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে দূর্বিষহ কষ্ট করে যাচ্ছে। তাদের আজ নেই ‘গোলা ভরা ধান, গোয়াল ভরা গর, নেই পুকুর ভরা মাছ’। তাদের কাছে আজ ১লা বৈশাখ বলতে শুধুই বেদনা আর কান্না।
পক্ষান্তরে, আজ আমরা কি দেখছি? গ্রামীণ মানুষেরা যেখানে অত্যন্ত কষ্ট বেদনায় বিভূর, সেখানে শহুরে মানুষেরা ১লা বৈশাখে দেশীয় সংস্কৃতির আদলে নৃত্য-গান-বাজনা আর নানা অপসংস্কৃতির হৈ হুল্লোড়ে মত্ত। বর্তমান সময়ে বছরের পর বছর যেন ১লা বৈশাখে এই দিনে শহুরে মানুষের মনে নব উৎফল্লতার জন্ম দিচ্ছে। ১লা বৈশাখকে পুঁিজ করে একশ্রেণীর স্বার্থান্বেষী মহল লুটে নিচ্ছে হাজার হাজার কোটি টাকা। অভিজাত বিপনী-বিতানগুলোর সাজ-সজ্জা শুধুই ব্যবসায়িক স্বার্থসিদ্ধির জন্য। ফোন কোম্পানী, পোষাক শিল্পসহ সকল অভিজাত কোম্পানীগুলো নববর্ষের নামে নতুন ব্যবসায়িক স্বার্থ হাসিল করে চলেছে। কিন্তু বৈশাখের সেই আগমণী চেতনা আজ কোথাও খুঁজে পাওয়া খুবই দূরহ।
অথচ, বোশেখের সেই আগমণী বার্তা আমাদের জানান দিয়ে যায় ঐক্য ও সম্প্রীতির। নিজস্ব সংস্কৃতিকে লালন করে ঐক্যবদ্ধ জাতি হিসেবে গড়ে উঠার দৃপ্ত শপথ নিতে হবে নববর্ষের এই দিনে। পয়লা বৈশাখ পালনের নামে ভিনদেশী সংস্কৃতির আমদানী না করে নিজস্ব সংস্কৃতি চর্চা ও লালন করতে পারলে আমাদের জাতিসত্বার বিকাশ ঘটাবে। গ্রামীণ কৃষকের মত অতীতের সব গ্লানি মুছে দিয়ে সমাজের সকলে গড়ে তুলি সম্প্রীতির এক সেতুবন্ধন। পারষ্পরিক হিংসা-বিদ্বেষ, হানাহানি, গর্ব অহংকার আর বিভেদ ভুলে সকলে হই ঐক্যবদ্ধ। দেশ ও জাতি সত্ত্বার বিকাশ ঘটাতে ভিনদেশী আধিপত্যবাদী সংস্কৃতির মুলোৎপাটন করে সর্বত্র নিজস্ব সংস্কৃতির চর্চা খুবই প্রয়োজন। আমাদের স্বাতন্ত্র্য সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশকে একটি স্বাতন্ত্র্য জাতি হিসেবে পরিচিত করে তুলবে। সকল সামাজিক কুসংস্কারকে ধুয়ে মুছে নতুনকে জয় করে একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়াই হোক এবারের নববর্ষের দৃঢ় প্রত্যয়।
বিষয়: বিবিধ
২৪০৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন