যৌনপল্লীর মাটি ছাড়া প্রতীমা তৈরী হয়না, বিসর্জনের সময় যৌনাঙ্গ নিয়ে অশ্লীল গান গাইতে হয়!

লিখেছেন লিখেছেন আরিয়ান খান ১১ অক্টোবর, ২০১৩, ০৭:৫৮:০৩ সন্ধ্যা

আমি কখনো কোন ধর্মকে ছোট করে দেখিনা। আমি বিশ্বাস করি সব ধর্মই শান্তির কথা বলে, সব ধর্মই ভাল কাজ করতে বলে। কিন্তু আজ একটি প্রতিবেদন আমাকে দারুণভাবে বিস্মিত করেছে। বিবিসি বাংলার ওয়েবসাইট ঘাটছিলাম, হঠাৎ একটি রিপোর্টে চোখ আটকে গেল। কিন্তু আমি তখনো জানতাম না যে রিপোর্টটির ভিতরে আমার জন্য আরও বিস্ময় অপেক্ষা করছে... পাঠকদের জন্য রিপোর্টটির অংশবিশেষ তুলে ধরলাম-

কোনও যৌনপল্লীতে এই প্রথমবার পুজো। অথচ যে যৌনপল্লীর মাটি বহু যুগ ধরেই দূর্গাপুজোর অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হয়ে রয়েছে সেই যৌনকর্মীদেরই পুজোর সময়ে ব্রাত্য করে রাখা হয়, হেনস্থা করা হয়..বলছিলেন ভারতী দাস।

আদালতের নির্দেশে সোনাগাছিতে এই প্রথমবার পুজোহিন্দুশাস্ত্রের গুরুত্বপূর্ণ চর্চাকেন্দ্র বলে পরিচিত ভাটপাড়ার শাস্ত্রজ্ঞ দেবপ্রসাদ ভট্টাচার্য বলছিলেন সামন্ততান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা অনেক শতাব্দী ধরেই শাস্ত্রের নাম করে দূর্গাপুজোয় যৌনকর্মীদের বিভিন্নভাবে যুক্ত করে রেখেছে।“এটাকে আমরা দুদিক থেকে ব্যাখ্যা করতে পারি। প্রথমটা ধর্মীয় দিক। যখন কোনও পুরুষ যৌনপল্লীতে যান, তখন তিনি বারবণিতার বাড়ির সামনে দরজায় ধর্মকে রেখে যান। অর্থাৎ তিনি যে মহিলাকে উপভোগ করতে গেলেন,সেটাকে ধর্ম স্বীকৃতি দিল না – অনৈতিক বলে আখ্যা দিল।আর যেহেতু ধর্মের অবস্থান বারবণিতার দরজায়, তাই সেই জায়গাটা পবিত্র বলে মনে করা হয়। অথচ, ব্রাহ্মণের বাড়ির মাটি কিন্তু ব্যবহার করা হয় না – যে ব্রাহ্মণরা হিন্দু ধর্মেরনিয়ন্ত্রক।”মিঃ ভট্টাচার্য বলছেন এছাড়াও বারবণিতাদের প্রসঙ্গটা দূর্গাপুজোর ক্ষেত্রে বারে বারেই এসেছে। যেমন দশমীর দিন যে বিসর্জনের শোভাযাত্রা হবে, সেখানে বারবণিতাদের নাচ ও গান একটা অবিচ্ছেদ্যঅঙ্গ। আর সেই গান হতে হবে অশ্লীল – যৌনাঙ্গ নিয়ে অশ্লীল কথা থাকতে হবে – সেটাই শাস্ত্রের নির্দেশ।“আর সেটা না করলে দেবী সাংঘাতিক অভিশাপ দেবেন, সেটাও শাস্ত্রে লেখা হয়েছে। দূর্গাপুজোর ব্যবস্থা আসলে একটা মহাকাব্যিক আঙ্গিকে তৈরি।সামন্ততান্ত্রিক সংস্কৃতির বিভিন্ন ধারা বিভিন্ন সময়ে এতে মিশেছে আর মূল পুজোর অনুষঙ্গ হিসাবে ঢুকে গেছে।”যে হিন্দু গ্রন্থ চন্ডী দূর্গাপুজোর আকর গ্রন্থ, সেই চন্ডীতে যৌনপল্লীর মাটি ব্যবহারের অন্য একটা সমাজতাত্ত্বিক বিশ্লেষণ করছিলেন নারী আন্দোলনের কর্মী শাশ্বতী ঘোষ।পুরুষতন্ত্রের একটা দীর্ঘমেয়াদী ব্যধির শিকারহয়ে এই মেয়েদের সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়।"সুনন্দা মুখার্জী, পশ্চিমবঙ্গ মহিলা কমিশনেরপ্রধান“পুজোয় যা যা লাগে তার একটাঅন্যতম উপাদান যৌনপল্লীর মাটি। যতটা চন্ডী পড়েছি, তাতে আমার এটাই মনে হয়েছে যে ওই মাটি ব্যবহারের কারণহল, সেখানে গিয়ে পুরুষেরা বীর্য ফেলে আসেন। তাই ওই মাটিতে পুরুষের সব গুণ রয়েছে। অর্থাৎ দূর্গার মধ্যে পুরুষের সেই সব গুণ আরোপ করার জন্য যৌনপল্লীর মাটির প্রয়োজন। যদিও অসুরদের কাছ থেকে রাজ্যপাট ফিরিয়ে নিতে যে দূর্গা তৈরি হল, নারীর রূপ দেওয়া হলেও সেটা কিন্তু তাঁর মধ্যে যুদ্ধাস্ত্রেরসঙ্গেই পুরুষের যাবতীয় গুণ আরোপ করার জন্যই যৌনপল্লীর মাটির ব্যবহার।”এই ব্যাখ্যা শুনলে কি এটাইমনে হয় না, যে পুরুষতান্ত্রিক সমাজের জন্য যৌনপল্লীতে যেতে বাধ্য হয়েছেন, দূর্গাপুজোর মাধ্যমে সেই পুরুষতন্ত্রের কাছেই কি আবারও মাথা নোয়াচ্ছেন যৌনকর্মীরা?মিসেস ঘোষের কথায়, আংশিকভাবে সেটাই ঘটনা, তবেদূর্গাপুজোর মতো একটা সামাজিক উৎসবের মধ্যে যে আনন্দ-উদ্দীপনা থাকে, সেখানে অংশ নেওয়ার অধিকারও সব মানুষের মতোই যৌনকর্মীদেরও রয়েছে।

আরো বিস্তারিত পড়তে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুন- http://www.bbc.co.uk/bengali/news/2013/10/131010_mb_wb_puja_sex_workers.shtml

বিষয়: বিবিধ

২৮২১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File