প্রত্তেক মুমিনের ঈমানী কর্তব ,৫ মে ঘিরে
লিখেছেন লিখেছেন আল্লাহর সন্তুষ্টি ০৩ মে, ২০১৩, ০৫:৪৬:৫০ বিকাল
মুমিন তো তাঁরা , যাদের সামনে আল্লাহ এর নাম নিলে তাঁদের অন্তর ভীত হয়ে পড়ে..... আল-কুরআন।
যখন মুমিনদের বলাহয় তোমাদের বিরুদ্ধে লোকেরা সমবেত হচ্ছে, তখন মুমিনদের ঈমান আরও বেড়ে যায়.........আল-কুরআন।
সবার দৃষ্টি এখন ৫ মে ঢাকা অবরোধ কর্মসূচির দিকে। কী হতে যাচ্ছে সেদিন! সবার মাঝে কৌতূহল, আগ্রহ। ১৩ দফা দাবিতে হেফাজতে ইসলাম ঘোষিত এই কর্মসূচিকে ঘিরে দেশজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে উদ্বেগ আর আতঙ্ক। শান্তিপূর্ণ পন্থায়ই ঢাকা অবরোধের মাধ্যমে সরকারকে দাবি আদায়ে বাধ্য করা হবে বলে হেফাজতের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেয়া হয়েছে। তবে ওইদিন ব্যাপক নাশকতার আশঙ্কা করছে সরকার। পুলিশও নিয়েছে ব্যাপক প্রস্তুতি। এর আগের দিন ১৮ দলীয় জোট ঘোষিত সমাবেশ কর্মসূচি নিয়েও চিন্তিত প্রশাসন। দুটি কর্মসূচি কেমন করে সামাল দেয়া যাবে—তা নিয়ে নানা কৌশল চূড়ান্ত। হেফাজতে ইসলাম যাতে রাজধানী ঢাকার কাছে আসতে না পারে, সেজন্য সারাদেশে পুলিশ, র্যাব থাকবে সদা সতর্ক। প্রায় ১ লাখ পুলিশ সদস্য ও ১২ হাজার র্যাব সদস্য থাকবে মাঠে তত্পর। অন্যদিকে যে কোনো বাধা বা ষড়যন্ত্র উপেক্ষা করেই ঘোষিত কর্মসূচি সফলের ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে হেফাজতে ইসলাম। ৫ তারিখে ঢাকা অবরোধ কর্মসূচি সরকার পতন আন্দোলনে রূপ নিতে পারে বলেও সংগঠটির নেতারা আভাস দিয়েছেন। কর্মসূচি বাস্তবায়নের বিভিন্ন দিক নিয়ে গতকাল চট্টগ্রামে কেন্দ্রীয় কমিটির চূড়ান্ত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সারাদেশে প্রচারণামূলক মিছিল করবে সংগঠনটি।
এদিকে ঢাকা অবরোধ কর্মসূচিকে ঘিরে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সরকারি বিভিন্ন মহল। এরই অংশ হিসেবে গতকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় সন্দেহভাজন যানবাহন তল্লাশি করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। রাজধানীর প্রবেশমুখে বিভিন্ন রুটে যান চলাচলও সীমিত করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। নাশকতা ও সহিংসতার আশঙ্কা করে হেফাজতের অবরোধ কর্মসূচি প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছেন পরিবেশ ও বনমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। গতকাল সচিবালয়ে পৃথক প্রেস ব্রিফিংয়ে একই ধরনের আহ্বান জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। সরকারের একটি প্রতিনিধিদল চট্টগ্রামে হেফাজত কার্যালয়ে গিয়ে ১৩ দফা দাবি-দাওয়া কমানোর আহ্বান জানিয়েছেন। সরকার সমর্থক কয়েকটি ইসলামী সংগঠন হেফাজতের কর্মসূচির বিরুদ্ধে নানা প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। গতকালও দাওয়াতে ইসলাম নামে এ ধরনের একটি সংগঠনের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে।
হেফাজতে ইসলামের ব্যাপক প্রস্তুতি : সংবিধানে আল্লাহর ওপর অবিচল আস্থা ও বিশ্বাস পুনঃস্থাপন, আল্লাহ, রাসুল (সা.) ও ইসলামের অবমাননাকারী নাস্তিক ব্লগারদের সর্বোচ্চ শস্তির আইন পাস, ইসলামবিরোধী নারীনীতি ও শিক্ষানীতি বাতিলসহ ১৩ দফা দাবিতে ঘোষিত ৫ মে ঢাকা অবরোধ কর্মসূচিকে ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে হেফাজতে ইসলাম। গত ৬ এপ্রিল ঢাকামুখী লংমার্চ থেকে এ কর্মসূচি ঘোষণার পর তা বাস্তবায়নে সারাদেশে তত্পরতা চালায় সংগঠনটি। বিভিন্ন জায়গায় মহাসমাবেশসহ অসংখ্য প্রস্তুতিমূলক সভা-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসব সমাবেশে আলেম-ওলামা ও ধর্মপ্রাণ মানুষের মাঝে ব্যাপক উত্সাহ-উদ্দীপনা দেখা যায়। এসময় অবরোধ কর্মসূচিতে যোগ দেয়ার ব্যাপারে নেতাকর্মীদের দিকনির্দেশনা দেয়া হয়। গতকাল বিকালে চট্টগ্রামে হেফাজতের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অবরোধ কর্মসূচির বিভিন্ন বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে দীর্ঘ এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
হেফাজত নেতারা জানান, তারা ঢাকার ৯টি প্রবেশমুখে লাখ লাখ লোকের অবস্থান নিশ্চিত করবেন। লাখ লাখ জনতার উপস্থিতি নিয়ে নেতাকর্মীরা ঢাকার প্রবেশমুখ ডেমরা, পোস্তগোলা, আমিনবাজার, আবদুল্লাহপুর, কাঁচপুর, বাবুবাজার ব্রিজ, আশুলিয়া, মাওয়া ফেরিঘাট ও সদরঘাট প্রবেশমুখে অবস্থান করা হবে। কর্মীদের মুখে থাকবে আল্লাহর জিকির, হাতে তসবিহ ও মেসওয়াক। কর্মসূচিতে যোগ দিতে দু’একদিন আগেই ঢাকায় আসবেন হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা আহমদ শফী। চট্টগ্রাম থেকেই ১২ লক্ষাধিক তৌহিদি জনতার সমাবেশ ঘটানো হবে বলে জানানো হয়েছে। ঢাকা অবরোধ উপলক্ষে আজ রাজধানীর সব থানাসহ সারাদেশে মিছিল-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
প্রস্তুতি সম্পর্কে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মুফতি ফয়জুল্লাহ বলেন, ঢাকা অবরোধের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়ে আছে। লাখ লাখ আলেম ও তৌহিদি জনতা ঢাকার প্রবেশমুখগুলোতে শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান নেবেন। কোনো বাধাই ঈমানি এই আন্দোলনকে দমাতে পারবে না। অবরোধের সময়সীমা প্রসঙ্গে হেফাজতের এ নেতা বলেন, প্রাথমিকভাবে আমরা আশা করছি সরকার কোনো বাধা না দিলে আমরা কর্মসূচি সন্ধ্যার মধ্যেই শেষ করে চলে যাব। কিন্তু যদি সরকার সত্যিই কোনো বাধা দেয়, তবে মনে করব এ সরকার নাস্তিকদের পক্ষের সরকার। আর সেক্ষেত্রে আমরা যথাসময়ে সবকিছু জানাব।
শুকনো খাবার সঙ্গে আনার অনুরোধ : অবরোধ কর্মসূচিতে ঢাকায় আসার পথে নেতাকর্মী ও সমর্থকদের চিড়া, মুড়িসহ শুকনো খাবার সঙ্গে আনার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন হেফাজতের কেন্দ্রীয় নেতারা। এ বিষয়ে মুফতি ফয়জুল্লাহ বলেন, আমরা কারও মুখাপেক্ষী হতে চাই না। তাই নেতাকর্মী ও রাসুলপ্রেমিকদের শুকনো খাবার সঙ্গে আনার জন্য অনুরোধ করছি।
হেফাজতে ইসলাম নেতারা বলেছেন, তাদের ৫ মে’র অবরোধ কর্মসূচি হবে সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ ও অহিংস। এ বিষয়ে হেফাজতের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাইনুদ্দিন রুহী বলেন, তারা যে কোনো মূল্যে অবরোধ কর্মসূচিকে শান্তিপূর্ণ করতে চান। তাদের বিশ্বাস, সরকার কোনো বাধা দেবে না। তাহলে তারা দিনব্যাপী ঢাকার প্রবেশমুখে অবস্থান নিয়ে কর্মসূচি শেষ করবেন। যদি তারপরও কোনো বাধা আসে, তবে তাত্ক্ষণিক কেন্দ্রীয় নেতারা বসে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন।
হাটহাজারীতে হেফাজতের কেন্দ্রীয় কমিটির চূড়ান্ত বৈঠক : খোরশেদ আলম শিমুল, হাটহাজারী, চট্টগ্রাম থেকে জানান, ৫ মে ঢাকা অবরোধ কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটির চূড়ান্ত বৈঠক সম্পন্ন হয়েছে। এতে কর্মসূচির প্রস্তুতি ও বাস্তবায়ন নিয়ে সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতারা ব্যাপক আলোচনা করেন। বৈঠকে বিভাগীয় ও জেলাগুলোতে অনুষ্ঠিত মহাসমাবেশ নিয়ে পর্যালোচনাও করা হয়। এছাড়া ৫ মে কর্মসূচি বাস্তবায়নের ব্যাপারে দীর্ঘ আলোচনা শেষে চূড়ান্ত কৌশল নির্ধারণ করা হয় বলে জানান হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদী। এদিকে ১৩ দফা দাবি-দাওয়া কমাতে সরকারের ৬ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল হেফাজতের আমিরের কার্যালয়ে আসে।
গতকাল দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম হাটাহাজারী মাদরাসা মিলনায়তনে বেলা ৩টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত প্রায় ৪ ঘণ্টাব্যাপী এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
সিলেট মহানগর হেফাজতে ইসলামের সাংবাদ সম্মেলন : সিলেট অফিস জানায়, হেফাজতে ইসলাম সিলেট মহানগর আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আল্লামা আহমদ শফীর ঘোষিত ১৩ দফা বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত বাংলার তৌহিদি জনতা ঘরে ফিরে যাবে না। একই সঙ্গে আগামী ৫ মে ঢাকার অবরোধ সফল করার জন্য সিলেটসহ দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
গতকাল নগরীর জিন্দাবাজারে পিপার্স চাইনিজ রেস্টুরেন্টে এক সংবাদ সম্মেলনে হেফাজতে ইসলাম সিলেট মহানগরের সভাপতি অ্যাডভোকেট মাওলানা শাহীনূর পাশা চৌধুরী বলেন, দেশের শীর্ষস্থানীয় আলেম খলিফায়ে মাদানী আল্লামা শাহ আহমদ শফীর আহ্বানে দেশের সর্বস্তরের তৌহিদি জনতা হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফা বাস্তবায়নে আন্দোলন করে যাচ্ছে। গত ৬ এপ্রিল ঢাকার শাপলা চত্বরে ঐতিহাসিক লংমার্চের মাধ্যমে সরকারের কাছে এ দাবি পেশ করা হয়। ১ মাসের সময় দিয়ে আল্লামা শফী দেশব্যাপী শানে রিসালাত মহাসম্মেলনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন। সেই সব কর্মসূচিতে সর্বস্তরের তৌহিদি জনতার স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতির মাধ্যমে দেশব্যাপী এক মহাগণজাগরণ সৃষ্টি হয়েছে।
হেফাজতে ইসলামের পক্ষ নেয়ায় আজ বাংলার সাহসী সম্পাদক মাহমুদুর রহমান জেলে। তার মুক্তির দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, হেফাজতের আন্দোলন কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে নয়। এটি এদেশের ৯০ ভাগ মানুষের ঈমানি আন্দোলন। তিনি বলেন, হেফাজতে ইসলামের আন্দোলনকে বেগবান করতে প্রতিনিধিত্বশীল রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতা ও সর্বস্তরের তৌহিদি জনতাকে নিয়ে হেফাজতে ইসলাম সিলেট মহানগরীর ১৫১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির পূর্ণাঙ্গ তালিকা আপনাদের সামনে উপস্থাপন করা হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা আশা করছি সরকার কোনো প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি না করলে আগামী শনিবার রাত নয়টায় হুমায়ুন রশীদ চত্বর থেকে সিলেটের সহস্রাধিক গাড়ির বহর ঢাকার উদ্দেশে রওনা হবে। ঢাকা অবরোধ সফলে আজ কোর্টপয়েন্টে বাদ জুমা এক বিশাল গণমিছিল বের হবে।
সিলেট মহানগর হেফাজতে ইসলামের জয়েন্ট সেক্রেটারি মাওলানা আবদুল মালিক চৌধুরীর পরিচালনায় সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র সহ-সভাপতি মাওলানা শায়খ আবদুল মতিন ধনপুরী, সহ-সভাপতি হাফিজ মাওলানা মনসুরুল হাসান রায়পুরী, জেলা সহ-সভাপতি প্রিন্সিপাল মাওলানা নাসির উদ্দীন, সহ-সভাপতি মাওলানা নজরুল ইসলাম শিকদার, মাওলানা শেখ যাকারিয়া আহমদ, সাধারণ সম্পাদক মুফতি ফয়জুল হক জালালাবাদী, মাওলানা আজিজুর রহমান, মাওলানা নূর আহমদ কাসেমী, মাওলানা আছলাম হোসাইন রহমানী, মাওলানা জহুরুল হক, মাওলানা আলী নূর, মাওলানা তৈয়্যিবুর রহমান চৌধুরী প্রমুখ।
পাবনায় হেফাজতে ইসলামের সমাবেশ : পাবনা অফিস জানায়, ৫ মে ঢাকা অবরোধ সম্পন্ন করতে গতকাল দুপুরে হেফাজতে ইসলাম পাবনা জেলা শাখার উদ্যোগে এক সমাবেশ পাবনা জামিয়া আশরাফিয়া মাদরাসায় অনুষ্ঠিত হয়েছে। হেফাজতে ইসলাম পাবনা জেলা শাখার সভাপতি শায়খুল হাদিস মাওলানা হারুনুর রশীদের সভাপতিত্বে এ সময় অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন হেফাজতে ইসলাম পাবনা জেলা শাখার প্রধান উপদেষ্টা আলহাজ হাফেজ মাওলানা নেয়ামতুল্লাহ, জেলা কমিটির সহ-সভাপতি আমিনুর রহমান খান, সাধারণ সম্পাদক মুফতি মতিউর রহমান, সহকারী সাধারণ সম্পাদক মাওলানা বাহারুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক মুফতি রবিউল ইসলাম, সহকারী প্রচার সম্পাদক মো. আনিছুর রহমান প্রমুখ।
বক্তারা আগামী ৫ মে অনুষ্ঠিতব্য ঢাকা অবরোধ কর্মসূচিটি সফল করতে পাবনাসহ সারাদেশের তৌহিদি জনতাকে উদাত্ত আহ্বান জানান। পাশাপাশি আজ পাবনার বিভিন্ন মসজিদ থেকে ঢাকা অবরোধের প্রস্তুতি উপলক্ষে শহরের বিভিন্ন এলাকায় মিছিল ও সমাবেশে অংশগ্রহণ করার আহ্বান জানান।
চান্দিনায় অনুমতি না পেয়ে হেফাজতের শানে রিসালাত সম্মেলন স্থগিত : চান্দিনা (কুমিল্লা) প্রতিনিধি জানান, চান্দিনা উপজেলা হেফাজতে ইসলামের শানে রিসালাত সম্মেলন স্থগিত করা হয়েছে। গতকাল বিকালে চান্দিনা উপজেলা চত্বর সংলগ্ন মাদরাসায় এক সংবাদ সম্মেলনে নেতারা জানান, প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো স্থানে সম্মেলন করার অনুমতি না দেয়ায় আমরা সম্মেলন স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছি। এর মধ্য দিয়ে আমাদের অধিকার খর্ব করা হয়েছে। গতকাল ওই শানে রিসালাত সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। স্থানের অনুমতি পেতে প্রশাসনসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ধরনা দিয়েও তারা ব্যর্থ হয়েছেন বলে সম্মেলনে জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উপজেলা হেফাজতে ইসলাম সভাপতি শায়খুল হাদিস আল্লামা তাজুল ইসলাম ভূইয়া। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা হেফাজতে ইসলামের সহ-সাধারণ সম্পাদক মুফতি ইয়াহ্ইয়া রাশেদ, মাওলানা ইয়াছিন জাফরী, মাওলানা আবুল কালাম কাসেমী, সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. আবু বকর সিদ্দিক, পৌর হেফাজতে ইসলাম সভাপতি মাওলানা খাইরুল ইসলাম, মাওলানা মাসউদুর রহমান, মুফতি আতিকুর রহমান, মাওলানা মফিজুল ইসলাম, হাফেজ জহিরুল ইসলাম, মাওলানা সিরাজুল ইসলাম, মাওলানা বেলাল হোসাইন প্রমুখ। প্রসঙ্গত, এরই মধ্যে ওই সম্মেলনকে ঘিরে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছিল সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এ উপলক্ষে উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রচারপত্র বিলি, মাইকিংও করেছিলেন তারা।
প্রস্তুত পুলিশ, উত্কণ্ঠায় মানুষ : হেফাজতে ইসলামের ৫ মে’র ঢাকা অবরোধ ও ৪ মে বিএনপি- জামায়াতসহ ১৮ দলীয় জোটের মহাসমাবেশকে সামনে রেখে ব্যাপক তত্পরতা শুরু করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। র্যাব, পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থা এরই মধ্যে গোপন বৈঠক করে এই দুটি বৃহত্তর কর্মসূচিকে সামাল দেয়ার ছক তৈরি করেছে। বিশেষ করে কোনো অবস্থাতেই যাতে হেফাজতকর্মীরা ঢাকার আশপাশে অবস্থান না নিতে পারে, সেজন্য কঠোর অবস্থায় থাকাতে বলা হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে। অন্যদিকে হেফাজতে ইসলাম যাতে ঢাকার কাছাকাছি আসারও সুযোগ না পায়, সেজন্য সারাদেশের প্রায় ১ লাখ পুলিশ ও ১২ হাজার র্যাব সদস্য মাঠে নামানো হচ্ছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের একটি সূত্র জানায়, রাজধানীতে ১৮ দলীয় জোটের মহাসমাবেশের জন্য নির্দিষ্ট স্থানের অনুমতি দেয়ার এখনও সিদ্ধান্ত নেয়নি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি); তবে জোটের সমাবেশের জন্য পুলিশ শর্তসাপেক্ষে অনুমতি দেবে। এদিকে ঢাকা অবরোধের আগে হেফাজতে ইসলামকে কটাক্ষ করে গণজগারণ মঞ্চের ইমরান সরকার, সরকারদলীয় কয়েকজন নেতা এবং মন্ত্রীদের বক্তব্যে জনমনে উদ্বেগ-উত্কণ্ঠা বৃদ্ধি পেয়েছে।
সূত্র জানায়, ১৩ দফা দাবি বাস্তবায়নের জন্য হেফাজতে ইসলাম সরকারকে সময় বেঁধে দিয়েছিল। মতিঝিলে মহাসমাবেশ করে হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা আহমদ শফী ঘোষণা দিয়েছিলেন, ইসলাম রক্ষার এ দাবি না মানলে ৫ মে ঢাকা অবরোধ করা হবে। পূর্বঘোষিত এ কর্মসূচি বাস্তবায়নের প্রস্তুতি হিসেবে এরই মধ্যে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, রাজশাহী, বরিশাল ও বগুড়াসহ কয়েকটি এলাকায় বিশাল সমাবেশ করেছে হেফাজতে ইসলাম। ওই সমাবেশ থেকে সংগঠনের নেতারা যে কোনো উপায়ে ঢাকা অবরোধ কর্মসূচি বাস্তবায়নের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। এমনকি হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা আহমদ শফী ১৩ দফা দাবি বাস্তবায়নে প্রয়োজনে শহীদ হতে প্রস্তুত বলেও ঘোষণা দেন। এরই মধ্যে চট্টগ্রামে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশ শেষে আল্লামা শফীর গাড়িবহরে হামলার ঘটনা ঘটেছে।
সূত্র জানায়, হেফাজত ও জোটের পূর্বঘোষিত এ কর্মসূচি ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাঠ দখলে নেয়ার প্রস্তুতি নিয়েছে। হেফাজত ও ১৮ দলীয় জোট শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিলেও সরকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে মাঠ দখলের চিন্তা-ভাবনা করছে। এরই মধ্যে বিএনপি-জামায়াতসহ ১৮ দলীয় জোট, হেফাজতের সমর্থক মাদরাসা ছাত্র এবং মুসল্লিদের গ্রেফতার অভিযান শুরু করেছে পুলিশ। হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মী, মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষক এবং সাধারণ মুসল্লিরা রয়েছেন পুলিশ আতঙ্কে।
সূত্র জানায়, ঢাকা অবরোধ ও মহাসমাবেশকে সামনে রেখে পুলিশ সদর দফতর দফায় দফায় বৈঠক করে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছে। পুলিশের ৭টি রেঞ্জ, ৬টি মেট্রোপলিটন অঞ্চলসহ ৬৪ জেলার পুলিশ সুপারকে তত্পর থাকতে বিশেষ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। শুক্রবার রাত থেকেই বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্য মাঠে নামবে।
এরই মধ্যে রাজধানীর সর্বত্র চলছে কড়া গোয়েন্দা নজরদারি। আবাসিক হোটেলসহ নগরীর প্রায় প্রতিটি এলাকায় সাদা পোশাকে টহল শুরু করছে গোয়েন্দারা। নগরীর তিনটি প্রবেশপথসহ বিভিন্ন সড়কে চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এসব চেকপোস্টে বিভিন্ন ধরনের গাড়ি, মোটরসাইকেলসহ সন্দেহভাজনদের তল্লাশি করা হচ্ছে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, ১৮ দলীয় জোটের ৪ মে’র মহাসমাবেশ ও ৫ মে’র হেফাজতে ইসলামের ঢাকা অবরোধকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী উত্কণ্ঠায় রয়েছে। বিশেষ করে হেফাজতে ইসলামের লোকজন যদি ঢাকা অবরোধের চেষ্টা করে, তবে ওইদিন গোটা ঢাকা অচল হয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ প্রসঙ্গে সরকারের বিশেষ একটি গোয়েন্দা সংস্থার ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ৫ মে সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় এক লাখ সদস্য মোতায়েন থাকবে।
http://www.24livenewspaper.com/site/index.php?url=www.amardeshonline.com
সবাই কি প্রস্তুত ? ? ? উত্তর চাই ...........
বিষয়: বিবিধ
৫৪২৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন