সংস্কৃতির সংঘাত পর্ব-১
লিখেছেন লিখেছেন সত্য প্রিয় বাঙালী ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৪, ১০:০২:৩৪ সকাল
কালচার এর বিভিন্ন ডেফিনেশন দেয়া যায়। যেমনঃ মানুষের এক্সপেরিয়ান্স, মূল্যবোধ, চিন্তা-ভাবনা, আচার-ব্যবহার, ইতিহাস ইত্যাদি ইত্যাদি।
সংক্ষেপে বললে “Culture is the MAN-MADE part of the environment”
আমি আপনি আজকে যা করি, ১০০ বছর পর তাই আমাদের কালচার নামে পরিচিত হবে। জাহিলিয়াতের আরবদের কালচার ছিল, নারীশিশুকে জীবিত হত্যা, মদ-জুয়া, কাবা-ঘরে ৩৬০ মূর্তি ইত্যাদি।
মোহাম্মদ সাঃ যখন ‘আল্লাহর একত্ববাদের (complete MONOTHEISM, TAWHEED) ডাক দিলেন, তখন সমগ্র আরব (কিছু ব্যতীত) তাঁর বিরোধীতা শুরু করল। এটা শুধু এই জন্য নয় যে তারা আল্লাহকে বিশ্বাস করেনা, বরং রব (রুবুবিয়াত,১) হিসেবে তারা আল্লাহকে বিশ্বাস করত-
“তুমি জিজ্ঞেস কর, কে রুযী দান করে তোমাদেরকে আসমান থেকে ও যমীন থেকে, কিংবা কে তোমাদের কান ও চোখের মালিক? তাছাড়া কে জীবিতকে মৃতের ভেতর থেকে বের করেন এবং কেইবা মৃতকে জীবিতের মধ্য থেকে বের করেন? কে করেন কর্ম সম্পাদনের ব্যবস্থাপনা? তখন তারা বলে উঠবে, আল্লাহ! তখন তুমি বলো তারপরেও ভয় করছ না?” –(আল কোরআন ১০ঃ ৩১)
কিন্তু তারা এরপরো মোহাম্মদ সাঃ এর বিরোধিতা করেছিলো, কারণ তারা জানে ইসলাম শুধুমাত্র কোন ধর্ম- বিশ্বাসের ডাক নিয়ে আসেনি, এটা এসেছে সম্পূর্ণ দ্বীন (জীবন বিধান) নিয়ে (কোরআন ৩-১৯), একটা সংস্কৃতি নিয়ে। আরবের পৌত্তলিকরা জানত, ইসলাম মানতে গেলে তাদের সংস্কৃতি মানা যাবেনা তাই বিরোধিতা! কারণ তারা আর মূর্তিপুজা, নারী কেনা-বেচা করতে পারবেনা! মক্কার পৌত্তলিকরা বুঝলেও আমরা বুঝিনা! ইসলাম কিসের ডাক দেয়!
তাই পশ্চিমাদের ডেফিনেশন অনুযায়ী ‘ধর্ম’ সংস্কৃতির একটা অংশ-এটা ভূল, অন্তত ইসলামের ক্ষেত্রে, বরং সংস্কৃতি ইসলামের একটা অংশ, ইসলাম বলে দেয় মানুষ কীভাবে চলবে, চলা উচিৎ, চলতে পারবে আর কি পারবেনা! কমপ্লিট গাইডলাইন!
এজন্যেই হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির প্রফেসর স্যামুয়েল পি হান্টিংটং তার বই, “Clash of Civilizations” এ বলেছিল-
“পশ্চিমা বিশ্বের জন্য ‘ইসলামী মৌলবাদ’ আসলে কোন সমস্যা নয়, সমস্যা ইসলাম-ই, মুসলিমরা বিশ্বাস করে তাদের সংস্কৃতি অন্য সকল সংস্কৃতি থেকে উন্নততর”
তিনি আরো বলেন-
“ইসলামের জন্য CIA কিংবা ‘Department of Defense’ কোন সমস্যা নয়, বরং ‘পশ্চিমা সভ্যতাই’ ইসলামের মূল সমস্যা, যেখানে পশ্চিমারা দাবী করে তাদের সভ্যতা বিশ্ব জনীন।”
তাই বিশ্বে অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের সাথে পাশ্চাত্যের কোন সমস্যা নেই, সবাই পাশ্চাত্য সভ্যতার সুপিরিয়রিটি মেনে নিয়েছে এবং মেনে চলছে। কিন্তু————-ইসলাম-ই একমাত্র এর বিরোধী হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে। আর তাই মুসলিমদের সাথে বিশ্ব জুড়ে এতো সঙ্ঘর্ষ!
আহা! মক্কার কাফেররা ইসলাম বুঝলেও আমরা বুঝিনা!
পশ্চিমারা ইসলাম বুঝলেও আমরা বুঝতে চেষ্টা করিনা!
পি হান্টিংটং ইসলাম বুঝলেও আমরা বুঝিনা!
———————————————————————————-
১ঃ তাওহিদের তিনটি দিক আছেঃ তাওহীদ আর রুবুবিয়্যাহ, তাওহীদ আল-উলুহিয়্যাহ, তাওহীদ আল-আসমা ওয়াস সিফাত। কাউকে তাওহীদে বিশ্বাসী হতে হলে এই তিনটি দিক থেকেই বিশ্বাসী হওয়া লাগবে, যে কোন একটি কিংবা দু’টি বিশ্বাস করলে হবেনা।
বিষয়: বিবিধ
১১৬১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন