মতিঝিল গণহত্যা : সরকারি ভাষ্য বনাম প্রকৃত ঘটন, ছবি কথা বলে,যারা বেঁচে আছে, আলো-আঁধারির খেলা সত্যের অন্তরালে,
লিখেছেন লিখেছেন আল্লাহর সন্তুষ্টি ১০ মে, ২০১৩, ১১:৩৩:৪৪ রাত
যদি কেউ এই সত্যকে মিথ্যা প্রমান করতে পারেন, তবে করে দেখান,
http://www.amardeshonline.com/pages/details/2013/05/10/199396#.UY0rHkw-2So
চারপাশে যখন এমন যাতনাময় সঙ্কটজনক অবস্থা, রুপক হলেও বলা যায় সারা বিশ্বে ফেরেশতারা সংবাদ বিলি করছিল ইন্টারনেটে, ফেসবুকে, টুইটারে। মানুষ নামের দ্বিপদী জীবের ওখানে যাওয়ার কোনো সুযোগ ছিল না। সব সূত্র যোগাযোগ কেটে দেয়া হয়, তারপরও। মিডিয়া-সাংবাদিক ঢোকার সব দ্বার বন্ধ ছিল, আলো-আঁধারির খেলা ছিল সেটি। যে মানুষটি কথা বলতে পারত তার মুখে লেপে দেয়া হয়েছে সিলগালা। এবার সময় এসেছে সারা জাতির মনের দিক থেকে আরও শক্ত হওয়ার। এমন জীবন রেখে তোমরা কি করবে, তার চেয়ে ওই মরার লোভীরা বাঁচুক আর তোমরা হয় মানুষ হয়ে বাঁচো, নয়তো মরো। তবে আশার কথা, নির্যাতিতরা মরে প্রাপ্তির মরণ আর শয়তানের মরণ হবে সবহারার মরণ, সেখানে কোনোভাবেই কোনো প্রাপ্তি জমবে না।
মাত্র আজই যা শুনলাম তার আরও কিছু গল্প শুনাব। তোমাদের সে ধৈর্য আছে কি ওটি শোনবার? তা থাকারও কথা নয়। তোমরা আজ বাক্যহারা, সর্বস্ব হারিয়ে হতবাক বসে আছ। জেনে রেখ এ গল্প নয়, এ সত্যযুগের ঘটে যাওয়া উপাখ্যান, এক ব্লগের অর্জন। ‘এক হুজুরের ছিল পাজামা-পাঞ্জাবি আর টুপির দোকান। বায়তুল মোকাররম মার্কেটে ২০১৩ সালের ৫ মের সপ্তাহ দুয়েক আগে চল্লিশ হাজার পাজামা-পাঞ্জাবি ও টুপির অর্ডার পান হুজুর। ভাববেন না ডিএমপি কমিশনারের মাপ মতন ব্যাংক লুটের নামে হেফাজতের লিডার আল্লামা শফি এ অর্ডার দিয়েছেন বা পাঞ্জাবির ব্যবসা-বাণিজ্য জুড়েছেন। চক্রান্তকারী নতুন আল্লামারা যারা কোরআন পোড়ানোর নিজেদের অপবাদ অন্যের ঘাড়ে চাপাচ্ছে এ তাদের কাজ, এটি তারাই অর্ডার করেছিল। ঘটনার দিন কৌশলী দাপটিরা একদম স্টেজের সামনে দাঁড়িয়েছিল প্রায় দশ হাজার, অচেনা নব্য স্বেচ্ছাসেবক। এটি তাদের মূল আয়োজকদের অনেকের চোখে ধরা পড়লেও তারা এতটা ভাবেনি যে, এর শিকড় এত গভীরে যেতে পারে। যখন পুলিশ বিজিবির মোড়কে রাতের ডাকু বাহিনী পেছন থেকে হামলা চালায় তখনই পাজামা-পাঞ্জাবি পরা অচেনা দানবেরাও একসঙ্গে হামলে পড়ে হেফাজতের উপর। ভিকটিমরা বুঝতেও পারেনি কে তাদের শত্রু, কে তাদের মিত্র। একসঙ্গে গিয়েছিল ৫০ জন মিছিলে, ফিরেছে সে বক্তা, শুধু নিজে একা। সে বলছে তার কাছের সব বন্ধু শহিদী ঈদগাহে চলে গেছে। ক’দিন ধরে তার নাওয়া-খাওয়া বন্ধ। কথা বলতে পারছে না। তার মা বলছে কেমন অস্বাভাবিক হয়ে গেছে ছেলেটি। সে বলছে যারা ঢাকায় থাকে তারা কোনো মতে পার হতে
পেরেছে, কিন্তু যারা ঢাকার বাইরে থেকে এসেছে, তারা পালাবে কীভাবে? রাস্তা চেনে না, সব অলিগলি বন্ধ, সবই তাদের অচেনা। মাত্র একদিকে খোলা রেখে সব রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছিল রাতের ডাকু বাহিনী। তখন পুলিশের সঙ্গে নিরীহ ছেলেপেলেরা কথা বলার চেষ্টা করছিল। কিন্তু কি তাজ্জব ব্যাপার, ওরা যে বাংলা বোঝে না, ইংরেজিও না, তারা আবার পুলিশ বিজিবির পোশাক পরা! নিজেরা মুখ চাওয়া-চাওয়ি করে হিন্দিতে কথা বলে। শুরু হয় স্টেজের দিকে তাক করে অনবরত গুলি। তখনো কমপক্ষে এক লাখ লোক ছিল স্টেজ ও মতিঝিল স্কোয়ারে ছড়িয়ে। কেউ ঘুমে, কেউবা জিকিরে। রাসুলের শানে গান গাচ্ছিল কিছু শিল্পী। সব সাবাড় করতে ওদের ঠিকই দশ মিনিট লেগেছিল, টানা গুলি। একদিকে ট্রাক উঠিয়ে দিচ্ছিল ঘুমন্ত ও জীবিত মানুষদের উপরে আর অন্যদিকে ট্রাকে করে উঠাচ্ছিল সদ্য পড়ে যাওয়া লাশগুলো। প্রত্যক্ষ ময়দানে বেঁচে যাওয়া সে ছেলেটি অবলীলায় বলছে কমপক্ষে দশ হাজার শহীদ হয়েছে।’
বিগত ২০০৯-এ বিডিআর বিদ্রোহে এমনটাই সবাই জেনেছে। ফেসবুকে, ইন্টারনেটে একইভাবে ওই সময় ভিন ভাষা অর্থে হিন্দি ভাষী মানুষ পায়ে চপ্পল নিয়ে মাথা খোলা রেখে শুধু বিডিআরের একটি পোশাক পরে ছবিতে উদাহরণ হয়ে আছে। সেদিনটিতে কোনো বিডিআরের এরকম উদাহরণ হয়ে থাকার কথা নয়, এমন একটি বাত্সরিক অনুষ্ঠানের দিনে বেল্ট ক্যাপ জুতাবিহীন কোনো বিডিআর সম্মেলনে আসবে এটি ভাবা যায় না। কিন্তু সেদিন ছবি কথা বলেছিল, সারা বিশ্বের বাংলাভাষী মানুষ তা পরখ করেছে পরম বেদনায়, ইন্টারনেটের কারণে তারা জেনেছে দেশের মানুষ থেকেও বেশি। এবারও গল্পের ওই আহত ছেলেটির বড় চাচা পিলখানার বড় কর্মকর্তা। সদ্য আগত খবর নিতে আসা ছেলের বাবা, তার চাচার কাছ থেকে মূল ঘটনার খবর জেনে চোখ আরও ছানাবড়া। ঘটনার আকস্মিকতায় বাষ্পরুদ্ধ বাবাকে নিয়ে যান ওই বড় কর্মকর্তা গ্যারেজে পার্ক করে রাখা কিছু ট্রাকের কাছে, ট্রাক ভর্তি লাশ, তখনো ডাম্প করা হয়নি। দু’জনাই নীরব, শুধু দু’জনারই গাল বেয়ে অশ্রু বেয়ে পড়ছে। হে বিধাতা! আজ আমাদের গোটা জাতির চোখেই জল!
তুমি রইলে এসবের প্রধান নীরব সাক্ষী হয়ে! গ্যারেজ ছাড়াও লাশভর্তি ট্রাক রাজারবাগ পুলিশ লাইনেও আছে। এমন কাণ্ডতে ওই আসামি পুলিশরাও কাঁপছে, কেউ বা কাঁদছে। এই আমার গল্প, ধারণা করি এটি কোনো কল্প লোকের রাজকন্যার ডাইনির গল্প নয়, এটি বাস্তবের কল্প কাহিনী, তারপরও আরও কত বাকি পড়ে আছে।
জানিনা এ গল্প শোনার পর মনে হচ্ছে বাংলার ভূমি আজ শিশু ইসলামের রণাঙ্গন থেকেও বহু উত্তপ্ত কিনা। বর্তমানে ওই ধসে যাওয়া গুলবাগিচা যেন নরকের পাদপিঠ মাত্র। বদর, ওহুদ, খন্দক এর চেয়ে মোটেও ভয়ঙ্কর ছিল না। এটি তার চেয়ে বহুগুণ বেশি নির্মম ও ধ্বংসকারী, মহানবীর জন্মের বছর ইয়েমেনের খ্রিস্টান বাদশাহ আবরাহার হাতি বাহিনীর ধ্বংসের চেয়েও নির্মম তার আঘাত। আরবের শিরকধারী কুরাইশরা এর চেয়েও কঠিন ছিল কি? ওরাও আল্লাহর পূজা করত, তবে সাংঘর্ষিক কাজটি করত তারা আল্লাহর সঙ্গে মানত আল্লাহর তিন কন্যা হিসেবে আল লাত, আল-উজ্জাহ আর আল-মানাহকে। যা ছিল ইসলাম নামের মূল ধর্মের নামে এক গাঁজাখুরি মিথ্যা সংযোজন। আজ আমরা মুসলিমরাও না বুঝে শিরনি মানত করি, ওই মানাহ দেবীর নাম স্মরণার্থে। তাই মানাহ থেকে হয়েছে মানত। তাদের মগজেও ছিল ইব্রাহিম ও ঈসা-মুসা (আঃ)-এর ধর্ম। সারা বিশ্বের জনতা হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান—আমরা এক আল্লাহর সৃষ্ট জীব। নবী ঈসা (আ.)কে যখন তারা ক্রুুশে ওঠায় তখন তিনি বলেছিলেন, ‘এলি এলি লামা সাবাকতানি’— হে এলাহি তুমি কি আমাকে ফেলে গেলে? তার প্রভু তার প্রিয়তমের ডাকে জবাব দেন ও তার ব্যবস্থা নেন। নবী মুহাম্মদ (সা.) ও যখন উত্কণ্ঠিত ছিলেন জালিমের অত্যাচারে, তখন সুরা দোহাতে তাকে সান্ত্বনা দেয়া হয়। এর বাংলা ছন্দাকারে সম্ভবত গোলাম মোস্তফা এর কাব্যরূপ দান করেন এভাবে—
‘মধ্যদিনের আলোর দোহাই নিশার দোহাই ওরে,/প্রভু তোরে ছেড়ে যাননি কো কভু,/ঘৃণা না করেন তোরে/অসহায় যবে এসেছিলি ভবে তিনিই দিছেন ঠাঁই”
ছন্দের ওই কথাগুলো কোরআনের কথাতে বলা হয়, ‘ভাবো রাতের কথা যখন তা সব ঢেকে দেয় আর দিবালোকের কথা যখন সব সুস্পষ্ট হয়। পরকাল তোমার জন্য প্রাথমিক কালের চেয়েও ভালো। শিগগিরই তুমি অনুগ্রহ লাভ করবে।’ তখন আল্লাহ তাকে সান্ত্বনা দিতে বলেন, ‘তুমি কি এতিম অবস্থায় ছিলে না? আমি কি তোমাকে আশ্রয় দেইনি? সেদিন তুমি ছিলে দিশেহারা, আমি তোমাকে পথ নির্দেশ দেই। তুমি ছিলে নিঃস্ব আর আমি তোমাকে সমৃদ্ধ করি। সুতরাং এতিমদের প্রতি রূঢ় হয়ো না, আর সাহায্য প্রার্থীদের তাড়িয়ে দিও না। অতএব সেই বিজিত স্রষ্টার তুমি বিজয় কেতন ওড়াও”। কথাগুলো ছিল সুরা দোহার (৯৩: ১-১১ আয়াত) মূলবাণী। এ গ্রন্থটিই সব সমস্যার সমাধান, ক্যাপসুল। বিগত ঘটনার আলোকে একে বিশ্লেষণ করতে উত্সাহী পাঠককে আশার বাণী শোনাচ্ছি। যারা মানবতাকে ১০ হাজার নয়, তার চেয়েও বহুগুণ বেশি অপকর্মে খুন করছে তাদের জন্য আর বিচার চাইতে হবে না, বিচার তাদের জন্য বরাদ্দই থাকবে।
নিজেদের কর্তব্যে নিজেরা অটল থেক। তোমাদের নির্দোষের হারাবার কিছু নেই। ‘সেই দিন শাস্তি তাদের লেপটে ফেলবে তাদের উপর থেকে ও তাদের পায়ের নিচ থেকে। তখন তিনি (আল্লাহ) বলবেন, ‘তোমরা যা করে যাচ্ছিলে তা আস্বাদন করো’। (সুরা আল-আনকাবুত ৫৫ আয়াত)। ‘অপরাধীরা নিশ্চয় জাহান্নামের শাস্তির মাঝে অবস্থান করবে। তাদের থেকে তা লাঘব করা হবে না। আর তাতে তারা হতাশ হয়ে পড়বে। আর আমরা তাদের প্রতি অন্যায় করিনি, বরঞ্চ তারা নিজেরাই অন্যায় করেছিল, অতঃপর তারা ওই যাতনা থেকে উদ্ধার পেতে নিঃশেষ হওয়ার দোয়া করবে কিন্তু তাদের সে অবকাশ দেয়া হবে না।’ (সুরা আয যুখরুফ ৭৪-৭৭ আয়াত)। এভাবেই তারা প্রতিদান পাবে যা করে যাচ্ছিল, সেদিন তাদের জন্য কোনো সাহায্যের অবকাশ থাকবে না। অনেক নাস্তিক বলে আল্লাহ কেন এত নিষ্ঠুর, কেন আমাদের বিচার করবে। তোমাদের যদি বিচারই না করেন তবে সুজনের প্রতি অনাচার হয়ে যাবে না! সুজনের সম্মানে তোমাদের বিচার জরুরি এবং অবশ্যম্ভাবী! এটি রোধবার সাধ্য কারও নেই। তোমরা যারা বেঁচে আছ মানুষ হয়ে মাথা উঁচু করে বাঁচো, তোমরাই হও জগতের আলা, সম্মানিতজন।
৮ মে, ২০১৩
http://www.amardeshonline.com/pages/details/2013/05/10/199396#.UY0rHkw-2So
যদি কেউ এই সত্যকে মিথ্যা প্রমান করতে পারেন, তবে করে দেখান,
বিষয়: রাজনীতি
৪০৪০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন