*** চরম পন্থী , ধর্ষক দল আওয়ামীলীগ *** হতে তুমি বাংলার মুসলমানদের হেফাজত কর , হে আল্লাহ আপনি কি মনে করেন যে, তাদের অধিকাংশ শোনে অথবা বোঝে ? তারা তো চতুস্পদ জন্তুর মত; বরং আরও পথভ্রান্ত (সূরা আল-ফুরকান=৪৪)

লিখেছেন লিখেছেন আল্লাহর সন্তুষ্টি ২৬ অক্টোবর, ২০১৩, ০১:০৫:৫৪ রাত



৬০ ঘণ্টার হরতাল : সংঘাতে নিহত ৮ : ১৪৪ ধারা ভেঙে দেশব্যাপী বিক্ষোভ প্রতিবাদ, কক্সবাজারের চকরিয়ায় বিজিবির গুলিতে নিহত ৩, চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে পুলিশ-ছাত্রলীগের হামলায় নিহত ৩, সাতক্ষীরা ও নীলফামারীতে নিহত আরও ২, পটুয়াখালী ময়মনসিংহ রাঙামাটিসহ বিভিন্ন স্থানে হামলা

নির্দলীয় সরকারের দাবিতে রাজপথে নেমে আসা নিরস্ত্র জনতার ওপর বিজিবি, পুলিশ ও আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীরা আবারও নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে। এতে কক্সবাজার, চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ, নীলফামারী ও সাতক্ষীরায় অন্তত ৮ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে হামলায় আহত হয়েছেন ১৮ দলীয় জোটের ৬ শতাধিক নেতাকর্মী।

কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার চিরিঙ্গা স্টেশনে বিজিবি এবং পুলিশের গুলিতে যুবদল ও ছাত্রদলের দুই নেতাসহ ৩ জন নিহত হয়েছে। চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে গতকাল বিকালে বিএনপি-জামায়াতের ওপর পুলিশ-যুবলীগ-ছাত্রলীগের যৌথ হামলায় ছাত্রদলের এক কর্মী এবং এক যুবদল নেতাসহ তিনজন নিহত হয়েছে। সাতক্ষীরার শ্যামনগরে আওয়ামী লীগের হামলায় এক জামায়াত কর্মী এবং নীলফামারীর জলঢাকায় পুলিশের গুলিতে এক শিবির কর্মী নিহত হয়েছে।

এদিকে গণতন্ত্র রক্ষার আন্দোলনে গতকাল সৃষ্টি হয়েছে নতুন ইতিহাস। একই দিনে দেশের প্রতিটি বিভাগীয় শহরে সমাবেশ করে এক অনুপম দৃষ্টান্ত স্থাপন করল ১৮ দলীয় জোট। নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবিতে ঢাকাসহ দেশের বিভাগীয় শহরগুলোতে ১৮ দলের সমাবেশে এদিন সমবেত হয় লাখ লাখ মানুষ। দেশের প্রায় সব শহরেই ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে অনুষ্ঠিত হয়েছে সভা-সমাবেশ।



চার জেলায় বিজিবি-পুলিশ-আ.লীগ মিলে ৮ বিরোধী নেতাকর্মীকে হত্যা : ফরিদগঞ্জে আজ সকাল-সন্ধ্যা হরতাল



দেশব্যাপী গতকাল ১৮ দলের বিক্ষোভ সমাবেশ চলাকালে বিজিবি-পুলিশ এবং আওয়ামী ক্যাডারদের গুলিতে সাতজন বিরোধী নেতাকর্মী নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে কক্সবাজারের চকরিয়ায় বিজিবি-পুলিশের গুলিতে ছাত্রদল-যুবদলের তিনজন, চাঁদপুরের ফরিদগুঞ্জে পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের গুলিতে দুই যুবদল নেতা ও এক ছাত্রদল কর্মী, নীলফামারীর জলঢাকায় পুলিশের গুলিতে এক শিবির কর্মী এবং সাতক্ষীরায় আওয়ামী লীগের ক্যাডারদের হামলায় এক জামায়াত কর্মী নিহত হয়। যদিও পুলিশ কক্সবাজারে তিনজন নিহতের কথা স্বীকার করেনি। তাদের দাবি, সেখানে একজন মারা গেছে। আবার সাতক্ষীরায় দিনের আলোতে শত শত মানুষের সামনে আওয়ামী লীগ-যুবলীগের ক্যাডাররা জামায়াত কর্মীকে সড়কের পাশে ফেলে ইট দিয়ে মাথা-বুক থেঁতলে হত্যা করলেও সেখানকার পুলিশ কোনো পরীক্ষা ছাড়াই বলেছে, সে ‘হার্টঅ্যাটাকে’ মারা গেছে।

সব জায়গায়ই নিরস্ত্র বিরোধী নেতাকর্মীদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালায় বিজিবি-পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। সরকারের বহু রকমের বাধা এবং বারবার বিরোধী দলের বিরুদ্ধে কথিত নাশকতার অভিযোগ করায় ও নিরাপত্তা বাহিনীর চাপের কারণে ১৮ দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে সমাবেশগুলো যথাসম্ভব শান্তিপূর্ণ এবং সুশৃঙ্খল করার তাগিদ ছিল। কিন্তু কোনো রহস্যজনক কারণে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে তাদের বিশৃঙ্খলার জন্য বিভিন্ন স্থানে উসকানি দেয়া হয় এবং বিনা কারণে হামলা করা হয়েছে বলে বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেছেন।

এদিকে এসব ঘটনাসহ দেশের অন্তত ১৫ জেলায় ১৮ দলের সভা-সমাবেশে বিজিবি-পুলিশ ও আওয়ামী ক্যাডারদের হামলায় ছয় শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। আহতদের অনেকের অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে আমাদের প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন।

এদিকে গতকাল সন্ধ্যায় বিএনপির ব্রিফিংয়ে অভিযোগ করা হয়, গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে গতকাল বিকাল পর্যন্ত বিভিন্ন স্থান থেকে সাড়ে চার শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-পুলিশ।



নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার নিয়ে আলোচনার জন্য সরকারকে আজ শনিবার পর্যন্ত দুই দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছেন বিরোধীদলীয় নেতা ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, এই দু’দিনের মধ্যে আলোচনার উদ্যোগ না নিলে প্রাথমিক কর্মসূচি হিসেবে আগামী ২৭ অক্টোবর রোববার ভোর ৬টা থেকে ২৯ অক্টোবর মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সারাদেশে বিরতিহীনভাবে ৬০ ঘণ্টার সর্বাত্মক হরতাল পালন করা হবে।

তিনি বলেন, এখনও সময় আছে আমাদের প্রস্তাব মেনে নিয়ে আলোচনার উদ্যোগ নিন। আমরা এখনও আলোচনার পথ খোলা রেখেছি। সাড়া না দিলে এটাও বন্ধ হয়ে যাবে। কঠোর কর্মসূচির হুশিয়ারি দেন তিনি।

গতকাল শুক্রবার বিকালে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ১৮ দলীয় জোটের বিশাল জনসমুদ্রে তিনি এসব কথা বলেন।

বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া বলেন, ২৭ অক্টোবর থেকে এই সরকারের বৈধতা শেষ। এ সরকারের মেয়াদ নেই। আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, আর দু’দিন আপনাদের সময় দেবো। আজ-কালের মধ্যে আলোচনার ব্যবস্থা না করলে স্ট্রেইটকাট কর্মসূচিতে চলে যেতে হবে। এরপরও যদি সরকারের বোধোদয় না হয়, পরবর্তীতে আরও কঠিন কর্মসূচি দেয়া হবে বলেও হুশিয়ারি দেন তিনি। খালেদা জিয়া বলেন, সরকারকে বলব, আপনাদের শুভবুদ্ধির উদয় হোক। ক্ষমতার দম্ভ পরিহার করুন। জনগণের কাতারে নেমে আসুন। আলোচনার বসুন। অন্যথায় সরকারের সব পথ বন্ধ হয়ে যাবে। একই সঙ্গে তিনি নির্বাচন কমিশনকে হুশিয়ারি জানিয়ে বলেন, সব দলের অংশগ্রহণ ছাড়া কোনো নির্বাচন হবে না। নির্বাচন কমিশন একদলীয় নির্বাচনের উদ্যোগ নিলে এর ফল শুভ হবে না।

আলোচনার পাশাপাশি সরকার হটানোর আন্দোলনে সর্বস্তরের জনগণকে রাস্তায় নেমে আসার আহ্বান জানিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, ইনশাআল্লাহ আবার দেখা হবে রাস্তায়। দেশ রক্ষা ও দেশের গণতন্ত্র রক্ষায় দেশের মা-ভাইবোন, যুবক-যুবতী, মুরুব্বিয়ান, নারী-পুরুষ সবাইকে রাস্তায় নামতে হবে। সরকারের অন্যায় কাজ করলে তার জবাব দিতে হবে। জয় আমাদের সুনিশ্চিত। নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের মাধ্যমেই আগামী ১৮ দলীয় জোট সরকার গঠন করবে। নির্দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে বিকালে ১৮ দলীয় জোটের উদ্যোগে এ জনসভা হয়। বিএনপি চেয়ারপারসনের বক্তব্যের মাঝপথে আন্দোলন-কর্মসূচির প্রসঙ্গ উঠে এলে সমাবেশের সামনের সারি থেকে নেতাকর্মীরা ‘হরতাল’, ‘হরতাল’ বলে কর্মসূচি ঘোষণার দাবি জানাতে থাকেন। এ সময় খালেদা জিয়া তাদের শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ২৭ তারিখ থেকে সরকারের বৈধতা শেষ। আপনারা নিশ্চয়ই চান আমরা কর্মসূচি দিই। আগে বক্তব্য। পরে কর্মসূচি। তবে শেষ পর্যন্ত নেতাকর্মীদের দাবি মেনেই হরতালের ঘোষণা দেন তিনি।

জনসভার কার্যক্রম শুরু হয় বেলা ২টা ১৫ মিনিটে। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির কারণে জনসভার মঞ্চ নির্মাণের কাজ শেষ হয় জুমার নামাজের পর। সকাল থেকে সোহরাওয়ার্দীতে মিছিল নিয়ে নেতাকর্মীরা আসতে শুরু করেন।

বৃষ্টি উপেক্ষা করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসমুদ্র



মাথার ওপর বৃষ্টি, পায়ের নিচে হাঁটুসমান কাদাপানি। চারদিকে কয়েক হাজার দাঙ্গা পুলিশের বন্দুকের নল...

মাথার ওপর বৃষ্টি, পায়ের নিচে হাঁটুসমান কাদাপানি। চারদিকে কয়েক হাজার দাঙ্গা পুলিশের বন্দুকের নল তাক করা। এসবের কোনো কিছুতেই ভ্রূক্ষেপ নেই কারো। সবার মুখে শুধু স্লোগান। আবার কেউ কেউ দল নিয়ে শোডাউন করছে, রাস্তায় কেউ মিছিল করছে। নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সমাবেশের জনসমুদ্রে এমনই চিত্র দেখা গেছে। শুধু বিরোধী দলের নেতাকর্মী নন, সাধারণ মানুষও স্বতঃস্ফূর্তভাবে গতকাল জনসভায় যোগ দেয়।

গত পাঁচ বছরে ঘরছাড়া লাখো তরুণ, নিপীড়িত সাধারণ মানুষের বাঁধভাঙা জোয়ারে জনসমাবেশ ও পার্শ্ববর্তী এলাকাই শুধু নয়, পুরো রাজধানীই ছিল লোকে লোকারণ্য। সবার মুখেই ছিল ‘অবৈধ সরকার এই মুহূর্তে গদি ছাড়’।

রাস্তাঘাট কোথাও ফাঁকা ছিল না। বিরোধীদলীয় নেতা ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গণসমাবেশ ঘিরেই এমন দৃশ্য ছিল।

বৃষ্টি উপেক্ষা করে জনসমুদ্র : সোহরাওয়ার্দী উদ্যোনের সমাবেশস্থলে অবস্থান নিতে সকাল থেকে রাস্তায় ঢল নামে জনতার। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জনসমুদ্রে পরিণত হয় সমাবেশস্থল। সমাবেশস্থল ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় তিলধারণেরও ঠাঁই ছিল না। সমাবেশস্থলের চারদিকে প্রায় দেড় কিলোমিটার এলাকাজুড়েই ছিল লোকারণ্য। তাই দুপুরের পর থেকে শাহবাগ, পল্টন, কাকরাইল, প্রেস ক্লাবসহ বিভিন্ন রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ করে দেয় পুলিশ।

সকাল ৮টা থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি উপেক্ষা করে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে বাদ্যযন্ত্রসহ মিছিল নিয়ে সমবেত হতে থাকেন সমাবেশস্থল সোহরাওয়ার্দী উদ্যোনে। হাইকোর্ট ও শিল্পকলা একাডেমীর সামনেসহ বিভিন্ন স্থানে দলীয় নেতাকর্মীরা অবস্থান করেন। মিছিলে দলীয় নেতাকর্মীদের হাতে ছিল শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া, বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবি সংবলিত প্ল্যাকার্ড। কারো কারো হাতে ছিল ধানের শীষ। সবার গন্তব্য একই, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। গণসমাবেশে অংশ নেয় ১৮ দলীয় জোটের শরিক জামায়াতে ইসলামীসহ অন্যান্য দল।

বেলা সাড়ে ১১টায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সবক’টি প্রবেশপথে জনতার ঢল নামে। মত্স্য ভবন, টিএসসি, দোয়েল চত্বর, শাহবাগ, কাকরাইল পর্যন্ত এলাকায় ছাপিয়ে যায় জনস্রোত। এসব মিছিলে ১৪-১৫ বছরের কিশোর তরুণ থেকে শুরু করে ৭০ বছরের বৃদ্ধদেরও দেখা গেছে। দুপুর ১২টার দিকে সমাবেশস্থলের চারদিক লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে। বিকাল ৩টার পর সমাবেশস্থলের আশপাশের প্রায় দুই কিলোমিটারের মধ্যে লোকজনের আর যাওয়া সম্ভব হয়নি। এ কারণে হাজার হাজার মানুষ সরাসরি শুনতে পারেননি খালেদা জিয়ার বক্তব্য।

সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ : সমাবেশে দীর্ঘ পাঁচ বছরের নিপীড়িত সাধারণ মানুষ অংশগ্রহণ করে। ক্যান্টনমেন্ট ১৫ নম্বর ওয়ার্ড থেকে আসা মো. মিজান উপস্থিত একাধিক সাংবাদিককে বলেন, ‘অনেক জ্বালা সহ্য করেছি সরকারের। এই পাঁচ বছরে দুবার আবেদন করেও একটি ড্রাইভিং লাইসেন্স পাই নাই। কত কষ্ট করছি। কাজ-কাম ছিল না। এখন এই সরকারকে আর দেখতে চাই না।’ খিলগাঁওয়ের গোড়ান এলাকার বাসিন্দা শাহাদাত বলেন, কোনো দল করি না, কোনো কমিটিতে নাই। কিন্তু কয়েক মাস আগে আমাকে জামায়াত-শিবির আখ্যা দিয়ে মোহাম্মদপুরে একটি বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে পুলিশ ধরে নিয়ে আসে। ছাড়া পেতে যে কষ্ট হয়েছে তাতে এরপর আর ভয়ে নিজের বাসায় থাকতে পারিনি। তাই আজ এই সমাবেশে এলাম সরকারের পতন দেখতে।’

সংগ্রহ == http://www.24livenewspaper.com/site/index.php?url=www.amardeshonline.com

বিষয়: রাজনীতি

২২৮৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File