সিনেমা হলো বাস্তব
লিখেছেন লিখেছেন আরিয়ান খান ১৮ অক্টোবর, ২০১৩, ০৩:১৩:০৮ দুপুর
চব্বিশ বছর পর এক ব্যক্তি গিয়ে হাজির হন এ পাহাড়ি অঞ্চলে। সেখানে একটি কুঁড়ে ঘরে গিয়ে দেখতে পান এক বৃদ্ধার বাস। বৃদ্ধাকে ওই ব্যক্তি তার হাতের উল্কি দেখানো মাত্র বৃদ্ধাটি জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকে। হ্যাঁ, সামনেদাঁড়ানো এই ব্যক্তিটিই যে তার হারিয়ে যাওয়া ছেলে।
না, এটি কোনো সিনেমার দৃশ্য নয় যেখানে কখনো দেখা যায় কোনো গান বা অন্যকোনো চিহ্ন দেখে হারিয়ে যাওয়া স্বজনকে খুঁজে পাওয়া গেছে। কিংবা পৌরাণিক সেই বিখ্যাত কাহিনিও নয় যেখানে রাজা দুস্মন্ত হাতের অঙ্গুরি দেখে বিস্মৃত হয়ে যাওয়া স্ত্রী শকুন্তলাকে চিনতে পারেন। এটি এক সত্য ঘটনা।ভারতীয় পুলিশের এক সদস্য ২৪ বছর পর তার নিজ পরিবারকে খুঁজে পেয়েছেন। শৈশবে এক রেলস্টেশনের ভিড়ের মাঝে তিনি হারিয়ে গিয়েছিলেন।হাতে আঁকা এক উল্কির কারণে এতদিনপর তিনি নিজের হারানো পরিবারকে ফিরে পেয়েছেন বলে এনডিটিভি জানিয়েছে।১৯৮৯ সালে মাত্র ৬ বছর বয়সে গনেশ রঘুনাথ ধাঙ্গাদে ট্রেনে ওঠার সময় মা-বাবাকে হারিয়ে ফেলেন।এরপর একা একাই তিনি মুম্বাইয়ে গিয়ে হাজির হন। প্রথমদিকে এক জেলের কাছে কিছুদিন ছিলেন, এরপর দুটি এতিমখানায়।এ সময় এক গাড়ি দূর্ঘটনায় চার মাস অচেতন ছিলেন তিনি। এরপর থেকে নিজপরিবার ও বাড়ির কথা মনে করতে পারতেন না। পুলিশের খাতায় হারানো ব্যক্তিদের তালিকা দেখে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে কয়েক বছর কাটান তিনি।এরপর ২০১১ সালে তিনি পুলিশ বাহিনীতে যোগ দেন।বৃহস্পতিবার এক বার্তা সংস্থাকেধাঙ্গাদে বলেছেন, “আমার পরিবারের খোঁজ করা আমি কখনো বাদ দেইনি।”এই খোঁজাখুঁজিতে তার একমাত্র সম্বল ছিল নিজের ডান হাতে আঁকা একটি উল্কি, তাতে তার মায়ের নাম লেখা, ‘মান্দা’।এই খোঁজাখুঁজির পর্বে আর একটি সূত্র খুঁজে পান তিনি। প্রথম যে এতিমখানায় তিনি আশ্রয় নিয়েছিলেনসেখানে নিজেদের ঠিকানা হিসেবে “মামা ভাঞ্জা” এলাকার কথা জানিয়েছিলেন তিনি। এটি মুম্বাইয়ের কাছের এক জেলার একটি বন আচ্ছাদিত এলাকা।গাড়ি দূর্ঘটনার পর এই ঠিকানার কথা তার স্মৃতি থেকে মুছে গিয়েছিল।চলতি মাসের প্রথমদিকে ধাঙ্গাদে তার এক পুলিশ সহকর্মীসহ ওই এলাকায় যান। সেখানে গিয়ে মান্দা নামের এক নারীর খোঁজ করেন তিনি। এলাকার লোকজন পাহাড়ের ওপর এক কুঁড়ে ঘর দেখিয়ে দেন।“অনেক বছর আগে নিজের এক ছেলে হারিয়ে গেছে বলে জানান তিনি। ছেলের গায়ের কোনো চিহ্ন দেখে তাকে চিনতে পারবেন কিনা জিজ্ঞেস করলে তিনি জানান, তার ছেলের হাতে একটি উল্কি আঁকা আছে। তাকে উল্কিটি দেখানো মাত্রই তিনি তা সনাক্ত করেন,” বলেন ধাঙ্গাদে।“কয়েক মূহুর্ত নির্বাক হয়ে আমরা পরস্পরের দিকে তাকিয়ে ছিলাম। তারপর আমরা পরস্পরকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকি।”ধাঙ্গাদে এখন বেশিরভাগ সময় তার মা, দুই ভাই ও বোনের সঙ্গে সময় কাটায়।তিনি বলেন, “এই কয়েক সপ্তাহে যা কিছু হল তা বিশ্বাসই করতে পারছি না। এটি সত্যিই ভগবানের লীলা। একটি অলৌকিক ঘটনা।” *সূত্রঃ বিডিনিউজ২৪.কম। লিঙ্ক:
http://bangla.bdnews24.com/world/article686743.bdnews
বিষয়: বিবিধ
১৪৭৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন