কুকুরের মমত্ববোধ !
লিখেছেন লিখেছেন মনেরকথা ১৮ এপ্রিল, ২০১৩, ০২:৪১:৩৭ দুপুর
ঊল্কা নামের একটি কুকুর টমি ও গুলবাগ নামের দুটি কুকুরের প্রতি বন্ধুত্বের জন্য হাত বাড়ায়।টমি ও গুলবাগ যথাযোগ্য সম্মান দেখিয়ে তাকে বন্ধু হিসেবে গ্রহন করে নেয়।এক পর্যায়ে ঊল্কা বুঝতে পারে তাদের চিন্তা-চেতনা
তার চিন্তা-চেতনার সম্পর্ন বিপরীত।ভিন্ন মতাবলম্বীদের সাথে এক ছাদের নিচে বাস করা জাহান্নামের চেয়ে বেশী কষ্টদায়ক।তাই সে তাদের ছেড়ে চলে
যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
এক শুভ দিনে সে হাসি মুখে বন্ধুদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে ঠিকানা বিহীন পথে বেরিয়ে পড়ে।কিছুক্ষণ চলার পরে ফেনী নামের একটা কুকুরের সাথে দেখা হয় তার।ফেনী তাকে অনুরোধ করে তার কাছে যাওয়ার জন্য। অজানার উদ্দেশ্যে পাড়ি জমানোর চেয়ে ফেনীর কাছে থেকে যাওয়াই যুক্তিযুক্ত,ভাবে সে।কিছুদিনের মধ্যে ঊল্কা পারে ফেনীর সাথে একত্রে বসবাস করা সম্ভব যদিও তার মধ্যে আগ্রাসী রুপ প্রবল। সে চাইতো আশে পাশে বসবাসরত কুকুরদের তাড়িয়ে দিয়ে তাদের এলাকা দখল করতে।ঊল্কার অসহযোগিতার কারনে ফেনীর পক্ষে আগ্রাসী কার্যকলাপ চরিতার্থ করা সম্ভব হতো না।
কোন এক কুরবানী ঈদে জবাইকৃত গরুর পরিত্যক্ত হাড়,মাংস ভাগ বাঁটোয়ারা নিয়ে টমির সাথে ফেনীর শুরু হয় তুমুল বাগ-বিতন্ডা,যা বিষাদময় রক্ত প্রবাহের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।ঊল্কার চোখের সামনেই ঘটে যায় সবকিছু।
তার ব্যাথাতুর মন বেদনায় হাহাকার করে ওঠে।কোন দিকে যাবে সে । দুদিকেই যে তার আপনজন।ফেনীর চোখের জল তাকে যেমন ব্যাথিত করে,
তেমনি টমির অশ্রুপাতে তার হৃদয় কেঁপে ওঠে।সে আস্তে আস্তে এগিয়ে গিয়ে দুজনের মাঝখানে দাঁড়ায়।নিরন্তর চেষ্টা করে তাদের শান্ত করার।
কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ।
আজ আমার সেই কুকুরটির কাছ থেকে অনেক দুরে আমি থাকি।খাবারের আশায় সে এখন আর আমার মুখোপানে চেয়ে থাকেনা।কিন্তু বন্ধুত্বের প্রতি তার মমত্ববোধ আজও আমাকে তাড়িত করে।
আমরা মানুষেরা বন্ধত্বের লেবাস পরে সুযোগের অপেক্ষায় ওঁৎ পেতে বসে
থাকি।বন্ধুর দুঃখে মনে মনে আনন্দিত হই,বাইরে সান্তনার বাণী শুনাই। বন্ধুর সুখে হিংসায় জ্বলে পুড়ে মরি। তার শত্রুর সাথে হাত মেলাই তাকে জব্দ
করার জন্য।ইতর প্রাণি কুকুরের আচরণ তাই আমাকে স্তম্ভিত করে।নিজের
অজান্তে মুখে উচ্চারিত হয় তারা কুকুর আর আমরা মানুষ !
বিষয়: বিবিধ
১৬৯৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন