---“বই”---
লিখেছেন লিখেছেন আমি আহমেদ মুসা বলছি ১৯ নভেম্বর, ২০১৪, ০৬:৪৯:৪৯ সন্ধ্যা
‘বই কিনে কেউ দেওলিয়া হয় না’ এমন রেডিমেড বাক্য আমি বলবো না । পয়সা তো একটু লাগবে। আপনার ঘরের ময়লা পরিস্কার করতেও পয়সা লাগে, টয়লেটে যেতে পয়সা লাগে, মোবাইলে রিংটোন ডাউনলোড করতে পয়সা লাগে আর বই কিনতে একটু পয়সা লাগবে না !
তবে সৈয়দ মুজতবা আলীর এই অমড় কথাটিকে কোনভাবেই অগ্রাহ করার ক্ষমতা আমাদের নেই। একটু ভেবে দেখুন না, আজ যে বাম-বাবুরা আমাদের পুরো জাতির চিন্তার জগতকে দখল করে রেখেছে, তা’তো ঐ বই আর লেখনির জোড়েই ! বাম আন্দোলন করে আমার এমন অনেক বন্ধুকে দেখেছি যারা মাসের টাকা পেলে, অন্যকিছুর চিন্তা করার আগে বই কেনে।
আজ যারা ( ইসলামী আন্দোলনের কর্মীরা ) আগামী দিনে জাতীকে নেতৃত্ব দেওয়ার স্বপ্ন দেখছেন, তাদের সবার আগে এই বইয়ের জগতটাতে মুন্সিয়ানা দেখাতে হবে। ভালো কিছু লেখক এবং বিশাল একটা পাঠক সমাজ তৈরী করতে হবে, যারা আপনার আন্দোলনকে বুঝবে। তবে এই ক্ষেত্রে আমরা যে খুব পিছিয়ে আছি তা নয়, তবে আপনার কাঙ্খিত বিপ্লবের জন্য পর্যাপ্ত বলতে পারছি না !
শুধু মাত্র ধর্মীয় জীবন নয়, আমাদের লেখক সমাজের লেখার পরিধি হতে হবে পুরো সমাজ জীবনে। কবিতা-ছোট গল্প-উপন্যাস-প্রবন্ধসহ সব, সব বিভাগেই ভালো লেখক থাকতে হবে। সাথে সাথে থাকতে হবে জীবন সংস্লিষ্ট সকল বিষয়ে প্রচুর সাহিত্য । যা পাঠক সমাজকে বাধ্য করবে আপনার দর্শনটিকেও মেনে নিতে। কেননা বই হচ্ছে মানব আত্বার খোরাক।
হযরত আবুহুরাইরা [রা:] হতে বর্নিত রাসূল [স:] বলেন, “আমাকে দান করা হয়েছে ‘সর্বমর্মী বচন’।”
আমরা বুঝলাম আমাদের লেখক প্রয়োজন কিন্তু লেখক কিভাবে তৈরী হবে ? আসলে লেখক আপনা- আপনি তৈরী হয়না, মূলত ‘ভালো পাঠকরাই এক সময় ভালো লেখক হন’। এতক্ষনে নিশ্চই বুঝে গেছেন আমাদের কি হবে হবে ? সর্বপ্রথম সবাইকে খুব ভালো পাঠক হতে হবে, মোটামুটি সব ধরনের বই-ই পরতে হবে। আমাদের একটা ধারনা আছে , বিপরীত মতের বই পড়লে জনশক্তি নষ্ট হয়ে যায়। আমার কাছে ওটাকে ভূল ধারনা মনে হয়। আপনার রিকুর্টদের ভেতরে যদি নিজের আদর্শ সম্পর্কে ভালো ভাবে বুঝ দিয়ে দিতে পারেন, তবে সে পাঠক ভ্রষ্ট হয় কিভাবে ?
সব ধরনের বই-ই পড়েতে হবে,তবে প্রথমে আদর্শিক সিলেবাসটা ভালোভাবে আয়ত্তে নিয়ে নিতে হবে। খুব বেশি সময় ধরে পাঠকদের সিলেবাসে বেধেঁ রাখাটাকেও আমি সমর্থন করিনা ( যিনি ইসলামী আন্দোলনের সপথের কর্মী, তিনি একটি সিলেবাসেই সীমাবদ্ধ হয়ে যাবেন তা মেনে নেওয়া যায়না ) । এভাবে পাঠক মড়ে যায় । আগ্রহ হারিয়ে ফেলে ।
আমরা বাস্বব জীবনে কি দেখি? বাধাঁ ছাগল ঘাস বেশি খায়, নাকি ছেড়ে দেওয়া ছাগল বেশি খায় ? নিশ্চয় ছেড়ে দেওয়া ছাগল ! কারণ সে তার মনের খোরক অনুসারে খায় । তাই পাঠকদেরও তার আগ্রহের বিষয় সমূহ পড়তে উতসাহী করতে হবে । তাহলেই আমরা পাবো বিচিত্র ক্ষেত্রের ভালো লেখক-পাঠক। যার হাত ধরে অর্জিত হবে আমাদের কাঙ্খিত বিপ্লব !
আসুন বন্ধু হই !
বিষয়: সাহিত্য
১৪৩৪ বার পঠিত, ১৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মতামতের জন্য ধন্যবাদ মাহমুদ ভাই ।
মতামতের জন্য ধন্যবাদ মাহমুদ ভাই ।
এখন বই এর পাঠক এর বড় অভাব। আর যারা পড়েন তারাও নির্দৃষ্ট ক্ষেত্রেই সিমাবদ্ধ। তার বাইরের বই পড়তে চাননা। অনেকে আবার বই এর মান নিয়ে বড়বড় কথা বলেন। অনেকেই আছেন যারা আবার সফট কপি খুজেন। আসলে আমাদের মানসিকতার দৈন্যই বই পরা কমিয়ে দিয়েছে। আমরা স্কুল জিবনে আড্ডা দিতাম তিনগোয়েন্দা, মাসুদ রানার বইএর প্রসঙ্গ নিয়ে। সেখানে এখন নারি,মোবাইল আর টিভিই হয়ে গিয়েছে আড্ডার বিষয়। বই পড়াটাকে কেউ কেউ পুরান ফ্যাশন বলেও দাবি করেন! একসময় প্রত্যেক স্কুলে লাইব্রেরি ক্লাস হতো। এখন পারলে শিক্ষকরা বাইরের বই পড়া নিষেধ করছেন। আমাদের প্রয়োজন বই পড়ার প্রতি মানুষের সচেতনাতা বৃদ্ধি করা।
বিদ্র : আফরা আমার এক কাজিনেরও নাম !
মন্তব্য করতে লগইন করুন