“চেত্নার বলী আর জঙ্গি জুজু”
লিখেছেন লিখেছেন আমি আহমেদ মুসা বলছি ১৮ নভেম্বর, ২০১৪, ০৮:০৯:৩৬ রাত
গত দু’দিন এবং আগামী অন্তত দু’দিন টিভি সেটের সামনে যাবনা বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। গত শনিবার দুপুর থেকে আজ অবধি কোণ ধরনের চাক্ষুস প্রমান, জোগ-সাজোসের কোন এভিডেন্স না পাওয়া সত্তেও হলুদের বাক্স গুলো রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এ কে এম শফিউল ইসলাম লিলন হত্যার সাথে তথাকথিত জঙ্গি আর জামায়াত শিবিরের সম্পৃক্ত থাকার মণ গড়া গল্পকে সাংবাদ নামে প্রচার করে যাচ্ছে! অবশ্য ওদের কাছ থেকে এর বাইরে অন্য কিছু আসাও করি না। তাই আপনারাই বলুন, নিজের সময় অপচয় করে কেন আমি ওদের ঐ ভাঙ্গা রেকর্ড শুনতে যাব ?
শনিবার রাতে রির্মোট হাতে টিভি সেটের সামনে বসলাম ‘টক-শো’ দেখতে। প্রায় সব চ্যানেলেরই একই এজেন্ডা : “চেত্নার শহীদ শফিউল ইসলাম ( আমি ওটারে ‘চেত্নার বলী ’বলতে পছন্দ করি ) - জঙ্গি জুজু আর জামায়াত - শিবির ।” স্টুডিওতে ইয়া মোটা-মোটা নিরাপত্তা বিশেষঅগ্গ’রা (!), সবার কথাও একটাই ,“কাজ করেছে জঙ্গিরা - আস্রয়-পস্রয় শিবিরের-দেশ জঙ্গি উত্থান ...ব্লা ....ব্লা”।
এটা শুধু আমাদের দেশেই সম্ভব যে খুনের মত একটা ঘটনার পর, কোন বাছ-বিচার ছারাই কোন একটা পক্ষের ওপর দায় চাপিয়ে দেয়া যায়। কোণ এভিডেন্স না পাওয়া সত্তেও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে জড়ীয়ে লম্বা-লম্বা বক্তব্য ঝারা, সিরিজ সংবাদ প্রচার , আর গ্রেফতার-হয়রানি করা যায়! যা মূলত প্রকৃত ঘটনাকে আরাল করে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতেই ব্যাবহৃত হয়। আর আমাদের দেশে এই অনাচারের প্রধান প্রডিশার হচ্ছে, রাষ্টের ফোর্থ ষ্টেট বলে খ্যাত ‘মিডিয়া’।
অবশ্য ইতোমধ্যে তথাকথিত চেত্নার বলী শফিউল ইসলাম হত্যার ঘটনায় নুতন টুইষ্ট এসেছে ! `আটক ছাত্রীকে ঘিরে রহস্য' শিরোনামে এক সংবাদে দৈনিক মানবজমিন বলছে, “ড. একেএম শফিউল ইসলাম হত্যাকান্ডের মোটিভ উদ্ধারে ওই বিভাগের মাস্টার্সের ফলপ্রার্থী এক ছাত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। হত্যাকান্ডের দিন ওই ছাত্রীকে শিক্ষকের বাড়ি থেকে উদ্ধার করে গোয়েন্দা পুলিশ। হত্যার আগের রাত থেকেই নিহত শফিউলের বাসায় ছিলেন এ ছাত্রী। তাকে কেন্দ্র করেই শিক্ষক হত্যার ঘটনা ঘটেছে কিনা তা অনুসন্ধান করে দেখছেন গোয়েন্দারা।” বিস্তারিত :
তবে এইযে , কিছু একটা হলেই ‘জঙ্গি জুজু আর জামায়াত - শিবিরকে’ টেনে আনা, এটা কিন্তু নতুন কিচু নয় ! গত বছরের শুরুতে থাবা বাবাকে (ব্লগার রাজিব) দিয়ে যে ‘চেত্না বলী’র খেলার শুরু হয়েছে তার সর্বশেষ সংস্করণ অধ্যাপক এ কে এম শফিউল ইসলাম হত্যাকান্ড । মনেপরে, হেফাজতের ঠেলায় যখন চেত্নাপন্থীরা হলে পানি পাচ্ছিলোনা-তখনই ঘটানো হয় । ঠিক একই ভাবে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে তৃনমূলকে ডুবাতে কঙ্গ্রেস যে জঙ্গি খেলা শুরু করেছে, তা দিয়ে বাংলাদেশকেও যাতে টাইট দেয়া যায়, হয়তো তার জন্যই এই শফিউল ইসলাম হত্যাকান্ড।
এই ইস্যূকে সামনে এনে রাজশাহী অঞ্চলে জামায়াত - শিবিরকে একটু টাইটে রাখা যাবে আবার জঙ্গি জুজুর নাটককে আরো একটু শক্তিশালী করা যাবে, যা অদুর ভবিষ্যতে বন্ধু রাষ্টের(!) হেফাজতে সীমান্ত পারি দেবার অগ্রিম টিকেটও পাইয়ে দেবে । থাবা বাবা থেকে শফিউল ইসলাম বা ফারুকী সব-সবই ঐ সুতোরই বিনিমালা । তাইতো, সব শিয়ালের এক রা - তারা স্বরে গাইছে সেই একই গান !
“জঙ্গি জঙ্গি ডাক পাড়ি
জঙ্গি মোদের কার বাড়ি
আয়রে জঙ্গি ঘরে আয়
দুধ মাখা ভাত শকূনে খায়!”
বিষয়: রাজনীতি
১৫৩৫ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
এভাবে খুন হবার পর পরই ''কেস্ট বেটাই চোর'' টাইপের কথা বললে প্রকৃত খুনীরা উতসাহ পাবে এবং এটা থামানো যাবে না ।
বন্ধু এল মোর বাড়ি।
দেব তারে ঘর ছাড়ি৷
জঙ্গী জুজুর ভয় করি,
দাওনা মোরে জুজু ধরি,
তোমার পায়ে গড় করি৷
জঙ্গি মোদের কার বাড়ি
আয়রে জঙ্গি ঘরে আয়
দুধ মাখা ভাত শকূনে খায়!”
মন্তব্য করতে লগইন করুন