মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনাকেই বলছি
লিখেছেন লিখেছেন মোস্তফা মোঘল ২৭ জুলাই, ২০১৩, ১১:৩৩:৪৮ রাত
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ নিজ হাতে পোলাও রান্না করে একমাত্র ছেলে জয়কে খাওয়ালেন। এটা কোন চমক নয়; বাংলাদেশের প্রতিটি মা তার সন্তানকে প্রতিদিন রান্না করে খাওয়ান। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর রান্না ঘরের ছবি (নিজেকে খাঁটি মুসলমান দাবি করেন অথচ রমজানেও মাথায় কাপড় ছিল না) সোস্যাল মিডিয়ার কল্যানে সবখানে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে। সেই সাথে মা-ছেলের আরও কিছু আবেগ ঘন মুহুর্তের ছবি সোস্যাল মিডিয়ায় পোষ্ট করা হয়েছে। হঠাৎ এসব ছড়িয়ে দেয়ার পিছনের রহস্যটা কি সেটাই সবার মনে প্রশ্ন জেগেছে। আওয়ামীলীগের হারানো ইজ্জত ও সম্মান ফিরে পেতেই মা-ছেলের চিরন্তন সম্পর্ককে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে না তো? অনেকের মনেই এ প্রশ্ন উঁকি মারছে।
তাছাড়া ছেলের জন্য মায়ের এ প্রচেষ্টা অগাধ ভালোবাসারই পরিচয়। কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পুলিশ এবং র্যাব পবিত্র রমজান মাসে যেসকল নিরপরাধ জামায়াত-শিবির কর্মিদের গুলি করে হত্যা করেছে, যাদের গুম করা হয়েছে সেইসব ছেলের মায়েদের কি নিজ হাতে রান্না করে সন্তানকে খাওয়াতে ইচ্ছে করে না? সেইসব সন্তানহারা মা কে কী দিয়ে শান্ত দিবেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী? আপনার সোনার ছেলেরা বিশ্বজিৎ কে চাপাতি দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করলো সেই বিশ্বজিতের মায়ের কি ছেলেকে নিজ হাতে রান্না করে খাওয়াতে ইচ্ছে করে না? আপনি কি বিশ্বজিতের মায়ের বুকের কষ্ট বুঝতে পারেন?
আপনি প্রধানমন্ত্রী যেমন একজন মা, তেমনি বিশ্বজিতের মাও একজন মা। আপনার মত তিনিও দশ মাস দশ দিন সন্তানকে পেটে রেখেছিলেন। আদরে ভালোবাসায় বড় করে তুলেছিলেন। বেঁচে থাকলেও সেও আজ আপনার জয়ের মত তার মায়ের কোলে ফিরে যেত, মায়ের হাতের রান্না করা খাবার খেত। সে কথাটা কি একবারও আপনার মনে পড়েনা?
চলতি বছরের ফেব্র“য়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত সারাদেশে জামায়াত-শিবিরের দেড় শতাধিক নেতাকর্মিকে নিরাপত্তা বাহিনী গুলি করে হত্যা করেছে। সরকার প্রধান হিসেবে এই গণহত্যার দায় আপনি এড়াতে পারেন না। আজ ছেলের জন্য আপনার নিজহাতে রান্নার দৃশ্য দেখার পর যদি কোন সন্তানহারা মা তার সন্তানকে ফিরে চায় আপনি তা দিতে পারবেন? কোন স্ত্রী যদি তার স্বামীকে ফিরে চায়, কোন সন্তান যদি তার প্রিয় বাবাকে ফিরে চায় আপনি কি এনে দিতে পারবেন? আপনার র্যাব, পুলিশ, বিজিবি কি পারবে?
দয়া করে দূর্দশাগ্রস্ত জাতির সাথে মষ্করা করবেন না। দেশের মানুষ ভালো নেই। সন্ত্রাস, চাঁদাবাজী, ছিনতাই, খুন সহ নানাবিধ অপকর্মে গোটা সমাজের পরিবেশ বিষাক্ত হয়ে উঠেছে। এই অবস্থায় সামনের ঈদটা শান্তিপূর্ন ভাবে উদযাপনের সুযোগ দিন। মা-সন্তানের অকৃত্রিম ভালোবাসাকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করবেন না। সন্তানের প্রতি আপনার ভালোবাসার নিদর্শন দৃষ্টিনন্দন হলেও সন্তানহারা মা’দের ব্যথিত করেছে, ক্ষুব্ধ করেছে। চাটুকাররা বাহবা দিলেও সাধারন মানুষ এটাকে রাজনীতির নোংরা খেলার নতুন এপিসোড বলেই মনে করছে।
বিষয়: বিবিধ
৯৯৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন